এখন থেকে করোনার টিকা পাবে ৫ বছরের শিশুরাও। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী সবাইকে দেয়া হবে ফাইজারের টিকা।
শিশুদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাদের টিকা দেয়া হবে জন্ম নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে।
টিকা পেতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। কিছুদিনের মধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার দুপুরে ক্যানসার, অটিজম শব্দদূষণ মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে এই টিকা দেয়া হবে।’
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের চেয়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এখন যারা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের উপর্সগ প্রকাশ পাচ্ছে না তাই, সামাজিক দূরুত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।’
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘শিগগির ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের করোনা ভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ফাইজার টিকার একটি বড় চালান আসার কথা রয়েছে। টিকা দেশে আসলে নিবন্ধন অনুযায়ী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আয়োজিত ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে রোববার দুপুরে মূল আলোচক হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি রাসায়নিক কারখানা থেকে গ্যাস নির্গত হয়ে নারী ও শিশুসহ অন্তত সাতজন অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটিতে রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ ব্যক্তিরা হলেন ৯ বছরের সামিয়া আক্তার, সিরাজুল ইসলাম, মনু মিয়া মাসুদা বেগম, ওসমান আলী, আমীর আলী ও মল্লিকা। তারা সবাই মুড়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
আহতদের প্রথমে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
অসুস্থ হওয়ার তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজমুল আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় বুক জ্বালাপোড়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাতজন হাসপাতালে আসেন। তাদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। ওই সাতজনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, রোববার সকালে কেমিক্যাল কারখানাটি থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। বাতাসে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে মুড়াপাড়ার বানিয়াদি, বলাইনগর, ফরিদ আলীরটেক, মঙ্গলখালী ও মকিমনগর গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ওই সাতজনকে সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়৷
কারখানাটির নিজেদের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী সেখানে সালফিউরিক অ্যাসিড, অ্যালুমিনিয়াম সালফেট, জিঙ্ক সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেটসহ ৬ ধরনের কেমিক্যাল তৈরি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কারখানাটির পরিবেশগত ছাড়পত্র আছে। তবে ছাড়পত্র দেয়ার সময় সেখানে কোনো আবাসিক এলাকা ছিল না। গ্যাসের কারণে স্থানীয়দের সমস্যা হলে শিগগিরই কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রাসায়নিকের কারণে স্থানীয়দের অসুস্থের বিষয়টি জেনেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান।
তিনি বলেন, ‘কারখানার বিষয়ে আগে থেকে জানা ছিল না। স্থানীয় কয়েকজনের অসুস্থতার খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কারখানা আবাসিক এলাকায় থাকতে পারে না।’
এ বিষয়ে জানতে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত যে কেউ এলেই পাবে চিকিৎসা। তাও বিনামূল্যে। এ জন্য আসতে হবে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র জলেশ্বরীতলার স্কুল হেলথ ক্লিনিকে। তবে প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি এখনও অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে।
সম্প্রতি বগুড়ার এই স্কুল হেলথ ক্লিনিক থেকে আরও একটি সুখবর মিলেছে। আগে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিলেও এখন সেই বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। ১৯ বছর পর্যন্ত কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েরা শারিরীকের পাশাপাশি মানসিক সমস্যার জন্যও পাচ্ছে চিকিৎসা সেবা। দেয়া হচ্ছে কাউন্সেলিং। এ জন্য ইউনিসেফের সহায়তায় চালু হচ্ছে কিশোর কর্নার।
স্কুল হেলথ ক্লিনিক সূত্র জানায়, ১৯৫১ সালে তৎকালীন ঢাকা ও চট্টগামে স্কুল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এটি দেশব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে। এই সেবার আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের ২৩টি জেলায় স্কুল হেলথ ক্লিনিক চালু করে।
বগুড়ায় এই ক্লিনিকটি স্থাপিত হয় ১৯৬০ সালের দিকে। তবে ৯০ দশকের গোড়ার দিকে এই ক্লিনিকের সেবা অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছিল। একসময় এখানে চক্ষু সেবা দেয়া হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
ক্লিনিক সংশ্লিষ্টদের আক্ষেপ, ঝিমিয়ে পড়া অবস্থা এখন অনেকটাই কেটে গেছে। কিন্তু প্রচারের অভাবে এখনও এই ক্লিনিকের কথা জেলার অনেক মানুষই জানে না।
বগুড়ার স্কুল হেলথ ক্লিনিকের কর্মকর্তারা জানান, এখানে দুজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, একজন ফার্মাসিস্ট, দুজন নার্স ও একজন এমএলএস এর পদ রয়েছে। তবে বর্তমানে আরও ৪ জন নার্স ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছেন।
এ ছাড়াও একজন উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কর্মরত আছেন। তিনি ইউনিসেফের সার্ভিস প্রোভাইডারের দায়িত্ব পালন করছেন।
