মেঘনার পাড়জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে নরসিংদীতে। নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, ভিটে মাটি। ভাঙনের কবলে পড়ে এরই মধ্যে এই জেলার অসংখ্য মানুষ গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে পড়েছেন। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তৎপর থাকলেও ক্রমাগত ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, নজরপুর গ্রামের দক্ষিণে মেঘনার তীরবর্তী জমিগুলো নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে দৃষ্টিনন্দন এলাকা হিসেবে পরিচিত নজরপুর টেক (মিনি কক্সবাজার) এলাকাটিও টুকরা টুকরা হয়ে নদীতে খসে পড়ছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নরসিংদী সদর ও রায়পুরা উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলেই মেঘনার তীরবর্তী জমিগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুম এলেই ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন তীরবর্তী এলাকাগুলোর অসংখ্য মানুষ।
বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদনসহ মানববন্ধনও করা হয়েছে।
নজরপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পূর্বপুরুষের ওয়ারিশের জমিগুলো এই রাক্ষুসে মেঘনা গিলে খেয়েছে। শৈশব থেকে আমরা দেখে এসেছি এই গ্রামের বহু লোকের শত শত বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এই জমিগুলোর মাটি অন্য ইউনিয়নের সীমানায় গিয়ে চর ভাসে। ওই চরগুলো অন্য গ্রামের লোকেরা দখল নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যে সীমানা রয়েছে এর চেয়ে দুই কিলোমিটার দূরে নজরপুর ইউনিয়নের সীমানা। দিনে দিনে মেঘনার ভাঙনের ফলে নজরপুরের সীমারেখাও কমে আসছে।’
মিনি কক্সবাজার খ্যাত নজরপুর টেকে বেড়াতে এসেছিলেন রবিউল, আরিফুল ইসলাম ও আলমগীর মিয়া। নিউজবাংলাকে তারা জানান, নজরপুরের একটি দর্শনীয় স্থান হলো এই টেক। দুই কিলোমিটারজুড়ে এই জমির মালিক স্থানীয়রা। তাদের গরু-মহিষগুলো এখানে ঘাস খেয়ে বাঁচে। কিন্তু এই টেকের জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ভাঙন দ্রুত ঠেকাতে না পারলে একসময় নজরপুর গ্রামটিই মেঘনায় বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদীর নদ-নদী পুনঃখনন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয় ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল। ছয়টি নদী খননের আওতায় আড়িয়াল খাঁ নদ, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ খনন করা হবে।
প্রায় ৫২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলাম বীরপ্রতীক। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এবং তত্ত্বাবধানে থাকবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত কাজগুলো হলো নদী পুনঃখনন কাজ ২৩১.৮০ কিলোমিটার, ঢেউয়ের আঘাত থেকে নদীর তীর রক্ষার কাজ ২২.২০৪ কিলোমিটার, নদীর তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ ১.১৫০ কিলোমিটার ও ব্রিজ শক্তিশালীকরণ ৮৫টি। পাঁচ বছর ধরে চলমান এই প্রকল্পের কাজ আরও বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর, হিষাশুড়া, করিমপুর, নজরপুর, আলোকবালী ও চরদিঘলদী ইউনিয়নে কাজগুলো দৃশ্যমান হয়েছে।
চলমান এই প্রকল্পের আওতায় রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নে গত বছর ১৭০০ মিটার গ্রামরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ হাতে নেয়া হয়। এই উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল চরমধুয়া ইউনিয়নে নির্মাণাধীন গ্রামরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষার জোয়ারে ওই ইউনিয়নের বীর চরমধুয়া গ্রামের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে ঈদগাঁর জমিসহ ছয় বিঘা জমি মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বাঁধসংলগ্ন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ঈদগাহ, মসজিদসহ কয়েক শ পরিবার। পরে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদী ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। এতে কিছুটা নদীভাঙন কমে গেলেও নেয়া হচ্ছে না কোনো স্থায়ী সমাধান।
বীর চরমধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মকবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এবার নদীভাঙনের ফলে স্কুলটি ঝুঁকিতে আছে। সংশ্লিষ্টদের নজরে আসায় ভাঙন রোধে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শ্রমিকরা গত বুধবার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে গেছে। এতে ভাঙন বন্ধ হয়েছে।’
