× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The Padma Bridge is one of the most unique structures in Bangladesh
google_news print-icon

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অসাধারণ অনন্য এক স্থাপনা

পদ্মা-সেতু-বাংলাদেশের-অসাধারণ-অনন্য-এক-স্থাপনা
পদ্মা সেতুতে একটি অভিনব ও চমৎকার ব্যবস্থার প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই। এতে কোনো নাট-বল্টু ও রেবেটিং নেই, সম্পূর্ণটা ওয়েল্ডেড বা ঝালাই করা এবং এতে কেমিক্যালের কঠিন একটা স্তর দেয়া হয়েছে, যে কারণে জং বা মরিচা ধরার কোনো সুযোগ নেই, আর ওজনটাও বেশ হালকা-পাতলা।

পদ্মা সেতু শুধু একটি যোগাযোগের বড় মাধ্যম নয়, এটা এক আবেগ ও ভালোবাসারও নাম। এটা টেকনিক্যালই চ্যালেঞ্জিং ছিল বাংলাদেশের জন্য। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জও বটে।

এ এলাকার ভৌগোলিক অবস্থাও একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে দেশে রূপান্তরকামী একটা চেতনা। বলতে পারি, পদ্মা সেতু দেশ রূপান্তরকারী একটি প্রকল্প, এটা এখন সক্ষমতার প্রতীক।

আমাদের একটা প্রবণতা ছিল- কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দাতাদের দিকে তাকিয়ে থাকা। এ প্রকল্পে কিন্তু সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি বলে মনে হয়। প্রযুক্তিগতভাবে আমরা কতটা এগিয়েছি সেটার পরিচয়ও সেতুটি বহন করে।

এর নির্মাণকৌশল ও প্রযুক্তিগত দিক দেখতে গেলে বিজ্ঞানের আশীর্বাদই সামনে ভেসে ওঠে। আমরা যদি দেশের উল্লেখযোগ্য একটি স্থাপনা হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দিকে তাকাই, তবে দেখতে পাব সেখানে ট্র্যাডিশনাল প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটেছে। লোহা, নাট-বল্টু ব্যবহৃত হয়েছে। ওই সেতুটার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সময়-অর্থ ও জনবলের প্রয়োজন হয়। নাট-বল্টু ও রেবেটিং থাকলে সেগুলো ঘন ঘন পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। সেতু যত পুরোনো হতে থাকে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা খরচও তত বাড়তে থাকে।

পদ্মা সেতুতে এ সবের দরকার হচ্ছে না, একটি অভিনব ও চমৎকার ব্যবস্থার প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই। এতে কোনো নাট-বল্টু ও রেবেটিং নেই, সম্পূর্ণটা ওয়েল্ডেড বা ঝালাই করা এবং এতে কেমিক্যালের কঠিন একটা স্তর দেয়া হয়েছে, যে কারণে জং বা মরিচা ধরার কোনো সুযোগ নেই, আর ওজনটাও বেশ হালকা-পাতলা।

সাধারণত আমাদের ব্রিজগুলোয় কংক্রিট ব্যবহৃত হয়। যেসব ব্রিজে লোহার রড থাকে সেগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়; তবে এ দ্বিতল সেতুতে দুটিরই ব্যবহার আছে। এমনভাবে এটি নির্মিত যে ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমরা এটাকে একটা কম্পোজিট ব্রিজও বলতে পারি। অবকাঠামোগতভাবে এটা বাংলাদেশের জন্য এক অসাধারণ অনন্য স্থাপনা।

যেসব স্থাপনায় রড ব্যবহৃত হয় সেখানে পানি পেলে রড ফুলে যায় এবং ক্ষয় হতে থাকে, সঙ্গে থাকা অন্য উপাদানেরও ক্ষতি করে থাকে। সে জন্য সেগুলোর স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে মোটামুটি ১০০ বছর ধরা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যারা পদ্মা সেতুতে প্রয়োগ করা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে সেখান থেকে জানা জানা যায়, এর স্থায়িত্ব ১০০ বছরের বেশি।

