× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
People of 4 villages are terrified of unknown animals
google_news print-icon

‘অজ্ঞাত প্রাণীর’ আতঙ্কে ৪ গ্রামের মানুষ

অজ্ঞাত-প্রাণীর-আতঙ্কে-৪-গ্রামের-মানুষ
‘অজ্ঞাত প্রাণী’র হামলায় আহত মাহমুদপুর গ্রামের আসিয়া বেওয়া। ছবি: নিউজবাংলা
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অজ্ঞাত প্রাণীর আক্রমণে সাধারণ মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় বন বিভাগে জানানো হলেও কার্যকরী ভূমিকা নেয়নি। বাধ্য হয়ে দিনের বেলা লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করছেন এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে একটি শিয়ালকে হত্যা করেছেন স্থানীয়রা।

অজ্ঞাত প্রাণীর আতঙ্কে রয়েছেন দিনাজপুর সদর উপজেলার চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে ওই প্রাণীর কামড়ে চার দিনে সাতজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার শিকার গ্রামগুলো হলো দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর, মাহমুদপুর, খামার ঝাড়বাড়ী ও হাজীপাড়া।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অজ্ঞাত প্রাণীর আক্রমণে সাধারণ মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় বন বিভাগে জানানো হলেও কার্যকরী ভূমিকা নেয়নি। বাধ্য হয়ে দিনের বেলা লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করছেন এলাকাবাসী।

ইতোমধ্যে একটি শিয়ালকে হত্যা করেছেন স্থানীয়রা।

‘অজ্ঞাত প্রাণীর’ আতঙ্কে ৪ গ্রামের মানুষ
অজ্ঞাত প্রাণীর হামলায় আহত আরেকজন। ছবি: নিউজবাংলা

ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় ঘটনা

উলিপুর গ্রামে দিনাজপুর শহররক্ষা বাঁধের ওপর হাঁটার সময় সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম হামলার শিকার হন খামার ঝাড়বাড়ী গ্রামের ৫০ বছর বয়সী মোস্তাকিম ইসলাম। অজ্ঞাত ওই প্রাণী মোস্তাকিম ইসলামের ডান পায়ে কামড় দেয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে প্রাণীটি পালিয়ে যায়।

কিছুক্ষণ পর ওই স্থান থেকে ৫০০ গজ দূরে ওই প্রাণীর হামলার শিকার হন মাহমুদপুর গ্রামের ৫০ বছর বয়সী শরিফুল আলম। তিনি ওই বাঁধের ধারে বসে থাকা অবস্থায় তার বুকে কামড় দেয় প্রাণীটি।

পরদিন মঙ্গলবার সকালে একই বাঁধের কাছে হামলার শিকার হন মাহমুদপুর গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী আসিয়া বেওয়া। হামলার সময় ওই প্রাণী তার বাঁ হাতে ও বাঁ পায়ে কামড় দেয়। এতে তার পায়ে বেশি জখম হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুদি দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন উলিপুর গ্রামের ২৪ বছর বয়সী সুরাইয়া বেগম। প্রাণীটি তার বাঁ পায়ে কামড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

বুধবার বিকেলে ক্ষেতে কাজ করে বাড়ি ফেরার সময় অজ্ঞাত প্রাণীর হামলার শিকার হন হাজীপাড়ার ৩৫ বছরের নাজমুল ইসলাম। প্রাণীটি তার বাঁ পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়।

একই দিন সন্ধ্যায় আমবাগান থেকে বাড়ি ফেরার সময় অজানা প্রাণীর হামলার শিকার হন মাহমুদপুর গ্রামের ২১ বছর বয়সী নুর নবী। তার বাঁ পায়ের ঊরুতে কামড় দেয় সেই প্রাণী। পরে প্রাণীটি তার আবারও কামড় দেয়ার জন্য এলে তিনি লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় শহররক্ষা বাঁধের ওপর হামলার শিকার হন উলিপুর গ্রামের ৫৬ বছরের সাইদুর রহমান। প্রাণীটি তার পিঠের দিকে কামড়িয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলে প্রাণীটি পালিয়ে যায়।