রোববার বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নরসিংদীতে ছয়টি নদ-নদী খনন প্রকল্পের কাজ এখন প্রায় ৮০ ভাগ দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, ‘রায়পুরা উপজেলায় নদীভাঙন রোধে চলমান প্রকল্পের সঙ্গে নতুন করে অর্থায়ন যোগ হয়েছে। ছয়টি নদ-নদী খনন প্রকল্পের প্রথম বাজেট ছিল ৫২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এখন তা আবারও বাড়িয়ে ৯০৩ কোটি টাকা হয়েছে। পানি শুকিয়ে গেলে রায়পুরাসহ নদ-নদী খনন প্রকল্পের আওতায় ভাঙন এলাকাগুলোতে আমরা স্থায়ী ব্লক বসাব।’
আরও পড়ুন:খাল-নদী সংস্কারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের খনন। নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
নগরীর শহীদ নগর এলাকায় বুধবার বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পুনর্খনন কাজের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের খাল-নদীগুলো সংস্কার করতে হবে। সংস্কারে কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। তবে যারা খাল-নদী দখলের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন, আমাদের কাজে তারা মনঃক্ষুণ্ন হতেই পারেন।
‘দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরী ঢাকা। এর পরিবেশ ঠিক করতে হবে আমাদের। ঢাকার পরিবেশ সুন্দর করার মাধ্যমে আমাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। ঢাকাকে উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য খাল এবং নদীগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।’
মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সিএস ম্যাপ অনুযায়ী আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনর্খনন কাজ এগিয়ে নেয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশের খনন হবে। নদীর সীমানা নির্ধারণ করে বেষ্টনী দেব।
‘আদি বুড়িগঙ্গা, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, চকবাজার ও পুরান ঢাকা ঘিরে কীভাবে একটি নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে চেষ্টা চলছে। নদীর প্রবাহ ও নদী পুনরুদ্ধার করে একটি বাসযোগ্য নগরী উপহার দেয়া হবে।’
দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে বুড়িগঙ্গায় খননকাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘সাড়ে ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী অর্থবছরে আরও বেশি বরাদ্দ রাখা হবে। আনন্দের বিষয় যে আমরা কাজটি শুরু করতে পেরেছি।’
পরে নগরীর ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মেয়র। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।
আরও পড়ুন:প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, পরিবেশ ও সক্ষমতা তৈরিসহ ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে সুপারিশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। ওয়াশ খাতে বরাদ্দ না বাড়ালে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাজ ধীরগতিতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেট বরাদ্দ কম হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। যদিও ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে।
বাজেটে হাওর এবং পার্বত্য এলাকায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে, তবে চর এবং উপকূলীয় এলাকায় বরাদ্দ বাড়েনি। প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। ওয়াশ খাতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বরাদ্দ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
নিরাপদ পানি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ওয়াটার এইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইনটিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে উপস্থিত ছিলেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটার এইডের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর হোসেন ইশরাত আদিবসহ ওয়াশ নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকায় হালকা থেকে মাঝারি আর সিলেটে হতে পারে ভারি বৃষ্টি।
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া নিয়ে মঙ্গলবার সকালে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঢাকা আবাহওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আর সিলেটেও বৃষ্টি হবে। ওই অঞ্চলে মোটামুটি ভারি বৃষ্টিই হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের উত্তরাঞ্চলে মূলত বেশি বৃষ্টি হবে। সেই তুলনায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম থাকবে। তবে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে।’
সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, এ ছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পেতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ। সোমবার সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে মোংলায় ১৩১ মিলিমিটার।
যানবাহনের প্রচলিত অ্যাসিড ব্যাটারির মেয়াদকাল ছয় মাস থেকে এক বছর। এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। অথচ একটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি চলে পাঁচ থেকে ছয় বছর। এটি যানবাহন চালানোর খরচ কমিয়ে দেয়। পরিবেশও বাঁচায়।
এমন দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারির থ্রি হুইলার বাজারে আনছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘বাঘ মোটরস’। আগামী জুলাইয়ে উৎপাদনে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি জানান, দেশে এটি হবে প্রথম ইকো থ্রি-হুইলার ট্যাক্সি। এর নাম রাখা হচ্ছে ‘বাঘ’। গাজীপুরের নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের তেলের বিকল্প নিয়ে ভাবতেই হবে। শুধু থ্রি-হুইলারই নয়, আগামী তিন বছরে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহনও যুক্ত হবে বাঘ মোটরসের বহরে।’
গত মার্চে এ বাহনটিকে চলাচলের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। উচ্চ নিরাপত্তা ফিচার, কম খরচ ও উন্নত প্রযুক্তির এই গাড়ির দাম ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাঘ মোটরস জানিয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলেও তাদের থ্রি হুইলারে তেমন গরম অনুভূত হয় না।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘বাঘ মোটরস প্রথম কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি নিজস্ব প্যাটেন্ট দিয়ে, নিজস্ব ডিজাইনে নিজস্ব প্রকৌশলে দেশে গাড়ি উৎপাদন করছে। বর্তমানে দেশে অন্যরা যেসব গাড়ি উৎপাদন করছে, সেগুলো প্রযুক্তিসহ সব কিছুই অন্য দেশের। এখানে শুধু উৎপাদন হচ্ছে। আর আমাদের পেটেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছুই নিজস্ব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ পরিবহন শতভাগ পরিবেশবান্ধব, কোনো দূষণ নাই, সৌরশক্তিতে চলে, গ্রিন এনার্জি ব্যবহার হয়। এমন হাজারটা কারণ আছে, যাতে মানুষ আমাদের এই বাঘ ইকো মোটরসের ইকো ট্যাক্সি ব্যবহার করবে।’
অ্যাসিড ব্যাটারির কারণে দেশে প্রায় ২ কোটি লিটার অ্যাসিড নির্গত হয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। ফলে বিদ্যুৎচালিত যানবাহন উৎসাহিত করার সময় এসেছে।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই ইকো থ্রি-হুইলারের ডিজাইন-ড্রইং করে পেটেন্ট করেছি। এটা পৃথিবীর প্রথম সোলার ইকো থ্রি-হুইলার, যেটা লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে চলে। এটির পারমিশন পেতে আমাদের প্রায় ৩০ মাস সময় লেগেছে।’
এটির দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একটা সিএনজি অটোরিকশার দাম এখন প্রায় ১৮ লাখ টাকা, সেখানে আমরা একটা ইকো থ্রি-হুইলার ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় দিচ্ছি। আমাদের একটা ব্যাটারি ৬ বছর পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয় না। প্রচলিত যেসব অ্যাসিড ব্যাটারি আছে, ছয় বছরে সেখানে ১২টি ব্যাটারি প্রয়োজন হয়।’
২০২০ সালের এপ্রিলে বাঘ মোটরস ১১টি যান তৈরি করে। ডুয়াল পাওয়ার-ব্যাটারি এবং সৌরচালিত এ থ্রি-হুইলারে যাত্রীর নিরাপত্তায় বেশ কিছু ফিচার যুক্ত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে যাত্রীর সিটের সঙ্গে ‘প্যানিক বাটন’ রাখা রয়েছে। এই বাটনে চাপ দিলে গাড়ির গতি মুহূর্তেই ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটারে নেমে আসবে। এরপর ২০ মিনিটের জন্য গাড়িটি অচল হয়ে যাবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সতর্কবার্তাও পাঠাবে। এতে কর্তৃপক্ষ ট্যাক্সির কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় করতে পারবে।
এতে থাকবে নিরাপত্তা ক্যামেরা, যা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে যুক্ত থাকবে। সব ধরনের ভিডিও রেকর্ড ও সংরক্ষণ থাকবে সার্ভারে। থাকবে এমবেড করা রিয়াল-টাইম জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম, যা থ্রি-হুইলারের রিয়াল-টাইম অবস্থান দেখাবে। চুরি ঠেকাতে থাকবে আলাদা প্রযুক্তিও।
