পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই জমি ও অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ বাবদ কয়েক গুণ টাকা দিয়েছে সরকার। আর স্বপ্নের এই সেতুর জন্য যারা বাপ-দাদার ভিটেমাটি পুরোটাই হারিয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণের টাকার পাশাপাশি বসবাসের জন্য প্লটও করে দিয়েছে সরকার। পাঁচটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে নামমাত্র মূল্যে আড়াই, পাঁচ ও সাত শতাংশের প্লট দেয়া হয়েছে তাদের। প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সবুজে ঘেরা নান্দনিক এসব পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
সেখানে বসবাসরতরা কেমন আছেন তা জানতে নিউজবাংলা পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেছে, কথা বলেছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো হলো মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ও যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্র, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা পুনর্বাসন ও পশ্চিম নাওডোবা পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং মাদারীপুরের শিবচরের বাখরেরকান্দি পুনর্বাসন কেন্দ্র।
মুন্সীগঞ্জের দুই কেন্দ্র
লৌহজং উপজেলার মাওয়া চৌরাস্তাসংলগ্ন কুমারভোগ ও যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৭৮০টি প্লট রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা জীবনযাপন করছেন গ্রাম্য পরিবেশে শহুরে প্রায় সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে। নানা রকম ফলদ ও ঔষধি গাছের পাশাপাশি ফুলগাছ রয়েছে পুনর্বাসন কেন্দ্রের রাস্তার পাশ দিয়ে।
কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রবেশমুখেই রয়েছে মসজিদ। ভেতরে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঠাগার, খেলার মাঠ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পানির ট্যাংকি ও কবরস্থান। স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ সুবিধাসহ প্রতিটি প্লটের সঙ্গেই রয়েছে পিচঢালাই রাস্তা।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণে জমি, ঘর ও গাছপালা বাবদ যথাসময়েই টাকা পেয়েছেন তারা। যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৪৫১টি প্লট রয়েছে, কুমারভোগে রয়েছে ৩৩৯টি। এগুলোর মধ্যে কিছু আড়াই শতাংশের প্লট, কিছু পাঁচ শতাংশের এবং বাকিগুলো সাত শতাংশের প্লট।
যশোলদিয়া কেন্দ্র
যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্লট পাওয়া মায়া বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার হাজব্যান্ড আব্দুল করিম পাঁচ শতকের প্লট পান আট বছর আগে। তিনি মারা গেছেন। এখানে পানি, বিদ্যুৎ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট সবই ভালো। কিন্তু বহিরাগতদের অত্যাচার রয়েছে। বাইরের ছেলেরা, স্থানীয় ছেলেপেলেরা এসে আমাদের গালাগালি করে, উঠিয়ে দেবে বলে হুমকি-ধমকি দেয়।’
এই পুনর্বাসন কেন্দ্রের আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ সাইমন জানালেন, মাঝেমধ্যেই পানির লাইন নষ্ট হয়ে যায়। নিজেরা টাকা তুলে তা ঠিক করেন। এ ছাড়া এখানে তেমন কোনো অসুবিধা নেই।
যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে আড়াই শতাংশের প্লটে ঘর তুলে সপরিবারে বসবাস করছেন মো. আরমান। তিনি জানান, প্রথম থেকেই এখানে আছেন তারা। চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ভালোই আছেন।
যশোলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে কথা হয় কেন্দ্রের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় আমার ২২ শতক জায়গা ছিল। পদ্মা সেতু প্রকল্পে ওই জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করেছে। আমি আড়াই শতকের একটি প্লট পেয়েছি। আমার ভাইয়েরাও পেয়েছে। এখানে আধুনিক অনেক সুযোগ-সুবিধাই আছে। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও বেশির ভাগ সময় পর্যাপ্ত সুবিধা পাওয়া যায় না।’
আগে কেমন ছিলেন, এখন কেমন আছেন- জানতে চাইলে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মাওয়া চৌরাস্তায় আগে আমাদের ব্যবসা ছিল, আয়-রোজগার ছিল ভালোই। এখন দোকান না থাকায় রানিং আয়টা কমে গেছে। তবে সব মিলিয়ে আমরা ভালোই আছি।’
