× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Mahayagya in four districts on both sides of the Padma Bridge
google_news print-icon

পদ্মা সেতুর ২ প্রান্তের চার জেলায় মহাযজ্ঞ

পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু কেন্দ্র করে নদীর দুই পারের চার জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। গ্রাফিক্স: নিউজবাংলা
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে। এই প্রকল্পের কাজ ও প্রকল্প ঘিরে যেসব উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে সম্প্রতি তা ঘুরে দেখেছে নিউজবাংলা। কথা বলেছে এসব জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে।

মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে পদ্মা নদীর দুই প্রান্তকে যুক্ত করেছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। সেতু খুলে যাওয়ায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড় যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট।

ভায়াডাক্ট ছাড়া ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল এই সেতুর ওপর দিয়ে চার লেন দিয়ে চলবে গাড়ি, এক বছর পর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। সেতুর তলদেশ দিয়ে যেকোনো ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারবে অনায়াসে। সেতুর নিচতলা দিয়ে যাচ্ছে গ্যাসের পাইপলাইন, যে লাইন দিয়ে গ্যাস পৌঁছাবে এই জনপদসহ আশপাশের অনেক জেলায়।

তাই পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে। এই প্রকল্পের কাজ ও প্রকল্প ঘিরে যেসব উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে সম্প্রতি তা ঘুরে দেখেছে নিউজবাংলা। কথা বলেছে এসব জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে।

সেতুকে কেন্দ্র করে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যেসব প্রকল্পের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা দেখে জীবনমান উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন একসময়কার অবহেলিত এই জনপদের মানুষ।

শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এবং মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুর মৌজার প্রায় ১২০ একর (১১৯.৭৩ একর) জমিতে হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি। প্রকল্পের পাশেই পদ্মা সেতুর শরীয়তপুর প্রান্তের রেলস্টেশন।

এই স্টেশনের কারণে এখানকার তাঁতিরা কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত পণ্য সহজে আনা-নেয়া করতে পারবেন। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারি তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের এই কাজের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত হলেও আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সরকার তাঁতশিল্পের উন্নয়নে বহুমুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী তাঁত পল্লি নির্মাণ অন্যতম। শরীয়তপুর জেলার জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের নাওডোবা মৌজায় ৫৯.৭৩ একর ও মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর মৌজায় ৬০ একর করে মোট ১১৯.৭৩ একর জমিতে এ শিল্প স্থাপন করা হবে।

প্রশাসনিক আদেশের পর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রকল্পের আওতায় মোট ৮ হাজার ৬৪টি তাঁত শেড নির্মাণ করা হবে। যেখানে ৮০৬৪ তাঁতিকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হবে। বার্ষিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ দশমিক ৩১ কোটি মিটার কাপড়।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ শেষে ভরাটের মাধ্যমে চলছে ভূমি উন্নয়নকাজ। এরপর শুরু হবে অবকাঠামো উন্নয়নকাজ। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাঁতিদের দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, বাজারজাতকরণ, পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাঁতবস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে তাঁতিদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই তাঁত পল্লি গড়ে উঠছে।

তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় তাঁতিদের কাপড় বোনার আগে ও পরে বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হবে। সেখানে তাঁতিদের জন্য থাকবে আবাসিক ভবন, তাঁত শেড, ডরমিটরি, রেস্টহাউস, সাইবার ক্যাফে ও বিদ্যুতের উপকেন্দ্র। সপ্তাহে এক বা দুই দিন তাঁতপণ্যের হাট বসানোর চিন্তা রয়েছে। যে হাটে সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বিক্রয় ও প্রদর্শনী হবে। মূলত তাঁতের কাপড় বোনা থেকে শুরু করে পোশাক তৈরি ও বিক্রি পর্যন্ত সব ব্যবস্থাই করা হবে পুরো প্রকল্পের আওতায়।

শেখ হাসিনা তাঁত পল্লির (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলী খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে আমরা শুধু ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন আর সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছি। এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ হয়ে গেছে। বালু ভরাটের কাজও প্রায় শেষের পথে। করোনার কারণে আমাদের কাজ একটু পিছিয়ে পড়েছে। তাই আমরা আমাদের নির্ধারিত সময় ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতে পরিনি। আরও কিছুটা সময় বৃদ্ধির জন্য আমরা আবেদন করেছি।’

তিনি জানান, প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে মূলত তাঁত পল্লির অবকাঠামো তৈরির যাবতীয় কাজ হবে। একটি আদর্শ তাঁত পল্লিতে যা যা থাকা উচিত তার সবই থাকবে সেখানে।

শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি প্রকল্পের আওতায় কী কী হবে, তার একটা খসড়া করা হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে আমরা তাঁত পল্লি উন্নয়নের এই খসড়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দেব। তারা এগুলো দেখে প্রয়োজনে নতুন কিছু যোগ করতে পারে, নাও পারে। সব মিলিয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা তাঁত পল্লির একটা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করবে। পরে সেটা একনেকে পাস হলেই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে।’