হামলার শিকার সবাই দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে হামলায় গুরুতর আহত আসিয়া বেওয়াকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি শিয়াল উলিপুর গ্রামে গেলে স্থানীয়রা ঘেরাও করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে।

হামলার শিকার স্থানীয়রা কেউ কেউ বলছেন হামলা করা প্রাণী শিয়াল, কেউ বলছেন নেকড়ে, আবার কারও মতে সেটি হায়েনা।

হামলার শিকার মোস্তাকিম বলেন, ‘আমার ওপর হামলা করা প্রাণীটি কখনই শিয়াল হতে পারে না। কারণ আমি ছোটবেলা থেকে জানি শিয়াল মানুষকে দেখলে পালিয়ে যায়, যেটা হামলা করেছে শিয়ালের থেকেও অনেকটা বড় ছিল। সম্ভবত হায়েনার মতো ছিল।’

হামলার শিকার নুর নবী বলেন, ‘আমি বুধবার রাতে বাগানে আম কুড়াতে আসছিলাম। পরে বাসায় ফেরার সময় শহররক্ষা বাঁধে ওঠার আগে কয়েকটা নেকড়ে দেখতে পাই। এর কিছুক্ষণ পর একটা নেকড়ে আমার কাছে এসে বাম পায়ের ঊরুতে কামড় দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে তাকে লাথি মেরে দূরে ফেলে দিলে সেটি পালিয়ে যায়।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হামলার শিকার আসিয়া বেওয়া বলেন, ‘পাথারত গেছিন, গরু বান্দিতে, গরুখান বান্দিনু। তখন শিয়াল খান মোর ওপর ঝাঁপিয়া আসিয়া কামড় দেয়। মুই তখন একখান বাতা দিয়া শিয়ালত বাড়ি দিছু। বাতা খান কাড়ি নিয়া পানিত ফেলায় দিয়া মোর হাতত কামড় দেয়। তখন চিল্লাবার ধরিলে গ্রামের মানুষজন আসিলে শেয়ালক পিটায় দেয়।

‘পরদিন ওই শিয়ালখান আবার গ্রামত আসিয়া একজনক কামড় দিবার তানে আসে, তখন গ্রামের মানুষজন শিয়ালক ধরিয়া বান্দি মারিয়া ফেলছে।’

মাহমুদপুর গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের গ্রামে শিয়ালের কামড়ে অনেকজন আহত হয়েছেন। তাই আমরা কয়েকজন মিলে বন বিভাগের অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেছি। তারা কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

‘অজ্ঞাত প্রাণীর’ আতঙ্কে ৪ গ্রামের মানুষ
এলাকাবাসীর হাতে মারা যাওয়া শিয়াল। ছবি: নিউজবাংলা

কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা

বাসস্থান ও খাদ্যসংকটের ফলে শিয়ালের কামড়ে সাধারণ মানুষ আহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদ মোসাদ্দেক হোসেন। বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় শিয়ালের আবাসস্থল বেশি। এরা ঝাড়-জঙ্গলে বেশি বসবাস করে। তারা যুগ যুগ ধরে এই প্রকৃতির জঙ্গলগুলোতে বসবাস করছে। আর এই জঙ্গল থেকে বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি শিকার করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তারা।

‘সাম্প্রতিক নগরায়ণের ফলে জঙ্গলের সংখ্যা কমে গেছে। এতে তাদের আবাসস্থল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি তারা খাদ্যসংকটে পড়ে গেছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে মানুষের ওপর হামলা করছে।’

বন বিভাগের দিনাজপুর সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘উলিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন মানুষ আমাদের অফিসে এসে একটা মৌখিক অভিযোগ করেছিল। পরে আমাদের একটি টিম ওই এলাকায় গিয়েছিল। আমাদের টিম ওই এলাকার স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে। দুই থেকে তিন দিন শিয়ালের কামড়ের কথা শোনা গেলেও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

“পুনরায় যদি কেউ শিয়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয় তাহলে আমাদের জানানোর জন্য বলেছি। তবে কোনো শিয়াল ‘রেবিস’ নামক রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে সাধারণ মানুষকে কামড় দিতে পারে।”