প্লট পাওয়া অনেকেই ঘরবাড়ি করে ভাড়া দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কুমারভোগ কেন্দ্র
কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের পাঁচ শতাংশের প্লটে বসবাস করছেন মো. মনির হোসেন। তিনি জানান, তার সাড়ে ১৩ শতাংশ জায়গা ছিল। সেই জমি পদ্মা সেতুর জন্য সরকার নিয়েছে। টাকা দিয়েছে ৩৪ লাখ।
কেমন আছেন জানতে চাইলে মনির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক কথায় ভালো আছি। পানি, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই আছে এখানে। পদ্মা সেতু দিয়ে গ্যাসের সংযোগ যাচ্ছে, সেখান থেকে সংযোগ পেলে আমরা আরও ভালো থাকব।’
এই কেন্দ্রে পাঁচ শতাংশের প্লট পেয়েছেন জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রাথমিক স্কুল থাকলেও মাধ্যমিক স্কুল নেই। একটা মাধ্যমিক স্কুল হলে ছেলেমেয়েদের দূরে যাওয়া লাগত না।’
কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের সভাপতি আলতাফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধাই আছে। দুই হাজারের বেশি মানুষ থাকে। তবে গোরস্থান ও খেলার মাঠ নেই। ময়লা ফেলানোরও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। অনেকেই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়ায়।’
এই কেন্দ্রেও অনেকে ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মুন্সীগঞ্জের এই দুই পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দাদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজ্জব আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে কোনো সমস্যার কথা আসে না। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, তারা ভালো আছেন। তারা যা চেয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব দেয়া হয়েছে। কবরস্থান, খেলার মাঠের চাহিদার কথা বলা হচ্ছে, সেসব দেয়ার মতো ফান্ড এখন নেই।’
শরীয়তপুরের দুই কেন্দ্র
পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংযোগ সড়ক, নদীশাসন, সার্ভিস এরিয়া-২ ও সেনাবাহিনীর ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডের জন্য সেতুর জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা এলাকার জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এতে অনেকেই বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারান।
ভূমিহীন এসব পরিবারকে আশ্রয় দেয়ার জন্য পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন ও পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নে পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়, যেখানে ১ হাজার ১৬৪টি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে পূর্ব নাওডোবায় থাকে ৬৫০টি পরিবার আর পশ্চিম নাওডোবায় ৫১৪টি। পশ্চিম নাওডোবা কেন্দ্রে প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুবিধাই নিশ্চিত করা হয়েছে। পূর্ব নাওডোবার অবকাঠামো নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি।
পশ্চিম নাওডোবা কেন্দ্র
এই কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পাকা রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে ঘরবাড়ি। এখানকার বাসিন্দাদের একজন রাজিয়া বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১০ বছর ধইরা এইহানে থাহি। আমার সাড়ে আট শতাংশ জমি গ্যাছে পদ্মা সেতুর কামে। জমির টাহাও পাইছি। আবার এইহানে আইয়্যা পাঁচ শতক জমিও পাইছি। ঘরের লগে হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স, ওষুধ সবই আছে। টাউনের মতোই লাগে।’
রাজিয়া বেগমের মতো এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঁচ শতাংশের প্লট পেয়েছেন শাহজাহান হাওলাদার।
নিউজবাংলাকে তিনি জানান, তার ২৫ শতাংশের বাড়িসহ দুই বিঘা জমি। সেতুর জন্য সবই নিয়েছে সরকার, দিয়েছে ক্ষতিপূরণের টাকাও। পুনর্বাসন কেন্দ্রে আধাপাকা ঘর তুলে পরিবার নিয়ে থাকছেন তিনি।
কেমন আছেন- জানতে চাইলে শাহজাহান হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক জায়গাই সবকিছু আছে। শান্তিতেই আছি। আমার ছেলেডা এইহান তোন গাড়ি চালানোর টেনিং লইতাছে। এরপর বড় গাড়ি চালাইব। অহন আর দুশ্চিন্তা নাই।’
এই পুনর্বাসন কেন্দ্রের নাওডোবা পদ্মা সেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলটি হওয়ার কারণে ছেলেমেয়েরা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। সাতজন শিক্ষক ও পাঁচজন স্টাফের কর্মসংস্থানও হয়েছে। শিক্ষার সহায়ক পরিবেশ ও উপকরণ সবই এখানে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য বিশাল মাঠও আছে।’