গাড়িগুলোতে উচ্চমানের ইস্পাত ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সাধারণত বাস-কারে ব্যবহৃত হয়।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গাড়ি শতভাগ মেটাল বডির তৈরি। পুরো বডিই মোটরগাড়ির মতো করে তৈরি, যা যাত্রীকে অধিক নিরাপত্তা দেবে। ব্রেক ও লাইট ছাড়া পুরো গাড়ির দুই বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি থাকবে। গাড়িতে ওয়াইফাই সিস্টেম থাকবে, মোবাইল চার্জিং সিস্টেম থাকবে, জিপিএস থাকবে, মনিটর থাকবে।’
২০২৫ সালের পর বিশ্বে কোনো ডিজেলচালিত গাড়ি তৈরি হবে না। ২০৩০ সাল থেকে তৈরি হবে না কোনো অকটেন গাড়িও। সব গাড়িই বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে পরিণত হবে।
নিজস্ব রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে একটি ট্যাক্সি সার্ভিস হিসেবে কাজ করবে এই ইকো ট্যাক্সি। এর বাইরে ব্যক্তিগতভাবেও এটি কেনা যাবে।
সাধারণ সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার এবং হিউম্যান-হলারের চেয়ে বড় চাকা থাকবে বাঘ ইকো ট্যাক্সিতে। পাশাপাশি অ্যান্টি-লক ব্রেক সিস্টেম (এবিএস)-সহ একটি হাইড্রোলিক ব্রেক সিস্টেমও থাকবে। গাড়ির ছাদে থাকবে সোলার প্যানেল। এতে ব্যবহৃত একটি ৪৮০ ওয়াটের সোলার প্যানেল দিনের বেলায় ৪০ শতাংশ চার্জ হবে ব্যাটারিতে। যার ফলে অতিরিক্ত ৪০ কিলোমিটার যেতে পারবে গাড়িটি।
প্রতি কিলোমিটারে এটি চলার খরচ হতে পারে ১ দশমিক ৩৩ টাকার মতো। সম্পূর্ণ চার্জে ১৫০০ ওয়াটের গাড়িটি ৯০ কিলোমিটার চলতে পারে। এতে চালকের দিনে খরচ হবে ১২০ টাকা। ব্যাটারির চার্জ শেষ হলেও চিন্তা নেই। ৬০ ভোল্টের ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগবে।
বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব চার্জিং পয়েন্টও বসানো হবে। চার্জিং পোর্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-সহ একটি মাইক্রো চিপ ইনস্টল করা থাকবে। একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পোর্টটি খোলা হবে। গাড়ির মালিক নির্দেশ দিলেই চার্জ শুরু হবে।
আরও পড়ুন:স্মরণকালের ভয়াবহ তাপদাহে ধুঁকছে ইউরোপ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকছে যে ফ্রান্সের একটি অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের আয়োজন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের গিরন্ড জেলার বন্দর শহর বোর্দোতে আপাতত কনসার্ট এবং বড় জনসমাবেশ করা যাবে না।
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কায় করছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।
ফ্রান্সের আবহাওয়া অফিস বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যতীত স্থানগুলোতেও অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকবে। তবে ব্যক্তিগত উদযাপন যেমন বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হবে।
স্থানীয় কর্মকর্তা ফ্যাবিয়েন বুসিও ফ্রান্স ব্লু রেডিওকে বলেন, ‘প্রত্যেকই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে তীব্র তাপের সময়কাল আরও বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, তারা জনগণকে সতর্ক করেছে। এই আবহাওয়ার যেন কেউ বাইরে না বের হয়।
গিরন্ডের আবহাওয়া কর্মকর্তা মেটিও ফ্রান্স বলেন, তীব্র গরমে ধুঁকছে ফ্রান্স। উত্তর আফ্রিকা উড়ে আসা গরম বাতাসের কারণে এমনটা ঘটেছে।
‘প্যারিসে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। এটি খরা দাবানলের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তুলুসের বাসিন্দা জ্যাকলিন বননড। তিনি বলেন, ‘আমি বয়স ৮৬। এখানেই আমার জন্ম। মনে হচ্ছে এটিই আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ তাপপ্রবাহ।’
গ্রিড অপারেটর আরটিই জানিয়েছে, এয়ার-কন্ডিশনার এবং ফ্যানের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ফ্রান্সকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে বাধ্য করছে।
একই দশার মধ্যে আছে স্পেন, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যও।
শতাব্দীর উষ্ণতম তাপদাহ অনুভূত হচ্ছে স্পেনে। সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা সর্বোচ্চে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া পরিষেবা-অ্যামেট। আঞ্চলিক সরকার জানিয়েছে, কাতালোনিয়ায় ২০ হাজার হেক্টর জমি দাবানলে পুড়ে গেছে।
ইতালির বৃহত্তম নদী পো-এর বিশাল অংশে পানি এতটাই কম যে, স্থানীয়রা বালির বিস্তৃতির মাঝখান দিয়ে হেঁটে যেতে পারছে। এমনকি যুদ্ধকালীন জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পুনরুত্থিত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ ইংল্যান্ডে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় লন্ডনে তৃতীয় স্তরের তাপ-স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হয়েছে।