আমরা বলতে পারি পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা। এছাড়া স্টিল ট্রাসের সেতু হওয়ায় এটি পুনর্ব্যবহার যোগ্য (Recyclable)। কংক্রিট ব্রিজ পুনর্ব্যবহার করা যায় না বরং ডেমোলিশন একটি বড় চ্যালেঞ্জ ও পরিবেশ দূষণকারী ব্যাপার। সে বিবেচনায় পদ্মা সেতু একটি পরিবেশবান্ধব সবুজ উন্নয়ন।

রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা সেতু বা স্থাপনার ক্ষতি সাধনের পরে সেটা দেখতে বা জানতে পারি। তবে এটার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ক্ষতি বা সমস্যা হওয়ার আগেই সেটা জানা সম্ভব।

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এ ব্রিজের মধ্যে যে উন্নত ইলোকট্রনিক প্রযুক্তির মনিটরিং সেল ও সেল্ফ সেন্সর রয়েছে সেটি জানান দেবে এ স্থাপনাটির স্বাস্থ্যগত কোনো পরিবর্তন ঘটছে কি না। কোন জায়গায় কতটুকু চাপে আছে? ভূমিকম্প বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনো নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে কি না তা জানান দেবে। সংগত কারণেই এটার নির্মাণকৌশল ও প্রযুক্তিগত কারণে একে টেকসই করার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখেবে। সব মিলিয়ে বলতে পারি এবং আমার বিশ্বাস, যে প্রযুক্তি ও কৌশল পদ্মা সেতুতে প্রয়োগ করা হলো- তাতে এর স্থায়িত্ব ১০০ বছরের বেশি হবে।

ভবিষ্যতে প্রমত্ত পদ্মার গতিপথে যদি পরিবর্তন ঘটে বা সেতুর নিচে মাটির স্তরের হেরফের হয় তাতেও সমস্যা নেই। মনে রাখা দরকার, অতীত বলে নদী কখনও শাসন মানে না। যতই আমরা চেষ্টা করি ব্রিজের নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহ ও গতি ঠিক রাখতে, তা সম্ভব নয়।

নদী নতুন গতিপথ সৃষ্টি করে, এটা এর স্বভাব; নতুন চরও তৈরি করে। নদীভাঙনের লক্ষণ দেখা দিলে আগেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। আমাদের যমুনা সেতুতে যেসব গাইড দেখছি সেসব কিন্তু অনেক সময় টিকছে না।

অপরদিকে নদীর পলি মাটি বেশ ভঙ্গুর। নদীর গতি-প্রকৃতি সহজে বোঝা যায় না। যতটুকু বোঝা যায় ততটুকু হয়তো শাসন করা গেল, কিন্তু তার চরিত্র বদলাবে না। নদীশাসনের পরপরই প্রয়োজন হবে নিবিড় নজরদারি। সেতুর নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহের ব্যবস্থা হয়তো করা গেল। অনেকগুলো পিলারে পানি বাধা পাবে এটাই স্বাভাবিক। এতে কী হবে? নদীর তলদেশের মাটি ক্ষয় হবে ক্ষরস্রোতের কারণে। যে চাপটা আসবে তাতে নদী রাগান্বিত হবে এর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শাসন মানবে না, ইতিহাস এটাই বলে। প্লাবনভূমির নদীগুলোর শাসনব্যবস্থা ও প্রকৌশলগত দিকে আমরা এখনও পরিপক্ব হতে পারিনি।

পদ্মা সেতুর বিষয়ে এমন আশঙ্কা নেই। সেতু যেহেতু ভূমিকম্পরোধক ও পিলারগুলো নদীক্ষয়ের স্তর থেকে অনেক গভীরে প্রোথিত সেহেতু আমরা আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিতে পারি।

আরেকটি ইতিবাচক প্রসঙ্গ এখানে তুলে ধরতেই হয়। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অবকাঠামোগত অভূত পরিবর্তন দেখা দেবে। সেটা হবে একটু দ্রুতগতিতে। বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার পরে সিরাজগঞ্জ তথা উত্তরাঞ্চলের পরিবর্তন ঘটেছে বটে, তবে একটু ধীর গতিতে। আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ঢাকার কাছে হওয়ায় এর পরিবর্তন হবে দ্রুত।

