আর ঘণ্টাদুয়েক পর পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট। পদ্মা সেতুর আদলে প্রস্তুত করা হয়েছে জনসভা মঞ্চ। সেখানে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
সমাবেশ সফল করতে শনিবার ভোর থেকেই জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মিছিল নিয়ে ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ সভায় যোগ দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
ভোর ৫টার দিকে প্রায় হাজারখানেক মানুষের জটলা দেখা যায় সেখানে। সবার মুখে মুখে স্লোগান, পুরো এলাকাজুড়ে উৎসব উৎসব রব। সকাল ৬টার পর খুলে দেয়া হয় জনসভার জমায়েতের স্থান। দীর্ঘ লাইনে সবাইকে চেক করে ঢুকতে দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের।
পদ্মা সেতুর কাঁঠালবাড়ী সংযোগ সড়ক থেকে হেঁটে আসতে হচ্ছে তাদের। কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে লঞ্চযোগে সাধারণ মানুষ আসছেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। সকল ৭টার মধ্যেই জনসভাস্থলের প্রায় অর্ধেক এলাকা পূর্ণ হয়ে যায়।
ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বাংলাবাজার ঘাট নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে পুলিশ, র্যাবসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুরো ৮ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই আনা হয়েছে সিসিটিভির আওতায়। এ ছাড়া বসানো হয়েছে ২৬টি বড় পর্দার মনিটর।
বরিশাল থেকে আসা রমিজউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১টায় লঞ্চে উঠছি। সারা রাত নাচ-গান করে সকালে ঘাটে নামছি। এটা ঈদের আনন্দের চেয়ে কোনো অংশেই কম না, বরং আমাদের মুক্তির দিন আজ। অনেক কষ্ট আর ভোগান্তি থেকে বাঁচার দিন। যে কারণে আমাদের ফুর্তি কোনো অংশেই কম নয়। বরিশাল থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ সভায় আসব।’
মাদারীপুর পৌর শহর থেকে এসেছেন নান্নু মুন্সি। তিনি বলেন, ‘সকালে আলো ফোটার আগেই চলে আসছি। প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার হেঁটে আসতে হয়েছে। এখন মাঠে আসছি, এতেই খুশি আমরা।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল মঞ্চের সামনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ অন্তত ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করেছি। পুলিশের অন্তত ১৫ হাজার কর্মী সভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এ ছাড়ার র্যাবের ২ হাজারসহ সব মিলিয়ে অন্তত ৪০ হাজার প্রশাসনের কর্মী মাঠে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় ‘পেছনে কারা কলকাঠি নেড়েছে’ তা চিহ্নিত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ রচিত এক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ঘটনায় মনে হয়নি বাঙালিরা মানুষ হয়েছে। তার কারণ বঙ্গবন্ধুকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে তারাও বাঙালি ছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে যারা সামনে থেকে গুলি করেছে, যারা স্বীকার করেছে হত্যার কথা, শুধুমাত্র তারাই কি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে? এর পেছনে অনেক বড় চক্র ছিল। এখন প্রয়োজন এর পেছনে কারা ছিল সেটি বের করা।’
এসময় তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে যারা ছিল তাদের শনাক্ত করতে কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
বিচার ব্যবস্থার গতি নিয়ে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ছয় মাসে অধস্তন আদালতে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা বেড়েছে। এটা অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রচণ্ড পরিশ্রমের ফল। বিচার কাজে গতি বেড়েছে, দূর্গতি কমেছে মানুষের। আসুন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি, যাতে মানুষকে আদালতের বারান্দা থেকে দ্রুত বাড়ির বারান্দায় ফেরত পাঠাতে পারি।
‘আমার কাছে রোজ ৪০ থেকে ৫০টা চিঠি আসে। প্রত্যেকটা চিঠি আমি খুলে পড়ি। বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে বিচার প্রার্থীদের কষ্ট, দুঃখ দূর করা।’
বিশেষ অতিথি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের কুশীলবদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠনের বিষয়ে মত দেন।
অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন সহ অন্যরা।
'বিচারক জীবনের কথা মুনসেফ থেকে জেলা জজ’ নামে বইটি রচনা করেছেন বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ।
আরও পড়ুন:ঘরে পোষ মানানো কিংবা অনাহূত যে ধরনের বিড়ালই হোক, আজ তাদের একটু আলাদা রকমের যত্নআত্তি নিন। একটু বিশেষ খেয়াল রাখুন ওদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে। কারণ আজ ৮ আগস্ট, আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস।