চরম তাপ ইউরোপে সীমাবদ্ধ না
গেল সপ্তাহে রেকর্ড তাপমাত্রার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশকে বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। ভারতের দিল্লিতে চলতি গ্রীষ্মের ২৫ দিনে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে নির্গত হচ্ছে। এ ধরনের গ্যাস সূর্যের তাপকে আটকে রাখে, ফলে গ্রহটি উষ্ণ হয়ে ওঠছে।
বিএনপি বন্যার্তদের পাশে নেই, বরং বন্যা নিয়ে তারা অপরাজনীতি করছে বলে মনে করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
রাজধানীর হাতিরঝিলে সোমবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাতিরঝিলের প্লাটিনাম পার্কে যুবলীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শেখ পরশ।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের জন্য বিরাট হুমকি। আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই বাংলাদেশ রেখে যেতে বৃক্ষরোপণ তথা উন্নত প্রাকৃতিক পরিবেশের বিকল্প নেই। পরিবেশ সুরক্ষায় যুবলীগ সব সময় মাঠে থাকবে। যুবলীগের প্রতিটি ইউনিট বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।’
বন্যা নিয়ে রাজনীতির সমালোচনা করে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি-জামাত বন্যার্তদের পাশে না থাকলেও মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মন সঙ্কীর্ণ, তারা আত্মকেন্দ্রিক। এর আগে তারা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করেছে। এখন তারা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তির রাজনীতিতে ব্যস্ত। মানুষের পাশে দাঁড়াবার কোন কার্যকর উদ্যোগ তাদের দেখি না।
‘কিছু করার মুরোদ নেই কিন্তু ক্ষমতায় যেতে তারা মরিয়া। বিএনপির নেতারা ভোগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারা পুরনো স্বভাব বদলাতে না পেরে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু নিয়ে তারা বিদেশিদের সাথে ষড়যন্ত্রে মেতেছিল। সেই চক্রান্ত পেছনে ফেলে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
বন্যার্ত মানুষকে সাহায্য করতে গিয়ে মারা যাওয়া সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা টিটু চৌধুরী ও নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা যুবলীগের নেতা আবির আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান যুবলীগ চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আলহাজ্ব এ কে এম রহমত উল্লাহ। তিনি পরিবেশ সুরক্ষায় রাজধানীর তিনটি থানা এলাকার জন্য ১০ হাজার গাছ উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
আরও পড়ুন:বন্যাকবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বৃষ্টির পানি; কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি কখনও বা মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ওইসব এলাকায়। শিগগিরই এ বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই।
সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় এ মাসজুড়ে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ঢাকা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাত তেমন কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না সিলেটে। মঙ্গলবার সিলেটে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। এর পর আবার শুরু হবে। বিভাগজুড়ে অতি ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে।
‘আসাম, মেঘালয়েও বন্যা হচ্ছে। এ কারণ ও অতি ভারি বৃষ্টি মিলিয়ে, পরিস্থিতি খারাপ। সিলেটে ২৯ জুন পর্যন্ত মাঝামাঝি ধরনের ভারি বৃষ্টি থেকে অতিভারি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।’
ঢাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাস নিয়ে আবাহওয়াবিদ মনোয়ার বলেন, ‘ঢাকায় অতিভারি বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনিতে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হবে।’
সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে ঘন্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পেতে পারে।
সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার হিসেবে দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে ২৪২ মিলিমিটার। এ সময়ের মধ্যে সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ২২ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য