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The bodies of Bangladeshi youth were hanging on the border

সীমান্তের ওপারে গাছে ঝুলছিলো বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ

সীমান্তের ওপারে গাছে ঝুলছিলো বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ

সীমান্তের ওপারে ভারতের ভেতরে সিলেটের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমাছড়া সীমান্তের ওপারে জাকারিয়া আহমদ (২৩) নামের ওই যুবকের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে খবর পান পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশকে জানিয়েছে পরিবার।

নিহত জাকারিয়া (২৩) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার লামারগ্রাম কামালবস্তির আলাউদ্দিন আলাইয়ের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে জাকারিয়া বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১২৫৭ নম্বর মেইন পিলারের ২০ নম্বর ছাফ পিলারের নিকটবর্তী ভারতের অভ্যন্তরে একটি গাছের ডালে দড়িতে ঝুলন্ত একটি মরদেহ দেখা গেছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নিহত ব্যক্তির পরিবার মরদেহটি জাকারিয়ার বলে শনাক্ত করে।

তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সোমবার একই ইউনিয়নের কাকরাইল গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে জাকারিয়ার বিয়ে হয়েছিল।

সিলেট কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ জানান, ‘সীমান্তের পিলারের ওপারে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। লাশ উদ্ধারের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র উৎমাছড়া ক্যাম্পের কমান্ডারের সাথে আলাপ হয়েছে। নিহতের পরিবার থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হলে পরবর্তীতে বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করতে পারবে। যেহেতু সীমান্তের ওপারে তাই কিছু আইনি জটিলতার জন্য লাশ উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে।’

এদিকে , বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) উৎমা বিওপি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) সমন্বয়ে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Four grams flooded the Flood Control Dam of the Muhuri River in Fenis Phulgazi

ফেনীর  ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে চার গ্রাম প্লাবিত

ফেনীর  ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে চার গ্রাম প্লাবিত

কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয় পানি ঢুকেছে । এতে চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ২০২৪ এর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার বছর না পেরোতেই আবারও বাঁধ ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দায়সারা কাজকে দুষছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জনগণ বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের দায়সারা সংস্কার ও মেরামতের কারণে এখানকার জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১০টার দিকে এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া বণিকপাড়া সহদেব বৈদ্যের বাড়ি-সংলগ্ন মুহুরী নদীর বাঁধের একটি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনগণ প্রাণপণ চেষ্টা করেও এ ভাঙ্গন ঠেকাতে পারেনি।

এতে উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বণিকপাড়া, বসন্তপুর এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যা থেকে ফুলগাজী তরকারি বাজার-সংলগ্ন স্থানে মুহুরী নদীর পানি প্রবেশ করে বাজারের একটি অংশ প্লাবিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বৃষ্টি না

হাওয়ায় ফুলগাজী বাজার থেকে পানি নেমে গেছে।

প্রতি বছর দায়সারা বাঁধ মেরামত ও নদী সংস্কার না করার কারনে স্থানীয় এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে এজন্য দায়ী করছেন। এখানকার জনগণ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে কোন ত্রাণ নয়, তারা চায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর ফুলগাজী বাজার ও ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করেছেন। তিনি স্থানীয় জনগণকে আতঙ্কিত না হয় সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ফেনীতে নদীর পানি বাড়ছে। তবে মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। বাঁধের ভাঙ্গন স্থল রক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের নিরাপত্তায় আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The ladder has to rise on the bridge of Tk 1 crore

৬ কোটি টাকার সেতুতে ওঠতে হয় মই বেয়ে

ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
৬ কোটি টাকার সেতুতে ওঠতে হয় মই বেয়ে