এক সময় খুলনা কিন্তু শিল্পাঞ্চল ছিল। সেখানে একটা সমুদ্রবন্দরও আছে, মংলা। কিছু অবকাঠামোগত ঘাটতি ও সমস্যার কারণে ওই এলাকাটি একটু পিছিয়ে যায়। যেমন, সরাসরি যোগাযোগের অভাব আর ফেরির যে বাধা; তা পরিবহন বা যোগাযোগবান্ধব নয়। যে কারণে বিনিয়োগটা ওই এলাকায় যায়নি। এর ওপর বড় বেশকিছু জনবল ঢাকায় কর্মসংস্থানের জন্য আসায় রাজধানীর ওপর চাপ বেড়ে যায়।

পদ্মা সেতুর কারণে চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য ওই অঞ্চলের বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজনীয় শিল্প, কলকারখানা তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হবেন। ফিনিশিং প্রডাক্ট রপ্তানি বা বাজারজাতকরণে ওই মংলা পোর্টও বড় ভূমিকা রাখেবে। ওই অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক জনবলের কারণেও শিল্প-কারখানাগুলোর দ্রুত প্রসার ঘটবে বলে আশা করা যায়।

এসব কারণে আমি বলব একটা অর্থনৈতিক উদ্দীপনা তৈরি হবে। ওই অঞ্চলে সামাজিক, অর্থনৈতিক- সর্বোপরি মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগে পরিবর্তন ও সম্পূরক অবকাঠামোগত পরিবর্তন হবে। দেশে এখন অনেক বড় উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী আছেন, যারা এই বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ ও সম্ভবনা দেখে সেখানে বিনিয়োগ বাড়াবেন।

আমাদের বড় মাপের অর্থনীতির জন্যে দরকার বড় করপোরেট। দেশি-বিদেশির পাশাপাশি ছোট ব্যক্তি উদ্যোক্তাকেও বিনিয়োগের পরিসর পরিকল্পিত ও সমন্বিতভাবে রূপরেখা করে দিতে হবে। তা না হলে বিশৃঙ্খলভাবে ছোটখাট কলকারখানা, সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠবে। সেগুলো অবশ্যই উন্নয়ন, তবে এলোমেলো। প্রয়োজন পরিকল্পিত উন্নয়ন।

উন্নয়ন হবে তবে এটাকে গাইড করে মাত্রা ঠিক করে দিতে হবে। নইলে এলোমেলো উন্নয়ন পরবর্তী সময়ে একটা সমস্যা সৃষ্টি করবে। হয়তো এর পুরোপুরি সুফল আমরা পাব না, এজন্য সরকারের মনিটরিং বাড়ানোর আগে একটা রূপরেখা বা মাস্টার প্ল্যান করলে এর রিটার্ন আমরা পেতে পারি।

আরেকটি বিষয় আমাদের মাথায় রেখে এগোতে হবে। পদ্মা সেতুর করিডরের দুইপ্রান্তের প্রবেশদ্বারে জনজট ও যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ রাখা জরুরি। দুই পাড়ের মানুষই দীর্ঘদিন দীর্ঘ সময় ও পথ পাড়ি দিতে অভ্যস্থ ছিল। এখন দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দেবে ১৫ মিনিটে। মানুষ শুধু সেতু পার হবে না, তারা যাবে নিজেদের গন্তব্যে। সেটা ঢাকার দিকে বা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলই শুধু নয়, বিভিন্ন এলাকায় হবে। সময় হয়তো বাঁচবে, তবে যেখানে গিয়ে যানবাহন নামবে সেখানে যানজট হবে এটা স্বাভাবিক।

