চট্টগ্রামে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক সাইফুল ইসলামকে তার চার সহযোগীসহ আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তবে ছাত্রদল নেতাকে কোন জায়গা থেকে কখন আটক করা হয়েছে তা নিয়ে পাওয়া গেছে ভিন্ন বক্তব্য।
পুলিশের ভাষ্য, পাঁচলাইশ থানার রহমত নগর এলাকা থেকে সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে তাদের আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
তবে সাইফুলের পরিবারের দাবি, চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আটকের বিষয়টি জানতে পারেন তারা।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সোয়া ১২টার দিকে রহমত নগর এলাকা থেকে চার সহযোগীসহ সাইফুলকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
আটকরা ওই এলাকার কে ব্লকে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
সাইফুলের বিরুদ্ধে মারামারি, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।
সাইফুলের ভাই মো. সবুজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক বছর আগে ২১ সালের ১৬ জুন পুলিশ তাকে (সাইফুল) গুলি করে পঙ্গু করে ফেলে। আগের তো রাজনৈতিক মামলা আছেই, তখন নতুন মামলাও দেয়। সে মামলায় দেড় মাস আগে জেল থেকে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি পান।
‘সোমবার পুরাতন মামলায় সাইফুল হাজিরা দিতে গিয়েছিল আদালতে। আমিও সঙ্গে গিয়েছিলাম। তখন আমি ওপরে ছিলাম কাজে। সাইফুল ভাইসহ অন্যরা নিচে ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিচে নেমে দেখি ওরা আর নাই। পরে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে শুনি পুলিশ সিভিলে এসে ওদের আটক করে নিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাতে আমার মা পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে খোঁজ নেয়, কিন্তু পুলিশ তখন আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি।’
তবে এ বিষয়ে ওসি বলেন, ‘থানায় অনেক মানুষ আসে। রাতে তারা আসছিল কি না সেটা বলতে পারি না।’
২০২১ সালের ১৬ জুন রাতে নায়েজিদ লিংক রোড থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সে সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ দাবি করেছিলেন, এশিয়ান ওম্যান ইউনিভার্সিটির গেইট এলাকায় অস্থায়ী চেক পোস্টে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান সাইফুল। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে সাইফুল গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশের ৩ সদস্যও আহত হন। পরে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে সেসময় নিউজবাংলার কাছে সাইফুলের ভাই সবুজ দাবি করেছিল, সাইফুলকে অক্সিজেন এলাকা থেকে ১৬ জুন দুপুরে সুস্থ অবস্থায় আটক করেছিল বায়েজিদ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন:গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে প্রক্সি দিতে এসে আটক মো. আকতারুল ইসলামের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে এ রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন।
অভিযুক্ত আকতারুল বলেন, ‘আমি ছোট ভাইকে পরীক্ষা দিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসি। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আসতে দেরি হওয়ায় ছোট ভাইকে গেট থেকে নিয়ে যায় প্রক্টর অফিস। তারপর তারা মিথ্যা মামলায় আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়।’
তবে মামলা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন মামলাটি করেছেন। পরীক্ষা দেয়ার পর আপনাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে নেয়া হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসময় বিষয়টি স্বীকার করেন আসামির আইনজীবী ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু।
তবে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত নেই, তাই রিমান্ড নেয়ার প্রয়োজন নেই।’ পরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসামি বড় চক্রের সদস্য। তাকে রিমান্ডে নিলে বাকি আসামিদের ধরা সহজ হত। তবে আমাদের তদন্ত চলবে। প্রয়োজনে আবার রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেন তিনি।’
এর আগে রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদার আদালতে আসামীকে হাজির করা হয়। এরপর মামলার রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম। একইসঙ্গে এ রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ১৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এর আগে শনিবার ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক রইছ উদদীন বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার আসামিরা হলেন প্রক্সি দিতে আসা শিক্ষার্থী মো. আকতারুল ইসলাম, মূল শিক্ষার্থী সিজান মাহফুজ ও মূল হোতা মো. রাব্বি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভুক্ত বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবেশপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের একটি কক্ষের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করছিলেন।