বরগুনার আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া নামক স্থানে সোয়া ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গুলিশাখালী খালের ওপরে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। মই বেয়ে ওঠতে হয় সেতুতে। যা রীতিমতো ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া ও চাওড়া এই তিন ইউনিয়নের সংযোগস্থল আমড়াগাছিয়া বাজারের পশ্চিমপাশে গুলিশাখালী খালের ওপর ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্য ৬.৭৭ মিটার প্রস্থের এই গার্ডার সেতু ৬ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ৩২৩ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের চুক্তি করে বরগুনা এলজিইডি। কাজটি পায় বরিশালের মেসার্স কহিনুর এন্টার প্রাইজ অ্যান্ড ত্রিপুরা জেভি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ১৯ মে কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ের আগেই মূল সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন। কিন্ত বিপত্তি দেখা দেয় সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে। সেতুর পশ্চিম পাশের সেতুর ঢালের ৫ ফুটের মাথায় রয়েছে পূর্ব খেকুয়ানি গ্রামের চলাচলের জন্য সড়ক। সেতুর ডিজাইন এবং উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে এ নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতু নির্মাণের ১১ মাস ধরে সংযোগ সড়ক ছাড়া এভাবে পরে আছে। এতে তিন ইউনিয়নের ২০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পড়েছে ভোগান্তিতে। যাতায়াতের জন্য স্থানীয়রা সেতুর পশ্চিম পারে কাঠ ও বাঁশের মই বানিয়ে কোনো রকমে যাতায়াতের উপযোগী করে চলাচল করছে। এই মই বেয়ে বয়স্ক ও শিশুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। কোনো ধরনের যানবাহন সেতুতে ওঠতে না পারায় পণ্য পরিবহনে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। পণ্য পরিবহন করতে দশ কি. মি. ঘুরে মহিষকাটা সেতু পাড় হয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এতে ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুটি গুলিশাখালী, চাওড়া ও কুকুয়া এই তিন ইউনিয়নের সংযোগস্থল । এই সেতু পার হয়ে গুলিশাখালী ইউনিয়নের পূর্ব খেকুয়ানী, গুলিশাখালী, ডালাচারা, বাইবুনিয়া, কলাগাছিয়া গ্রামের শত শত মানুষ আমতলী সদর, বরিশাল, ঢাকাসহ সারা দেশে চলাচল করে। চাওড়া ও কুকুয়া ইউনিয়নের মানুষও এই সেতু পার হয়ে গুলিশাখালী ইউনিয়নে যাতায়াত করেন। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় আমাদের চলাচলে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে পণ্য পরিবহন, রোগী আনা-নেওয়ায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। মরদেহ আনা-নেওয়ায়ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দ্রুতই সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে যাতায়াতের সুব্যবস্থার দাবি করছেন এলাকাবাসী । ঠিকাদার মো. কাওছার মিয়া বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেছি। সংযোগ সড়কের জন্য আলাদা দরপত্র হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তারাই কাজ করবে। এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, সেতুর উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক তৈরি করতে গেলে পাশের একটি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে বিকল্প হিসেবে সেখানে আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে মূল সড়কটি ঠিক থাকে। এতে ব্যয় কিছুটা বাড়বে। এ লক্ষ্যে নতুন করে নকশা ও বাজেট তৈরি করে প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দরপত্র আহ্বান করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Rangamatis inaccesser

রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ে বিরল প্রজাতির গোলাপি হাতির বাস

রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ে বিরল প্রজাতির গোলাপি হাতির বাস

রাঙ্গামাটি জেলার দুর্গম পাহাড়ে বিরল প্রজাতির গোলাপি রঙের নতুন হাতির বাচ্চা দেখা গেছে। দেশে প্রথমবারের মতো রাঙ্গামাটির পাহাড়ে দেখতে পাওয়া বিরল এই গোলাপি হাতির বাচ্চাটির বয়স দুই সপ্তাহের একটু বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জেলার বরকল উপজেলার সুভলংয়ের বরুনাছড়ি ইউনিয়নের ফরেস্টের এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) এর প্রধান সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এর আগে গোলাপি রঙের হাতির দেখা পাওয়া যায়নি। এটা বাংলাদেশের প্রাণিজগতে হাতির প্রথম বিস্ময়কর ঘটনা হতে পারে। রাঙ্গামাটি শহর থেকে এক থেকে দেড় ঘণ্টায় স্পিডবোটে করে ঘটনাস্থলে যাওয়া যায়। সাধারণ বোটে হলে সময় আরো একটু বেশি লাগতে পারে।