পূর্ব নাওডোবা কেন্দ্র
সেনাবাহিনীর ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড-ঘেঁষা পূর্ব নাওডোবা পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৬৫০ পরিবারের বসবাস।
পুনর্বাসন প্রকল্প কমিটির সভাপতি লতিফ ফকির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাগো এইড্যা তো পোথ্যোম অধিগ্রহণ কইরা নেয় নাই। এই জন্যই পোথ্যোম থিক্যা কাজ শুরু হয় নাই। পরে যখন অধিগ্রহণ করল, ওইয়ার পর থিকাই আমাগো পারমান্যান্ট করছে। এই জন্যই উন্নয়নকাজ দেরি অইছে। অহন সবকিছুই দ্রুত চলতাছে। আমরা ২৫ সদস্যের কমিটি এখানকার সবকিছু ভালো-মন্দ দেহি। পরিবারগুলোর সুবিধা-অসুবিধা আমরা সেতু কর্তৃপক্ষকে জানাই।’
মাদারীপুরে একটি কেন্দ্র
মাদারীপুরের শিবচরের বাখরেরকান্দি পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্লট রয়েছে ৬১১টি। এখানে বসবাসে ‘কিছুটা সমস্যা’য় পড়লেও স্বপ্নের পদ্মা সেতুর জন্য জমি দিয়ে খুশি বাসিন্দারা।
কেন্দ্রে পাঁচ শতাংশের প্লট পেয়েছেন আব্দুর ছাত্তার মাতুব্বর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে পদ্মা সেতুর বেড়িবাঁধের জন্য আমার ৯৮ শতাংশ জমি ও ১৬ শতাংশ বাড়ির জায়গা নিয়েছে সরকার। এ জন্য টাকাও দিয়েছে। পরে বাখরেরকান্দি এলাকায় পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঁচ শতাংশ জমি পাই ১ লাখ ১০ হাজার টাকায়। এই জায়গায় আমার চার ছেলে ও তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছি।’
এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে সম্প্রতি ঘর তুলেছেন শাহজাহান খান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আড়াই শতাংশ জায়গা পাইছি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকা লাগবে। এতদিন কাগজপত্রে ঝামেলা থাকায় ঘর করা হয়নি। তাই এখন কোনো রকমে টিনের ঘরটা করলাম। এখানে পাকা রাস্তা আর বিদ্যুতের লাইন আছে। ড্রেনও আছে, তবে পরিষ্কার করা হয় না। আমরা চাঁদা তুলে মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করি।’
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পুনর্বাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিও) হিসাবে, এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে আড়াই শতাংশের প্লটের জন্য ৫০ হাজার টাকা, পাঁচ শতাংশের প্লটের জন্য ১ লাখ টাকা এবং সাড়ে সাত শতাংশের প্লটের জন্য দেড় লাখ টাকা লেগেছে। প্লট রয়েছে ৬১১টি। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬০৩টি।
বাখরেরকান্দি পুনর্বাসন কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন পদ্মা বহুমুখী প্রকল্পের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সারফুল ইসলাম সরকার।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্রে জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ওখানে রাস্তা-সুপেয় পানির ব্যবস্থা আছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে দিয়েছি। এসব রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বসবাসকারীদের। আমরা তাদের সব করে দেব, এমনটা নয়।’
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে দাবদাহ। এ সময়ে অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে করণীয় কী কী, তা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার।
এক ভিডিওবার্তায় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন, যা তার ভাষায় তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্কতা
সম্মানিত দর্শকমণ্ডলী, প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে এবং এটি আরও কিছুদিন ধরে কন্টিনিউ করতে পারে। এ সময় কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে জন্য এই তাপদাহের সময় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া লাগবে।
বিশেষ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হওয়া লাগবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং যন্ত্রাংশ ব্যবহারের সময় এটি একটানা দীর্ঘসময় ব্যবহার না করে মাঝে মাঝে বিরতি দেয়া লাগবে এবং এগুলো যারা পরিচালনা করেন, শ্রমিক যারা তাদেরও কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে একটানা কাজ না করিয়ে মাঝে মাঝে তাদেরকেও বিরতি দিতে হবে। তাহলে কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার শঙ্কা হ্রাস পাবে এবং সীমিত থাকবে।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত রাখা
