ঢাকা সেনানিবাসসহ দেশের সব সেনানিবাস, সব ডিওএইচএস ও জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের (ভিটিসি) মাধ্যমে একযোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের নির্ঝর এলাকায় বৃক্ষরোপণ ২০২২-এর উদ্বোধন করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হবে।
এ সময় সেনাসদর ও সেনাবাহিনীর ঢাকা অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারাসহ সব পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে সব সেনা অঞ্চলে উক্ত অঞ্চলের এরিয়া কমান্ডাররা নিজ নিজ জনবলসহ উপস্থিত থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সূচনা নিশ্চিত করেন।
এ বছর বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রতিপাদ্য ‘বৃক্ষপ্রাণে প্রকৃতি-প্রতিবেশ আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মানুষের মৌলিক চাহিদাসমূহ তথা প্রাকৃতিক ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা, জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ টেকসই পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বৃক্ষরোপণের গুরুত্বারোপ করেছেন।
সেনাবাহিনীর বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২২-এ ফলদ, বনজ ও ঔষধি প্রজাতির বৃক্ষসহ সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন প্রকার গাছের চারা রোপণ করা হবে।
সব সেনানিবাস, নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপসহ সব প্রশিক্ষণ এলাকা, ফায়ারিং রেঞ্জ, সব ডিওএইচএস এবং জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে, যা ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
দেশের বনজসম্পদ বৃদ্ধি ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুরণনে বাংলাদেশের প্রগতির ধারা চলমান রাখতে সবাইকে স্বপ্রণোদিত হয়ে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করাই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীতে গরুবোঝাই ট্রলারডুবি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নদী থেকে মৃত ৬টি গরু উদ্ধার করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘিওর বাজার এলাকায় পুরাতন ধলেশ্বরী নদীতে ২৭টি গরু নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়।
৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বেলা দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ২১টি জীবিত ও ৬টি মৃত গরু উদ্ধার করেন।
ঘিওর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রেজাউল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল থেকে কয়েকজন খামারি ও ব্যবসায়ী ২৭টি গরু বিক্রির জন্য সকালে রাজধানীর গাবতলীর কোরবানির পশুর হাটের উদ্দেশে রওনা দেন। ঘিওর বাজারের কাছে ধলেশ্বরীর পানির ঘূর্ণিতে গরুবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান।
ব্যবসায়ীদের বরাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জানান, রেজাউল উদ্ধার করা মৃত ছয়টি গরুর দাম প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ছিল।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আফতাবনগর পশুর হাটে গিয়ে এমন এক দৃশ্য দেখা গেল যা দেখার আগে ভাবাও যায় না।
কোরবানির পশুকে বড় করতে আপেল, আঙুর, বেদানা খাওয়ানোর বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে আগেই। তাই বলে কেউ কোমল পানীয় খাওয়ায়, এটি জানতে পারার পরও কেমন যেন খটকা লাগছিল।
কিন্তু হাটে ঝিনাইদহের খামারি আব্দুল মতিনকে নিজ হাতে তার আনা পশুকে বোতলভর্তি সেভেন-আপ পান করাতে দেখা গেল।
পরে এও জানা গেল, এবারই প্রথম নয়। আগেও গরুটি পান করেছে কোমল পানীয়।
কেন গরুকে সেভেন-আপ দিলেন আব্দুল মতিন? এই প্রশ্নে তিনি বললেন বদহজম দূর করার কথা।
তবে এক প্রাণী চিকিৎসক বলছেন, ‘গরুর বদহজম হলে কোনোভাবেই এসব জিনিস খাওয়ানো ঠিক হবে না।’
বৃহস্পতিবার সকালে আফতাবনগর হাটে ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় সবুজ রঙের একটি বোতল থেকে দুই ব্যক্তি জোর করে একটি পশুকে কিছু পানীয় পান করাচ্ছেন।
জানতে চাইলে তাদের একজন বলেন, ‘আসলে সেভেন-আপ খাওয়াচ্ছি।’
