শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে শরীয়তপুরের জাজিরায় দুই ফেরির সংঘর্ষের সময় গাড়িচাপায় এক যুবক নিহত হয়েছেন।
পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্টে শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া ফেরির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
৪০ বছর বয়সী নিহত খোকন শিকদারের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানার চিংবাখালি গ্রামে। তিনি পিকআপ ভ্যানের চালক ছিলেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামাল হোসেন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিটি মাঝিরকান্দি থেকে শিমুলিয়া আসছিল ও বেগম রোকেয়া শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি যাচ্ছিল। জাজিরায় পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্টে দুই ফেরির সংঘর্ষ হয়। সে সময় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিতে দাঁড়িয়ে থাকা হারুন একটি গাড়ির চাপায় নিহত হন। তিনি পিকআপ ভ্যানে মাছ নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন।
জামাল বলেন, ‘প্রচুর স্রোতের কারণে ফেরিগুলো নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। এখন ঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সব নৌযান চলাচল করছে।’
এ দুর্ঘটনায় একজন নিখোঁজ বলে জানান মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দুই ফেরির সঙ্গে একজন পদ্মায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন। তিনিও সুফিয়া কামাল ফেরিতে ছিলেন।’
শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত চার লেনের সড়ক নির্মাণে ধীরগতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শরীয়তপুর ১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপু।
এমপির নিজস্ব কার্যালয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অপু বলেন, ‘আমাদের ৩ সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের ওপর ভিত্তি করে শরীয়তপুরের মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সালে একনেকে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার ফোর লেন প্রকল্পের অনুমোদন দেন। অনুমোদনের পর দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও নানান জটিলতায় আশানুরূপ কাজ হয়নি।
‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এই সড়কে যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। ঢাকা থেকে আসার পথে আমিও জানজটে আটকা পরেছিলাম।’
মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে সড়ক বিভাগকে নির্দেশনা দেন এই এমপি। এ ছাড়া ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে চলাচলকারী বিআরটিসি বাস নিয়েও গণমাধ্যমে কথা বলেন তিনি।
জেলার কিছু কিছু উপজেলা থেকে বিআরটিসি বাস চলাচল করলেও বাস মালিক সমিতির খামখেয়ালিপনায় জেলা শহর থেকে বন্ধ বাখা হয়েছে। সম্প্রতি জেলা শহরে বিআইডব্লিউটিসির বাস আটকে দেয় মালিক সমিতির সদস্যরা।
কেন জেলা শাহর থেকে বিআরটিসি বাস চলবে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এমপি বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলা শহর থেকে রাজধানীতে বিআইডব্লিউটিসি বাস চলবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে।’
পদ্মা সেতু হয়ে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার চার লেনের সড়ক উন্নয়নের প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। চলতি বছরের জুন মাসের মাধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ।
বর্তমানে শরীয়তপুর থেকে কাজিরহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার ২৪ ফুট ও কাজিরহাট থেকে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১২ ফুট প্রস্থের সড়ক রয়েছে। সরু এই সড়কে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের।
আরও পড়ুন:খুলনা মহানগরীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বুধবার রাত ৮টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন জুলফিকার নাইম মুন্না নামে ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, মুন্না হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি।
তার বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধী গ্রামে।
খালিশপুর থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে তিনি জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করছিলেন মুন্না। সে সময় ২ জন এসে তার মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়।
খালিশপুর থানা পুলিশ তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দীঘলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, নিহত মুন্নার নামে একাধিক মামলা আছে।
ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুরমার পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও পানির উচ্চতা মঙ্গলবারের চেয়ে আট সেন্টিমিটার বেড়েছে। ছাতক পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর।
নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলে বাড়তে শুরু করেছে পানি।
স্থানীয়রা জানান, নবীনগর, কাজির পয়েন্ট, ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তৃতীয় দফা বন্যার পানি এখনও নামেনি। এর মধ্যেই আবার পানি ঢুকছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।
নবীনগরের মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘পানি আবার বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতে এখানে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ঘরের পানি এখনও শুকায়নি। ভয়াবহ বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আবার যদি পানি আসে তাহলে কীভাবে থাকব?’
দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার গ্রামের খালেদ হাসানও বলেন, ‘এখান থেকে আগের পানিই যায়নি। তার মধ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বাড়ছে। আমরা যারা নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা তারা সবার আগে বিপদে পড়ছি।’
পাউবো জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদরে ১৯৬ মিলিমিটার, তাহিরপুরে ৩২ মিলিমিটার, দিরাইয়ে সাত মিলিমিটার ও ছাতকে ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
চেরাপুঞ্জিতে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে যা তার আগের ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ৫০ মিলিমিটার কম।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল হওয়ায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে এ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবারও সুনামগঞ্জে ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিতে হচ্ছে।
‘ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের নদীর পানি বাড়ছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে উজানে যদি তিন থেকে চার দিন টানা ভারি বৃষ্টি হয় তাহলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে লাইলী আক্তার নামে এক নারীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দম্পতিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মুখ্য ১ নম্বর আমলি আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আব্দুল হাই তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পরিদর্শক প্রসূন কান্তি দাস। তিনি জানান, আগুনে পুড়ে লাইলী আক্তারকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আছমা নামে দুই আসামিকে আদালতে তোলে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। এ সময় বিচারকের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহতের স্বামী আব্দুর রশিদ ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই দিন রাতেই সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মো. জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আছমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন খোকন মিয়া ওরফে কাজল, তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনা, গোলাম মোস্তফার ছেলে কামাল মিয়া, বাবুল, কামাল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা আক্তার বৃষ্টি, বাবুলের স্ত্রী রোমান।
মামলার বরাতে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন জানান, সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী খুকি আক্তারের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দুই পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না।
গত ২৬ জুন তারা পালিয়ে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয় মেয়ের পরিবারের লোকজন। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে মঙ্গলবার ছেলের বাড়িতে এসে ছেলের মা লাইলীকে একা পেয়ে প্রথমে গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে হাত-পা তার দিয়ে বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আগুন জ্বলতে থাকলে স্থানীয়রা লাইলীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে লাইলীর মৃত্যু হয়।
ফারুক হোসেন আরও জানান, বাকি আসামিরা বিভিন্ন জায়গায় পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা থেকে পটুয়াখালীগামী লঞ্চের কেবিন থেকে এক যাত্রীর ব্যাগ চুরি নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছে। লঞ্চের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই চুরির ঘটনাটি। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে আসার প্রায় ২০ মিনিট আগে বিলাসবহুল সুন্দরবন-৯ লঞ্চের ২১৯ নং কেবিনে ওই চুরির ঘটনাটি ঘটে।
পটুয়াখালী শহরের কাঠপট্টি এলাকার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহ-সভাপতি মো. আবু নাইম জানান, তার স্ত্রী ইসমত আরা ঢাকার সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী আসার পথে সুন্দরবন-৯ লঞ্চের ২১৯ নম্বর কেবিনে প্রবেশ করে মালামাল রাখেন। পরে কেবিনটি তালা মেরে লঞ্চের দোতলার সামনের অংশে গিয়ে তিনি মেয়ের জামাইকে বিদায় জানান।
মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট পর কেবিনের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে হাতের পার্স (হাত ব্যাগ) না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন ইসমত আরা। এক পর্যায়ে তিনি কান্নাকাটি শুরু করলে লঞ্চের সুপারভাইজারসহ অন্যান্য স্টাফ ও যাত্রীরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের কাছে পুরো বিষয়টি খুলে বলেন ভুক্তভোগী।
স্ত্রীর বরাতে আবু নাইম জানান, ঘটনা শুনে লঞ্চের সুপারভাইজার কেবিনের পাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরির বিষয়ে নিশ্চিত হন। চুরি যাওয়া ব্যাগটিতে ২ ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, নগদ আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং একটি মোবাইলসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছিল।
বুধবার ভোরে ওই লঞ্চটি পটুয়াখালী পৌঁছায়। পরে দুপুরে সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু মিয়া জানান, ভিডিও ফুটেজটি সদরঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুত চুরির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আবু নাইম অভিযোগ করেন, ৭/৮ বছর আগেও তার এক নিকটাত্মীয়ের একটি ব্রিফকেস চুরি হয়েছিল লঞ্চের কেবিন থেকে। কিন্তু সেটির খোঁজ মেলেনি আজও।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় এই লঞ্চে আসা যাওয়া করি। লঞ্চের কেবিন বয় কিংবা স্টাফরা জড়িত না থাকলে বাইরের কেউ এভাবে কেবিনের জানালা খুলে চুরি করার সাহস রাখে না।’
তবে এ ঘটনায় লঞ্চের কোনো স্টাফ জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার মেহেদি হাসান সুমন বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। কারণ বরিশাল বিভাগে সুন্দরবন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়। এই চুরির ঘটনা আমাদেরকেও হতবাক করেছে।’
বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলেও জানান সুপারভাইজার।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার’ গৃহবধূ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনসুর আলী আরিফ বুধবার দুপুরে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। ভোরে জারুইতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্ত স্বামীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