এসময় সিজান মাহমুজ নামের এক শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র ও সংযুক্ত ছবির সঙ্গে তার চেহারার মিল না থাকার বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়। পরে আকতারুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নেয়া হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আটক শিক্ষার্থী জানায়, পলাতক আসামি সিজান মাহফুজ ও মূলহোতা রাব্বির পরামর্শ, প্ররোচনায় ও সহযোগীতায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার চুক্তিতে পরীক্ষায় অংশ নেয় বলে তিনি স্বীকার করেন।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা (ম্যানিজিং) কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ করার বিধান অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এর ফলে কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য কোনো সুপারিশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০০৮ ও ২০১৯ সালের দুটি প্রজ্ঞাপন রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে দুজন বিদ্ব্যৎসাহী (নারী ও পুরুষ) সদস্য থাকবেন, যাদের নাম প্রস্তাব করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘সাধারণত একজন সংসদ সদস্য যখন কারও নাম প্রস্তাব করেন তখন তাকেই সভাপতি করা হয়। তাহলে নির্বাচনের তো আর প্রয়োজন হয় না। এ কারণে ওই প্রজ্ঞাপনের ২(২) ধারা চ্যালেঞ্জ করে শহীদুল্লাহ নামে একজন অভিভাবক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিলেন।
‘আজ রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুলটিকে যথাযথ ঘোষণা করে আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেছেন, প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে কারা থাকবেন সে ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য পরামর্শ বা কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।’
এর আগে ভিকারুনিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির বিষয়ে আদালত যে আদেশ দিয়েছিল অনুরূপ আদেশ হয়েছে বলে জানান রিটকারীর পক্ষের এই আইনজীবী।
আরও পড়ুন:শোক দিবসে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে কর্মীদের পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় জেলা পুলিশের আরও ৫ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিউজবাংলাকে।
তিনি জানান, বরগুনা সদর থানার এএসআই মো. সাগর, পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল মো. রবিউল ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল কেএম সানিকে প্রত্যাহার করে ভোলা জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর ডিবি পুলিশের এএসআই মো. ইসমাইল এবং ডিবি পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিনকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি হাচান। একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া দেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমানের (প্রশাসন ও অর্থ)।
এর আগে দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে প্রথমে বরিশাল রেঞ্চে এবং পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।
বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটায় পুলিশ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।
বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল, গাড়ি ভাঙচুরকারীকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছি, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন সেখানে। তিনি অনেক ভুল করেছেন।
‘যেখানে আমি উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেননি।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম এহসান উল্লাহ জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি তদন্তে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে সোমবার রাতে কমিটি গঠন করা হয়।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। নিহত মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক ৫০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ১৪ নম্বর ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। এ সময় রুবেল নামে আরেকজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতের ভাই মো. সুমন বলেন, ‘আমার ভাই যাত্রাবাড়ীর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ১৪ নম্বর ইউনিটের সভাপতি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহীদ ফারুক সড়কে বনফুল মিষ্টির দোকানের সামনে ভাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় ৫/৭ জন দুর্বৃত্ত তাকে ঘিরে ফেলে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরির আঘাতে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রাত সাড়ে ৮টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মো. সুমন বলেন, ‘এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ফাহিম ও সাইফুলসহ কয়েকজন এই হামলা চালিয়েছে। ফুটপাতে চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় ওরা আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’
