বাংলাদেশের প্রখ্যাত প্রকৌশলী জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ অবকাঠামো পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক কমিটির প্রধান। ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল ৭৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সম্পর্কে ফুপা ছিলেন এই অগ্রগণ্য প্রকৌশলী।
পদ্মা সেতুর সঙ্গে জামিলুর রেজা চৌধুরীর সরাসরি সম্পৃক্ততার কারণে পারিবারিক বিভিন্ন আয়োজনে বা উৎসবে আলোচনার বড় অংশজুড়ে থাকত এটি।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কাছ থেকে দেখেছেন, পদ্মা সেতুকে নিয়ে জামিলুর রেজা চৌধুরীর আবেগ, উদ্দীপনা, চ্যালেঞ্জ, উদ্বেগ ও গর্ব। সেসব আলোচনার স্মৃতিচারণ করে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘পদ্মা সেতু দেশের জনগণের কাছে একটা গর্বের বিষয়। তাই এটি ছিল আমাদের যেকোনো আসরের আলোচনার বিষয়বস্তু।
‘পারিবারিকভাবে ড. জামিলুর রেজা ছিলেন বন্ধুবৎসল এবং খুব গল্প করতে পছন্দ করতেন। আমার শ্বশুর, উনি এবং আমরা আরও অনেকেই মাঝেমধ্যে সন্ধ্যায় গল্প করতাম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই এ বিষয়টি চলে আসছিল। পদ্মা ব্রিজের তখন ডিজাইন, স্ট্রাকচারাল কাজ হচ্ছিল। আমরা খুব খবর রাখতাম, যেহেতু একটা বড় প্রজেক্ট। এটিকে বাংলাদেশের গেম চেঞ্জার বলে মনে করি।
‘দেশের এক-চতুর্থাংশ ভৌগোলিক অংশে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পদ্মা ব্রিজের কারণে আমাদের নর্থ বেঙ্গল এবং ওয়েস্টের অনেক ডিস্ট্রিক্টও উপকৃত হবে।’
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘আমার শ্বশুর যেহেতু ওই দিকেরই। ওনারও খুব আকর্ষণ ছিল। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর শ্বশুরবাড়িও ওই দিকেই। যার জন্য খুলনা, রাজশাহী এসব ব্যাপারে ওনারও আগ্রহ ছিল। ওনার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতেন। আমরা অনেকেই দুষ্টামি করতাম।’
পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে স্মৃতিচারণ করে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘ওনার কাছে সেতুর স্ট্রাকচারাল চ্যালেঞ্জগুলোর কথা শুনেছি। উনি বলতেন, এত খরস্রোতা নদী, পানির যে ফ্লো এবং স্পিড তাতে এটার পিলারগুলো তৈরি করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
‘ওনারা যখন ডিজাইনের কাজ করেন, তখন আমাদের বলেছিলেন, আসলে আমরা যেভাবে পিলার দেখি, পানির নিচে এভাবে থাকে না। পিলারগুলো তিনটা পায়ের মতো ওয়াটার বেডের নিচে অনেকটা জায়গায় বসে যায়।
‘ওইগুলো যখন বসায়, তখন ওনারা বলছিলেন যে আমরা তিনটা খুঁটির ওপরে এই পিলারটা করব। হঠাৎ একটা সময় বললেন যে এটা তিনটাতে করা যাচ্ছে না। পানির যে গতি-প্রকৃতি এবং নদীশাসন, সবকিছু হিসাব করে দেখা গেছে, আমাদের এখন পুরোটা অথবা কিছু কিছু জায়গায় চারটি খুঁটি দিয়ে তার ওপর পিলার করতে হবে।’
আরও কিছু চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে শিবলী বলেন, ‘চারটি খুঁটির ওপর পিলার বসাতে গিয়েও আরেক চ্যালেঞ্জে পড়েছিলেন ওনারা। পোলগুলো বসাতে গিয়ে দেখেন যে নদীর নিচে শক্ত মাটি যেটাকে রিভার বেড বলে সেটা ওনারা সহজে পাচ্ছেন না। অর্থাৎ যতটুকু গভীরতায় গিয়ে ওনারা পাইলিংয়ের কাজ করবেন, দেখা গেছে তার থেকেও অনেক নিচে যেতে হচ্ছে। শক্ত মাটি পাওয়া যাচ্ছে না।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বারবারই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে পদ্মা সেতুর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন চেঞ্জ করতে হচ্ছিল। মাঝে মাঝে আমরা দেখতাম, ওনারা অনলাইনে পৃথিবীর যেগুলো কঠিন সেতু রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথাবার্তা বলতেন। আমি এগুলো বুঝতাম না। আমার শ্বশুর ও ওনার মধ্যে খুব আলোচনা হতো এসব বিষয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় একটা ব্রিজ আছে, সেটা খুব বড় এবং সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে দুইটা স্টেটকে জোড়া লাগিয়েছে। একসময় দেখলাম, ওইটা সমুদ্রের নিচে কীভাবে, কী করা হয়েছে, ওইগুলো নিয়ে ওনারা আলোচনা করতেন।’
