চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় এক যুবককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেলা জজ আদালতের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার ভোরে গাজীপুরের গাছা থানার বালিয়ারা ডেগেরছালা এলাকা থেকে ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে উদ্ধার ও রেজাউলকে আটক করে র্যাব। বুধবার যুবককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই ছাত্রীর মা তার বিরুদ্ধে একই দিনে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার ২৮ বছর বয়সী রেজাউল ইসলাম কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানার চারিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা।
হাটহাজারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিব শর্মা নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব-৭ এর জ্যৈষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বলেন, ‘১১ বছরের ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি আবাসিক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। অভাবের কারণে তার পরিবার খরচ দিতে না পারায় বাসায় চলে আসে ওই ছাত্রী। ২২ জুন রাত নিখোঁজ হয় সে। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে পরদিন হাটহাজারী থানায় ডায়েরি করে।’
‘পরে র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে নজরদারি বাড়াই আমরা। এক পর্যায়ে, গাজীপুরের ডেগেরছালা এলাকায় ওই ছাত্রীর অবস্থান শনাক্ত হয়৷ মঙ্গলবার ভোরে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী রেজাউলকে আটক করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রেজাউল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রীকে অপহরণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য তাকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক রাজিব শর্মা বলেন, ‘র্যাবের হস্তান্তর করা আসামিকে ওই ছাত্রীর মায়ের করা অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গুমের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন সরকারের কাছে গুম হওয়া যে ৭৬ ব্যক্তির তালিকা দিয়েছিল, তাদের ব্যাপারে সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটকে অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘আমাদের ৭৬ জনের মিসিং বা ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসনের তালিকা দেয়া হয়েছিল, আমাদের বলা হয়েছিল। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি এ ৭৬ জনের মধ্যে ১০ জন তাদের বাড়িতেই আছেন। দুজন আছেন জেলখানায়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাকে বলেছি, আমাদের দেশে তিনটি কারণে ডিসঅ্যাপিয়ার হয়: প্রথম কারণ হচ্ছে ঘৃণ্য অপরাধ যারা করে, ভিডিওর মাধ্যমে আমরা দেখিয়েছি, পুলিশকে পিটিয়েও তারা হত্যা করেছে। আমরা এটাও দেখিয়েছি, কীভাবে তারা মানুষের সম্পদ ধ্বংস করেছে। যারা এগুলো করেছে, তারা সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে বিভিন্ন দেশে চলে গিয়েছে। তারা ভারত কিংবা মিয়ানমার কিংবা অন্য কোনো জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। বাকিগুলো সব আমাদের সঙ্গেই আছে।’
বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (মিশেল) আগেই আমাদের কিছু লিখিত প্রশ্ন দিয়ে দিয়েছিলেন, যেগুলো নিয়ে তিনি আলাপ করতে চান। সেগুলো সবকিছু তাকে (বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে)... আমাদের ভূমিকা, আমাদের কীভাবে চলছে, আমাদের সরকারিভাবে একটি মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসা ছিল, অনেকে মিসিং হয়ে যায়, আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। অনেক নৃশংসতা বাংলাদেশে হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা কী করেছি।
‘আমরা তাকে বলেছি, আমাদের জাতির পিতা যিনি আমাদের দেশটি স্বাধীন করেছেন, যেখানে ৩০ লাখ মানুষের রক্ত ঝরেছে, যেখানে দুই লাখ মা-বোনের চরম আত্মত্যাগ রয়েছে, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতাকে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে। কাজেই সব সময় আমাদের দেশে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত লেগেই আছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্ধকার যুগ পেরিয়ে যার ধমনিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ চলছে। আমরা সেই অন্ধকার থেকে বাংলাদেশ তৈরি করেছি। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমাদের সংবাদপত্র সব স্বাধীন। আমরা বলেছি, আমাদের এখানে ১ হাজার ২৬৫টি স্বীকৃত দৈনিক সংবাদপত্র। সব মিলিয়ে সংবাদপত্র আছে ৩ হাজার ১৫৪টি। মোট টিভি চ্যানেল আছে ৫০টি। তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
‘এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়ে তারা যা ইচ্ছা প্রকাশ করে থাকে, মতামত প্রকাশ করে থাকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। আমরা বলছিলাম এটার সবচেয়ে বড় শিকার হলেন নারীরা, শিশুরা। খুব কমসংখ্যক, ৩ শতাংশের বেশি নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা হয়েছে। এদের নিরাপত্তার জন্যই আইনটি ছিল। আইনমন্ত্রী বলেছেন, এটাকে আরেকটু সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে, আমরা সেটাই করছি। এখন কেউ মামলা করলে আমরা দেখি সে অপরাধটা করেছে কি না, অপরাধ করলে মামলাটা নেয়া হয়। তিনি (মিশেল) বলেছেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি।’
