এক যুগ আগে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধে যারা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দেনদরবার করেছিলেন, তাদের প্রতি আর রাগ ধরে রাখছেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তিনি আশা করেন, তারা যে দেশের ক্ষতি করেছেন, এটা তারা নিজেরাই বুঝবেন।
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোয় সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে সাংবাদিকদের পরামর্শও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য কেউ দেশের এত বড় ক্ষতি করতে পারে, এটা কখনও কল্পনাও করতে পারেননি বলেও জানান তিনি।
সেতু হয়ে যাওয়ায় এখন আর কারও প্রতি রাগ, ক্ষোভ নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘তারা নিজেরাই তো বুঝবে, যদি তাদের অনুশোচনা থাকে।’
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। ঢাকার তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর গণমাধ্যমকর্মীরা নানা বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন। একটি প্রশ্ন ছিল, পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়নের পর এর অর্থায়ন থেকে যেসব উন্নয়ন সহযোগী সরে গেছে, তারা কী আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানিয়েছে?
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্ররোচনাটা কে দিয়েছিল সেটাকে আগে ধরেন। সেটাই তো বড় কথা। তাদের কারা উৎসাহিত করেছিল, কে করেছিল? আমি আগেই বললাম না, নিজের ভাঁড় ভালো না, গোয়ালার ঘিয়ের দোষ দিয়ে লাভ কী? কথাটার অর্থ হচ্ছে, আপনি বাইরের লোকদের কী দোষ দেবেন। যারা ছিল, তারা তো নেই। চলে গেছে।’
সূচনা বক্তব্যে প্রফেসর ইউনূস ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত স্বার্থ, সেই স্বার্থের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে একটি দুর্নাম রটানো হয়। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আসে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমারই দেশের কিছু নাগরিক এবং বিশেষ একজন নাগরিক তিনি এ ব্যাপারে সব থেকে বেশি উদ্যোগ নেন।
‘এর সঙ্গে আরও কয়েকজন যারা, তারা ছিল। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য কোনো মানুষ কোনো দেশের এত বড় ক্ষতি করতে পারে বা যার মধ্যে এতটুকু দেশপ্রেম বা জনগণের প্রতি এতটুকু দায়িত্ববোধ থাকে তারা এটা করতে পারে, এটা আমার জানা ছিল না। ব্যাংকের সামান্য একটা এমডির পদ যে এত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে ব্যক্তিবিশেষের কাছে, এটা আমার কাছে অবাক লাগে। ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক টাকা দেয়ার কথা, তারা তা বন্ধ করে দেয়। সরে দাঁড়ায়। এর মধ্যে কিছু লোক আছে যারা অন্যায়ভাবে, অন্যায্যভাবে কিছু বিষয় নিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে।’
বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রাক-যোগ্য ঠিকাদার নির্বাচনের একপর্যায়ে বিশ্বব্যাংক, কারিগরি কমিটিকে একটি প্রাক-যোগ্য ঠিকাদারকে বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্ত থাকার কারণে বাদ দিতে বলে এবং একটি প্রাক-যোগ্যতায় অযোগ্য ঠিকাদারকে যোগ্য করতে বলে।’
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে কারিগরি কমিটি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাক-যোগ্য কোয়ালিফায়েড দরদাতাকে বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্তির কারণে বাদ দেয়। কিন্তু প্রাক-যোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ে অযোগ্য দরদাতাকে অভিজ্ঞতার জাল সার্টিফিকেট দেয়ায় যোগ্য করতে অস্বীকৃতি জানায়, যা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পছন্দ করেনি।’
প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে একটা কথা আছে না, ‘নিজের ভাঁড় ভালো না, গোয়ালার ঘিয়ের দোষ দিয়ে লাভ কী?’ বিশ্বব্যাংককে আমি কীসের দোষ দেব? তারা বন্ধ করল কাদের প্ররোচনায়। সেটা তো আমার দেশেরই কিছু মানুষের প্ররোচনায়, তারা বন্ধ করেছিল। এটাই তো বাস্তবতা।’
নিজেদের অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তে যারা কটু কথা বলেছেন তাদের বিভিন্ন উক্তিও সংবাদ সম্মেলনে পাঠ করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘যারা বিভিন্ন কথা বলেছে, কিছু কথা আমি ওঠালাম, কথা তো আরও আছে। সেখানে আমার তো কিছু বলার দরকার নেই। তারা নিজেরাই তো বুঝবে, যদি তাদের অনুশোচনা থাকে। না থাকলে আমার কিছু বলার নেই। এখানে আমার কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা যারা বলছে, তারা বুঝতেছে। তাদেরকে দাওয়াত দিচ্ছি। আমরা সবাইকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাব পদ্মা সেতু দেখাতে।’