গ্রহের যেসব প্রাণী দীর্ঘকাল ধরে মানুষের নিবিড় সান্নিধ্য পেয়ে আসছে, তাদের একেবারেই সামনের সারিতে আছে বিড়াল। তুলতুলে, অনুসন্ধিৎসু, আদুরে আর মুডি এই প্রাণীকে ভালোবাসেন না এমন মানুষ আছে খুবই কম।
আজকের দিনে বিড়ালকে বাড়তি খুশি করতে চাইলে এখনই ছুটতে পারেন পেট শপে। বিদ্যুৎ সংকটে রাত ৮টায় দোকান বন্ধ হওয়ার আগেই কিনে আনতে পারেন তুলতুলে বিছানা বা দারুণ কোনো খেলনা। সঙ্গে বিড়ালের পছন্দের খাবার।
ধারণা করা হয়, বিশ্বে নানা প্রজাতির প্রায় ৫০ লাখ বিড়াল আছে। মাংসাশী এই তুলতুলে প্রাণীকে ভালোবেসে ঘরে জায়গা দিয়েছে সারা দুনিয়ার মানুষ, যদিও এগুলোর আদি বাস আফ্রিকায়।
বিড়াল সম্পর্কে প্রথম ঐতিহাসিক রেকর্ড প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার সংস্কৃতিতে পাওয়া যায়। মিসরীয়রা বিড়ালকে দেবতা মানত, পূজা করত।
মাফডেট নামে এক বিড়াল দেবতাকে সে সময়কার মিসরীয়রা সাপ, বিচ্ছু এবং খারাপ কিছুর বিরুদ্ধে রক্ষক হিসেবে মনে করত।
মিসরীয় রাজবংশের পতন হলেও বিড়াল ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী। গ্রিক এবং রোমানরা কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষা পেতে পুষত বিড়াল। প্রাচ্যে মূলত ধনী ব্যক্তিরা বাড়িতে বিড়াল রাখতেন।
মধ্যযুগে বিড়াল নিয়ে নানা কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপে। ১৩৪৮ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া ব্ল্যাক ডেথের বাহক হিসেবে বিবেচনা করা হতো বিড়ালকে। এ কারণেই সেই যুগে বিড়াল হত্যা অনেক বেড়ে যায়। তবে ১৬০০ দশকের পর বদলাতে থাকে দৃষ্টিভঙ্গি।
আমেরিকায় পোকামাকড় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔপনিবেশিক জাহাজে বিড়ালের দেখা মিলত। আধুনিক সমাজে এখন বিড়াল পোষা রীতিমতো শখে পরিণত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার নামে একটি সংগঠন ২০০২ সাল থেকে আগস্টের প্রথম সোমবার অর্থাৎ আজকের দিনটিতে বিড়ালদের ছুটিও ঘোষণা করেছে।
আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবসে তাই বিড়াল বাড়তি আদরযত্ন চাইতেই পারে। তবে বছরের বাকি দিনও যে ওদের নয়, সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আপনি না চাইলেও পোষা বিড়াল ঠিকই জানে কোন কৌশলে আপনার মনোযোগ কেড়ে নিতে হয়।
আরও পড়ুন:সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার পুলিশ লাইনসের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া অনেককে কবর দেয়া হয়েছিল। এতদিন অরক্ষিত অবস্থায় পড়েছিল গণকবরটি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ।
‘স্মৃতি ৭১’ নামের এ স্মৃতিস্তম্ভটি রোববার উদ্বোধন করেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। জেলা পুলিশের উদ্যোগে এটি স্থাপন করা হয়।
এর নকশা করেছেন স্থপতি রাজন দাশ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল ধরে এ বাংলার মৃত্যুপরবর্তী যে লৌকিকতা চর্চিত হয়ে আসছে, অর্থাৎ মাটির মানুষ মাটিতেই ফিরে যাবে, মাটিতেই রচিত হবে তার কবর, গোর বা সমাধি; সেই সমাধি বা কবরের একটি লোকস্থাপত্যধারা লক্ষ করা যায়। এই গণকবরের ওপর নির্মিত স্থাপত্যধারাটি সেই ধারাতেই অনুপ্রাণিত।’
এসপি ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘দেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে।’
বীর মুক্তিযােদ্ধা ও স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধে সিলেটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ বীর মুক্তিযােদ্ধাসহ অসংখ্য মানুষকে গণকবর দেয়া হয় এখানে।
রিকাবীবাজারের পাশের মুন্সিপাড়াসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার বীর মুক্তিযােদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করে ফেলে রাখে। তাদের মরদেহ এনে স্বজন ও পরিচিতজনরা পুলিশ লাইনসের ভেতর একটি ডোবায় গণকবর দেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পরই গণকবরটি চিহ্নিত করা হয়। কতজনকে এখানে কবর দেয়া হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান কোথাও সংরক্ষিত নেই।
তবে কবর দেয়া আট শহীদের নাম-তথ্য জানিয়েছেন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা। তারা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক আবদুল লতিফ, হাবিলদার আবদুর রাজ্জাক, কনস্টেবল মােক্তার আলী, শহর আলী, আবদুস ছালাম, মাে. হানিফ ব্যাপারী, মনিরুজ্জামান ও পরিতােষ কুমার। তারা কোন থানায় ছিলেন তা জানা যায়নি।