‘ওনাকে যখন যমুনা ব্রিজের ডিজাইন করতে দেখেছি বা রিসেন্টলি কর্ণফুলী টানেল বা বড় বড় যে প্রজেক্ট উনি করতেন, সেখানে ওনার মধ্যে আমরা এই জিনিসগুলো নিয়ে অতটা আগ্রহ দেখতে পাইনি, যতটা পদ্মা সেতুর বিষয়ে ছিল।’
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গেলেও ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বিচলিত হননি বলে জানান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যায়, তখন ওনাকে ভয় পেতে দেখিনি। উনি অবশ্য ফাইন্যান্সিয়াল বিষয় নিয়ে অতটা চিন্তিত হতেন না। তবে ওনাকে চিন্তিত হতে এ জন্যই দেখিনি, কারণ আমার মনে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওনার যোগাযোগ হতো। হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু না কিছু একটা করেই ফেলবেন। উনি ওনার কাজ করে গেছেন। কাজ হচ্ছিল, পরিবর্তন হচ্ছিল, আবার চেঞ্জ করছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি একদিন খেয়াল করেছিলাম, উনি একটা স্প্যানিশ ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপের সঙ্গে মিটিং করছেন। তার কারণ ছিল, ওরা পদ্মা ব্রিজে ফাইন্যান্স করতে আসতে চাচ্ছিল বা এ রকম কিছু। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, তিনি ফাইন্যান্সের ব্যাপারে কাজ করছেন, মানে নিশ্চয় ফাইন্যান্সের কোনো ইস্যু আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন বিশ্বব্যাংক ব্যাক আউট করল, তখনও উনি কোনোভাবে ভয় পাননি। যখন এ রকম বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে, তখনও ওনাদের কাজ চলছে এবং কাজ করছেন ওনারা। ওনার কাজে, আলোচনায় একটা স্মিত হাসি ছিল, তাতে বোঝা যেত তারা কনফিডেন্ট।
‘তিনি বিশ্বাস করতেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেকোনোভাবে ফাইন্যান্স জোগাড় করে এটা করবেন। তিনি সেটা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, যার কারণে তিনি ওনার কাজ এক বিন্দু থামাননি।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ওনার অগাধ বিশ্বাস ছিল। উনি পারবেন ভেবেই ভয় পাননি, বিচলিত হননি।
‘উনিও বিদেশে ওনার সার্কেলের মাধ্যমে ফান্ডের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেটার আর দরকার হয়নি।’
পদ্মা সেতুকে নিয়ে জামিলুর রেজার ব্যক্তিগত আবেগ সম্পর্কে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘ওনার আবেগটা ছিল সাংঘাতিক। উনি প্রায়ই ওখানে তো যেতেন, কাউকে না কাউকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। ওনার নাতি এলো ম্যানচেস্টার থেকে, তখন উনি স্পিডবোট নিয়ে নাতি-জামাইসহ পুরা এলাকা ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। ওনার স্ত্রীকে নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় প্রায় যেতেন। ওনার স্ত্রী পড়ে গিয়ে আহতই হয়েছেন সেখানে। ওনার আবেগ থেকেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়ে দেখাতেন, সেখানে কী হচ্ছে। উনি গর্ববোধ করতেন, এ জন্য দেখাতেন। বলতেন, দেখ, বাংলাদেশে কী হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু খুবই বড় একটা বিষয় ছিল ওনার জীবনে। প্রত্যেকটা আলোচনা, দাওয়াত, মিলাদ, জন্মদিন যা-ই হোক, পারিবারিক উৎসবে আলোচনা হতো পদ্মা সেতু নিয়ে। পারব কি না, সম্ভব কি না এটার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হতো।
‘উনি কথা না তুললেও আমরা ওনাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতাম। আমাদেরও উৎসাহ ছিল অনেক। এ জন্য উনি মাঝে মাঝে ওঠাতেন, না হলে আমরা ওঠাতাম। ফলে যেকোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান বা এক জায়গায় হলে আলোচনার একটা জায়গায় রাজনৈতিক এবং দেশের বড় বড় স্থাপত্য নিয়ে আলোচনা হতো।’
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
মন্তব্য