তবে তাদের বিশ্বব্যাংকের ওই সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বদরবারের বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা ও সক্ষমতা জানান দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বরং আমি ধন্যবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই এ জন্য যে এ ঘটনা ঘটেছিল বলে সাহস নিয়ে নিজেদের টাকায় নিজেরা পদ্মা সেতু করার ফলে আজকে বাংলাদেশে সম্মানটা ফিরে এসেছে। নইলে আমাদের দেশ নিয়ে একটা পারসেপশন ছিল, একটা মানসিকতা ছিল যে আমরা অন্যের অর্থায়ন ছাড়া কিছুই করতে পারব না।
‘পরনির্ভরশীলতা, পরমুখাপেক্ষিতা- এটাই কিন্তু আমাদের মাঝে ছিল। দৈন্যতা ছিল। অন্তত বিশ্বব্যাংক যখন এই টাকাটা তুলে নিয়ে গেল, আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিলাম, সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি, সেই অচলায়তন ভেঙে একটা আত্মমর্যাদাশীল জাতি, আমরা যে পারি সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি। তাতে আমি খুশি।’
পদ্মা সেতুর টাকা বিশ্বব্যাংক থেকে উদ্ধার করা গেছে
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংক সরে গেলেও সেই অর্থ বাংলাদেশ উদ্ধার করতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই অর্থ সেতু নির্মাণে ব্যবহার না হলেও অন্য উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের আমরা কিন্তু অংশীদার। তারা কিন্তু কোনো অনুদান দেয় না। আমরা লোন নিই।… আমরা কিন্তু সেখান থেকে লোন নিই, টাকা নিই। যে টাকাটা বাংলাদেশের নামে স্যাংশন হবে, সেই টাকা নষ্ট করার কোনো রাইট তাদের নেই। হয়তো পদ্মা সেতু থেকে তারা টাকা বন্ধ করছে, টাকা কিন্তু আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। এই টাকা কিন্তু অন্যান্য প্রজেক্টে ব্যবহার করতে পেরেছি। এটা কিন্তু করা যায়।’
এ বিষয়টি দেশের অনেকে জ্ঞানী-গুণীজনরাও জানেন বলে আক্ষেপে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের অনেকে জানে না। আমি জানি না, কেন জানে না। আমাদের যারা অর্থনীতিবিদ, যারা কাজ করে তারা কেন এটা মাথায় রাখে না যে তারা কোনো দাতা না, তাদের কাছে ভিক্ষা নিই না। ব্যাংকের একটা অংশীদার হিসেবে আমরা লোন নিই। সুদসহ সেই লোন পরিশোধ করি।’
বাংলাদেশের নামে যে টাকা বরাদ্দ হবে, সেই টাকা দিতে বিশ্বব্যাংক বাধ্য বলেও দাবি করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, ‘একটা প্রজেক্টে টাকা বন্ধ হয়ে গেলে সেই টাকা নিয়ে চলে যাবে, সেটা কিন্তু যেতে পারে না। আমাদের জ্ঞানীগুণীরাও মনে করছে বিশ্বব্যাংকের টাকা বন্ধ হয়ে গেছে… কীসের জন্য? আমরা তো লোন নিচ্ছি। যে লোন বাংলাদেশের নামে স্যাংশন হবে সেটা কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশকে দিতে হবে। এটা না দিয়ে পারে না।’
বিশ্বব্যাংককে দাতা সংস্থা বলতেও নারাজ টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দাতা দাতা কথাটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কীসের দাতা, তারা তো উন্নয়ন সহযোগী। লোন নিই, সুদসহ পরিশোধ করি। সুদের হার কম, এটা ঠিক।’
দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ বঙ্গবন্ধুকন্যা
দেশের মানুষের সাহসের কারণেই পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বলে বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাই দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। শুধু ধন্যবাদ নয়, আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। কারণ যেদিন আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করব, অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু মানুষের শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি।
‘মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়া আমি পেয়েছিলাম, এটাই কিন্তু আমার সাহস এবং শক্তি। সেটুকু আপনাদের জানিয়ে রাখি। তাই দেশের মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সহযোগিতার, তাদের সাহসে, এই জনমানুষের সাহসে আজ পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’
উৎসবে শামিল হোন সবাই
২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সাহসে সাহসী হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। সে জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সে জন্য বলব, উৎসব সবাই করবেন।’
উৎসবে বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকে একটু ধৈর্য ধারণ করবেন, নিয়ম মানবেন। কোনো রকম যেন দুর্ঘটনা না ঘটে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবেন। সবাই যার যার জায়গা থেকে যেভাবে হোক এই উৎসবে শামিল হবেন। এটা আমাদের মর্যাদার বিষয় যে আমরাও পারি। এটাই আমরা প্রমাণ করেছি।’
চাপের মুখে নতি স্বীকার করে না বাংলাদেশ
মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক চাপ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনো চাপের মুখে কখনও নতি স্বীকার করেনি, করবেও না। আর মানবাধিকার আমাদের শেখাতে আসবে কারা? যারা খুনিদের আশ্রয় দেয়? যে দেশে প্রতিনিয়ত স্কুলে গুলি হয়, ছাত্রছাত্রী মারা যায়, রাস্তাঘাটে পুলিশ গলা পাড়িয়ে মেরে ফেলে, তো তারা আমাদের কী মানবাধিকার শেখাবে?’