একটি বিশ্বমানের ব্রড ব্যান্ড সার্ভিস চালু হলো। এতদিন ছিল লোকাল সার্ভিসের চেয়েও খারাপ একটি ফেরি সার্ভিস। এ অবস্থায় ব্রিজের উপযোগিতা বাড়বে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ভাবনার বিষয় হলো, ঢাকার প্রবেশদ্বার কিন্তু প্রস্তুত নয়। যানজটটা রাজধানীর মধ্যে থেমে থেমে বা বিচ্ছিন্নভাবে হয় বা হচ্ছে, পদ্মা সেতু পারাপারের পর সেসব বাহন পড়বে দীর্ঘ যানজটে। সেসব যে প্রবেশ পথ দিয়েই ঢুকুক সেটা বছিলা বলি, দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুই বলি আর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হোক; সেসব জায়গায় যানজটের হট-স্পট হবে।

পদ্মা সেতু নতুন বাস ট্রানজিট তৈরি করবে। ঢাকার অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাস্তাগুলো বেশ সরু। ঢাকায় যারা ঢুকবে, তারা যানজটের বিড়ম্বনায় পড়বে। রাজধানীর বাইরে থেকে যেকোনো যানবাহন যখন প্রবেশ করবে তখন একটা চাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ঢাকার নেটওয়ার্কও কিন্তু প্রস্তুত নয়। যারা ঢাকা থেকে বের হয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাবে তারা তুলনামূলকভাবে একটু লাভবান হবে, যানজটে না পড়ায় সময় সাশ্রয় হবে। তবে রাজধানী বা এটা দিয়ে অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছানোর রাস্তাগুলো বেশ সংকীর্ণ হাওয়ায় তারা যানজটে পড়বে।

ঢাকার মধ্যে যে যানজট বাড়বে এটা মাথায় রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনার দরকার ছিল, যেটা এখনও হয়নি। যানজট কমাতে অতিরিক্ত গাড়ি প্রবাহের চাপ বিলি-বণ্টন করতে অবশ্যই রিং-রোড বা বৃত্তাকার এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করতে হবে। ব্যবহারকারীরা সম্পূরক রাস্তা না পেলে এর সুফল পুরোপুরি পাবে না। তখন একটা প্রশ্ন সামনে আসতে পারে- এটা সমন্বিত উন্নয়ন হলো কি না!

আমার পরামর্শ হলো, করিডরের সড়কপথে আমরা ব্যাপক বিনিয়োগ করেছি। ট্রান্সপোর্ট করিডর হলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান মেরুদণ্ড, এই ট্রান্সপোর্ট করিডরের মহাসড়কের পাশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া তৈরি করলে বড় সুবিধা হবে- পণ্য কোনো যানজট ছাড়াই বহন করে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে। অর্থাৎ সড়কের দুপাশে আধা বা এক কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণ করে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারি। এতে কাঁচামাল ও তৈরি পণ্য সহজেই গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে।

আমরা বাইরের কোনো সহায়তা ছাড়াই বিশ্ব অর্থনীতি বা বিশ্ববাজারের সঙ্গে নিজেদের আরও সংযুক্তি বাড়াতে পারব তখন, যখন সময় ও খরচ কমাতে ট্রান্সপোর্ট করিডরকে রূপান্তর করে অর্থনৈতিক করিডরে আনতে পারব। এতে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে উন্নীত হতে পারব দ্রুত। এ ব্যাপারে সরকার যদি চুপ করে থাকে সেক্ষেত্রে উন্নয়ন হবে এলোমেলো।

আমরা দেখেছি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে যেসব আবাসন ও স্থাপনা গড়ে উঠেছে সেসবে শৃঙ্খলা নেই। আমরা প্রত্যাশা করছি অদূর ভবিষ্যতে ট্রান্সপোর্ট করিডরকে ইকোনমিক করিডরে রূপান্তর করা হবে, এতে সরকারও আত্মপ্রসাদের আনন্দ পাবে। এমনটা ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম করছে ও থাইল্যান্ড করে ফেলেছে।

লেখক: পরিবহন বিশেষজ্ঞ। অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন:
পদ্মায় ফেরি আটকে আর ঝরবে না তিতাসের মতো প্রাণ
পদ্মা সেতু আত্মমর্যাদার প্রতীক: রওশন
পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার দৃঢ় সংকল্পের প্রমাণ: পাকিস্তান
পদ্মায় ফেরি বন্ধ
নৌকা নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে চান মিনারুল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Great May Day today

