বন্যার পানিতে সিলেট-সুনামগঞ্জে মানুষ যখন ডুবে যাচ্ছে, তখন সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার রাজধানীতে ঢাকা মহানগর বিএনপির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম সমস্ত অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়া হয়েছে, যার কারণে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা সবগুলো নদীর পানি বাড়তে থাকবে।
‘এ দেশের মানুষকে ভাসিয়ে দেবে। বহুদিনের কষ্টে অর্জিত ফসলকে নষ্ট করবে, গবাদিপশুকে নষ্ট করবে, সমস্ত ঘরবাড়ি নষ্ট করবে। এই দুর্যোগের সময়, জনগণের কষ্টের সময় সরকার ব্যস্ত হয়ে আছে উৎসব নিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য তারা (সরকার) এত ব্যস্ত যে মানুষের দিকে তাকানোর কোনো সময় নেই, মানুষের কষ্টের দিকে তাদের তাকানোর সময় নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বন্যা যাতে না আসতে পারে, আর বন্যায় যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এই সরকার গত এক যুগে ভারতের সঙ্গে যেসব অভিন্ন নদী রয়েছে তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি করতে সক্ষম হয়নি। আমাদের বহুদিন ধরে তিস্তা নদীর পানি চুক্তির মলা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘ফারাক্কার পানি, হঠাৎ করে যখন ভারত গেট খুলে দেয় তখন অনেক ঢল ঠেকানো সম্ভব হয় না। লালমনিরহাট-সুনামগঞ্জে একই ঘটনা ঘটছে। সম্পূর্ণভাবে এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং তার যে জনগণের প্রতি অবহেলা সেটা প্রমাণিত। জনগণের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হোক।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকায় যেসব বাঁধ এবং সেতু নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে, এতে এত দুর্নীতি হয়েছে যে সমস্ত বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে; এই হচ্ছে অবস্থা।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে নতুন একটি গান শুরু হয়েছে, গানটা কী; পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে, সেখানে নাকি বড় একটি দুর্ঘটনা, নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। তাহলে এই দুর্ঘটনার আশঙ্কাটা কী, এটা জনগণের কাছে প্রকাশ করুন। নিজেরা দুর্ঘটনা ঘটার পরে তা বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেন।’
চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই কনটেইনারের মালিক হচ্ছে আমেরিকার নেতা। তাকে গ্রেপ্তার না করে যারা শ্রমিকের কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জনগণ এখন আপনাদের প্রকৃত পরিচয় পেয়ে গেছে।
‘দ্রব্যমূল্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা এক বছরে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ যারা চুরি করেছে, লুট করছে, তারা টাকা সুইস ব্যাংকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কানাডায় বেগমপাড়া তৈরি করেছেন, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাই চরমভাবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে তারা দুর্নীতি করছে। জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয় না, তাই তারা যা খুশি তাই করছে।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তারা সব সময় নিজেদের লোকদের জিতিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, ইলেকশন কমিশনকে ব্যবহার করে।
‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই, আপনারা পদত্যাগ করুন। একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আলমগীর আলম (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কায়কোবাদ আহম্মদ জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রিয়াজ ও আকিব নামে দুইজন যুবদল নেতাও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
স্থানীয়রা জানান, নিহত আলমগীর আলম বিএনপি নেতা। তিনি রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজানের সিদ্দিক চৌধুরী বাড়ির আবদুস সত্তারের ছেলে।
আলমগীরের ছেলে আসফায়েত হোসেন বলেন, শনিবার দুপুরে পরিবারের সবাই মিলে পূর্ব রাউজান রশিদ পাড়ায় ফুফুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে কায়কোবাদ আহম্মদ জামে মসজিদের সামনে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি করে আমার বাবাকে হত্যা করে।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আলমগীর নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মরদেহ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে কে বা কারা গুলি করে পালিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
এদিকে বিএনপি নেতা আলমগীর হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। তিনি বলেন, আলমগীর আওয়ামী শাসনামলে দীর্ঘ ১২ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি কারামুক্ত হয়েছিল। তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে যারা হত্যা করেছে- তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
