ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রাম, শেরপুর, লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
উত্তরের বিভিন্ন জেলায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় বন্য পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে সড়ক-মহাসড়ক, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ লোকালয়ের মানুষ। বন্য পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমা পার হয়েছে। এতে ছয়টি উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ধরলা ও তিস্তার পানি লালমনিরহাটে বিপৎসীমা উতরে জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি মহারশি, ভোগাই, সোমেশ্বরী ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
যমুনার পানি বগুড়ার সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনার তীর রক্ষাবাঁধের পাশের বাসিন্দারা বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে।
কুড়িগ্রামে বেড়েই চলেছে বানের পানি
ব্রহ্মপুত্র-ধরলার পানি বিপৎসীমা পার হওয়ার পর কুড়িগ্রামে অন্য নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদরে ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত যাত্রাপুর ইউনিয়নে গ্রামের পর গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।
পোড়ারচর গ্রামের বাসিন্দা হাকিম মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টি-বন্যায় অসহায় হয়ে পড়েছি। বউ-বাচ্চা নিয়া কয়েক দিন ধরে শুকনা খাবার খেয়ে আছি। রান্না করার মতো অবস্থা নেই।’
বানের একবুক পানি বেয়ে ঘর থেকে আসবাবপত্র এবং খড়ি নৌকায় তুলছেন আয়না বেগম। তার মায়ের সঙ্গে দুটি শিশুসন্তান নৌকায় বসিয়ে রেখেছেন।
আয়না বেগম বলেন, ‘পাঁচ-ছয় দিন ধরে বন্যার পানি ঢোকা শুরু করেছে। কাল রাত থাকি ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। এলা ঘরের জিনিস সরে নিবার সময় পায়নি। একবুক পানি ভেঙে জিনিস জানাস বের করা নাগবাইছে। উঁচু স্থানত যায়া আশ্রয় নিব। কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাই নাই।’
সেকেন্দার আলী বলেন, ‘বানের পানিত ঢেউ আর স্রোত বেশি। তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ির বেড়া খুলে নৌকায় করে অন্য জায়গায় যাচ্ছি।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, জেলার ছয় উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৬০-৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানি প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন এলাকায় ঢুকে পড়ছে।
জেলার প্রায় ২ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির ধান, ৯০৩ হেক্টর জমির পাট, ৭৮ হেক্টর জমির অন্য ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর, বামনডাঙ্গা, নুনখাওয়া, বল্লভেসের খাস, কালীগঞ্জ, বেরুবাড়ি।
সদরের ঘোগাদহ,যাত্রাপুর, হলোখানা,পাঁচগাছি, মোগলবাসা, উলিপুরের হাতিয়া, বুড়াবুড়ি, সাহের আলগা, বেগমগঞ্জ এবং চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ,অষ্টমির চর,রমনা, নয়ারহাট, চিলমারী সদর পানির নিচে।
রৌমারীর শৌলমারী, যাদুরচর, রৌমারী সদর এবং রাজীবপুর উপজেলার রাজীবপুর সদর ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ।
যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক শ পরিবার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, শুক্রবার বেলা ৩টায় ধরলার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। রৌমারী উপজেলায় আট শতাধিক পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আব্দুর সবুর মিয়া বলেন, ভারি বৃষ্টিসহ বজ্রপাত হতে পারে। কবে নাগাদ আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কুড়িগ্রাম বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
তবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা কম বলেও জানান তিনি।
শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় শেরপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকার চারটি নদীর পানিই বৃদ্ধি পেয়েছে। মহারশি, ভোগাই, সোমেশ্বরী ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি বাড়ায় বেড়েছে দুর্ভোগ। দুই উপজেলার ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