মহান মে দিবস আজ

মহান মে দিবস আজ

আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকেরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তাদের সে আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে সকল গণমাধ্যম বিভিন্ন লেখা প্রকাশ ও অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

এবারের মহান মে দিবসের প্রতিপাদ্য-‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে’।

মহান মে দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়।

দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। মালিক-শ্রমিক সম্পর্কে এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এর ফলে শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় নেমে আসে আট ঘণ্টায়।

সারা বিশ্বের শ্রমিকরা তাদের শ্রমের উপযুক্ত মর্যাদা পেতে শুরু করেন। নিজেদের অধিকার আদায়ে সফল হয়েছেন। বিশ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় সামাজিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়। মে দিবসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়, তার ফলে ধীরে ধীরে লোপ পেতে শুরু করে সামাজিক শ্রেণি-বৈষম্য।

তবে শ্রেণি-বৈষম্য এখনও পুরোপুরি দূর না হলেও মে দিবসের সেই আত্মত্যাগ নিপীড়িত শ্রমজীবী মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে অনেকটাই মুক্ত করেছে।

এদিকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শ্রম অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়ণে শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে। গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন শ্রম বিষয়ে অংশীজন ও বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন ২১ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে তারা।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকুরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে :

গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আরএমজি বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (আরএমজি বিষয়ক টিসিসি) এর ২০তম সভার বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভার সিদ্ধান্তসমূহ প্রতিপালন ও বাস্তবায়ন করার জন্য নির্দেশক্রমে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়। সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে- ‘যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ব্যতীত শ্রমিক চাকুরিচ্যুত/ছাঁটাই করা যাবে না। এক্ষেত্রে শ্রমিক চাকুরিচ্যুত/ছাঁটাই করার পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএ এর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত/ছাঁটাই করা না হলে-মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্মারকে বলা হয়, মহান মে দিবসে সকল কারখানা/প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোন কারখানা কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শ্রম শাখার উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ স্মারক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The price of fuel oil has dropped one penny 

লিটারে এক টাকা কমেছে জ্বালানি তেলের দাম 

লিটারে এক টাকা কমেছে জ্বালানি তেলের দাম 

ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমিয়ে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এ দাম বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা, কেরোসিন ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২৫ টাকা, পেট্রোল ১২২ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২১ টাকায় পুনঃনির্ধারণ/সমন্বয় করা হয়েছে। যা ১ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

এ জন্য ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’র আলোকে মে মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়িয়ে বর্তমান দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ মূল্য মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বহাল ছিল।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BJIMs Symposium on the occasion of World Free Media Day

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বিজেআইএমের সিম্পোজিয়াম

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বিজেআইএমের সিম্পোজিয়াম

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে একটি সিম্পোজিয়াম আয়োজন করছে বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া (বিজেআইএম)। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক ও গবেষকরা। আগামী শনিবার (৩ মে) বিকাল ৩টায় ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার অডিটরিয়ামে এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিজেআইএমের আহ্বায়ক স্যাম জাহান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী মাজেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আফটার দ্য মনসুন আপরাইজিং : দ্য মিডিয়া ল্যান্ডস্ক্যাপ’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামটি তিনটি সেশনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশনে বিজেআইএম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর অর্জনের একটি সারসংক্ষেপ ও পরিকল্পনার রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে।

দ্বিতীয় সেশনে বিজেআইএমের একজন সদস্যের পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনীতি, কূটনীতি, ভবিষ্যৎ, আমলাতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে যে কোনো প্রশ্ন করা যাবে।

তৃতীয় সেশনে দেশের নেতৃত্বস্থানীয় সাংবাদিক, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হবে। এতে অংশ নেবেন- প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন, ইরাবতী ইংরেজির প্রতিবেদক মুক্তাদির রশিদ, ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম, বাংলাদেশ সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান গবেষক এম আবুল কালাম আজাদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ওমর ফারুক।