গত ৭ অক্টোবর উপজেলার বিএনপি কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিমকে (৫২) রাউজানের খামার বাড়ি থেকে ফেরার পথে হাটহাজারীর মদুনাঘাটে চলন্ত গাড়িতে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই উপজেলায় আরও একটি হত্যার ঘটনা ঘটল।
উল্লেখ্য, রাউজানে গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সহিংসতায় মোট ১৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে জানা যায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেছেন, ‘আদর্শ ও মতের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও গণতন্ত্রের স্বার্থে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে এক হতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
গতকাল শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের বিভেদের কারণে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটলে জাতি ক্ষমা করবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেশ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ঠেকাবো।’
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দুই-চার কলাম লেখার জন্য আমাকে প্রায় সাড়ে নয় বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছে, আয়নাঘরে থাকতে হয়েছে, নির্যাতনে কারাগারে থাকতে হয়েছে। কিন্তু কখনো সংগ্রামের পথ থেকে পিছিয়ে যাইনি।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘এক সময় আমি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলাম। করোনারি কেয়ার ইউনিটের একটি সেলে আমাদের রাখা হয়। তিনি অনশন শুরু করলে তাকে বলেছিলাম, আপনি মারা গেলে শেখ হাসিনা খুশি হবে, দয়া করে অনশন ভঙ্গ করুন। ছয়-সাত দিন পর মুরুব্বিরা দেখা করে তার অনশন ভাঙ্গান।’
ছাত্রদের অভ্যুত্থানের গৌরবময় ইতিহাস বুকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের রক্তঝরা দিনগুলো স্মৃতিতে ধরে রেখে, তার ভিত্তিতেই আমাদের আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে। সন্তানদের জন্য একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হবে আমাদের দায়িত্ব।’
আমাদের সন্তানদের রক্তের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে বলে সকলের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং মানিকগঞ্জ-১ আসনে এমপি প্রার্থী এস.এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে ভোট নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। সাধারণ ভোটাদের ইসলাম ধর্ম নিয়ে মিথ্যা অপব্যাখ্যা দিয়ে বলে বেড়াচ্ছে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জান্নাতে যাওয়া যাবে, নাওজুবিল্লাহ দেখেন কত বড় মিথ্যাবাদী।
তিনি বলেছেন, কোরআন শরীফের নিয়ম মেনে ও আল্লাহর সকল কিছু মেনে আল্লাহর খাঁটি বান্দা হলে একমাত্র জান্নাত পাওয়া যেতে পারে। ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতের মিথ্যা কথায় আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। স্বাধীনতাবিরোধী মিথ্যাবাদী, প্রতারণাকারী জামায়াতকে প্রতিহত করতে হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ঘিওর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ ও প্রচারণা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথ বলেন।
ঘিওর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিকের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানে আলমের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হেসেন দিপু, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, জেলা বিএনপি সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. লোকমান হোসেন, জেলা কৃষক দলের সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস ও জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফা” বিষয়ে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধাবৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিক্ষকদের এমন সাপোর্ট দেওয়া হবে যাতে তারা পাঠদানে পুরো মনোযোগ দিতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে নিজের যত্ন নেওয়া এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের শিক্ষা।”
তারেক রহমান জানান, ভবিষ্যতে মেধাবীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং শিক্ষকদের মর্যাদা ও প্রণোদনা বাড়ানো হবে।
তারেক রহমান বলেন, “বিগত ১৫ বছরে প্রচুর অর্থবিত্ত পাচার হয়ে গেছে। পানির অপর নাম জীবন তাই খালগুলো পুনঃখনন ও পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে যে খাল খনন কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তা পুনরায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানির সংকট ও আর্সেনিক সমস্যা সমাধানের পথ উন্মুক্ত হবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “মেধাবীদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামীর নেতৃত্ব। তরুণরা যেন বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারে ভাষা শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রে স্কুল থেকেই দক্ষতা গড়ে তোলা হবে।”