হাতিবান্ধা ইউনিয়নের তমছের আলী বলেন, ‘পানি এল্লা কমবার দরছিলো আজ আবার রাত থাইকা বৃষ্টি হইয়া হঠাৎ কইরা পানি বাড়তাছে। কী করমু এহন, কী খামু। একটা ব্রিজ ছিল কয়দিন আগে ঐডাও ভাইঙ্গা নিয়া গেছে। পানি বাইরা আমগরে ইউনিয়নের ছয় গ্রামের মানুষ খুব বিপদে পড়েছে।’
সদর ইউনিয়নের রাহেলা বেগম বলেন, ‘আমরা খুব কষ্টে পরছি। পানি আওয়ার জন্য গরু-ছাগলগুইলা না খাইয়া আছে। পানি আমাগো এনো থাইক্কা কয়দিন আগে নাইমা গেছিলো গা। আজ রাত থাইক্কা বৃষ্টিতে আবার পানি বাড়লো। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানি বাড়ে, সকাল থাইক্কা বেশি এই পানি আইতাছে।’
আহম্মদনগরের বাসিন্দা আছমত আলী বলেন, ‘আমার প্রজেক্টের মাছ পাহাড়ি ঢলে ভাসায় নিয়া গেছে গা। পানির চেয়ে মাছ আগে গেছে গা। কর্জধার কইরা মাছ চাষ করছিলাম এহন কী কইরা খামু।’
শেরপুর পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জানান, ‘জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হবে। ২৪ ঘণ্টায় পাহাড়ি চার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চেল্লাখালী নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ১৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন শুক্রবার সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
শুকনো খাবারসহ ত্রাণ বিতরণে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
বেড়েই চলেছে তিস্তার পানি
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
তিস্তাপারের কালমাটি মাস্টারপাড়ার আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘হামরা ত বন্যাতে ডুবি গেইছি। কিছু একনা করি দেও ব্যাহে? রাস্তাঘাটের ব্যবস্থা করি দেও।’
একই এলাকার আমেনা বেগম বলেন, ‘ডিসি সাইব কয় হামার এত্তি নাকি বন্যা হয় নাই। হামরা এক কোমর পানিত আছি আর ওমরা কয় পানি নাই। ডিসি সাইব আসি দেখি যাউক তো হামরা কোনটে আছি।’
লালমনিরহাটে তিস্তাপারের খুনিয়াগাছ, গোকুণ্ডা, মহিষখোঁচা, চরফলিমারী, মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ি ইউনিয়নের কয়েক শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আরও বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হবে বলে জানিয়েছে পাউবো।
এ বিষয়ে পাউবোর ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। আমরা ব্যারাজসহ আশপাশের এলাকা মনিটর করছি।’
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, লালমনিরহাটে ধরলা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর নিউজবাংলাকে বলেন, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে আসা পানির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। পর্যবেক্ষণ করছি জেলার সব উপজেলা। সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া আছে, তারা মাঠে কাজ করছেন।
যমুনার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনার তীর রক্ষার বেড়িবাঁধের পাশের বাসিন্দারা বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সারিয়াকান্দি মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সারিয়াকান্দির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) আব্দুর রহমান তাযকিয়া পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, যমুনা নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। সন্ধ্যা ৬টার দিকে যমুনার পানি ১৬ দশমিক ৭২ মিটার উচ্চতায় ছিল।
আব্দুর রহমান আরও বলেন, ‘পানি বৃদ্ধির ধরন দেখে মনে হচ্ছে শনিবারের মধ্যে এই পানি বিপৎসীমার অন্তত ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।’
পাউবো কর্মকর্তারা জানান, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলা মিলে যমুনা নদীর ডান তীরে ৪৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। চলতি বছর বাঁধের প্রায় ৪৬টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলার বেশির ভাগ অংশই ঝুঁকিপূর্ণ। এ উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের সাত কিলোমিটার বাঁধে এমন ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, ‘কামালপুর ইউনিয়নে সমস্যা বেশি। এই এলাকার প্রায় সাত কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। পানি বৃদ্ধির পর পরই আমরা এ ইউনিয়নের রহদহ গ্রামে অবস্থান করছি। বাঁধে এখনও ভাঙন দেখা দেয়নি। আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য