এশিয়ার অন্যতম দুই বাণিজ্যিক কেন্দ্র হংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের শরীয়তপুরের। পদ্মা বহুমুখী সেতুকে কেন্দ্র করে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর আগেই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউজবাংলা টিম পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প ও আশপাশের এলাকা ঘুরে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে শরীয়তপুরের সম্ভাবনার বিষয়টি দেখেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঠিক মাঝখানে অবিস্থত হওয়ায় দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুর আশপাশের দেশগুলোর অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটি এখন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। আর চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।
আয়তনের দিক দিয়ে হংকং ও সিঙ্গাপুরের চেয়ে বড় পদ্মা-মেঘনার মিলিত স্রোতধারায় সিক্ত শরীয়তপুর জেলা। হংকংয়ের আয়তন ১১০৭ বর্গকিলোমিটার এবং সিঙ্গাপুরের আয়তন প্রায় ৭২৩ বর্গকিলোমিটার। যেখানে শরীয়তপুরের আয়তন ১১৮১ বর্গকিলোমিটার। এই জেলার উত্তরে মুন্সিগঞ্জ, দক্ষিণে বরিশাল, পূর্বে চাঁদপুর এবং পশ্চিমে মাদারীপুর জেলার অবস্থার।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অংশ হওয়ায় শরীয়তপুর এখন বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে। এই সেতু ও রেল প্রকল্প এশিয়ান হাইওয়ে রুটের অংশ হওয়ায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. পারভেজ হাসান নিউজবাংলাকে জানান, পদ্মা সেতুর কারণে এই জেলার আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মনোজাগতিক, শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হবে। কোনোটা খুব দ্রুত, কোনোটা ধীরে ধীরে।
তিনি জানান, মাদারীপুরের মতো শরীয়তপুরেও চার লেনের রাস্তা হবে। এই চার লেন আর পদ্মা ও মেঘনা সেতু হয়ে গেলে এই অঞ্চলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে শরীয়তপুর। তখন ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের ওয়্যার হাউস বানাবেন। বিশ্রামাগার হবে, কিছু থ্রি স্টার ও ফাইভ স্টার হোটেল হবে। সব মিলে শরীয়তপুরের অনেকটাই হংকং বা সিঙ্গাপুরের মতো হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘শরীয়তপুর এখন চাঁদপুরের সঙ্গে কানেক্টেড নরসিংহপুর যে ফেরিঘাট আছে তার মাধ্যমে। নরসিংহপুর ঘাট থেকে ফেরিতে করে চাঁদপুর দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে চট্টগ্রাম। চাঁদপুর প্রান্তেও চার লেনের রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আরেকটি সুখবর হচ্ছে মেঘনায় আরেকটি সেতু করার জন্য একনেক সভায় আড়াই শ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতু, মেঘনা সেতু আর মাঝখানে চার লেনের রাস্তা হলে বাংলাদেশের যেকোনো বন্দরেই যাওয়া যাবে শরীয়তপুরের ওপর দিয়ে।
‘বিশেষ করে বেনাপোল, মোংলা ও চিটাগাং- এই তিন পোর্টের কানেক্টিং রাস্তা হবে শরীয়তপুরের বুকের ওপর দিয়ে। তখন কেউই কিন্তু ঢাকা ঘুরে চিটাগাং যাবে না। তখন শরীয়তপুরকে দেখতে হংকং বা সিঙ্গাপুরের মতো মনে হবে। এটা হলে শরীয়তপুরের রাস্তা ও ভূমি অটোমেটিক্যালি ডেভেলপ হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান মনে করেন, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পদ্মার দুই পাশেই চীনের হংকং-সাংহাইয়ের মতো শহর গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার মনে হয়, পদ্মার দুই পাশেই হংকং-সাংহাইয়ের মতো শহর গড়ে উঠবে। সেখানে বড় বড় শহর হবে, বড় বড় রিসোর্ট হবে। এখানে যদি আমরা প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করি, তাহলে ঢাকার যে ডিমান্ড, সেটা ওই খানেই পূরণ করা যাবে। সেজন্য আমাদের একটা মেগা পরিকল্পনা থাকা উচিত, যে আমরা কীভাবে ওই এলাকা সাজাব।’
ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্যতার বড় জায়গাটায় না গেলাম, সর্বনিম্ন সমীক্ষাটিও যদি গ্রহণ করি তাহলেও দক্ষিণ বাংলার যে ২১টি জেলা আছে সেখানে ২ শতাংশ জিডিপি বাড়বে। আর পুরো দেশের জিডিপি কম করে হলেও ১ শতাংশ বাড়বে, এর বেশিও বাড়তে পারে।’
‘এটাই হলো আমাদের পদ্মা সেতু, যা বাংলাদেশের সক্ষমতা, সমৃদ্ধি, অহংকার ও সাহসের প্রতীক, যার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর মনে করেন, যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার পর দেশের অর্থনীতিতে ‘যে বিস্ফোরণ’ ঘটেছিল তার চেয়েও ‘বড় বিস্ফোরণ’ ঘটাবে পদ্মা সেতু।