আবু বক্কর সিদ্দিক রাজনীতির পাশাপাশি কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। তিনি দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর টানপাড়া এলাকায় সপরিবারে বসবাস করতেন। তিনি তিন মেয়ের জনক। স্ত্রীর নাম সাবিনা আক্তার। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায়। বাবার নাম আলী আহাম্মদ। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রুবেল নামে আরেকজন আহত হয়েছেন। তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানাকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চার সদস্য।
মঙ্গলবার বিকেলে দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধানের কাছে এসব নথি হস্তাস্তর করেন ড. ইউনূসের প্রতিনিধি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
দূদক সূত্র জানায়, অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফি’র নামে ৬ শতাংশ অর্থ কেটে নেয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ এবং প্রতিষ্ঠান থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ সংবলিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
একইসঙ্গে চলতি মাসের শুরুতে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের সব ব্যাংক হিসাব তলব করে দুদক। শুধু তাই নয়, কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পর থেকে লেনদেনের সব তথ্যও চাওয়া হয়।
চিঠিতে গ্রামীণফোন কোম্পানিতে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির শেয়ার ও এর বিপরীতে ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি কত টাকা লভ্যাংশ পেয়েছে এবং তা কোন কোন খাতে ও কীভাবে ব্যয় করেছে, তার বছরভিত্তিক তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:চকবাজারে চারতলা ভবনে আগুনের ঘটনায় বরিশাল হোটেলের মালিক ফখরুদ্দিনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম মামলার এজাহার গ্রহণ করেন। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করে দেন।
এর আগে মামলার আসামি বরিশাল হোটেলের মালিক মো. ফখরুদ্দিনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তদন্তকারী কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই রাজীব কুমার সরকার এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন জানান।
বিচারক আবেদন বিবেচনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড দেন।
সোমবার দুপুরে চকবাজার দেবীদাস লেনে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বরিশাল হোটেলের ছয় কর্মচারীর মৃত্যু হয়। তারা সবাই হোটেলটিতে নাইট শিফটে কাজ করে সকালে ঘুমিয়েছিলেন। তাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল ভবনের দ্বিতীয় তলায়। নিচতলায় ছিল বরিশাল হোটেল।
এ ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা করেন আগুনে মারা যাওয়া রুবেলের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী। মঙ্গলবার ভোরে বরিশাল হোটেলের মালিক ফখরুদ্দিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের ছেলে মাইনুল আলমের বিরুদ্ধে মাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ মিলেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে পটিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ গুলির ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান।
তিনি বলেন, ‘ নিহত জেসমিন আক্তার পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের স্ত্রী। ২৫ বছর বয়সী মাইনুল আলম তাদের ছেলে। শামসুল আলম মাস্টার সম্প্রতি মারা গেছেন। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে মঙ্গলবার দুপুরে তার ছেলে মাইনুল নিজের মাকে গুলি করেন।
‘গুরুতর জখম অবস্থায় জেসমিনকে কাছের একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত মাইনুল পালিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
বোন শায়লা শারমিন রিপা বলেন, ‘মাইনুল মাদকাসক্ত। সকালে মা সোনালী ব্যাংক পটিয়া শাখায় গিয়েছিলেন বাবার ব্যাংক একাউন্টের খবর নিতে। ফেরার পর বিষয়টি নিয়ে মা-ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। মাইনুল প্রথমে গুলি করলে তা দেয়ালে লাগে। পরের গুলি মায়ের চোখে বিদ্ধ হয়। রক্তক্ষরণ শুরু হলে মাইনুল পালিয়ে যায়। পরে মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।’
স্বজনরা জানান, পটিয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র শামসুল আলম মাস্টার। তিনি এক মাস আগে মারা গেছেন। তার ছোট ছেলে মাশফিকুর রহমান অস্ট্রেলিয়া থাকেন। ছেলের সঙ্গে মা জেসমিন আক্তার সেখানেই ছিলেন। গত রোজার সময় তিনি দেশে ফেরেন। স্বামীর মৃত্যু হলে তিনি দেশে থেকে যান। আগামী মাসে তার অস্ট্রেলিয়া চলে যাবার কথা ছিল। এর আগে স্বামীর অর্থ-সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে গেলে বড় ছেলে মাইনুলের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়।
পটিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, মাইনুলের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ আছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও তাজা গুলি জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য