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কথা বলেছি। তারাও এদের দুঃখের-কষ্টের কথা স্বীকার করলেন। তারা জানে আমরা মাদক তৈরি করি না। কিন্তু ভৌগোলিক কারণে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। ইয়াবা, আইস মিয়ানমার থেকে আসে এবং অন্যান্য দেশ থেকে কোকেনসহ বিভিন্ন মাদক আসে।
‘সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। মিয়ানমারের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের সঙ্গে বহুবার বসেছি। তারা (মিয়ানমার) সব সময় অনেক অঙ্গীকার করেছে, সেগুলোর একটাও তারা রাখেনি। তারা (মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিনিধি দল) সব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন, তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। জাতিসংঘের সব সংস্থাই বলছে, আমাদের সঙ্গে সবারই কথা হচ্ছে। মিয়ানমারের সরকারের অবস্থা ভালো না, এ মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না– এটাই তারা বলে যাচ্ছেন, বলছেন।
‘মাইনরিটির প্রসঙ্গটিও এসেছে: নড়াইলের ঘটনা এবং অন্যান্য ঘটনা। আমরা বলেছি, এগুলো ফেসবুক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেসব কমেন্ট করা হয়েছে, এগুলো দেখেই। যেখানে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেখানেই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। মামলা হয়েছে এবং তাদের অ্যারেস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক নেতারা বসে ওখানে একটা শান্তির ব্যবস্থা আমরা করেছি। সবকিছু তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন। যে অ্যাকশনগুলো আমরা নিয়েছি, সেগুলোর তারা প্রশংসা করেছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নেত্র নিউজ সব সময় ভুয়া নিউজ দিয়ে থাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। আমরা এগুলোকে নিউজ বলে মনে করি না। আমাদের দেশের যে ঘটনা, আমাদের দেশের মিডিয়া ফ্রি। তারা যেকোনো সংবাদ সব সময়ই প্রকাশ করে থাকেন। আমরা কোনো মিডিয়ার ওপর কোনো সেন্সর করি না। কাজেই কোথাকার কোন নিউজ কী বলল, আমরা সেগুলোর কোনো বাস্তবতা খুঁজে পাই না।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গুম দিবস যারা করেন, তারা একটা উদ্দেশ্য নিয়েই করেন। তারাও জানেন, তাদের ছেলেটি কিংবা ভাইটি কিংবা তাদের মেয়েটি কোথায় আছেন। আমরা এটুকু বলতে চাই যে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাদের নিয়ে যায়, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে সাবমিট করতে হয়। কেউ যদি ইচ্ছে করে গুম হয়ে যায়, কেউ যদি কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে বিদেশে চলে যায়, কিংবা সমুদ্রপথে যদি চলে যায়, যেটাকে আমরা মানব পাচার বলি, সেখানে চলে যায়, আমাদের তো তাকে বের করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয়। কাজেই যারা এগুলো বলছেন, এগুলো আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী দেখছেন। আমরা যাকেই খুঁজে পাব, তাকে আমরা প্রকাশ করে দেখাব।’
‘গুম দিবস’ যারা পালন করেন, তারাও জানেন তারা কোথায় আছেন? – সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘না, না আমি সেটা বলতে চাইনি। আমি বলতে চাচ্ছি, তারাও জানেন, তারা কোথায় গিয়েছেন। অনেকেই জানেন, সবাই জানেন এমন কথা বলব না।
‘কেউ যদি ইচ্ছে করে আত্মগোপন করে থাকে, আমরা কেন, কেউই এই আত্মগোপন বের করতে পারবে না যে পর্যন্ত তারা স্বেচ্ছায় না চলে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ডারগুলোতে অনেক জায়গা দিয়ে তারা খুব ইজিলি চলে যেতে পারে। আমরা এটিই বলতে চাই। দ্বিতীয় বিষয় সমুদ্রপথ দিয়েও চলে যেতে পারে। যে কোনোখানে তারা চলে যেতে পারে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু বিচার বিভাগ স্বাধীন, কাজেই বিচারকাজকে এড়ানোর জন্যই তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সেগুলোর নমুনা আমরা তাদের দিয়েছি, আসলে তারা কী ধরনের ক্রাইম করেছে। আর একটি বিষয় আমরা তাদের বলেছি, যারা দেউলিয়া হয়ে যায় পাওনাদার বেড়ে যায়, ফলে পাওনাদারদের এড়ানোর জন্য গায়েব হয়ে যায়, আত্মগোপনে যায়। আমরা যখন অভিযোগ পাই, তখন আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করে আনলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। আবার পারিবারিক কারণেও অনেকেই গুম হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মানিলন্ডারিং মামলায় টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপক শাহ মো. জোবায়েরের ১২ বছরের দণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা রোববার এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে। যা তার সম্পদ থেকে বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
টেলিটক থেকে চাকরিচ্যুত শাহ মো. জোবায়ের এখন পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
শাহ মো. জোবায়ের টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত অবস্থায় ২০০৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত বেতনভাতা বাবদ ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আয় করেন।
অন্যদিকে রাজধানীর উত্তরার এইচএসবি শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে বেতন বহির্ভূত দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা করা হয় এফডিআররে।
এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জমা করেন তিনি। যার মধ্যে ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকার এফডিআর ও ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৬৫ টাকা ৩৭ টাকা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করেন।
এর বাইরেও আসামি ব্র্যাক ব্যাংক নর্থ গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ৪ কোটি ৭৮ লাখ, বেসিক ব্যাংক গুলশান শাখার হিসাবে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ইসলামী ব্যাংক মিরপুর-১ শাখায় ৫ লাখ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক গুলশান শাখায় ১০৩ দশমিক ০১ টাকা জমা ও উত্তোলন করেন।
এভাবে জোবায়ের বেতন-ভাতা ছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে ৫ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৭ টাকা নিজের নামে জমা ও অন্য স্থানে স্থানান্তের করেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মধ্যে পড়ে।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন গুলশান থানায় জোবায়েরকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৮ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান। পরের বছর ১৩ জুন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় ডিপো ও যানবাহন থেকে তেল চুরির অভিযোগে সাইফুল ইসলাম রনি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তার কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ লিটার ডিজেলসহ একটি পিকআপও জব্দ করা হয়েছে।
বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার এলাকায় রোববার সকালে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৯ বছর বয়সী সাইফুলের বাড়ি বুড়িচংয়ের পরিহলপাড়া গ্রামে।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
মেজর সাকিব জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইফুল সংঘবদ্ধ তেল চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তিনি কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন ডিপো থেকে তেল চুরি করতেন। এ ছাড়া রাতে চলাচল করা চালকরা ক্লান্ত হয়ে ভারী যানবাহন রাস্তার পাশে পার্কিং করে বিশ্রাম নেন। এই সুযোগে তিনি গাড়ির তেল চুরি করে আসছেন।
তিনি অনেক দিন ধরে পিকআপের ওপর বিশেষ কায়দায় তেলের ড্রাম সেট করে মহাসড়কে চলাচল করা দূরপাল্লার ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের ট্যাংকি থেকে তেল চুরি করে আসছিলেন।
তেল চুরির অভিযোগে বুড়িচং থানায় সাইফুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কুমিল্লা কোর্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান জানান, আসামি সাইফুলকে বিকেল ৪টার দিকে কুমিল্লার ২ নম্বর আমলি আদালতে নিলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেগম শারমিন রিমা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:যশোরের ঝিকরগাছায় নৈশপ্রহরীকে হত্যার পর ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঝিকরগাছা বাজারের রাজাপট্টিতে রোববার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
নৈশপ্রহরী নিহত ৭০ বছরের আব্দুস সামাদের বাড়ি ঝিকরগাছার বেড়েলা গ্রামে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক সুব্রত মণ্ডল।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, রাত ৩টার দিকে ঝিকরগাছা বাজারের রাজাপট্টিতে পিকআপে করে ডাকাতের দল হানা দেয়। এ সময় ৮ থেকে ১০ জন অস্ত্রের মুখে বাজারের চার নৈশপ্রহরীর হাত, পা ও মুখ গামছা ও স্কচটেপ দিয়ে বেঁধে মারধর করে। এতে আব্দুস সামাদের মৃত্যু হয়।
এরপর ডাকাতরা ঝিকরগাছা অটো ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কশপের তালা কেটে অন্তত ২৫টি হ্যামকো ব্যাটারি (ট্রাকের ও আইপিএসের ব্যাটারি) লুট করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
উপপরিদর্শক আরও বলেন, ‘বাজারের একটি দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
‘আব্দুস সামাদের কপালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের অন্য কোথাও আর কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।’
অর্থ আত্মসাতের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হলো।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে রোববার সাক্ষ্য দেন ফরিদ আহমেদ। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ না হওয়ায় আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করেন বিচারক।
এর আগে ১২ জুন বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।
২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী এই মামলা করেছিলেন।
মামলায় হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এতে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা না হলেও তদন্তে নাম আসায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় অভিযোগপত্রে।