তিনি বলেন, ‘যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর দেশের অর্থনীতিতে বিপুল বিস্ফোরণ ঘটেছিল, যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। পদ্মা সেতু চালুর পর অর্থনীতিতে তার চেয়েও বড় বিস্ফোরণ ঘটবে।’
ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার কানেকটিভিটি বেড়ে যাবে, যার কারণে সেখানকার কৃষি খাত বেগবান হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) খাতে বিপ্লব ঘটবে। দ্রুত পণ্য আনা-নেয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় সারা দেশে বাণিজ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে শিক্ষাব্যবস্থায়।
‘এ ছাড়া কুয়াকাটা, সুন্দরবন ও বঙ্গবন্ধুর সমাধি ঘিরে পর্যটন খাত বিকশিত হবে। অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ তখন টুঙ্গিপাড়া, ষাটগম্ভুজ মসজিদ, কুয়াকাটাসহ নদীর ওই পারে যেতে পারবে। হোটেল-মোটেল-রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠবে। মোংলা বন্দর, পায়রা বন্দরেও এনার্জি হাব হবে। ওই এলাকায় অনেক শিপ বিল্ডিং প্রতিষ্ঠান হবে। এসব শিল্পের জন্য যদি আমরা আলাদা করে প্রণোদনা দিই, তাহলে সার্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে উল্লম্ফন ঘটবে।’
ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘এখন জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের যেসব মানুষ জীবিকার তাগিদে ঢাকামুখী হয়েছে, তারা এলাকায় ফিরে যাবে এবং সেখানেই উৎপাদন, সেবা ও বাণিজ্যমুখী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবে। এসবের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জিডিপিতে।’
পদ্মা সেতুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও প্রকৌশলী ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। মৃত্যুর কিছুদিন আগে পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা ও বাস্তবতা নিয়ে লিখেছিলেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বাংলাদেশজুড়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। তখন পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে শুধু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই আমূল বদলে যাবে। এই সেতু দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ, বাণিজ্য, পর্যটনসহ সবক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী লিখেছেন, ‘এই পথটি ট্রান্স-এশীয় রেলপথের অংশ হবে। তখন যাত্রীবাহী ট্রেন যত চলবে, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি চলবে মালবোঝাই ট্রেন। ডাবল কনটেইনার নিয়েও ছুটবে ট্রেন। তখন পুরো দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।’
ড. জামিলুর রেজা বলেছিলেন, ‘কোনো বিনিয়োগের ১২ শতাংশ রেট অফ রিটার্ন হলে প্রকল্পটিকে আদর্শ বিবেচনা করা হয়। পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বছরে ১৯ শতাংশ করে বিনিয়োগ উঠে আসবে।’
‘পদ্মা সেতু বাঙালির স্পর্ধার সমান’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান মনে করেন, পদ্মা সেতু বাঙালির স্পর্ধার সমান, সাহসের সমান একটি স্থাপনা।
নিউজবাংলার কাছে এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর জেলার যে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে, সেটি হচ্ছে সোনালি সেতুর শ্যামলভূমি শরীয়তপুর। সেতুর কারণে শরীয়তপুরে সোনা ফলবে- সেই প্রত্যাশাই আমাদের।’
তার মতে, পদ্মা সেতু হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম সর্বোচ্চ শিখরে উত্তীর্ণ হওয়ার কারণেই। শুধু দেশের প্রয়োজনেই তিনি তার স্পর্ধিত পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাই পদ্মা সেতু আজ পদ্মা নদীর বুক চিড়ে দাঁড়িয়ে।’
এগিয়ে নেবে মৃৎশিল্প ও পিতল শিল্পকে
স্থানীয় কয়েকজন নিউজবাংলা টিমকে জানান, শরীয়তপুর অনেক আগে থেকেই মৃৎশিল্প ও পিতলের জিনিসপত্রের জন্য বিখ্যাত। এখানকার টেরাকোটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পটারি ইউরোপসহ বিশ্বের ২০টি দেশে যায়।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মনে করেন, পদ্মা সেতু এই দুই শিল্পকে আরও এগিয়ে নেবে। এর বাইরে ব্যাপক সম্ভাবনা আছে কৃষি খাতে, বিশেষ করে কালো জিরা, ধনিয়া ও কাঁচা মরিচের।
পর্যটনের অপার সম্ভাবনা