গরু কি সেভেন-আপ খায়?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না। ওর বদহজম হইছে। খাওয়াদাওয়া কম করছে তাই। সেভেন-আপ খাইলে বদহজমটা সেরে যায়।
গরুটি কি আজকেই সেভেন–আপ খেয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না, এর আগেও খাওয়াইছি। বদহজম হইলেই আমরা সেভেন-আপ খাওয়াই।’
ঝিনাইদহ থেকে আসা মতিন সেভেন-আপ খাওয়ানো সেই গরুটির দাম চাইছেন ৬ লাখ টাকা। তবে সাড়ে তিন লাখ হলে ছেড়ে দেবেন।
গরুটির সম্ভাব্য ওজন ধারণা করা হচ্ছে ১৪ মণ। ক্রেতা অবশ্য সর্বোচ্চ দাম বলেছেন ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।
গরুর কেনাবেচা নিয়ে মতিন বলেন, ‘বাজার তেমনটা শুরু হয় নাই। মোটামুটি চলছে, দামদর করছে। আজ রাইতে কেমন হবে না হবে, সেইটা বুঝা যাবে।
‘বাজার ভালো হবার আশা করে বইসে আছি। সাড়ে তিন লাখ টাকা হলে বিক্রি করে দিব।’
গরুকে সেভেন-আপ জাতীয় পানীয় দেয়া ঠিক না বলে মনে করেন প্রাণী চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাবিবুর রহমান মোল্লা।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বদহজম হলে অনেক মেডিসিন আছে বাজারে সেগুলো খাওয়াতে হবে, সেভেন-আপ নয়। ডাক্তার দেখার পর সিদ্ধান্ত নেবেন কী ধরনের মেডিসিন দেবেন। সে ক্ষেত্রে বদহজমের হিস্ট্রি লাগবে।’
ঢাকার প্রত্যেকটি পশুর হাটে প্রাণী চিকিৎসকদের দল রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খামারিদের উচিত তাদের কাছে শরণাপন্ন হওয়া।’
কী কী কারণে গরুর বদহজম হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় কাঁঠালের খোসার ভেতরের অংশ খাওয়ানো হয়। যার ফলে গরুর বদহজম হতে পারে। এ ছাড়া জোর করে পাইপ দিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এটিও একটি কারণ।’
সেভেন-আপ খাওয়ানোর ঘটনা আগে শুনছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে যেখানে সেভেন-আপ খাওয়ানোর কথা শুনেছি। তবে মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছে।’
দক্ষিণের ২১ জেলার যাত্রীদের ঈদযাত্রায় এবার বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে পদ্মা সেতু। যাদের সেতু দেখতে যাওয়ার মতো সময় হয়ে ওঠে না, তারা বাড়ির পথ ধরলেই দেশের তুমুল আলোচিত স্থাপনাটি দেখতে দেখতে যাবেন। তাই এবার এই পথে যাত্রীর চাপ বেশি।
সেতু ঘিরে আগ্রহ এতটাই বেশি যে, যারা মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাট ব্যবহার করে বাড়ি যেতেন, তারাও বাড়তি পথ ঘুরে যাচ্ছেন মাওয়া হয়ে।
আগামী রোববার সারা দেশে একসঙ্গে উদযাপিত হবে ঈদ। তিন দিনের ছুটি শুরু শনিবার থেকে। সঙ্গে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির এক দিন যোগ হওয়ায় মোট ছুটি চার দিনের। কেউ কেউ ঈদ শেষে সপ্তাহের বাকি কর্মদিবস ছুটি জোগাড় করেছেন। এর সঙ্গে আবার পরের সপ্তাহের দুই দিন ছুটি যোগ করে সেটিকে নিয়ে গেছেন টানা ৯ দিনে।
এর ফলে বৃহস্পতিবার বিকেলে অফিস শেষেই বাড়ির পথে ভিড় বেড়েছে।
গুলিস্তান বিআরটিসি বাস টার্মিনালে গিয়ে সে সময় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেল। এই পথে এর আগে এত যাত্রী দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা।
এত ভিড় কেন? এই প্রশ্নের জবাবটা মোটেও কঠিন নয় মো. রুবেলের কাছে। তিনি রাজধানীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আগে বাড়ি ফিরতেন লঞ্চে। এবার আর সদরঘাটের পথ ধরেননি।
জানালেন পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে বলে আনন্দে ভাসছেন। তাই লঞ্চ বাদ দিয়ে বেছে নিয়েছেন মাওয়ার রাস্তা।
রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে লঞ্চে বাড়ি যেতাম। পদ্মা সেতু এখনও দেখা হয় নাই। বাড়িও যাব পদ্মা সেতুও দেখব, আহা ঈদ।
‘তাছাড়া রাত ৯টায় লঞ্চে উঠলে ভোরে বরিশাল পৌঁছাই। এখন পদ্মা সেতু দিয়ে বরিশাল যেতে চার ঘণ্টার মতো লাগে। সময়ও বাঁচল, পদ্মা সেতুও দেখলাম।’
রুবেলের মতো অনেকেই লঞ্চ কিংবা আরিচা ঘাট ব্যবহার না করে বেছে নিয়েছেন মাওয়া ঘাটের রাস্তা।
মেহেদী হাসানের বাড়ি ফরিদপুর ভাঙ্গা। তুলনামূলক কম সময়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাট। ফেরি পার হয়ে যেতেন বাড়িতে।
এবার কেন সে পথে যাচ্ছেন না?
