চাকরিতে দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি মো. আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে।
এসব সম্পদের খোঁজ পেয়ে চলতি বছর দুর্নীতি দমন কমিশন আবুল হাসেম খান ও তার স্ত্রী মাহফিজা বেগম চম্পার নামে মামলা করে। পরে মাহফিজা বেগম চম্পার নামে আদালতে অভিযোগপত্রও দেয় দুদক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-আমিন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ে ওসি হাসেম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছিল। তার মধ্যে ওসি হাসেমের বিরুদ্ধে মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে।’
মামলা ও অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওসি হাসেম ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য গোপন করেছেন এবং তার আয়ের সঙ্গে ৩২ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৬ টাকার সম্পদের অসংগতি রয়েছে।
এ ছাড়া তার স্ত্রী ৯ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৯৮ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য গোপন করেছেন এবং তার আয়ের সঙ্গে ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৮ টাকার সম্পদের অসংগতি রয়েছে।
সূত্র জানায়, মো. আবুল হাসেম খান ১৯৭৭ সালে এসএসসি পাস করে বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপপরিদর্শক ও ১৯৯৭ সালে পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। দেশের বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ থাকা অবস্থায় তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। তার স্ত্রী মাহফিজা বেগম চম্পা একজন গৃহিণী। ব্যক্তিগত জীবনে তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
মো. আবুল হাসেম খান ও তার স্ত্রী- দুইজনেরই পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। তবে যশোর, খুলনা ও ঢাকায় তাদের পৃথক হোল্ডিং রয়েছে। বর্তমানে তারা যশোর পৌরসভার পূর্ব বারান্দি এলাকায় নিজস্ব বাড়িতে বসবাস করছেন।
ওসি হাসেমের বিরুদ্ধে মামলা
চলতি বছরের ১২ মে দুদকের সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোশারেফ হোসেন বাদী হয়ে আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, যশোর শহরের বারান্দি মৌজায় ওসি হাসেমের নামে ১০ শতক জমি, মনিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর মৌজায় সাড়ে ৭ শতক জমি, যশোর সদর উপজেলায় কচুয়া মৌজায় ৫ দশমিক ৪০ একর জমি রেকর্ড রয়েছে। এসব জমির অনেকাংশ তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়ার কথা বললেও কোনো দলিল দেখাতে পারেননি।
এ ছাড়া ওসি হাসেম ও তার স্ত্রীর যৌথ নামে যশোর শহরের বারান্দি মৌজায় ২৭ শতক জমির ওপর চার তলা বাড়ি ও একটি নির্মাণাধীন বাড়ি রয়েছে। মনিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর মৌজায় তাদের দুইজনের নামে ২৮ দশমিক ১২ শতক জমিতে একটি একতলা পাকা বাড়ি ও সেমি পাকা তিনটি বাড়ি রয়েছে।
মামলায় আরও অভিযোগ, ওসি হাসেম দুদকে যে সম্পদ থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার থেকে ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদ বেশি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার আয়ের সঙ্গে ৩২ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৬ টাকার সম্পদের অসংগতি রয়েছে।
ওসির স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট
চলতি বছরের ২০ মার্চ দুদকের সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে আবুল হাসেম খানের স্ত্রী মাহফিজা বেগম চম্পার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে ১২ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম মোড়ল ও সহকারী পরিচালক মো. মোশারেফ হোসেন তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, মাহফিজা বেগম চম্পার নামে ঢাকার খিলগাঁও চৌরাস্তা ব্লকে ২ কাঠা জমি, ডেমরায় সাড়ে ৩ কাঠা ফাঁকা জমি, খুলনার নিরালায় ৯ দশমিক শূন্য ৫ কাঠা জমি, যশোর শহরের বারান্দি মৌজায় পৃথক ৯ শতক, ৮ শতক ও ৮.২৫ শতক জমি, যশোর সদরের জিরাট মৌজায় পৃথক দেড় শতক ও ২ দশমিক ২ শতক জমি, মনিরামপুরের দুর্গাপুর মৌজায় পৃথক ১০ শতক ও সাড়ে ৯ শতক জমি, মনিরামপুরের বিজয়রামপুর মৌজায় সাড়ে ৭৫ শতক জমি, ঢাকার গুলশানে রাজাবাড়ী মৌজায় ৭ দশমিক ১৬ শতক জমি ও যশোর সদরের কচুয়া মৌজায় ১০৪ শতক জমি রয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকার ধানমন্ডি মৌজায় নিউ মার্কেট সিটি কমপ্লেক্সের ১৭ তলা একটি ভবনের অষ্টম তলায় ২৫০৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় দুই ইউনিটবিশিষ্ট ৬ তলা একটি পাকা বাড়ি, খুলনার নিরালায় ৪ ইউনিটবিশিষ্ট ৯ তলা একটি পাকা বাড়ি ও যশোর শহরে একটি ৪ তলা পাকা বাড়ি রয়েছে।
এ ছাড়া মাহফিজা বেগম চম্পার নামে টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ি, ঘরে দামি আসবাবপত্র, ইলেকট্রিক সামগ্রী ও ব্যবসায়িক পুঁজি পাওয়া গেছে।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, ওসি হাসেমের স্ত্রী মাহফিজা বেগম চম্পা দুদকে যে সম্পদ থাকার ঘোষণা দিয়েছিল, তার থেকে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৯৮ টাকার সম্পদ বেশি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার আয়ের সঙ্গে ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৮ টাকার সম্পদের অসংগতি রয়েছে।
ওসি হাসেম যা বলছেন
দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে আবুল হাসেম খান বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমার বিরুদ্ধে দুদক মামলা দিয়ে কী করবে। আমি সারা জীবনে সাধারণ একটি চাকরি করেছি। ৫ বছর আগে অবসরে এসেছি। আমাদের তো তেমন কিছু নেই। ঋণ নিয়ে কিছু সম্পদ করেছি। এখন তা অপরাধ হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্পদ গোছাতে হলে, হয়তো ব্যাংক লুট করতে হয়, ডাকাতি করতে হয় বা চুরি করতে হয়। আমার বয়স এখন ৬৫। আমার মুখে দাড়ি আছে। আমি হজ করে এসেছি। আমি কি এসব করতে পারি?’
অভিযুক্ত সাবেক ওসির দাবি, দুদকের যশোর কার্যালয়ে শহিদুল নামে এক কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে এসব করে চট্টগ্রাম চলে গেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও চাকরিজীবনে অনেক তদন্ত করেছি। দুদক আমার বিরুদ্ধে সঠিকভাবে তদন্ত করেনি। সব মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করেছে।’
এ ছাড়া অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে অন্তত ১৪ বার আবেদন করেও দুদক পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বলে জানান সাবেক ওই ওসি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য