তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বলাৎকার মামলায় মালিবাগের একটি স্কুলের শিক্ষক রোকনুজ্জামান খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তাকে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে ২২ জুন ভুক্তভোগীর বাবার করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই শিশুকে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘গত ৮ জুন স্কুলের বাংলা শিক্ষক রোকনুজ্জামান আমার ছেলেকে ওয়াশরুমের পাশে নিয়ে যান। পরে তিনি ওকে বলাৎকার করেন। বাসায় ফিরে আমার ছেলে পুরো বিষয়টি জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে ২২ জুন রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করি। মামলার পরপরই পুলিশ রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’
ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আট বছরের ওই শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।’
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত ও কলেজে সহিংসতার ঘটনায় জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
শনিবার রাত ৯টায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
এডিএম জুবায়ের হোসেন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১৮ জুন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে একটি ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার বিষয়ে আমাকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে দেয় জেলা প্রশাসন।
‘আমরা তদন্ত শেষ করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। তবে প্রতিবেদনে কারা জড়িত বা কাদের নাম এসেছে সেটা বলার সুযোগ নেই। যেহেতু মামলা হয়েছে সেজন্য কারও নাম বলা সম্ভব নয়। আমি এর বেশি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
কমিটির দুই সদস্য ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান ও নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে ৩০ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে কমিটি আরও দুইদিন সময় চেয়েছিল। আজ প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে মিটিং করে দোষীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’
একই ঘটনায় পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল নড়াইল জেলা পুলিশ। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামকে। অন্য সদস্যরা হলেন- ডিআই ওয়ান মীর শরীফুল হক ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) রফিকুল ইসলাম।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি।’
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে।
গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় যে ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্ত হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সারাদেশে।
আরও পড়ুন:সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের একটি গ্রামে মাত্র ২২ দিনের মধ্যে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১১ দিন পর পর ওই তিনটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এমন মৃত্যুতে ওই গ্রামজুড়ে এখন শোক আর আতঙ্ক বিরাজ করছে। দিশেহারা অবস্থা পরিবারটিরও।
ঘটনাটি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের গাইঘাটা সেনপাড়া এলাকার। মৃত ৩ জন হলেন- ওই এলাকার কৃষ্ণ চন্দ্রের ১৬ বছরের ছেলে মিঠুন চন্দ্র রায়, কৃষ্ণ চন্দ্রের কাকাতো ভাই ও মৃত অন্যপ্রসাদ রায়ের বড় ছেলে ৩০ বছরের বিমল চন্দ্র রায় ও মেজো ছেলে ২৭ বছরের রতন চন্দ্র রায়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ৮ জুন অসুস্থ অবস্থায় মারা যায় মিঠুন। তার শ্রাধ্যের দিনক্ষণ ছিল ২০ জুন। কিন্তু ১৯ জুন রাতেই মারা যান রতন। তিনি অসুস্থতা বোধ করছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। রতনের শ্রাধ্যের দিনক্ষণ ছিল ১ জুলাই। কিন্তু তার আগের দিন ৩০ জুন রাতে আকস্মিকভাবে মারা যান বিমল। ফলে ছোট ভাইয়ের শ্রাদ্ধ না করেই সৎকার করা হয় বড় ভাইকে।
এদিকে, একে একে তিন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারটিতে। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বিমলের নববধূ অষ্টমনি রানী। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বিলাপ করছেন রতনের স্ত্রী চিত্রা রানী।
মাত্র ৮ মাস আগে স্বামীকে হারানোর পর এবার কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক মা জয়ন্তি রানীও। এ ছাড়া স্থানীয়দের মাঝেও শোকের পাশাপাশি বিরাজ করছে আতঙ্ক।
