আগামী ২৭ জুলাইয়ের ভোটকে ঘিরে একটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ২৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পরে দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রার্থী তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কোথায় কারা প্রার্থী
ঝিনাইদহ শৈলকূপায় চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন এম আব্দুল হাকিম আহমেদ।
দুটিটি পৌরসভার মধ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মেয়র পদে হাবিবুর রহমান, ক্ষেতলালে সিরাজুল ইসলাম বুলুকে মেয়র পদে প্রার্থী করা হয়েছে।
ইউনিয়নের ভোটে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁওয়ে মতিউর রহমান, বাচোরে জীতেন্দ্র নাথ বর্মন, নন্দুয়ারে আব্দুল বারীর হাতে নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে রেজাউল করিম নান্নু, রামনাথপুরে শাহ্ মো. মোফাজ্জল হোসেন, পীরগঞ্জে নূরুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হোসেন আলী বাগছীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নে ইব্রাহিম ফারুক, টাঙ্গাইল সদরের কাতুলী ইউনিয়নে ইকবাল হোসেন, মাহমুদনগরে সাহাদৎ হোসেন, কাকুয়ায় বদিউজ্জামান ফারুকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে খুরশীদ আলম (মাসুম), মেঘচামীতে হাসান আলী খাঁন, আড়পাড়ায় আরমান হোসেন (বাবু) কে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
মুন্সীগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নে শাহ নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন নৌকা।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়ায় হাফিজুল ইসলাম জুয়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা (উত্তর) ইউনিয়নে আবুল খায়ের, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইলে আবু মুছা মজুমদার, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁওয়ে সৈয়দ মনজুর হোসেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরীতে হাসান মাকসুদ, চরআবদুল্যাহে কামাল উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর সদরের দিঘলী ইউনিয়নে সালাউদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন নৌকা।
রাঙ্গামাটি লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নে রকি চাকমাকে মার্কা তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:দেশের ৪টি পৌরসভা ও দুটি উপজেলা পরিষদে সাধারণ নির্বাচন হবে বুধবার। এদিন ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন ও ৫৩টি ইউনিয়নে উপনির্বাচন হবে।
পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের সব ভোটই হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সেসব স্থানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। আর ইউনিয়ন পরিষদের ভোট হবে ব্যালট পদ্ধতিতে।
নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান আরজু এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার দায়িত্বভার পেয়ে গত ১৫ জুন কুমিল্লা সিটির ভোটের পাশাপাশি পৌরসভা ও ইউপিসহ প্রায় ১৮০টি নির্বাচনের আয়োজন করে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)৷ ফল ঘোষণায় বিলম্ব ছাড়া তেমন বিতর্ক হয়নি এসব ভোটে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বরাবরই সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে আসছেন। ভোটারদের হতাশ না হয়ে ভোটকেন্দ্রে ফেরার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। উপনির্বাচন ও সাধারণ নির্বাচন মিলিয়ে আউয়াল কমিশনের জন্য বুধবার আরেকটি পরীক্ষার দিন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এসব নির্বাচনে মনোনয়ন জমার শেষ সময় ছিল ২৮ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ জুন ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ৭ জুলাই।
যেসব স্থানে উপনির্বাচন হবে সেখানে প্রার্থীর মৃত্যুজনিত বা মনোনয়নপত্র দাখিল না করা, শপথ না করাসহ বিভিন্ন কারণে চেয়ারম্যান,মেম্বারসহ বিভিন্ন পদ শূন্য আছে।
আরও পড়ুন:নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত চলমান রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নিচ্ছে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে যে সংলাপ হওয়ার কথা, তাতে ইসলামী আন্দোলন তালিকাভুক্ত আছে। ইসির জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান আরজু সোমবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপে অংশ না নিলেও অন্য তিনটি দল অষ্টম দিনের সংলাপে অংশ নিচ্ছে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য সংলাপে যাবেন বলে জানা গেছে।
এদিন বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ১১ জনের সংলাপে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালুর নেতৃত্বে মোট ১৩ জন সদস্য সংলাপে অংশ নেবেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে ভোটের দেড় বছর আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এ লক্ষ্যে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় থাকা বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল ইসির এ সংলাপ বর্জন করেছে।