জাহাঙ্গীর আলী খান বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তাঁতশিল্প অনেক দূর এগিয়ে যাবে। কারণ পদ্মার ওই এলাকা হবে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। মানুষ সেখানে ঘুরতে গিয়ে এই তাঁত পল্লির সঙ্গে পরিচিত হবে। তারা তাঁতের বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা করবে।’

নিউজবাংলার সঙ্গে কথা হয় পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের জমাদ্দারকান্দি গ্রামের মহসীন জমাদ্দারের, যার বাড়ি তাঁত পল্লির পাশেই। পদ্মা সেতু আর এই তাঁত পল্লি তাকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

মহসীন জমাদ্দার বলেন, ‘রাস্তার পাশেই আমার মুদি দোকান, দই-মিষ্টিও বেচি। এখানে তাঁত পল্লি হলে অনেক মানুষ আসবে, বেচাবিক্রি বাড়বে। তাই চিন্তা করছি, ডেইরি খামার দেব। খামারের দুধ দিয়ে উন্নতমানের মিষ্টি বানাব।

‘আশা করছি, সেই মিষ্টির জন্য এখানে যারা আসবে, তারা খেতে পারবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোক কিনেও নিয়ে যেতে পারবে। তাঁত পল্লিতে যেমন এলাকার লোকের কাজ হবে। আমরা যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ব, সেখানেও এলাকার মানুষ কাজ পাবে।’

আলতাফ হোসেন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এলাকাটি ছিল খুব অনুন্নত। এখন পদ্মা সেতু হয়েছে, তাঁত পল্লি হচ্ছে। এই এলাকা এখন শহরের মতো হয়ে যাবে। আলো ঝলমল করবে। দেশি-বিদেশি মানুষ আসবে। আমাদের এলাকাটি হবে পর্যটন এলাকা। এ কথা ভাবতেই আনন্দ লাগছে।’

এই তাঁত পল্লি হওয়ার খবর শুনে পাবনা থেকে ব্যবসা করতে এখানে এসে থাকছেন বিল্লাল হোসেন। এখন ভাঙারির ব্যবসা করছেন। প্রকল্পের পাশেই জমি কেনার চিন্তা তার।

নিউজবাংলাকে বিল্লাল বলেন, ‘আমি এই এলাকার না, ব্যবসা করতে আসছি। এখানে তাঁত পল্লি হলে বিভিন্ন জায়গার লোকজন আসা-যাওয়া করবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মান বাড়বে। এলাকাটি গ্রাম থেকে শহরে পরিণত হবে। তাই আমি পাবনা থেকে এসেছি। অনেক দিন ধরেই ভাঙারির ব্যবসা করছি।

‘এখন তাঁত পল্লি ঘিরে নতুন ব্যবসার চিন্তা করছি। এখানে বিনিয়োগ হবে বুদ্ধিমানের। আমার মতো অনেকেই আসছেন, ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিনিয়োগকারীরা আসবেন। এলাকাটি হবে দর্শনীয় ও বাণিজ্যিক এলাকা।’

প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস। ফলে উন্নত হবে দেশের তাঁতশিল্প। জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে তাঁতিদের। ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে তাঁতিদের। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটবে। স্থানীয় মানুষের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান।’

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পদ্মার এই পারে শুধু এই তাঁত পল্লিই নয়, হবে আইটি পার্কও। ইতিমধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় আইটি পার্কটি গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই পদ্মা-তীরবর্তী শিবচরে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর বাইরে আরও অনেক ছোট-বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শেখ রাসেল শিশুপার্ক, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব নার্সিং ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কলেজ, আইএইচটি ভবন, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, শিল্পকলা একাডেমি ভবন, মুক্তমঞ্চ ও অলিম্পিক ভিলেজ। সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে তোলা হবে বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও আইকন টাওয়ার।

আইটি পার্ক

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে শিবচরের কুতুবপুরের কেশবপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি অ্যান্ড হাইটেক পার্ক নির্মাণে ৭০ দশমিক ৩৪ একর জায়গা নির্ধারণ করেছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ২২ মে এই প্রকল্প শুরু করার জন্য প্রশাসনিক আদেশ জারি হয়েছে। এখন প্রকল্পের কনসালট্যান্ট নিয়োগের জন্য প্রপোজাল দেয়া হয়েছে। আর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আমরা মাদারীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। তারা কিছুদিনের মধ্যেই এই কাজ শুরু করবে। আশা করছি আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারব।

‘ইতিমধ্যে ওই এলাকায় জায়গা নির্ধারণ হয়ে গেছে। এই প্রকল্প বস্তবায়নের জন্য ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকার মতো খরচ হবে বলে আমরা অনুমান করেছি।’

প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন হলে, ওই এলাকায় বিরাট পরিবর্তন আসবে। শুধু ওই এলাকায়ই না, পুরো দেশটাকে টার্গেট করে এই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করা হবে। মেধাবী সমাজ গঠনের যে কথা বলা হচ্ছে, এখানে সেই মেধাবী তৈরির কাজ হবে।