মিঠুনের বাবা কৃষ্ণ চন্দ্র জানান, তার ছেলে স্থানীয় স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়তো। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল তার। পড়ালেখা করে ছেলে অভাবের সংসারে হাল ধরবে এমন প্রত্যাশা ছিল বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বিমল এবং রতনের ছোট ভাই জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার বাবা মারা গেছেন এখনও এক বছর হয়নি। এর মধ্যেই দুই ভাইকে হারাতে হলো। আমরা অভিভাবক শূন্য হয়ে গেলাম। কিভাবে পরিবার চালাবো ভেবে পাচ্ছি না। আর কাউকে হারাতে চাই না।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, ‘এক পরিবারে একে একে তিনজনের মৃত্যু একটি মর্মান্তিক ঘটনা। শুনেছিলাম রতনের কিডনিকে সমস্যা ছিল। পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় সঠিক চিকিৎসা করতে পারেনি হয়তো।’
পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতাও চান বেলাল।
বিষয়টি নিয়ে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী বলেন, ‘খবর নিয়ে জেনেছি, যারা মারা গেছেন তারা রোগাক্রান্ত ছিলেন। পরিবারটি যদি মনে করে তাদের কোনো বংশানুক্রমিক রোগ রয়েছে, তাহলে প্রয়োজনে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ছাড়া ওই পরিবারটিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়ারও আশ্বাস দেন ইউএনও।
আরও পড়ুন:নড়াইলে পুলিশের সামনে শিক্ষককে হেনস্তা ও সাভারে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামে গলায় জুতার মালা পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক।
শনিবার নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এই প্রতিবাদ জানান তিনি।
ওই শিক্ষকের নাম শেখর ঘোষ। তিনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি রাউজানের (দক্ষিণ) যুগ্ম সম্পাদক ও রাউজান মহামুনি এংলো-পালি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
এ প্রতিবাদ সম্পর্কে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের জাতির বিবেক বলা হয়। বিভিন্ন থানায় ওসি, এসপি হিসেবে যারা আছেন তারাও কোনো না কোনো শিক্ষকের ছাত্র। তাদের সামনে যদি কোনো শিক্ষককে জুতার মালা পরানো হয়, এটা মেনে নেয়া যায় না।
‘এটা শিক্ষকের গলায় না, পুরো জাতির গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। তা ছাড়া আরেকজন শিক্ষককে তারই ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করেছে। শিক্ষক হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই এসব আমি মেনে নিতে পারি না। আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এসব দেখে। তাই শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে গলায় জুতার মালা পরে আমার এই প্রতীকী প্রতিবাদ।’
এইদিন বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল মহাজন ও আলতাজ মিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় এ কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন বিটিএর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ। তাদের এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় (বাকবিশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
মানববন্ধনে বক্তারা দেশব্যাপী শিক্ষক হেনস্তা বন্ধ করা, শিক্ষকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানান।
বিটিএর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় দেশপ্রেমিক জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। লজ্জায় আর অপমানে যখন প্রতিটি বিবেকবান মানুষ ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিল, তখন সাভারের কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে মেরেছে তারই ছাত্র। শিক্ষকদের অপমান ও লাঞ্ছনার ঘটনায় সমগ্র জাতি লজ্জিত। শিক্ষকরা ভালো না থাকলে জাতিও ভালো থাকবে না।’
ওই সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি রঞ্জিত কুমার নাথ, চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি নুরুল হক ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার চক্রবর্ত্তী।
আরও পড়ুন:
আল হেলাল শুভ, ঢাকা
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের মতবিনিময় সভায় আবারও প্রকাশ্যে উঠে এসেছে দলীয় বিভেদ-বিভক্তি আর কোন্দল। দলে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে অভিযোগ করে পদবঞ্চিত নেতারা পার্টির নেতৃত্ব রওশন এরশাদকে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার গুলশানের এক হোটেলে পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন রওশন এরশাদ। সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের উপস্থিত ছিলেন না।