তিনি বলেন, ‘এগুলো কথা তারা ওঠাবে আর আমাদের কিছু লোক নাচবে, এটাই। আমাদের যে আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলব। জনগণের শক্তি নিয়ে চলব।’
আরও পড়ুন:দেশজুড়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে অস্থির জনজীবন। বিদ্যুতের লোডশেডিং সেই অস্বস্তি-অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়লেও সারাদেশে লোডশেডিং কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আগের তুলনায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্যের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, বুধবার (দেশে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার তা ছিল ১ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট।
এনএলডিসির তথ্যে আরও দেখা যায়, মঙ্গলবার রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৬৮ মেগাওয়াট। তবে বুধবার দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতির মাত্রা কমে সকাল ৭টায় ৫৪২ মেগাওয়াটে নেমে আসে। আবার বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় ৮২১ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য বলছে, ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বুধবার বিকেল ৫টায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট। সে হিসাবে সন্ধ্যার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উৎপাদন ঘাটতি ছিল ৭২৭ মেগাওয়াট।
ওদিকে বুধবার সন্ধ্যায় চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে লোডশেডিং এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ৩ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ। আগামী তিন বছরের জন্য এই পদে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ এর ধারা-৭ অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেয়া হয়। বিকেলে তিনি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এই পদে যোগদান করেন।
মোহাম্মদ ইউনুছ আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সদস্য সচিব।
সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে বুধবার (২৪ এপ্রিল)। ২০১৯ সাল থেকে দুই মেয়াদে টানা পাঁচ বছর এই পদে ছিলেন তিনি।
২০০৯ সাল থেকে সরকারের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার এই পদে চুক্তিভিত্তিক রাজনৈতিক নিয়োগ দিয়ে আসছে সরকার। মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম টানা ১০ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল নিয়োগ দেয়া হয় মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষকে।
চিটাগাং ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯ কে যুগোপযোগী করে ২৯ জুলাই ২০১৮ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সেই আইনের ৭ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে- চেয়ারম্যান বা বোর্ড সদস্য হিসেবে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগলাভের জন্য বলে বিবেচিত হবেন না। জহিরুল আলম দোভাষ ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল প্রথম মেয়াদে দুই বছরের জন্য ও ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে তিন বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
সিডিএ’র উপ-সচিব অমল কান্তি গুহ বলেন, ‘দুপুরে প্রজ্ঞাপন হয়েছে। আমরা পেয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী, নতুন চেয়ারম্যান মহোদয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে যোগদান করে এরপর সিডিএ কার্যালয়ে আসবেন।’
মোহাম্মদ ইউনুছ প্রয়াত রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ভাবশিষ্য হিসেবে পরিচিত। সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা ইউনুছ বর্তমানে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য।
রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।
ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।
সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।
একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।
একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার তারা শপ্রথ গ্রহণ করবেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বুধবার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত বিচারপতিগণ হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
বৃহস্পতিবার শপথ
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার বলা হয়, আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতি বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করবেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি তাদেরকে শপথ পাঠ করাবেন।
মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাহাজ ‘চিন ডুইন’ থেকে তাদের নিয়ে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়া ঘাটে এসে পৌঁছায়।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার এসে পৌঁছায়।
প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার পৌঁছানোর পরপরই ঘাট থেকে গাড়িযোগে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উদ্দেশে রওনা হয়, যেখানে বিজিবির অধীনে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৮৫ সদস্য রয়েছেন। তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার মিয়ানমার ফেরত যাবে প্রতিনিধি দলটি।
এদিন বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও কক্সবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
তিনি বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে ১৭৩ বাংলাদেশি ঘাটে এসে পৌঁছাতে পারেন। তারা মিয়ানমারের কারাগারে ভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে সরকারের প্রচেষ্টায় ফিরছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার জেলার, ৩০ জন বান্দরবান জেলার, সাতজন রাঙ্গামাটি জেলার এবং একজন করে রয়েছেন খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার। ইতোমধ্যে ফেরত আসাদের অপেক্ষায় ঘাটে ভীড় করছেন তাদের স্বজনরা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে ফেরত আসাদের গ্রহণ করে পুলিশে হস্তান্তর করবে বিজিবি। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে স্ব স্ব থানার পুলিশের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
এদিকে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সফররত মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘চিন ডুইন’ জাহাজটি ১৭৩ বাংলাদেশিকে বহন করে মঙ্গলবার যাত্রা শুরু করে। এর মধ্যে ১৪৪ জন কারাগারে পূর্ণ মেয়াদে সাজা ভোগ করেছেন। অপর ২৯ জন মিশনের প্রচেষ্টায় ক্ষমা পেয়ে বাংলাদেশে ফিরছেন।
মূলত বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা মিয়ানমারের জাহাজটিই বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপির ২৮৫ সদস্যকে নিয়ে ফেরত যাবে।
মিয়ানমারের ২৮৫ সদস্যকে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি নাইক্ষ্যংছড়ি গেছে।
মিয়ানমারে ফেরত যাওয়াদের মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল একদিনে নতুন ২৪ জন, ১৬ এপ্রিল ৬৪ জন, ১৪ এপ্রিল ১৪ জন, ৩০ মার্চ ৩ জন ও ১ মার্চ ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নেন। এরও আগে ফেব্রুয়ারির শুরুতে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন, যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
প্রথম দফায় ফেরতের সময় ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ ও সংশ্লিষ্টরা কথা বললেও এবার তা হচ্ছে না। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের গ্রহণ এবং ২৮৫ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ করে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে। সেখানেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ সংরক্ষিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংকক পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ০৮ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। খবর ইউএনবির
বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অফ অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেয়া হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এ সফর।
১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এ প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর এটি।
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অফ ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা নথি সই হবে।
‘দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আরও ২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ জানান, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।
২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নথি সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এ অধিবেশনে একত্রিত করবে।
আরও পড়ুন:র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
বাহিনীটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, (এনডি), বিপিএম (সেবা), এনইউপি, পিসিজিএম, বিএন অদ্য ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার। তিনি ১৯৯৫ সালে ৩৫তম বিএমএ লং কোর্সের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চে কমিশন লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন নৌ বাহিনীতে ছোট ও মাঝারি বিভিন্ন জাহাজের অধিনায়ক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কমান্ডার আরাফাত ইসলাম দেশ ও বিদেশে নৌবাহিনীর বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মন্তব্য