পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এখন সময়ের অপেক্ষা। কতদূর দ্বিতীয় পদ্মা সেতু? সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় এই সেতুর সমীক্ষা শেষ। এখন সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা।
তবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তিন দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিলেন, এই মুহূর্তে আরও একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিতে চান না তিনি।
সেদিনই আবার ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকো জানিয়েছেন, তার দেশ দ্বিতীয় পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে মুখিয়ে। পদ্মায় মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে যে সেতু হয়েছে, তাতেও অর্থায়ন থাকার কথা ছিল জাপানের। কিন্তু বিশ্বব্যাংক দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ তুলে এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর সরে দাঁড়ায় জাপানের সহযোগিতা সংস্থা জাইকাও।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সস্মেলনের দিন জাপানের দূতও গণমাধ্যমের সামনে এসে বলেছেন, পদ্মা সেতুতে থাকতে না পেরে তার দেশ দুঃখিত। এখন দ্বিতীয় সেতুতে তারা দূরে থাকতে চায় না।
মাওয়া-জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মার ওপর দিয়ে যে সেতু হয়েছে, তার সুফল ভোট করতে হলে কুষ্টিয়া অঞ্চলের মানুষদের একটু বাড়তি খরচ করতে হবে, ঘুরতেও হবে বেশ কিছু দূর। তাই তারা অপেক্ষায় কবে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় সেতু হবে।
এই রুটে আরও একটি সেতু কুষ্টিয়া অঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকায় সড়কপথে যাত্রার সময় কমিয়ে দেবে অর্ধেক। কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে সহজে চাল পৌঁছে যাবে সারা দেশে। মুজিবনগর স্থলবন্দরের উদ্যোগ হবে আরও অর্থবহ।
কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ী জেলা থেকে রাজধানীতে যেতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি পার হতে হয়। যানবাহনের চাপ থাকায় প্রায়ই ঘাটে আটকে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।এ পথে ঢাকার সঙ্গে কুষ্টিয়ার দূরত্ব ১৭৫ কিলোমিটার। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ ঘুরে যমুনা সেতু দিয়েও যাতায়াত করে এ এলাকার যানবাহন। সে ক্ষেত্রে দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার। এই রুটেও প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।কুষ্টিয়া থেকে সড়কপথে যেদিক দিয়েই যাক, বাস-ট্রাকের ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। কোনো কোনো সময় তার চেয়েও বেশি সময় লাগে। আর মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা থেকে লাগে আরও এক ঘণ্টা বেশি।অন্যদিকে শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঘুরে গেলে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার দূরত্ব হবে ২২৫ কিলোমিটার।
কুষ্টিয়ার শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপক মো. মানিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একে তো ঘুরে যেতে হবে, তার ওপর টোল বেশি। যমুনা সেতুতে বাসের টোল যেখানে ১ হাজার ৬০০ টাকা, সেখানে পদ্মা সেতুতে ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা। তাই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা গেলে সবচেয়ে ভালো হয় এ এলাকার মানুষের জন্য। তখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকায়।’
কুষ্টিয়া বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক হাসান আবুল ফজল সেলিম বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিঃসন্দেহে দেশের জন্য একটি মাইলফলক। তবে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ীর মানুষ আমরা দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর দাবি জানাচ্ছি। আমার আশা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটাও করে দিয়ে যাবেন। এটি হলে দেশের প্রথম রাজধানী মুজিবনগরের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ হবে। এ এলাকার উন্নয়ন হবে।’
কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম তোহা বলেন, ‘২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। এটা বাংলাদেশের স্বনির্ভরতার একটি প্রমাণ। কুষ্টিয়া-অঞ্চলের মানুষের দাবি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর।’
তিনি বলেন, ‘কৃষি-শিল্পে কুষ্টিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল। সরু চালের সবচেয়ে বড় মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে। এখান থেকে সারা দেশে চাল সরবরাহ হয়। এই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হলে চাল কম দামে পাওয়া যাবে ঢাকায়।
‘মেহেরপুর জেলার মুজিবগরে সরকার স্থলবন্দর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুরেও একটি স্থলবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হলে এই বন্দর দুটোর সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ সহজ হবে। তখন বন্দর দুটি করা আরও যুক্তিযুক্ত হবে।’
বাংলাদেশ অটো রাইচ মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মাওয়ায় পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমের মানুষের ব্যাপক উন্নতি হবে। কিন্তু কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে চালের ট্রাক ওদিক দিয়ে পাঠিয়ে আমাদের লাভ হবে না। রাস্তা বেশি হওয়ায় একদিকে তেল খরচ যেমন বেশি হবে, তেমনি সেতুতে টোলও বেশি। এতে চালের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হলে খুব সহজে দ্রুততম সময়ের মধ্যে খাজানগর থেকে চাল ঢাকায় পাঠানো যাবে।’
মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকনও চান সরকার দ্রুত দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর উদ্যোগ নিক। তিনি বলেন, ‘দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মিত হলে এই অঞ্চলের ছয়টি জেলার মানুষের ঢাকা যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি অর্ধেক কমে যাবে। বিশেষ করে যারা ঢাকায় চাকরি করেন, তারা ইচ্ছে করলে ট্রেনে সকালে গিয়ে অফিস করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘বতর্মানে মেহেরপুর থেকে ঢাকা যেতে আট ঘণ্টা সময় লাগে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হলে অর্ধেক সময় লাগবে। এ জেলার মানুষ তখন ঢাকায় কোনো কাজ থাকলে দিনেই শেষ করে চলে আসতে পারবেন। অর্থনৈতিকভাবেও ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। বিশেষ করে কৃষিনির্ভর মেহেরপুর জেলার অনেক কাঁচামাল কম সময়ে ঢাকায় পৌঁছে যাবে। এতে করে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।’
মেহেরপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, ‘দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হলে কৃষিপণ্য দ্রুত সময়ে ঢাকায় পৌঁছালে কৃষকের খরচ কমে যাবে। তারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন। এই সেতু হলে এলাকায় ভারী কলকারখানা গড়ে উঠবে। এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে।’
কুষ্টিয়া জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, ‘পদ্মা সেতু যেটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সেটি আমাদের জন্য অহংকারের। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর খুশি। কিন্তু কুষ্টিয়া এলাকার মানুষের উপকার হতো যদি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় সেতু হতো।
‘মাওয়ায় সেতু করার সিদ্ধান্তের আগেই দৌলতদিয়ায় সেতু করার দাবি ছিল আমাদের। দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর সমীক্ষা হয়েছে। সরকার অনেক চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে। এটিও যদি করে দেয়, তাহলে খুবই ভালো হয়।’
পদ্মায় আরেকটি সেতু বা টানেল যেটিই হোক, শেখ হাসিনাই সেটি করবেন বলে আশা করেন কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ‘পদ্মার পানি প্রবাহের গতি স্বাভাবিক রাখতে সেতুর চেয়ে টানেল করা ভালো। আমরা চাই ব্রিজ-টানেল যা-ই হোক, একটি সংযোগ সৃষ্টি হোক। এটা এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। সরকারও এ দাবি পূরণে কাজ করছে।’
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য