এসব পুলিশ সদস্য ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল জিন্দাবাজার এলাকার তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংকে (বর্তমানে সােনালী ব্যাংক) দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ব্যাংকের টাকা লুটের উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যদের হত্যা করে। দুদিন পর তাদের পুলিশ লাইনসে কবর দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:সোনালী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০২১ সালের বার্ষিক হিসাব বিবরণী ও লভ্যাংশের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শেয়ারধারীদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে ১ শতাংশ নগদ ও ৯ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১০ পয়সা নগদ দেয়া হবে এবং প্রতি ১০০ শেয়ারে ৯টি দেয়া হবে বোনাস শেয়ার।
এই কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোনালী ইনভেস্টমেন্ট এবং সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী।
ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর আতাউর রহমান প্রধান, সোনালী ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক ও সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুরশেদুল কবীর, জেনারেল ম্যানেজার সুভাষ চন্দ্র দাস, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শিহাব উদ্দিন আহমদ এবং সোনালী ইনভেস্টমেন্টের সিইও শওকত জাহান খান।
এ ছাড়া ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, মো. মজিবর রহমান, সঞ্চিয়া বিনতে আলী ও মো. কামরুজ্জামান খান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
পর্যটনশিল্পের বিকাশ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে ঢাকা ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সিঙ্গাপুরের মেরিনা স্যান্ডস্ বে হোটেলে চার দিনব্যাপী ‘ওয়ার্ল্ড সিটিজ সামিট’-এ অংশ নিচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের জাতীয় উন্নয়নমন্ত্রী ও সামাজিক সেবা সমন্বয়করণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেসমন্ড লির সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র তাপস। সেখানেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলা ও শহর ব্যবস্থাপনায় টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে ঢাকার উদ্যোগকে অত্যন্ত প্রশংসনীয় উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী ডেসমন্ড লি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল ও আধুনিক নগরী হিসেবে ঢাকা গড়ে উঠবে বলে আশাবাদী।’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামষ্টিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি।
বৈঠকে পর্যটনশিল্পের বিকাশ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে ঢাকা ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে অভিমত দেন দুই নেতা। ঢাকা-সিঙ্গাপুর বাণিজ্য বাড়াতেও তারা আলোচনা করেন।
মেয়র তাপস পরে জাপানের ফুকুওকা শহরের মেয়র সোইচিরো তাকাসিমার সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে দুই মেয়র নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলাপ করেন। ফুকুওকার মেয়র বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনের পাশাপাশি উপজাতসমূহের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তুলে ধরেন। পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়াতে ফুকুওকার মেয়রকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান মেয়র তাপস।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম ও মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩১ জুলাই সিঙ্গাপুরের মেরিনা স্যান্ডস্ বে হোটেলে চার দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড সিটিজ সামিট-২০২২ শুরু হয়েছে। সামিটে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৬০ দেশের মেয়ররা অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর তেজগাঁও লিংক রোডে প্রকাশিতব্য দৈনিক বাংলা পত্রিকা এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যম নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের যৌথ কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে সোমবার দুপুরে ভবনটি উদ্বোধন করা হয়।
শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিনে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের জন্য দোয়া করা হয়।
ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের উপদেষ্টা সম্পাদক এবং দৈনিক বাংলা লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার, সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, প্রকাশক শাহনুল হাসান খান, দৈনিক বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু এবং নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল বক্তব্য রাখেন।