রওশন বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় মাস থাইল্যান্ডের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। পার্টির কেউ খোঁজ নেয়নি। অথচ যাদেরকে দল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে তারাই আমার নিয়মিত খোঁজ রেখেছেন। মসজিদ, মাজারসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ পল্লীবন্ধু এরশাদ নেই। তাই জাতীয় পার্টি এলোমেলো হয়ে গেছে। উনি থাকলে পার্টি অন্যরকম হতো।
‘যাদের দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে হবে। যারা চলে গেছে তাদেরকেও ফিরিয়ে আনতে হবে। নতুন প্রজন্মকে দলে আনতে হবে। দলকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমকক্ষ বানাতে হবে। নতুবা রাজনীতির টিকে থাকতে পারব না।’
সভায় বক্তারা জাতীয় পার্টিতে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে বলে অভিযোগ করে পার্টির নেতৃত্ব রওশন এরশাদকে নেয়ার আহ্বান জানান।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘পার্টি শক্তিশালী করার প্রয়োজনে যা যা করার দরকার তা-ই করব। এরশাদ তিলে তিলে এই দলটা গড়েছেন। সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে।’
প্রয়াত এরশাদকে স্মরণ করে রওশন বলেন, ‘এরশাদ ওপারে ভালো আছেন। কারণ তিনি ইসলামের খাদেম ছিলেন। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন, পবিত্র শুক্রবার ছুটি ঘোষণা করেন। মসজিদ, মন্দিরসহ সব উপাসনালয়ের পানি ও বিদুৎ বিল মওকুফ করেছিলেন।’
সভায় জাপার সাবেক এমপি নূরুল ইসলাম মিলন বলেন, পার্টির কর্মীরা আজ অসহায়, তাদের খোঁজ কেউ নেয় না। আপনাকে (রওশন এরশাদ) দলের দায়িত্ব নিতে হবে। পার্টির লাখো কর্মী আপনার অপেক্ষায় আছে।’
প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘আপনার নামের পাশে এরশাদ আছে। বাংলার মানুষ আপনাকে নেতৃত্বে দেখতে চায়। যে লোক কএনাদিন জেল খাটেনি, রাজপথে এরশাদ মুক্তির আন্দোলন করেনি তার কাছে এরশাদের জাতীয় পার্টি নিরাপদ নয়।’
সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে শুধুই বিশৃঙ্খলা, দ্বিধাবিভক্তি। কেন্দ্রে শুধু পদ আমদানি হয়। মুরগির মতো দলীয় পদ বিক্রি হচ্ছে।’
সভায় জাপার সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের আজ দুঃসময় চলছে। আপনার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল করলে আমাকে বাধা দেয়া হয়। আপনি যখন সংকটাপন্ন অবস্থায় থাইল্যান্ডে যান, তার পরের দিন তারা কক্সবাজারে দলবেঁধে আমোদ-ফূর্তি করেছে।’
কাজী মামুন রওশন এরশাদের জীবদ্দশায় সাদ এরশাদকে পার্টির চেয়ারম্যান করার দাবি জানান।
জাপার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, ‘কাউন্সিলে কথা ছিল আপনার দলীয় পতাকা আপনি ব্যবহার করবেন। সব সভায় সভাপতিত্ব করবেন আপনি। আপনার পরামর্শে দল পরিচালিত হবে। কোনো কথা রাখা হয়নি।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রওশন পুত্র রাহগীর আল মাহি (সাদ এরশাদ), রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান হবি, ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, জাপার সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ সাত্তার, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, নরুল ইসলাম নুরু, ইকবাল হোসেন রাজু, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, আশরাফ সিদ্দিকী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:‘নদীর পানি বাড়িচ্চে, আর হামাকে মদ্যে আতঙ্কও ব্যাড়া যাচ্চে বাপো। নদীর তীরোত হামাকেরে ফসলের মাঠ। পানি বাড়লে হামাকে জমিগুলা সব তলায়া যাবে বাপো। খুব চিন্তাত আছি।’
এভাবে আতঙ্কের কথা জানান আত্রাই নদী পাড়ের বাসিন্দা নিবারন চন্দ্র।
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর পানি জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জেলার প্রান্তিক কৃষকদের চাষাবাদের প্রস্তুতির মধ্যে আবার বন্যার আশঙ্কায় পড়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় এসব বিষয় জানান নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান।
পাউবো জানায়, আত্রাই নদীর পানি নওগাঁর জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। আত্রাইয়ের পানি রেলস্টেশন পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, শিমুলতলী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির এই বাড়া-কমায় নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিদিনই নদীগুলোতে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে, তাতে জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে পাউবো।