জেলার বরকল উপজেলার বরুনাছড়ি ইউনিয়নে দুর্গম পাহাড়ে হাতির অবস্থান সম্পর্কে মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনিই প্রথম দেখতে পান একটি হাতির পাল গোলাপি রঙের হাতি শাবকসহ বরুনাছড়ি এলাকায় কাপ্তাই হ্রদ পার হতে । পরে জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্যটির ভিডিও ধারণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে পাঠান। তিনি সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

তিনি জানান, বর্তমানে বরুনাছড়িতে হাতির নতুন গোলাপি বাচ্চাসহ দুটি হাতির শাবক এবং আরো ৬টি হাতিসহ সর্বমোট ৮টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে নতুন গোলাপি বাচ্চাসহ ৫টি একটি দলে, ২টি হাতি একসাথে এবং আরো একটি বড় হাতি সেখানে অবস্থান করছে। সরজমিনে দেখা যায়, সদ্য জন্ম নেয়া হাতির ছোট শাবকটি গোলাপি রঙের। সাধারণত বাচ্চা হাতির সারা গায়ের লোম কালো হলেও নতুন বাচ্চার গায়ের রং অনেকটাই গোলাপি এবং কিছুটা ব্যতিক্রম এই গোলাপি শাবক।

এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল সরকার বলেন, পাহাড়ে হাতি সংরক্ষণের জন্য বন বিভাগ ছাড়াও ফরেস্ট বিভাগের দায়িত্বরত ব্যক্তির পাশাপাশি আরো একটি ইআরটি রয়েছে। তারা সব সময় পাহাড়ে থাকা হাতির সমস্যাসহ নানা বিষয় তদারক করে। আমরা এই টিমের মাধ্যমেই গত ১৩ জুন গোলাপি রঙের হাতির নতুন শাবকের কথা জানতে পারি। খবর পেয়ে আমরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

তিনি বলেন, ‘নতুন এই বিস্ময়কর গোলাপি রঙের হাতির দিকে বন বিভাগ নজর রাখছে।’

হাতির বাচ্চাটির গায়ের রং গোলাপি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল সরকার বলেন, নিউট্রিশনজনিত কারণেও হাতির বাচ্চার রং এরকম পরিবর্তন হতে পারে। এটি একটি গবেষণার বিষয় এবং এটা নিশ্চিত করতে একটু সময় লাগবে।

বরুণাছড়ির ঘটনাস্থলেই দেখা হয় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খানের সঙ্গে। তিনি হাতির বাচ্চার গোলাপি রঙের বিষয়ে বলেন, সাধারণত হাতির গায়ের রং কালচে ধরনের হয়ে থাকে।

হাতির চামড়ায় যে রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয় তা যদি কোন অস্বাভাবিকতার কারণে তৈরি হতে না পারে সেটি কিছুটা ফ্যাকাসে বা গোলাপি রং ধারণ করে। এই নতুন হাতি শাবকটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এটি হয় না।

তিনি বলেন, ‘হাতির জিনগত কোন অস্বাভাবিকতার কারণে অনেক সময় হাতির গায়ের রঙের ভিন্নতা আসে এবং এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’

অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ডসহ পুরো অঞ্চলে এশীয় হাতির রং এরকম গোলাপি হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। রাজাদের শাসনামলে এ ধরনের বিরল সাদাটে বা গোলাপি হাতিগুলো রাজাদের কাছে খুবই কদরের ছিল। রাজারা তাদের হাতিশালায় এসব হাতি শখ করে পুষতেন এবং হাতিগুলোকে তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করতেন। তিনি এরকম বিরল হাতি সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে যথাযথ ভূমিকা পালনের সুপারিশ করেন।