‘প্রযুক্তি নিয়ে রিসার্চ হবে। বিকেএসপি যেমন খেলোয়াড় তৈরি করে, তেমনি এখানে আগামী দিনের আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরি হবে। এখানে হয়তো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হলো এখান থেকে অসংখ্য আইটি বিশেষজ্ঞ বের হবে, তারা সারা দেশে ভূমিকা রাখবে।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে।

সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রেজাউল করিম তালুকদার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং সার্কেল এএসপি অফিস-কাম-বাসভবন, বেগম রোকেয়া কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলসহ ট্রেনিং সেন্টার ও ডে-কেয়ার সেন্টার, শিবচর পৌর বাস টার্মিনাল, ট্রমা সেন্টার, শিবচর হাইওয়ে থানা, হাজি আবুল কাসেম উকিল ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, চৌধুরী ফাতেমা বেগম ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরীর (দাদা ভাই) নামে শিবচর উপজেলায় ‘দাদা ভাই উপশহর’ হাউজিং প্রকল্পে ৮৭৮টি প্লট প্রস্তুতির কাজ ও বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু বহুতল ভবন হয়েছে এবং সেগুলোতে মানুষ বসবাস করা শুরু করেছে। প্রায় ১০৫ একর জমিতে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে ১ লাখের বেশি মানুষের আবাসন হবে।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি খান মো. শহীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করে দেবে। পদ্মায় ধরা মাছ যেমন সহজেই কারওয়ান বাজারে যাবে, তেমনি যেকোনো কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা যাবে। ফলে কৃষক, জেলেসহ সব পেশার মানুষ সরাসরি লাভবান হবেন।’

তিনি বলেন, ‘তাঁত পল্লি ও আইটি পার্কের মতো প্রকল্প এই জনপদের জন্য আশীর্বাদ। এসব প্রকল্পে যাতে অনিয়ম-দুর্নীতি না হয়, সেদিকে সরকারের কড়া নজরদারি থাকা উচিত। অন্যথায় এসব প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে।’

সাজছে মুন্সীগঞ্জ

এই জেলার ওপর দিয়েই নান্দনিক ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে গেছে। অল্প সময়েই এখানকার মানুষ রাজধানী ঢাকায় যেতে পারছেন। বাড়িতে থেকেও অনেকে রাজধানীতে গিয়ে অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন।

এই এক্সপ্রেসওয়ে আর পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে সাজছে মুন্সীগঞ্জ। বেড়েছে এখানকার জমির দাম। হচ্ছে নতুন নতুন আধুনিক আবাসিক এলাকা। গড়ে উঠছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ নানা অবকাঠামো। এই এলাকার অনেক লোকেরই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে পদ্মা সেতুতে।

দৃষ্টি কেড়েছে ভাঙ্গা মোড়

পদ্মা সেতুর মতোই আরেক বিস্ময় হয়ে দেখা দিয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা গোলচত্বর। এখানকার বর্তমান দৃশ্য দেখলে মনে হয়, এটি উন্নত কোনো দেশের সড়ক জংশন, যা আসলে ভাঙ্গা উপজেলার গোলচত্বর।

এই গোলচত্বরের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই অনেক মানুষ ভিড় করছেন।

আরও পড়ুন:
পদ্মা সেতুর আলোকচ্ছটা প্রবাসেও
সেতুতে নিষ্প্রাণ হওয়ার পথে পদ্মার ফেরি-লঞ্চঘাট
আমন্ত্রণপত্র পাননি খালেদা, গ্রহণ ইউনূসের
কেউ যাবেন ব্যক্তি উদ্যোগে, কেউ প্যাকেজে
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত র‍্যাব

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Participation at the GICC Conference of the Secretary of the Bridge Division

জিআইসিসি সম্মেলনে সেতু বিভাগের সচিবে'র অংশগ্রহন

জিআইসিসি সম্মেলনে সেতু বিভাগের সচিবে'র অংশগ্রহন

দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।

এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।

এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There is no alternative to open reservoirs to resolve the domestic fish crisis Fisheries and Livestock Advisor

দেশীয় মাছ সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের বিকল্প নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

দেশীয় মাছ সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের বিকল্প নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।

উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।

চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।

খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
New Member of the Press Council Matiur Rahman Chowdhury

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’

বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।

এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Meeting the Religion Advisor with the Prime Minister of Pakistan

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।

এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Decision to form an independent investigation service of the police

পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত

পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত

পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’

সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Basic training duration of cadre officers is 6 months

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৪ মাস নির্ধারণ

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৪ মাস নির্ধারণ

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র‌্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’

সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।

কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Literature of the National Writers Forum

জাতীয় লেখক ফোরামের সাহিত্য আড্ডা

জাতীয় লেখক ফোরামের সাহিত্য আড্ডা

জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।

মন্তব্য

p
উপরে