মেহেদী বলেন, ‘এখন পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে মাওয়া হয়ে বাড়ি যাচ্ছি। সময় অনেক কম লাগে। তাছাড়া প্রথম পদ্মা সেতু দেখব বাড়ি যাওয়ার সময়।
তবে যাত্রীদের যত আগ্রহ, তা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত বাহন নেই বাসস্ট্যান্ডে। আবার মাওয়ার পথে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে পারলে একেবারে না থেমেও পদ্মা সেতুতে উঠে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে তো হবে। এর আগের সংক্ষিপ্ত পথটুকু পাড়ি দিতেই লাগছে দীর্ঘ সময়।
ইমাদ পরিবহনের সুপারভাইজার শাহীন বলেন, ‘ধোলাইপাড়ে, হানিফ ফ্লাইওভার ও গুলিস্তানে প্রচণ্ড জ্যাম। আগে এই মাওয়া হয়ে যারা বাড়ি যেত না, পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে তারাও এখন এই রাস্তা বেছে নিয়েছে। জ্যামের কারণে বাস আসতে কিছুটা দেরি করছে। তাই বাস ছাড়তেও কিছুটা দেরি হচ্ছে ‘
বিআরটিসি কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মো. মেহেদী বলেন, ‘একটা করে বাস আসছে আর টিকিট বিক্রি করছি। বাস না আসলে টিকিট বিক্রি করছি না। জ্যামের কারণে বাস আসতে দেরি করছে। যাত্রীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দুদিন পরই ঈদুল আজহা। রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ছুটছেন কর্মজীবীরা। সড়ক, মহাসড়কসহ নৌপথে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোথাও এখন পর্যন্ত যানজট লাগেনি। এই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ৯৬ কিলোমিটার বেয়ে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লায় ফিরে শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে আসলাম। পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে দেখি কুমিল্লা এসে গেছি। কোথাও যানজট নেই। পরিবার নিয়ে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে আসতে পেরে ভালো লাগছে।’
ঢাকা থেকে কুমিল্লার ওপর দিয়ে ফেনী, চট্টগ্রাম ,খাগড়াছড়ি কক্সবাজারের হাজারো মানুষের যাতায়াত। এসব জেলার যাত্রীরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশটি যানজটমুক্ত থাকলে স্বস্তিতে থাকেন যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী যাত্রী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘পথে ট্রাফিক পুলিশ ও কিছু কমিউনিটি পুলিশের তদারকি নজরে পড়েছে। এই ব্যবস্থা সারা বছর করা গেলে মানুষ আরও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবেন।’
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এবার হাইওয়ে পুলিশে জনবল সংকট নেই। সড়কে চাঁদাবাজি রোধে মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আমাদের সদস্যরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।
‘ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, সড়কে দুর্ঘটনার খবর পেলে সর্বোচ্চ ১০মিনিটের মধ্যে যেন ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় সে জন্য গঠন করা হয়েছে ১৫টি কুইক রেসপন্স টিম। এই টিমে আছে ৫টি রেকার। হাইওয়ে পুলিশের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি বাড়তি ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ৩৪টি মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।’
সড়ক ও জনপদ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের ৪০ জন সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। মহাসড়কের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করে দেয়া হবে। ৭ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত অবিরাম এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এবার যানজটের কোনো শঙ্কা নেই।’
ঢাকা নদীবন্দরে দায়িত্ব পাওয়া সংশ্লিষ্ট সবাইকে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ভ্রমণ পরিহারসহ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত ফিটনেস আছে এমন নৌযান সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন নৌপরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নৌপথে নিরাপদ ও নিশ্চিত যাতায়াত ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে ঢাকা নদীবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনের সময় নৌসচিব ঢাকা নদীবন্দরের বিভিন্ন নৌযানে অবস্থানরত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নৌপথে নিরাপদ ও নিশ্চিত ব্যবস্থাপনার আশ্বাস দেন। সচিব বন্দর এলাকা পরিদর্শন করে বিআইডব্লিউটিএ, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় প্রশাসনকে সমন্বয়ের মাধ্যমে ঈদে যাত্রীদের যাতায়াত নিশ্চিতকরণের নির্দেশ দেন।
ওই সময় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিএর সব সদস্যসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও ঢাকা নদীবন্দরের সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিএম কনটেইনার ডিপোর জন্য প্রয়োজনীয় ২৫টি সংস্থারই হালনাগাদ লাইসেন্স ও ছাড়পত্র আছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকপক্ষসহ তদারকি সংস্থাকে দায়ী করে প্রতিবেদন জমা পড়ার এক দিন পর এই দাবি করা হলো।