তিনি বলেন, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সব অঞ্চলে বন্য হাতি আছে সে সব অঞ্চলের প্রায় বনাঞ্চলই দখল হয়ে বসতি, বাজারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে উঠছে। ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে হাতির আবাসস্থলসহ পাহাড়ের বনাঞ্চল। এ কারণে এক সময় হাতির নিরাপদ আবাসভূমি এখন তাদের জন্য বিপদসংকুল হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পাহাড়ে হাতি আর মানুষ অনেকটা একসঙ্গেই বসবাস করছে। যার কারণে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্ব অনেকটাই বেড়ে চলেছে এবং যার অনেক আলামত আমরা চারপাশেই দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বিরল প্রাণীর অভয়ারণ্য তৈরির জন্য সরকারি বনভূমি সংরক্ষণ করে সেখানে প্রাকৃতিকভাবে স্থানীয় উদ্ভিদ বেড়ে ওঠার পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টেশন বা স্থানীয় যে সব উদ্ভিদ প্রজাতি ও বৃক্ষ প্রজাতি আছে সেগুলো বন বিভাগের মাধ্যমে রোপণ ও সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণকে সচেতন করতে হবে।

পাহাড়ের প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকাতে গোলাপি হাতিটি দেখতে এখন প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছে গবেষকসহ উৎসুক জনগণ। হাতির বাচ্চাটি ছোট থাকায় মা হাতিসহ অন্য হাতিরা তাকে হাতির শুড়ের ওপর করেও কাপ্তাই লেক পাড় হতে দেখেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে যে টিলাতে হাতিগুলো অবস্থান করছে হাতির গোলাপি শাবকটি বড় না হওয়া পর্যন্ত এই বুনো হাতির দল সেখানেই অবস্থান করতে পারে বলে ধারণা করছেন ইআরটির সদস্যরা।

তবে পাহাড়ে বিরল প্রজাতির এই গোলাপি হাতির বাচ্চাসহ পুরো হাতির দলকে নিরাপদে রাখতে সেখানে মানুষের অবাধ বিচরণকে নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তা না হলে যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাসহ হাতির আক্রমণের শিকার হতে পারে মানুষ। তাই পুরো এলাকাটি সরকারিভাবে সংরক্ষণ করাটা অনেক জরুরি।

সূত্র: বাসস

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The outbreak of dengue fever is increasing in Barguna

বরগুনায় ফের বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব

পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি টাস্কফোর্স গঠন
বরগুনায় ফের বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব

বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। জেলায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ শতাধিকের বেশি।

জানা গেছে, প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েই চলছে।

বিশেষ করে ‎‎বরগুনা সদর, আমতলী, পাথরঘাটা, বেতাগী, তালতলী ও বামনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বেশি। বরগুনা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে রোগীদেরও চাপ বেড়ে গেছে। অনেক হাসপাতালে রোগীর বেড ও জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে।

‎‎বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, চলতি জুন মাসের প্রথম দুসপ্তাহেই প্রায় ৫০০ জন নতুন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই শহর এলাকার বাসিন্দা হলেও গ্রামীণ অঞ্চলেও আক্রান্তের হার বেড়ে যাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।

‎বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকা বলেন, ‎‘চিকিৎসা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। তবে প্রতিদিন যে হারে রোগী আসছে, তা সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের বেড সংকট, স্যালাইন ও ওষুধের ঘাটতি এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।’‎

‎তিনি আরও জানান, অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের মশার কামড়ে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকায় হাসপাতাল চত্বরেও মশা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিয়েছি। এবং হাসপাতালে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বরগুনা ইউনিটের সেচ্ছাসেবকরা জনসচেতনা মূলক মাইকিং ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন।‎

‎জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ‎আমরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি টাস্কফোর্স গঠন করেছি। জেলার প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ‎তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্মিলিত সামাজিক উদ্যোগ জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, নিয়মিত মশা নিধন কার্যক্রম ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে না পারলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে বলে আশঙ্কার কথা বলেন তিনি।

‎‎বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‎‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও মশক নিধনে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

‎তবে বরগুনা পৌরসভার অনেক নাগরিক অভিযোগ করছেন, পৌরসভার মশক নিধন কার্যক্রম যথেষ্ট নয়। অনেক এলাকায় এখনো মশার প্রজননস্থল পরিষ্কার করা হয়নি। ‎বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তি ও পারিবারিক সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। প্রতিদিন ঘরের আশপাশের জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া, ফুলের টব, ড্রাম, কনটেইনার, এসি ট্রে ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। এছাড়া দিনে ও রাতে মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার ও মশা নিধনের স্প্রে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মন্তব্য

p
উপরে