গৃহকর, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি, পানির বিলসহ বিভিন্ন সেবার বকেয়া বিল ও কর আদায়ে প্রায়ই অভিযান চালায় সিলেট সিটি করপোরেশন। জরিমানা করা হয় খেলাপি গ্রাহকদের। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিই সিলেটে বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় বিলখেলাপি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে বিল বাবদ বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা প্রায় ২০ কোটি টাকা। নগর কর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কাছেও বিপুল অঙ্কের টাকা পাওনা আছে তাদের।
সিলেটে বিদ্যুৎ বিভাগের বিল বকেয়া পড়ে আছে ৮৬ কোটি টাকা। বেশির ভাগ বকেয়াই সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে এগিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন।
গত ১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাহক বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কেটে দেয়ার নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর থেকে বকেয়া বিল আদায়ে জোরেশোরে অভিযানে নেমেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সিলেট। বকেয়া না দেয়ায় ইতোমধ্যে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া আদায় করা গেলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পাওনা টাকা আদায়ে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের গ্রাহক সাড়ে ৪ লাখ। তাদের কাছে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া প্রায় ২০ কোটি টাকা। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের কাছে পাওনা পৌনে ২ কোটি টাকা, রেলওয়ের কাছেও পাওনা প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ছাতক রেলওয়ে স্টেশনে বকেয়া ১ কোটি টাকা, কুলাউড়া স্টেশনে ৫০ লাখ টাকা এবং সিলেট রেল স্টেশনে বকেয়া ২০ লাখ টাকা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে বকেয়া আছে ৬০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন মসজিদ-মন্দিরে বকেয়া আছে ৭০ লাখ টাকা। বেসরকারি পর্যায়ে গ্রাহকদের বাসাবাড়ি, শপিং মল, মিল, ইন্ডাস্ট্রিতেও বকেয়া রয়েছে বড় অঙ্কের টাকা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বকেয়া বিল উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার পর থেকে আমরা জোরেশোরে অভিযানে নেমেছি। ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৩ থেকে ১৪টি অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
সিটি করপোরেশনের বকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে তাদের কাছে বকেয়া ছিলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে দুই দফায় ১০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও ২০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই মাসে আরও কিছু টাকা দেবেন বলে মেয়র কথা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘জেলা স্টেডিয়ামের বকেয়া টাকা আদায় নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তারা কেউই এই টাকার দায় নিচ্ছে না। ক্রীড়া সংস্থার স্থানীয় নেতারা বলছেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল দেবে। আর ক্রীড়া পরিষদ বলছে, স্থানীয়ভাবে বিল দেয়া হবে। এই বিল আদায়ে আমরা বারবার চিঠি দিচ্ছি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সাথে কয়েকবার মিটিংও করেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বিল না দেয়ায় আমরা তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি।’
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় অঙ্কের বকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের টাকা দিতে না। এরশাদ সাহেব মৌখিকভাবে মসজিদ-মন্দিরের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করেছেন এমন একটি অজুহাতে তারা অনেক দিন টাকা দেননি। তাই অনেক টাকা জমে গেছে। তবে এখন এই প্রবণতা কমেছে। এখন অনেকেই বিল দিচ্ছেন।’
আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে বকেয়া অনেকাংশেই কমে আসবে জানিয়ে প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘বেসরকারি গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল আদায়ে আমাদের তেমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বিপদে আছি। এগুলোতে তো তেমন কিছু করা যায় না। ভ্রাম্যমাণ আদালতও চালানো যাচ্ছে না।’
গত এক মাসে বিভিন্ন মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের টাওয়ারগুলো থেকেই বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা বিল আদায় করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহক নিয়মিত বিল দিলে বিদ্যুতের ভর্তুকি অনেক কমে আসবে। বিদ্যুতের দাম তেমন বাড়ানো লাগবে না।
তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে উল্টো টাকা পায় সিটি করপোরেশন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেনাপাওনা উভয়পক্ষেই আছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও তারের জন্য তারা আমাদের সড়ক ব্যবহার করে। অনেক সময় এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও আমাদের করতে হয়। এ ছাড়া মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নিতে অনেক সড়ক তারা খুঁড়াখুঁড়ি করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর ক্ষতিপূরণ আমরা পাইনি। সব মিলিয়ে তাদের কাছে আমরা প্রায় ৪০ কোটি টাকার মতো পাই।’
বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে এই পাওনার কথা জানিয়েছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘তারাও তো আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।’
তবে বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ না করা ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন সেলিম।
হত্যা মামলায় ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মাজহারুল ইসলাম সুজনের মুক্তির দাবি তুলে সোমবার স্লোগান দেয়া একদল মানুষকে ধাওয়া দিয়েছেন উপস্থিত লোকজন।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আদালতে শুনানি শেষে সাবেক এমপিকে কারাগারে নেয়ার সময় ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে তার শাস্তির দাবি করে একাধিক ডিম নিক্ষেপ করে উত্তেজিত জনতা।
অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক রমেশ কুমার ডাগারের আদালতে আজ ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপিকে জামিন ও রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য তোলা হয়। বিচারক জামিন ও রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কবির বকুল বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনকে যখন প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে তোলার জন্য আনা হয়, তখন প্রস্তুতি নিয়ে থাকা একদল মানুষ তার মুক্তির দাবি তুলে স্লোগান দেয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলারও চেষ্টা করে তারা।
‘পরে উপস্থিত লোকজন তাদের ধাওয়া দিয়ে আদালত থেকে বের করে দেয় এবং সাবেক এমপিকে যখন আদালত থেকে বের করে কারাগারে নেয়া হয়, তখন উত্তেজিত জনগণ তাকে বেশ কয়েকটা ডিম নিক্ষেপ করেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহরাব হোসেন প্রধান বলেন, ‘সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের আজকে একটি মামলায় জামিন ও রিমান্ড শুনানির তারিখ ছিল। তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত রিমান্ড ও জামিন দুটোই নামঞ্জুর করেন।’
সাবেক এ এমপির বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়ার পথে স্পিডবোট ডুবে এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে স্পিডবোটটি ডুবে যায়।