নগরীর লালখান বাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই দাবি করেন দেশে ডিপোর মালিকায় থাকা স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।
সীতাকুণ্ডে ওই ডিপোতে গত ৪ জুন রাতে আগুন লাগে। কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর ডিপোর আগুন নেভে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম দুই দিনে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন। বুধবার পর্যন্ত দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ছয়জনের। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহত ৫১ জন।
এ ঘটনায় গঠিত বিভাগীয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়। সেদিন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ডিপো কর্তৃপক্ষসহ সব সরকারি তদারকি সংস্থার দায় পেয়েছি। আগুন লাগার কারণও আমরা আইডেন্টিফাই করেছি। ডিপোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ২০টি সুপারিশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আইএমডিজি কোডের সঙ্গে মিলিয়ে বিপজ্জনক কার্গোব্যাগ মেইনটেইন চুক্তিটি সংশোধনের সুপারিশ করেছি, বন্দরের নেতৃত্বে যে মনিটরিং কমিটি আছে, সেটাকে আরও সক্রিয় করার কথা বলেছি, অফডক প্রতিষ্ঠার জন্য যে ২৫টি দপ্তরের সনদ লাগে, সেগুলো এক জায়গায় আনার সুপারিশ করেছি।’
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা লজিক্যাল সিকোয়েন্স অনুযায়ী ব্যাখ্যা করে আমাদের মতামত দিয়েছি। এটা এভাবে বললে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। তবে বিস্ফোরণের পেছনে মালিক, সরকারি তদারকি সংস্থা ও শিপিং লাইনের দায় পেয়েছি আমরা।’
তবে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘২০১০ সালে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম ডিপো প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫টি সংস্থারই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়ে কমপ্লায়েন্স মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র হালনাগাদ রয়েছে। সব ধরনের লাইসেন্স ও ছাড়পত্রের কপি সরকারি সব তদন্ত কমিটিকে দেয়া হয়েছে।’
অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শতাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএম ডিপোর কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। ইতোমধ্যে ডিপোতে অক্ষত থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত ২৬ জন ও আহত ৪৩ জনের পরিবারকে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মে ও জুন মাসের বেতন ও কোরবানির বোনাস দেয়া হয়েছে। নিহত-আহতদের বাড়িতে, বাসায় বেতন-ভাতা ও বোনাসের টাকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
ওই সময় বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক মাইনুল আহসান, পরিচালক শফিকুর রহমান, ইয়াসিন মজুমদারসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি ফেরার আনন্দ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঈদের আনন্দকে বাড়তি আমেজ দিয়েছে। অনেকে এই আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন পোষা প্রাণীর সঙ্গেও।
তাদের একজন মো. তারেক। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন তিনি। পড়েন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শখ করে তারেক তার এক বড় আপুর কাছ থেকে দুই মাস আগে ইউমি নামে একটি বিড়ালকে দত্তক দিয়েছিলেন। ইউমিকে নিয়েই পদ্মা পাড়ি দিয়ে গোপালগঞ্জের বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছেন।
তারেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউমি আমার খুব আদরের। এক বড় আপুর কাছ থেকে দুই মাস আগে তাকে এডপ্ট করেছিলাম। আমার পরিবার গোপালগঞ্জ সদরে থাকে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি। সঙ্গে ইউমিও যাচ্ছে।’
কাউন্টারে বলা হয় নাই বিড়াল যাবে। তারেকের আশা, বাসের কর্মীরা নিষেধ করবে না।
গরম এবং ভিড়ে কাহিল অবস্থা গুলিস্তান বিআরটিসি বাস টার্মিনালে আসা যাত্রীদের। এই অবস্থায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ইউমি। একটা কার্টন রয়েছে তাকে বহন করার জন্য।
তারেক বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে ঢাকার বাসার সবাই গ্রামে গেছে। বাসা ফাঁকা। তাই ইউমিকে রেখে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নাই। তাছাড়া আমি অনেক জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার সময় ওকে নিয়ে যাই। বয়স কম তাই দেখেশুনে রাখি।’
তারেক এবং ইউমি দুজনেই এবার প্রথম পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি ফিরছে। ঈদও হবে, পদ্মা সেতু দেখাও হবে। এ যেন রথ দেখতে এসে কলা বেচার মতো।
তারেক বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে এখনও বাড়ি যাই নাই। ইউমি এবং আমি দুজনেই পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম বাড়ি যাচ্ছি। এটা আমার কাছে অনেক আনন্দের।’
মন্তব্য