সকল ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, এখনই চেক করতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ থাকলে তা বদলে ফেলতে হবে। একটি বৈদ্যুতিক লাইন থেকে অথবা একটি মাল্টিপ্লাগ থেকে অতিরিক্ত সংযোগ নেয়া যাবে না। এই জাতীয় সংযোগ থেকে কিন্তু দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারে সতর্কতা
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে যখন ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে, সব ধরনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। অফ করে রাখতে হবে।
রান্নার ক্ষেত্রে সতর্কতা
এ ছাড়া আমরা আবাসিক ভবনে যারা রান্নার কাজ করি, রান্না রেখে দূরে সরে যাওয়া যাবে না। রান্না শেষে অবশ্যই চুলা পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গ্রামেগঞ্জে রান্না করছি যেখানে ছাই যেন উত্তপ্ত না থাকে, ছাইও নিশ্চিন্তভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে।
ধূমপান পরিহার
আবাসিক ভবন ও কারখানায় কোনোভাবেই কিন্তু ধূমপান করা যাবে না। অপরিহার্য ক্ষেত্রে বাইরে যারা ধূমপান করবেন, বিড়ি-সিগারেটের শেষ অংশ সতর্কভাবে, সচেতনভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গাড়িতে চলাচলের সময় ধূমপান করে যেখানে সেখানে কিন্তু সিগারেটের অংশ ফেলা যাবে না।
বারবিকিউ পার্টি না করা
বাড়ির ছাদে, বারান্দায় অথবা আশপাশে দাহ্য বস্তু আছে, এমন খোলা জায়গায় এ সময় বারবিকিউ পার্টি করবেন না। কারণ একটি স্ফূলিঙ্গ উড়ে গিয়ে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে। এই সময় ক্যাম্প ফায়ার, ফানুস ওড়ানো অথবা আতশবাজিকে পুরোপুরি না বলুন।
গাড়িতে অবস্থান ও পার্কিংয়ে সতর্কতা
ফিলিং স্টেশন থেকে তেল ও গ্যাস সংগ্রহের সময় অনুগ্রহপূর্বক কেউ গাড়িতে অবস্থান করবেন না। সবাই সচেতন থাকবেন। বিশেষ করে ফিলিং স্টেশনের মালিক এবং যারা কর্মরত আছেন, তাদের এ ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
এ সময় সরাসরি রোদ পড়ে এমন জায়গায় গাড়ি পার্কিং করবেন না। গাড়ি ছায়ার মধ্যে পার্কিং করবেন বা যেখানে ছায়া আছে, এমন জায়গায় গাড়ি পার্ক করবেন।
আগুন নিয়ে খেলা পরিহার
এ সময় বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলতে দেবেন না এবং আপনার হাতের কাছে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম সংরক্ষণ করুন। সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন এবং এগুলোর সামনে কোনো ব্যারিয়ার তৈরি করবেন না।
ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পেতে
আপনার সতর্কতা এবং আপনার প্রতিবেশীকে সতর্ক করার মধ্য দিয়ে কিন্তু নিরাপদ থাকা সম্ভব। এ ছাড়া আপনার এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যের মোবাইলে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বর সেভ করে রাখুন। যেকোনো সময় ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত রেসপন্স করার জন্য ১৬১৬৩ হটলাইন অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কিংবা নিকটতম ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বরে দ্রুত কল করুন এবং ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক যাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
ঈদযাত্রায় অন্যান্য পথে দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়েছে।
‘সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে।
‘দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল।
‘বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে ও সেই সঙ্গে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অস্থান নিয়ে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
শনিবারের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।
তাপপ্রবাহ নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশালের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে যা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য