সিম্পোজিয়ামে সাংবাদিক, গবেষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণ মানুষের যে কেউ অংশ নিতে পারবে। তবে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগ্রহীদের দ্রুত নাম, বয়স, পেশা ও যোগাযোগ নম্বরসহ [email protected]এ প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
No discussion with the United Nations on the Humanities Corridor Press Secretary

‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব ছবি: সংগৃহীত

‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কক্সবাজার হয়ে জাতিসংঘের ‘মানবিক করিডর’-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।”

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’

তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে।

দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা।

প্রেস সচিব সতর্ক করে বলেন, ‘এছাড়াও, আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারব না।’

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ।

শফিকুল আলম বলেন, এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তবে, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।’

বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরণের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Suicide not to prepare for the threat of war on a regular basis the chief adviser

প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে ছিল বার্ষিক মহড়া। ‘আকাশ বিজয়’ নামে হয় এ বছরের বাৎসরিক মহড়া। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

‘কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’ বলেন তিনি।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিমান বাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।

দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনকৃত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Air ambulance is being prepared for Khaleda Zia Foreign Advisor

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে আনতে বিএনপির অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরত আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুরোধ নিয়ে কাজ করছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে। জানা যায়, খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আয়োজন করতে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ‘আশঙ্কামুক্ত’ নয়। তথাপি তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কভিড-১৯ মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Modis green signal in an army operation in response to the Kashmir attack

কাশ্মীর হামলার জবাবে সেনা অভিযানে মোদির ‘সবুজ সংকেত’

কাশ্মীর হামলার জবাবে সেনা অভিযানে মোদির ‘সবুজ সংকেত’ ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর সামরিক জবাবদিহির বিষয়ে সেনাবাহিনীকে ‘পদ্ধতি, লক্ষ্য ও সময় নির্ধারণে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন মোদি।

প্রধানমন্ত্রী মোদি আবারও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক জবাব দেওয়াই আমাদের জাতীয় সংকল্প’ এবং তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর প্রতি ‘সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ রাখেন।

এই বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শিক অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছন।

সূত্রের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সবুজ সংকেত দিয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। তখন ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালিত প্রশিক্ষণশিবিরে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছিল।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত সেই শিবিরগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

ছয় বছর পর এই হামলার সঙ্গে আবারও পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তাদেরই ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

এদিকে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও বলেছে, প্রাপ্ত প্রমাণ আবারও পাকিস্তানকেই ইঙ্গিত করছে।

এই প্রমাণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের দেখানো হয়েছে।

ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রথম ধাপে নয়াদিল্লি পাকিস্তানিদের জন্য জারি করা ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি হিন্দু ও দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদনপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেওয়া ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।

গত রোববার সব কার্যকর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে, বিশেষ করে বিখ্যাত আটারি-ওয়াঘা চেকপয়েন্টে পাকিস্তানি নাগরিকদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সেদিন থেকে প্রায় এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কূটনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানি চুক্তিও স্থগিত করেছে। এই পানি বণ্টন চুক্তির অধীনে পাকিস্তান তার প্রাপ্য মোট পানির প্রায় ৮৫ শতাংশ পেত। এই চুক্তি স্থগিত করাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ ভারতের সব ভিসা বাতিল করেছে ও শত শত ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তান আরও কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, যেমন ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিও স্থগিত রেখেছে।

এরই মধ্যে পাকিস্তানের এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, আগামী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পেহেলগামে হামলা নিয়ে নিজের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের আখ্যানের শেষ চিহ্নও মুছে ফেলার। ১৪০ কোটি মানুষের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের প্রভুদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।’

এরপর তিনি একাধিক শক্ত বার্তা দিয়েছেন, যাতে তিনি বলেন, ভারত সন্ত্রাসকে ভয় পায় না এবং এই ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনাকারীসহ প্রত্যেক জড়িত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

সূত্র: এনডিটিভি

মন্তব্য

p
উপরে