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয় জনের নামে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। একই সঙ্গে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বদলির আদেশ দেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়ন না করা রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক চুক্তি সম্পাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন করোনা রোগীর নমুনা বিনা মূল্যে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদ, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. দিদারুল ইসলাম।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ওই হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার জন্য রোগীপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা নেয়া হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও অন্য কর্মকর্তাদের মাসিক খাবার খরচ হিসেবে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার চাহিদা তুলে ধরাসহ এর খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:২১ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না মো. আলমের। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার আটিপাড়া এলাকায় তার বাড়ি। স্ত্রী হত্যার অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত।
শনিবার রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে আলমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, যৌতুকের দাবিতে ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ির অদূরে গৃহবধূ আম্বিয়াকে মারধরের একপর্যায়ে তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী মো. আলম। এ সময় আম্বিয়ার আত্মচিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আম্বিয়া।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মকবুল হোসেন সিংগাইর থানায় আলমসহ পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই পলাতক ছিলেন আলম।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। আর জড়িত না থাকায় বাকিদের চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৩ সালের ৩০ নভেম্বর মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসামির অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায়ের পর আলমের আইনজীবী উচ্চ আদালতে আপিল করলে সেখানেও তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, মামলার সাজা থেকে বাঁচতে ঘটনার পর জাতীয় পরিচয় পরিবর্তন করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন আলম। এ অবস্থায় তিনি আরেকটি বিয়েও করেন এবং এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে তিনি রাজধানীর টিকাটুলীতে বাস করতেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর বংশালে একটি জুতার কারখানা থেকে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে সিংগাইর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের বন্দরে স্কুলছাত্রকে বলাৎকারের মামলায় এক সহকারী শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার পশ্চিম বন্দরের স্বল্পের চর এলাকায় ৫৮ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শনিবার বিকেলে তাকে আটক করা হয়। রাত ৯টার দিকে শিশুটির বাবার করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।
৪৫ বছর বয়সী ওই সহকারী শিক্ষকের নাম দুলাল মিয়া। তিনি বন্দরের স্বল্পের চর এলাকার বাসিন্দা।
বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যায় শিশুটি। দুপুর ২টার দিকে স্কুল ছুটি হলে শিক্ষক দুলাল স্কুলের সামনের একটি দোকান থেকে শিশুটিকে সিগারেট কিনে বিদ্যালয়ের অফিসরুমে নিয়ে আসতে বলে। কিছুক্ষণ পর ছাত্রটি অফিসকক্ষে যায়। এ সময় শিক্ষক দুলাল শিশুটিকে বলাৎকার করে। পরে ওই ছাত্র চিৎকার করলে তাকে চুপ থাকতে বলে এবং ঘটনা কাউকে না জানাতে নিষেধ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।'
পুলিশ পরিদর্শক আবু বক্কর জানান, ১৩ বছরের ওই ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগে স্কুলের ভেতরে এলাকার লোকজন অবস্থান নিয়েছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। সেখানে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়লে ওই শিক্ষককে থানায় আনা হয়। পরে স্কুলছাত্রের বাবা মামলা করেছেন শিক্ষক দুলালের বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, স্কুলের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে সালিশ চলছিল। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। এরপর তাকে মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘আমি অটোরিকশাচালক। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার ছেলে বাড়িতে ফেরার পর ওর মা দেখে শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে কেঁদে দিয়ে ঘটনা বলে। এরপর আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির লোকজনকে জানাই। তারা শনিবার বিকেলে এ নিয়ে সালিশ বসায়। সেখানে এলাকার লোকজন ঘটনা শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষকের কাছে আমার ছেলে স্কুলে প্রাইভেট পড়ত। এর আগেও তাকে একাধিকবার বলাৎকারের চেষ্টা করেছেন তিনি। আমার ছেলে সব বলেছে।’
পশ্চিম বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুবা বলেন, ‘শিক্ষক দুলালের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ নিয়ে আমরা ও কমিটির লোকজন শিশুটির পরিবারের সঙ্গে বসেছিলাম ঘটনা সঠিক কি না তা যাচাই করতে। তখনই এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ আসে।’
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘রাতে শিশুটির বাবার করা মামলায় ওই সহকারী শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রোববার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
ওই স্কুলছাত্রকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য