ক্লিনিকে কর্মরত নার্স শামিমা আকতার ২০১৮ সালে ডেপুটেশনে এখানে এসেছেন। তার মূল কর্মস্থল আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও এখানে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবায় কাজ করতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
শামিমা আকতার জানান, ক্লিনিকে বর্হিবিভাগ সেবা রয়েছে। আগে বিভিন্ন স্কুলে ক্যাম্পেইন করা হতো। করোনার কারণে তা বন্ধ ছিল। এখন আবার শুরু হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার সময় আমাদের মেডিক্যাল টিম কাজ করে।
শামিমা বলেন, ‘হাসপাতালে গেলে অন্তত টিকিট কাটতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে টিকিটও লাগে না। শুধু আসতে হয়। চিকিৎসকরা রোগের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থাপত্র দেন। সেটি দেখে এখান থেকে ওষুধও দেয়া হয়। আর বড় ধরনের সমস্যা থাকলে আমরা মোহাম্মদ আলী বা শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে দিই।’
ক্লিনিকের উপসহকারী স্কাস্থ্য কর্মকর্তা মোছা. নাজমা খাতুন এখানে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে এলেও তার দায়িত্বে এখন কাউন্সেলিং সেবাও যোগ হয়েছে। এ জন্য ক্লিনিকে চালু করা হচ্ছে অ্যাডলসেন্ট কর্নার (কিশোর কর্নার)।
নাজমা খাতুন বলেন, ‘বয়োসন্ধির সময় কিশোর-কিশোরীরা মানসিক সংকটে ভোগে। এ সময়টায় তাদের কাউন্সেলিং খুব প্রয়োজন। বগুড়া স্কুল হেলথ ক্লিনিকে এই কাউন্সিলিং জুলাই মাস থেকে চালু হয়েছে। এর মধ্যেই অনেক কিশোর-কিশোরীকে এখানে কাউন্সিলিং করা হয়েছে। মাদকের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতেও কিশোরদের এই সেবাটি দিতে হয়।’
এ বিষয়ে ইউনিসেফের বগুড়া বিভাগীয় কর্মকর্তা ডা. রাকিন আহমেদ জানান, ‘ফরেন কম্বাইন্ড ইউকে’ এর অর্থায়নে ইউনিসেফের কার্যকরী সহায়তায় কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার ১১টি উপজেলা হল কমপ্লেক্স ও বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে কিশোর কর্নার স্থাপন হবে।
পাশাপাশি স্কুল হেলথ কমপ্লেক্সেও এ উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে গত বছরের অক্টোবরে কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় পুরোদমে শুরু করা যায়নি। ক্লিনিকে শুধু লজিস্টিক বিষয়গুলো স্থাপন করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইউনিসেফ থেকে একজন প্রশিক্ষিত সার্ভিস প্রোভাইডার নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি কিশোর-কিশোরীদের শারিরীক ও মানসিক বিষয়ে কাউন্সিলিং করবেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবাও দেবেন।
এখনও অনেকে না জানলেও বগুড়ার স্কুল হেলথ ক্লিনিকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী চিকিৎসাসেবা নিতে আসে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়।
ক্লিনিকের রেজিস্টারের তথ্যে দেখা গেছে, জুন মাসে ৪৫৯ জন শিক্ষার্থী সেবা নিয়েছেন। আর জুলাইয়ের সেবা পেয়েছে ৩২৬ শিক্ষার্থী। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই কিশোরী।
সম্প্রতি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা হয় নুরুন্ননাহার নামে এক গৃহিনীর সঙ্গে। তার ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। মেয়ে নুসরাত সর্দি-কাশিতে ভুগছে।
জলেশ্বরীতলার বাসিন্দা নুরুন্নাহার বলেন, ‘স্কুল ক্যাম্পেইন থেকে ক্লিনিকটি সম্পর্কে জানতে পারি। পরে এখানে এলে বুঝতে পারি চিকিৎসকরা খুব যত্ন করে বাচ্চাদের দেখেন। এ জন্য মেয়ের যে কোনো অসুখে এখানেই আসি।’
ক্লিনিকে গেলে দেখা যায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় দায়িত্বে আছেন ফার্মাসিস্ট ফারজানা। তিনি জানান, দেশের ২৩টি স্কুল হেলথ ক্লিনিকের একটি বগুড়ার এ প্রতিষ্ঠান। ৬০ এর দশকে এটি স্থাপন করা হয়।
ফারজানা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির আরও প্রচার-প্রচারণা দরকার। এ ছাড়া ক্লিনিকের চারপাশেই আবাসিক ভবন। মানুষ বাসা-বাড়ির ময়লা জানালা কিংবা বারান্দা থেকে ক্লিনিকের আঙিনায় ফেলে দেন। একাধিকবার বলার পরও তারা সচেতন হন না।’
আরও পড়ুন:বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে সান্ত্বনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসক পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন মুনতাকা ডিলশান ঝুমা।
উপজেলা প্রশাসন এমন তথ্যে অভিযানে গিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। মুনতাকা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চিকিৎসক হিসেবে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। চিকিৎসক সেজে প্রতারণার দায়ে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার উলানিয়া বাজারের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুন নবী।
তিনি বলেন, ‘অভিযানে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিক্যাল অফিসার মুনতাকা ডিলশান ঝুমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি চিকিৎসক হিসেবে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তিনি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।’
ইউএনও আরও জানান, মুনতাকাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অভিযানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইয়েদ মো. আমারুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে কলেজের সামনের সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। ইন্টার্নদের ধর্মঘটের কারণে রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।
সোমবার রাত সোয়া ১১টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেডিক্যালের ফটক বন্ধ করে সড়কে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও।
মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, রোববার হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজনরা দায়িত্বে থাকা এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী শাহ অসিম ক্যানেডি বলেন, ‘রোববার এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর দুই স্বজন খারাপ ব্যবহার করে। আমরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেই।
‘এ ঘটনার জেরে আজ রাত ৮টায় কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগতরা আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে দুজন গুরুতর আহত হন।’
তিনি জানান, হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন রুদ্র নাথ ও নাইমুর রহমান ইমন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমদ মুন্তাকিম চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত আমরা কাজে যোগ দেব না।’
মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উপর হামলা নিন্দনীয়। আমরা এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি।’
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘটে গেলেও চিকিৎসা সেবায় ব্যঘাত ঘটছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্যান্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের সেবা অব্যহত রেখেছেন।’
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে আছি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন:উন্নত চিকিৎসা সেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে রাজধানীর বসিলায় উদ্বোধন হয়েছে ইসলামি চক্ষু হাসপাতালের।
সোমাবার মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ বসিলা রোডে হাসপাতালের উদ্বোধনের সময় ২০ জন রোগীকে বিনামূল্যে সেবা দেয়া হয়।
হাসপাতালটির সেবার মান ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন হাসপাতালের কর্ণধার মো. সারওয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা অল্প খরচে চোখের ফ্যাকো সার্জারিসহ নানা চিকিৎসা দিচ্ছি। এখানে যোগ দিয়েছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. মো. ফিরোজ। ব্যবসা নয়, যদি মানুষকে সেবা দিতে পারি সেখানেই আমাদের স্বার্থকতা। বরিশালেও আমাদের একটি শাখা আছে। করোনাকালীন দুর্যোগে আমরা গ্রাম পর্যায়ে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প করেছি। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ফ্রি চোখের অপারেশন করতে পেরেছি।
ঢাকাতে ইসলামি চক্ষু হাসপাতালের সেবা বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৬৫ জন।
রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
সবশেষ শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৫ হাজার ৭২০ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এই ভাইরাসে আগের দিন শনিবার মৃত্যু হয়েছিল তিনজনের। নতুন রোগী ছিল ৩৪৯ জন। শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক ৬৪।
সর্বশেষ মারা যাওয়া তিনজনের শরীয়তপুর, দিনাজপুর ও সিলেট বিভাগের বাসিন্দা।
দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫ হাজার ২৫৭ জনের। মারা গেছেন ২৯ হাজার ২৯১ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৪১০ জন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক সিরিঞ্জে ৩০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার ঘটনায় তদন্তে নেমেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। রাজ্যের সাগর জেলার একটি স্কুলে করোনার টিকা দেয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
ভারতে এ পর্যন্ত ২০০ কোটির বেশি ডোজ করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জন্য ‘একটি সুই, একটি সিরিঞ্জ কেবল একবার’ দেয়ার বাধ্যতামূলক করেছে।
এইচআইভির মতো মারাত্মক রোগের বিস্তার এড়াতে ভারতে একক-ব্যবহারের ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে এক সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহারের ঘটনা আগেও ঘটেছে ভারতে। সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে হাসপাতালগুলোতে একটি সিরিঞ্জ পুনরায় ব্যবহারের অভিযোগ পুরোনো।
সাগর জেলার ওই স্কুলে টিকার দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী জিতেন্দ্র রাই। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ আমাকে কেবল একটি সিরিঞ্জ দিয়েছে। আমি কেবল আদেশ অনুসরণ করেছি।’
যেসব অভিভাবক টিকা নেয়ার সময় সন্তানের সঙ্গে স্কুলে উপস্থিত ছিলেন, তারা বিষয়টি দেখে কর্তৃপক্ষকে জানান। রাজ্যের কর্মকর্তারা যখন স্কুলে পৌঁছান, তখন জিতেন্দ্র স্কুল থেকে লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন; বন্ধ ছিল তার মোবাইল ফোনটিও।
রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার মামলা করেছে। পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে সরঞ্জাম পাঠানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে তদন্ত।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিরোধী দল ন্যাশনাল কংগ্রেস। দলটি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
চীনের পর ভারতই দ্বিতীয় দেশ, যেখানে ২০০ কোটির বেশি করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। জুলাইয়ে ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উপলক্ষে সব প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ৭৫ দিনের বিনা মূল্যের কোভিড বুস্টার ডোজ প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছে সরকার।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ৯৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক কোভিড ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন; দুই ডোজ পেয়েছেন ৯০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য