মঙ্গলবার অষ্টম দিনে এসে ২৮টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ‘না’ করে দেয়ায় মঙ্গলবার পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা দাঁড়াবে ২১টি। এরপর আরও ১১ দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে বসার কথা রয়েছে, যা চলবে এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:ভোটকেন্দ্রে এক ফল আর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভিন্ন ফল জানানোয় এক প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মাঝুখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটের ফলাফলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের অনিয়মের প্রমাণ পায় ইসি। এর পরই এমন নির্দেশ দেয়া হলো।
রফিকুল কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
দায়িত্বহীন কার্যক্রম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে মনে করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠি মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
সোমবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান আরজু নিউজবাংলাকে এসব বিষয়ে নিশ্চিত করেন।
আউয়াল কমিশন নির্বাচন ব্যবস্থার দায়িত্ব নেয়ার পর ভোটে অনিয়মের দায়ে এই প্রথম কোনো প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দেয়া হলো।
গত মাসের ১৫ জুন গাজীপুরের মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের ভোট হয়। ভোটের পর কেন্দ্রে এক ফল আর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভিন্ন ফল জানান বলে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে নির্বাচনের পর ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদের প্রার্থী মোশারফ হোসেন প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক কেন্দ্রে ঘোষিত ফল বহাল রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর আবেদন জমা দেন।
তার এই আবেদনের বিষয়ে তদন্ত করা হলে প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।
নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১ অনুযায়ী, কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে প্রদত্ত কমিশন বা রিটার্নিং অফিসারের কোনো আদেশ বা নির্দেশ পালনে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হইলে বা অস্বীকৃতি জানালে বা নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো আইনের বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করলে বা এর অধীন কোনো অপরাধ করলে তিনি অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য হবেন। এই ধরনের অসদাচরণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।
এই আইনে আরও বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তা অসদাচরণ করলে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করতে পারবে। এ ছাড়া তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারবে বা তার পদাবনতি হতে পারে।
সেই সঙ্গে পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখারও বিধান আছে।
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচনে দেশের সবগুলো রাজনৈতিক দলই অংশ নেবে বলে আশা করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি রাঙ্গামাটিতে নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রোববার তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের অবস্থান বড় কথা নয়, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর সংলাপ হচ্ছে। আমার মনে হয়, এই সংলাপের পর নির্বাচন কমিশন কী বলবে, সেটা শোনার জন্য আমরা অপেক্ষা করব।
‘আমি মনে করি, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের একটা পরিবেশ আছে। সবাই এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেই আমি আশা করি।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে গত ১৭ জুলাই থেকে এ মাসের শেষ পর্যন্ত নিবন্ধিত ৩৯ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারণ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসি। অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা সংলাপে অংশ নেবে না।
বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করতে সরকার ভৌত-অবকাঠামো নির্মাণ করছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৩৩টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে. হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সেখানে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
‘আপনারা জানেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, এ স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য বিচার বিভাগকে কিছু সুবিধা দিতে হয়। ভবন নির্মাণ হলে অপরের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে কাজ করা যায়, সেটাও স্বাধীনতার অংশ।’
আরও পড়ুন:সঠিকভাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব পালন করতে পারার জন্য দোয়া চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রোববার বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সঙ্গে সংলাপে সমাপনী বক্তব্যে এই দোয়া চান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। সব অংশীজনের প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে, কমিটমেন্ট থাকতে হবে যে তারা নির্বাচনকে সহযোগিতাপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দেবে।’
নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করেন হাবিবুল আউয়াল। বলেন, ‘কেউ বলছে নির্বাচনকালীন সরকার, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যদিও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে, সেই সরকার আমাদের সহায়তা করবে। সেটি সরকারের সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব হবে। কমিশন তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা সংবিধান, আইন ও বিধির আলোকে প্রয়োগ করবে।’
রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আমাদের যে দায়িত্বের কথা আপনারা বলেছেন, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করবো ইনশাআল্লাহ। আপনাদের লিখিত ও মৌখিক মতামত পেয়েছি এবং এটা আমরা পরবর্তীতে পর্যালোচনা করব অবশ্যই।
‘আবারও বলছি জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন একটি কঠিন ও জটিল কর্মযজ্ঞ। সবার আন্তরিক সমবেত প্রয়াস থাকলে এমন কঠিন ও জটিল কর্মযজ্ঞ সাধন অসাধ্য নয়। নাগরিক সচেতনতা প্রয়োজন এবং সবার আন্তরিক সহায়তা, সমবেত প্রয়াস ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আল্লাহর পাকের রহমত এবং দয়া যদি না থাকে আমাদের জন্য বিষয়টি কঠিন হবে। কাজেই আমাদের জন্য আপনারা অবশ্যই দোয়া করবেন যেন আমরা আমাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে পারি।’
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ্য করে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করেছি। সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে অনুরোধ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের একটাই অনুরোধ থাকছে, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের করণীয় নির্ধারণে আপনারাও ভূমিকা রাখবেন। অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সবারই প্রত্যাশা। সে লক্ষ্যে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা সবার পরামর্শ ও মতামত জানার জন্য চেষ্টা করছি।’
দলটির আমীর হযরত মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজীর নেতৃত্বে ১২ সদস্য ইসির সংলাপে অংশ নেন। সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। যা চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত।
নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। চলমান সংলাপের ষষ্ঠ দিন রোববার ৪ টি দলসহ মোট ২০টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ বিএমএল, কল্যাণ পার্টি, বিএনপি, জেএসডিসহ ৪টি দল সংলাপ প্রত্যাখ্যান করল। যার ফলে ষষ্ঠ দিনে শেষ পর্যন্ত সংলাপ শেষ হবে ১৬ দলের সঙ্গে। বাকি থাকবে আরও ১৯টি দল।
আজ আরও তিনটি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। এর মধ্যে জেএসডি সংলাপ প্রত্যাখ্যান করলেও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ হবে।
আরও পড়ুন:জাতীয় স্বার্থে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চেষ্টা অব্যাহত থাকবেও বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলকে অংশ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিবার্যভাবে জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
নির্বাচনে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রয়োজন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘পক্ষ-প্রতিপক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণে নির্বাচনে একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে। এতে করে সম্ভাব্য অনিয়ম, কারচুপি, দুর্নীতি, অর্থশক্তির বৈভব ও পেশিশক্তির প্রভাব বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। এটা আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এ মুকিতের নেতৃত্বে সংলাপে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।
৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা ছিল। তবে বিএনপিসহ তাদের জোটভুক্ত দুটি দল ইসির সংলাপ প্রত্যাখ্যান করায় এ পর্যন্ত ১২টি দল ইসির ডাকে সাড়া দিয়েছে।
আরও পড়ুন:হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে আগামী ২৭ জুলাই অনুষ্ঠেয় রংপুরের তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিন দেশের তিনটি পৌরসভা ও ২৩টি ইউনিয়নে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। একই দিনে শৈলকূপা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হবে।
তিন ইউপির নির্বাচন স্থগিতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
মঙ্গলবার ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাইকোর্টের ২৯ মে দেয়া একটি রিট পিটিশনের রায়ের নির্দেশনা প্রতিপালন এবং পরবর্তী আইনগত জটিলতা পরিহার করতে রংপুর জেলার তিন ইউপির নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৭ জুলাই অনুষ্ঠেয় রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলাধীন রায়পুর, রামনাথপুর ও পীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারিসহ পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
আগামী ২৭ জুলাই দোহার, পাঁচবিবি ও ক্ষেতলাল পৌরসভা নির্বাচনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৩ ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। এদিন ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন হবে।
তফসিল অনুযায়ী এসব নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার দেয়ার শেষ সময় ছিল মঙ্গলবার ২৮ জুন, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৩০ জুন এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ৭ জুলাই।
মন্তব্য