হাসপাতালে গৃহবধূর সঙ্গে ছিলেন তারা মামা মো. জাহাঙ্গীর। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, মারা যাওয়ার আগে ঘটনার বর্ণনা দেয়ার পাশাপাশি জড়িত কয়েকজনের নাম তাকে জানিয়ে গেছেন তার ভাগনি।
কী ঘটেছিল এই প্রশ্নের উত্তরে গৃহবধূর বরাতে তিনি বলেন, বাবার বাড়ি উত্তর রসুলপুর গ্রাম থেকে সোমবার রাত ৮টার দিকে শাহপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় তার ভাগনি। শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি শাহপুর মোড় থেকে তাকে তুলে নিয়ে একটি পতিত জমিতে ছয়-সাতজন তাকে ধর্ষণ করে।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সজীব ঘোষ নিউজবাংলাকে জানান, গুরুতর অবস্থায় ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে মনে হয়েছে, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
রোগীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মাকসুদুর রহমানের সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। এ সময় তিনি তথ্য দিতে অপারাগত প্রকাশ করেন। জানান, তিনি কাউকে সরাসরি না চিনলে ফোনে তথ্য দেন না। তিনি অফিস টাইম শেষ করে বের হয়ে গেছেন।
এরপর অফিস টাইমে কেন এলেন না এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘এখন কোনো প্রয়োজন হলে আপনার আইডি কার্ডসহ আগামীকাল দেখা করতে হবে।’
তবে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক হেলাল উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভিকটিম সেক্সচুয়াল অ্যাসল্ট হয়েছে। ময়নাতদন্ত এবং ভিসেরা রিপোর্টের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’
আরও পড়ুন:রংপুরে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ গ্রাহক পর্যায়ে ৪৭ কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)। এর মধ্যে সরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছেই পাবে ৩২ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৩১১ টাকা।
গত ১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাহকরা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কেটে দেয়ার নির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনার পর বকেয়া বিল আদায়ে তৎপর হয়েছে রংপুর নেসকো।
বিল পরিশোধ করার জন্য বেশ কয়েক দিন মাইকে প্রচার চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দিয়েছে চিঠিও। তবে বিল পরিশোধে গ্রাহকের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র জানিয়েছে, নেসকো ডিভিশন-১-এর বকেয়া পড়েছে ৯ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার ৩১১ টাকা। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের বকেয়া ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৯৪ হাজার ১১১ টাকা, রংপুর পুলিশ ক্লাবের (মেট্রোপলিন কোতোয়ালি থানার সামনে) ১২ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
এ ছাড়া রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ৬০ লাখ ৯ হাজার ৭০০ টাকা, রংপুর শিল্পকলা একাডেমির ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বকেয়া জমেছে।
৮ কোটি ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে ডিভিশন-২-এর। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের বকেয়া ৮ কোটি টাকা, রংপুর জেলা পুলিশের ৭২ লাখ, রংপুর গণপূর্ত বিভাগের ৪৫ লাখ ও স্টেডিয়ামের বকেয়া রয়েছে ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা।
ডিভিশন-৩-এর পাওনা জমেছে ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। যার মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার, বিহারি ক্যাম্পের ৫ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার, মাহিগঞ্জ রেঞ্জ রিজার্ভ পুলিশের ২ লাখ টাকা।
রংপুর নেসকো ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের বকেয়া বিল পরিশোধ করার জন্য প্রতি মাসে একটি করে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তার কোনো উত্তর আমরা পাই না।
‘ইতোমধ্যে অনেক সরকারি অফিস তাদের বিদ্যুৎ বিলের অংশিক পরিশোধ করেছে, অনেকে অর্ধেক করেছেন। সবাইকে নিয়মিত চিঠি দেয়া হচ্ছে।’
ডিভিশন-৩-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের কাছে সব থেকে বেশি পাওনা আমাদের। আমরা সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর সেই নির্দেশনা উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছি। জুন মাস শেষ হচ্ছে, এখনও কোনো বিল পাইনি।
তিনি আরও বলেন, ‘রংপুরে অবস্থিত দুটি বিহারি ক্যাম্পে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। একসময় ত্রাণ মন্ত্রণালয় এদের বিল দিত। এখন দেয় না।
‘২০১৬ সালে উচ্চ আদালত বিহারিদের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি আদেশ দেয়। সেই আদেশে বলা হয় বিদ্যুৎ বিল বিহারিরাই দেবে। কিন্তু তারা দিচ্ছে না। যতটুুকু শুনেছি, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আমরা বকেয়া বিলের জন্য প্রতি মাসে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিই, কিন্তু বিল পাই না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া জমেছে ১৫ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১০ কোটি টাকার বিলের গ্রাহককে পাওয়াই যাচ্ছে না।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, রংপুরে বিভিন্ন বর্ধিত সড়কের কাজের ফলে সড়কের দুই পাশের বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙা পড়েছে। এসব দোকানের নেয়া বিদ্যুৎ বিল বাকি। আর এ দোকানিরা এখন কোথায় আছে কেউ জানে না।
এদিকে কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানান, বেসরকারি পর্যায়ে বকেয়া আদায়ে প্রতিদিনই কমপক্ষে অর্ধশত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। যারা বিল পরিশোধ করছে, তাদের পুরনরায় সংযোগ দেয়া হচ্ছে। যারা দিচ্ছে না, তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়তই মামলা করা হচ্ছে।
রংপুর নেসকো লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অফিস পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল-১) মো. আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বকেয়া আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশন ডিভিশন-২-এ ১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
‘সরকারি অনেক অফিস তাদের বকেয়া পরিশোধ করেছে। যাদের বকেয়া আছে তারা বরাদ্দ পেলেই পরিশোধ করবে বলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।’
রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়র মহোদয় হজে গেছেন। প্রশাসনিক বিষয়টি তিনি দেখেন। আমার এ বিষয়টি জানা নেই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য