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণে নড়িয়া উপজেলা ও চাঁদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী, নদীর পাড় ও চরগুলো পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় বলে মনে করেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দুর্দান্ত সম্ভাবনা আছে আমাদের পর্যটনের ক্ষেত্রে। পদ্মা সেতু দেখার জন্য প্রচুর মানুষ আসবে। শরীয়তপুর থেকে জাজিরার দিকে যেতে ডান পাশে রূপবাবুর হাট বলে চমৎকার একটি জায়গা আছে, যেটি জলমহাল হিসেবে ইজারা দেয়া হয়। এ বছর ইজারা শেষ হবে। এটি মূলত পদ্মার একটি চ্যানেল, যেটি মারা গেছে।
‘আমাদের পরিকল্পনা আছে এটির দুই পাড় বাঁধাই করে একটি ফাইভ স্টার হোটেল করার। সেখানে গলফ খেলার মাঠ হতে পারে। এত সুন্দর একটি তট তৈরি হয়েছে, যেখানে ওয়াচ টাওয়ারও করা যেতে পারে সেতু দেখার জন্য। ওখান থেকে মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর জেলার কানেক্টিভিটি রয়েছে। এই অঞ্চল চর ট্যুরিজমের জন্য খুবই উপযোগী। নদীপথে যদি আমরা রিভারক্রুজের ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে দর্শনীয় একটি পর্যটন স্পট হতে পারে।’
জেলা প্রশাসক জানান, জাজিরা প্রান্তে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম হতে পারে। কারণ ঢাকা থেকে বিকেএসপি যেতে যে সময় লাগে, তার চেয়ে জাজিরায় আসতে কম সময় লাগবে। শরীয়তপুর জেলা স্টেডিয়াম আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এটিও আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচের জন্য অনুশীলন ভেন্যু হতে পারে। এটা করা গেলে এখানে হোটেল-মোটেল তৈরির সম্ভাবনা জেগে উঠবে। পদ্মা সেতুর সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে শরীয়তপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চল করা যায় কিনা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা চলছে।
শরীয়তপুরে শেখ হাসিনা কৃষি ইউনিভার্সিটি হচ্ছে। বেসরকারি পর্যায়ে বেশকছিু হিমাগার হচ্ছে জাজিরা রোডে। পদ্মা সেতুর সুবিধা কাজে লাগিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে যারা শিল্প-কারখানা করতে চান, তাদের সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।
পদ্মা পাড় দিয়ে রিভার ড্রাইভ
জেলা প্রশাসক পারভেজ নিউজবাংলাকে আরও জানান, গোসাইরহাট থেকে শুরু করে জাজিরা পর্যন্ত পদ্মা নদীর পাশ দিয়ে রিভার ড্রাইভ হবে। ইতিমধ্যে নড়িয়ার অংশে হয়ে গেছে। নড়িয়ার যে রাস্তাটা করা হয়েছে সেটাকে জাজিরা পর্যন্ত নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা চলছে। মোটরসাইকেল নিয়ে যে ছেলেটি পদ্মা সেতু পার হলো সে আর শরীয়তপুরে না গিয়ে রিভার ড্রাইভ দিয়ে সরাসরি গোসাইরহাটে চলে যেতে পারবে।
জমির দাম বেড়েছে ১০ গুণ
শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিদ্যুৎ খাতে নজিরবিহীন উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। সখিপুর থানা উপজেলা হচ্ছে। এই জনপদের চরাঞ্চলেও বিদ্যুতের আলো ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শরীয়তপুরের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ মুন্সিগঞ্জ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কার্তিকপুর, ব্রজেশ্বর ও চরসেনসাসে হচ্ছে বিদ্যুতের সাবস্টেশন।
তিনি জানান, মেঘনা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। চার লেনের রাস্তা হচ্ছে। এসব উন্নয়নের কারণে এই এলাকার জমি আগের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে। এখন এক শতাংশ জমির দাম উঠেছে ৩-৪ লাখ টাকা, যেখানে আগে কেউ এখানে জমি কিনত না। পদ্মা সেতু দাঁড়িয়ে যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই কুর্নিশ করছে বলে মন্তব্য করেন এনামুল হক শামীম।
স্বপ্ন দেখছে নিম্ন আয়ের মানুষ
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ এই এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন।
নড়িয়ার কেদারপুরের কালাচান ব্যাপারী পেশায় কাঠমিস্ত্রি। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মার দক্ষিণ পার থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া অনেক সহজ হবে। আগে ৫ ঘণ্টা লাগছে। সেতু চালু হইলে কম লাগব। মিল-কারখানা হইলে আমাগো তো সুবিধা হবেই।’
মুলফতগঞ্জের বাবুল খাঁ প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্মায় ডিঙি নৌকায় করে মাছ ধরেন। সেই মাছ বিক্রির টাকায়ই চলে সংসার। তিনি মনে করছেন, পদ্মা সেতু হলে ঢাকার মানুষ আসবে মাছ কিনতে। তাদের কাছে বেশি দাম পাবেন।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য