নিখোঁজ শিশুটির নাম স্মৃতি নুর আলাইশা (৮)। সে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেনের সন্তান।
স্পিডবোট ডোবার বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী জানান, বেলা ১১টার দিকে সেন্টমার্টিন নৌপথের গোলার চরে ৯ যাত্রী নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে স্পিডবোট ডুবে যায়। এ ঘটনায় আটজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের কাজ চলমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্পিডবোট ডোবার ঘটনায় ৯ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তাদের ভাষ্য, স্পিডবোটগুলো ইচ্ছামতো যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন আসা-যাওয়া করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের যথাযথ তদারকি নেই।
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে এক নারীর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে রোববার তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত একটি পত্রে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ওই পত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির রোববার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।’
ইমরান হোসেন শিশিরের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া সদরের সাফাইশ্রী এলাকায়। তার এক প্রতিবেশী নারীর তিন মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রোববার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই নারী ইমরান হোসেন শিশিরের সঙ্গে প্রায় ছয় বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন।
দুজন ভারতে ৯ দিন এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে একসঙ্গে আবাসিক হোটেলে একই কক্ষে রাত্রিযাপন করেছেন বলেও দাবি করেন ওই নারী।
শিশিরের চাপে একাধিকবার গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তার অভিযোগ, এতদিন পর্যন্ত তাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে শিশির তার সঙ্গে সর্ম্পক ছিন্ন করে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে ওই নারী শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় সংবাদ সম্মলন করে তার বক্তব্য সংবলিত ভিডিও সুপার এডিট করে বানানো হয়েছে বলে দাবি করেন। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারও দাবি করেন তিনি।
যদিও স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, শিশিরের চাপে পড়ে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে রোববার অভিযান চালিয়ে ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেল জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাহিনীটির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) কর্তৃক দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে ১ কোটি ৩৬ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।
‘অদ্য ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ ১৫৩০ ঘটিকায় বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধীনস্থ চিনাকান্দি বিওপির (সীমান্ত চৌকি) কমান্ডার জেসিও সুবেদার ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহলদল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাধীন ধনপুর ইউনিয়নের ঝিগাতলা নামক স্থানে চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মালিকবিহীন ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি বড় ট্রাক জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
‘জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক সিজার মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জব্দকৃত আপেল ও ট্রাক সুনামগঞ্জ কাস্টমস অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে পতিত সরকারের প্রভাবশালী লোক জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক তদন্তে নাম এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রোববার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরনো বাস স্টেশনের একটি হোটেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় বাদীপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, ‘ঘটনার ১২ বছর পর টাস্কফোর্স গঠন করে এটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট প্রদানের জন্য সরকারকে ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছে। এতে গণমাধ্যম, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম এসেছে। বেশকিছু সংবেদনশীল মানুষ এর সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে।
‘তদন্তটি এখন প্রপার ডাইমেনশনে আছে। মামলাটি যে জায়গায় গেছে এখন সরকার আর কোনো বাধা দিচ্ছে না। আপাতত কোনো বাধা নেই, উদ্দেশ্যের কোনো সংকট নেই, সরকারের আগ্রহের কোনো ঘাটতি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনির মরদেহে দুই ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। এখন এদের খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি এই দুই ব্যক্তির তথ্যও আপনারা জানতে পারবেন।
‘শুধু সরকারের দায়িত্বে ছিলেন তা নয়, সরকারের পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম এসেছে। আপাতত তদন্ত চলা অবস্থায় সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম বলায় আইনগত বাধা আছে, তাই বলছি না। তবে ইন্ডিকেশন আছে, ইশারাই যথেষ্ট আমার মনে হয়।’
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকটি রিপোর্ট আছে। সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামীকাল মিটিং আছে। সেই মিটিংয়ে হয়তো আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া যাবে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস উদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ তোফায়েল আহমদ, সুনামগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। তাদের একমাত্র ছেলে পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল।
সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১১ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রাম থেকে শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শওকত হোসেন সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি সাভার উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি। এছাড়াও তিনি সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের বড় ভাই।
শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে ১৯ আগস্ট শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
সারাদেশে এবার দুর্গাপূজা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে এবার দুর্গাপূজা পালন করেছে। পূজা নিয়ে পরাজিত শক্তির সব অপকৌশল রুখে দিয়েছে বিএনপি।
রোববার দুপুরে মহম্মদপুর উপজেলার হাটবাড়িয়ার নিজ বাড়িতে দূর্গাপুজা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরি।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘মাগুরায় এবার দুর্গাপূজায় জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে পরিদর্শন করেছেন। জেলার কোথাও কোন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জেলায় এবার দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। সব সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সম্প্রতি বজায় রেখে আমরা চলতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতা মনোয়ার হোসেন খান, সাবেক জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, মিথুন রায় চৌধুরি, আলমগীর হোসেন, সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন কুতুব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য