মান্দার জোতবাজার গ্রামের কৃষক নিবারন চন্দ্র বলেন, ‘একন তো হামাকেরে বোরো মৌসুম চলিচ্ছে। নদীর তীরোত হামাকেরে ফসলের মাঠ। পানি বাড়লে হামাকে জমিগুলো সব তলায়া যাবে বাপো। গত দুই দিন থ্যাকা আত্রাই নদীর পানি বাড়া শুরু করিছে আর হামাকে মদ্যে আতঙ্কও বাড়িচ্চে বাপো। কি যে হবে এল্লা লিয়া খুব চিন্তায় আছি। যদি পানি ব্যাড়া যায়, তালে জমি ও ঘর পানির নিচে তলায়া যাবে। পরিবার লিয়া পথোত বসা লাগবে।’
মহাদেবপুরের শিমুলতলী গ্রামের কৃষক জাফের উদ্দিন জানান, গত সপ্তাহেও নদীর পানি স্বাভাবিক ছিল। শুক্রবার থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর পানি বাড়ার কারণে ধানের ক্ষতি হয়েছিল। এবার যদি আবার পানি বাড়ে তবে ফসলের মাঠ তলিয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কয়েক দিন ধরেই আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে বেশি সময় লাগবে না।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করছি। চেষ্টা করছি দ্রুত কীভাবে মেরামত করা যায়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই-তিন দিন পানি কিছুটা কমতে পারে।’
নওগাঁ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. নিলয় রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলার কিছু স্থানে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যা হলে আমাদের ত্রাণ ও বন্যার্তদের সুরক্ষিত স্থানে রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।’
মন্ত্রণালয় থেকেও পূর্ব প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান ডিসি।
জেলা প্রশাসন অফিসের তথ্যমতে, নওগাঁ সদর, মান্দা, আত্রাই, রানীনগর, পোরশা, সাপাহার ও ধামইরহাট উপজেলার ৫০ গ্রামের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ নদীতীরে বসবাস করছে। এরই মধ্যে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের রাউজান ও বাঁশখালীতে পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
বাঁশখালীতে রোববার সকাল ১০টায় এবং বিকেল ৪টার দিকে রাউজানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের বাঁশখালা গ্রামের মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম এবং ফটিকছড়ির আব্দুল্লাহপুর এলাকার মো. রাশেদ।
বাঁশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাহারছড়ার বাঁশখালা এলাকায় একটি ডাম্পট্রাকের চাপায় ৮ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। স্থানীয় বেড়িবাঁধে সড়ক নির্মাণের কাজে ইট নিয়ে যাচ্ছিল গাড়িটি। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
রাত পৌনে ৯টার দিকে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, বিকেলে নিজ বাড়ি আব্দুল্লাহপুর থেকে মোটরসাইকেলে মাইজভান্ডার যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে পড়ে যায়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৯ বছরের এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে দুই জনকে আসামি করে মামলাটি করেন শিশুর মা। শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী। আল মাহি নামে এক যুবকের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ২৯ জুন রাতে শিশুটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, আড়াইহাজার উপজেলার ছনপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে আল মাহি ও আব্দুর রশিদের ছেলে মোহাম্মদ আছলাম।
এজাহারে বলা হয়েছে, শিশুটি ২৯ জুন রাত আটটার দিকে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল আসামি আল মাহির বাড়িতে। সেখানে অবস্থান করছিল আছলাম নামের এক ছাত্র। পড়ার রুমে শিশুকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে মাহি ও আছলাম। পরে তাকে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে কসম করানো হয় ঘটনা কাউকে না জানাতে।
শিশুটি রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়িতে ফিরে মাকে ঘটনা জানায়। এরপর বাবাসহ অন্য আত্মীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন।
ওসি আজিজুল হক বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে প্রথমে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়। সেখানে তারা নিজেরা মিমাংসার চেষ্টা করেন। মিমাংসা না হলে শিশুর মা থানায় মামলা করেন। এর আগেই আসামিরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।’
শিশুর মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পরদিন স্থানীয় কয়েকজন আমাদের বাড়িতে মিমাংসা করতে এসেছিলেন। কিন্তু আমি বিচার চাই, তাই মামলা করেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য