দুই প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের উদ্দেশে মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অনলাইন নিউজপোর্টাল হিসেবে নিউজবাংলা ইতোমধ্যে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দৈনিক বাংলা পত্রিকাও দেশের সাংবাদিকতাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেবে। তিনি দায়িত্বশীল ও সাহসী সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এবং এটির বিকাশে বিনিয়োগকারী হিসেবে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, ‘নিউজবাংলা আজকে একটা ভালো জায়গায় গিয়েছে। দৈনিক বাংলার কুঁড়ি এসেছে মাত্র, ফুল এখনও ফোটেনি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটার পেছনে লেগে আছি। ইনশাআল্লাহ আমরা বড় আকারে এগিয়ে যাব।’
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আগস্ট মাস শোকের মাস। এ জন্য আমরা এই ভবন উদ্বোধনের জন্য মিলাদের আয়োজন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমরা নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলা নিয়ে কাজ করছি। নিউজবাংলা ইতোমধ্যে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। অনেকে নিউজবাংলাকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছে।
‘আমাদের টিম প্রতিষ্ঠার পেছনে অনেক শ্রম ব্যয় হয়েছে। অনেকে অনেক কিছুতে বায়াসড হয়ে যায়। আমরা কোনো কিছুতেই ইন্টারফেয়ার করি না। যেটা সঠিক নিউজ মনে হবে, সেটা আপনারা করবেন। আমরা এভাবেই কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘পত্রিকাটা আপনাদের, আপনাদেরই চালাতে হবে। সুনামটা ধরে রাখতে হবে। দৈনিক বাংলার একটা নস্টালজিক ব্যাপার আছে, সেটা মানুষের কাছে যাতে নিয়ে যেতে পারি, এটা আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে।’
প্রকাশক শাহনুল হাসান খান বলেন, ‘শোককে শক্তিতে রূপান্তরের প্রত্যয় নিয়ে আমরা শুরু করছি। এখানে দুটো প্রতিষ্ঠান নয়, প্রতিষ্ঠান একটাই। প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে দৈনিক বাংলা, অনলাইন মিডিয়ার ক্ষেত্রে নিউজবাংলা, যেটা অলরেডি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড। নিউজবাংলা তার কর্মকাণ্ডে মার্কেটে সুনাম প্রতিষ্ঠা করেছে। যেটার জন্য আমরা গর্বিত। আশা করি সামনে আরও ভালো হবে।’
নিউজবাংলার নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে, বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে দৈনিক বাংলা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেই রকম একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকতে পারার যে গৌরব, তা আমরা প্রত্যেকে অনুভব করি। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত এই গৌরব নিবিড়ভাবে অনুভব করতে পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সারা বাংলাদেশে যে মর্যাদা নিয়ে ছিল, সেই মর্যাদার জায়গায় আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘পৌনে দুই বছর ধরে নিউজবাংলা সংবাদ পরিবেশন করছে। এক দিনের জন্যও আমাদের উদ্যোক্তারা সম্পাদকীয় নীতিমালায় কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। তারা চেয়েছেন স্বাধীন একটি সম্পাদকীয় নীতিমালা এবং পেশাজীবী সাংবাদিকদের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান।’
দৈনিক বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু বলেন, ‘দুই প্রতিষ্ঠানের একই মালিক, একই সম্পাদক- আমরা একসঙ্গে কাজ করব। সেই কাজের শপথ, প্রত্যাশা আজ থেকে শুরু হলো।’
মিলাদ মাহফিলে স্ট্র্যাটেজিক হোল্ডিংসের সিইও-১ এহসানুল কবির, সিইও-২ শরিফুল ইসলাম, চিফ মার্কেটিং অফিসার রিয়াদুজ্জামান হৃদয়, নিউজবাংলার বার্তা বিভাগের প্রধান সঞ্জয় দে, প্রধান বার্তা সম্পাদক ওয়াসেক বিল্লাহসহ নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:লঙ্কান অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড (এলএএফএল) সম্প্রতি টেকসই অর্থনীতি নিয়ে কর্মশালা করেছে।
রাজধানীর গুলশানে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য ‘টেকসই আর্থিক এবং পরিবেশগত এবং সামাজিক কারণে পরিশ্রম’ বিষয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের পরিচালক খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত।
মঙ্গলবার এলএএফএলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কর্মশালায় এলএএফএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কান্তি কুমার সাহা, হেড অব বিজনেস শাহানুর রশীদ, সিএফও উইশবা উইকারামারাচ্চি এবং অন্যান্য সিনিয়র ও জুনিয়র এক্সিকিউটিভরা অংশ নেন।
মন্তব্য