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কোনো মেধাবী যেন আর ঝরে না পড়ে, সে লক্ষ্যে সরকার গঠন করলে শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারী সংস্কার আনা হবে।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি'র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ।
প্রধান অতিথি তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানস্থল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা সরাসরি বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তর দেন।
উল্লেখ্য যে, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার ওপর গত ১৬ আগস্ট ১০ হাজারের ওপর শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়। পুরস্কার দেওয়া হয় ৬০ জনকে। এরমধ্যে প্রথম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা এবং চতুর্থ পুরস্কার ৫ হাজার টাকা।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনটি স্কুলকে এক লাখ করে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধি দল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এনসিপির প্রতিনিধি দলে থাকবেন—দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, আইনি ভিত্তিসহ সনদের নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ক্ষমা প্রার্থনা কমপক্ষে তিনবার চেয়েছি। অধ্যাপক গোলাম আজম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং আমিও চেয়েছি। শুধু এখন নয়, ৪৭ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী দ্বারা কেউ যদি কোনো কষ্ট পেয়ে থাকেন অথবা কারও কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে আমি সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের পক্ষে নিঃশর্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ক্ষমার বিষয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, এ ক্ষমা গোটা জাতি হইলেও চাই, ব্যক্তি হইলেও চাই, কোনো অসুবিধা নাই। আমরা কেউ কখনো বলিনি—আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে।
জামায়াত আমির বলেন, আমাদের ১০০টার মধ্যে ৯৯টা সিদ্ধান্ত সঠিক, একটা তো বেঠিক হতে পারে। সেই বেঠিক একটা সিদ্ধান্তের জন্য জাতির ক্ষতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমার কোনো সিদ্ধান্তের জন্য যদি জাতির ক্ষতি হয় তাহলে আমার মাফ চাইতে অসুবিধা কোথায়?
ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী সংখ্যালঘুরা নির্বিঘ্নে থাকবে বলে উল্লেখ করেন ডা. শফিকুর রহমান।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) শাপলা প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাঁধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন কাউকে খুশি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আমাদের দেখাক কোন আইনে শাপলা প্রতীক এনসিপিকে দেওয়া যাবে না। রোববার দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সমন্বয় সভা শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, যে নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রাপ্য মার্কা দেয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারে না, আমরা মনে করি সেই কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এই বাংলাদেশে হতে পারে না। এনসিপি আমাদের জায়গা থেকে অবশ্যই প্রত্যাশা করি, যে আমরা শাপলা প্রতীক পেয়েই আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো। এটা যদি তারা আমাদের সাথে অন্যায় করে, তাহলে আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পূর্বে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তাঘাটে নেমে হাহাকার করতো। কর্মসূচী দিয়ে হাহাকার করতো। আমরা অনেক অফিস দেখেছি যে, অফিসের সামনে ১০ জন লোক দাড়ানোর মতো ছিল না, বড় বড় রাজনৈতিক দলের অফিস। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে জনগণ তখনই রাস্তায় নেমেছে, যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছে। এখন যদি জনগণের ওই আস্থার প্রতিদান কেউ কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দল না দেয়, জনগণ তাদের মতো করে আগামীতে যখন সুযোগ হবে জনগণ তার সুফল দেখাবে। আমরা স্পষ্ট করে বলি, আপনারা ইতিহাস থেকে দয়া করে শিক্ষা নেন। জুলাই সনদ আপনারাও চান, আমরাও চাই। আপনারা যদি জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণা পত্রের মতো নাম কাওয়াস্তে একটি পেপার চান, ওই সনদ আমরা চাই না।
এর আগে তিনি জেলা এনপিসির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জেলা এনপির প্রধান সমন্বয়কারী ফয়সনাল করিম সোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ডা. মো. আব্দুল আহাদসহ প্রমুখ নেতারা।
মন্তব্য