প্রধানমন্ত্রীর সই জালিয়াতি জঘন্য অপরাধ। এদের প্রতি কোনো দয়া নয়, তাদের সাজা খাটতে হবে।
সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নথি জালিয়াতি মামলায় ফাতেমা খাতুনকে দুই মামলায় জামিন না দিয়ে রুল খারিজ করে দেয় এই বেঞ্চ।
আদালতে ফাতেমার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরঃকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।
সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে গেলে তিনি ফোনে ছাত্রলীগের নেতা তরিকুলকে জানান যে, এম আবদুস সালাম আজাদ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অনুমোদন পাননি।
এরপর তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে ফরহাদ নামের একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রসচিহ্ন দেন তরিকুল। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রসচিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিকচিহ্ন দেন তিনি। পরে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
ওই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন এবং হস্তান্তরের পর আরেক দফায় তার ছেলের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন বলে মামলায় বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৫ মে এ বিষয়ে মামলা করেন।
এ মামলায় ফাতেমা হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। ওই রুলের শুনানি শেষে সোমবার রুলটি খারিজ করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন-সুরাইয়া আক্তার কেয়া, রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান।
২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিনদিন পরে তার ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলার বিচার চলাকালীন ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ১৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল)। তাকে ফিরে পাওয়ার প্রতীক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না পরিবারের। এমনকি তিনি জীবিত, না মৃত– সে রহস্যও কাটেনি। তাকে অক্ষতভাবে ফিরে পাওয়ার আশায় এখনও অপেক্ষার প্রহর গুনছে তার পরিবার ও নেতাকর্মীরা।
২০১২ সালের এই দিনে ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন তিনি। এর পর তাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। হরতাল, মিছিল-মিটিং চলে বছরের পর বছর। প্রিয় নেতাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে নিজ এলাকা বিশ্বনাথে গুলিতে প্রাণ দেন তিন নেতাকর্মী।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য নিশ্চিত না করায় এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। মাঝেমধ্যে ইলিয়াস আলীর সন্ধান পাওয়া গেছে– এমন খবরে নতুন করে আশায় বুক বাঁধলেও পরক্ষণে তা ম্লান হয়ে যায়।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। ‘আয়নাঘরে’ তাকে পাওয়া গেছে— এমন খবরও প্রচার করা হয়।
এমনকি গত বছরের ১৯ আগস্ট সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গহরপুর মাদ্রাসায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন এবং বিদেশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দাবি করে বক্তব্য দেন বিএনপির এক নেতা।পরে ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা সেটিকে গুজব বলে মন্তব্য করেন।
৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর স্বামীকে ফিরে পেতে গুম কমিশনে আবেদন করেন লুনা। কিন্তু সেই আবেদনেরও কোনো অগ্রগতি নেই দাবি করে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ইলিয়াস আলীকে অক্ষতভাবে ফেরতের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানায় পারিবারিকভাবে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপি আজ (বুহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে মানববন্ধন ও দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। এ ছাড়া সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বাদ জোহর হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল।
তিনি জানান, ‘১৩ বছর ধরে প্রিয় নেতাকে ফিরে পাওয়ার দাবি করা হচ্ছে। অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার তাঁকে গুম করে রাখে। কিন্তু আজও তার সন্ধান মেলেনি।’
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখনও আশা ছাড়িনি। ইলিয়াস আলীর প্রতীক্ষায় আছি। তিনি এমন এক নেতা, যার জন্য প্রাণ দিয়েছেন কর্মীরা।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ মে দিন ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থপাচার করে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪-সহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৪ ধারায় ও ৩৭৯ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে একটি মাইক্রোবাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
ওই সময় ছিনতাইকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসটির দুই যাত্রী।
আহত দুজন হলেন মাইক্রোবাসের যাত্রী তাহেরা বেগম (৬৫) ও আবদুস সালাম (১৮)। তাদের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায়।
প্রত্যক্ষদর্শী মাইক্রোবাসের যাত্রী হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমার ছোট ভাই হুমায়ুন কবির সৌদি আরব প্রবাসী। ছুটিতে তিনি আজকে বাংলাদেশে আসছেন। আমরা যাচ্ছিলাম তাকে এয়ারপোর্ট থেকে এগিয়ে আনতে। ভোর সাড়ে তিনটার দিকে আমরা সোনাইমুড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই। এ সময় চালকসহ আমরা চারজন মাইক্রোবাসটিতে ছিলাম।
‘শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় পৌঁছাই। এ সময় ঢাকাগামী লেনে একটি যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার শিকার হলে মহাসড়কের এই অংশে যানজট ছিল। যানজটে আটকে থাকার সময় হঠাৎ করে তিন-চারজন যুবক বগি দা, রামদা নিয়ে আমাদের গাড়িতে হামলা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের মারধর করে নগদ ২৮ হাজার টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ডাকাতের হামলায় আমার মা তাহেরা বেগম, আমার ভাগিনা আবদুস সালাম আহত হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় গজারিয়া থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’
ছিনতাইয়ের ঘটনায় আহত আবদুস সালাম বলেন, ‘দিনে-দুপুরে এভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। তা ছিল আমাদের কল্পনার বাহিরে। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে আমাদের সাথে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
‘আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে রামদা দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। আমি সরে গেলে তা আমার পাঞ্জাবিতে লাগে।’
আহত তাহেরা বেগম বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা আমার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চাইলে আমি তাদের বাধা প্রদান করি। এ সময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে। তাদের সাথে না পড়ে একসময় বাধ্য হয়ে আমি ভ্যানিটি ব্যাগ তাদের দিয়ে দিই।’
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানায় অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া মহল্লার ওলিউর রহমান নয়ন বাদী হয়ে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে, ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলাটি দায়ের করেছেন।’
মামলায় অপর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা সভাপতি আবু ইবনে রজবী, আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা রশিদুল ইসলাম, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী সমিতির সভাপতি মাসুদ আলম, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার শাহ আলম, ধীমান সরকার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মুক্তি বাবু ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী সৈয়দা সেলিনা মমতাজ।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি শহরের মুন্সিপাড়ার লুৎফুন্নেসা টাওয়ারে তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় রিজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৎকালীন প্রাথমিক গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছিলেন।
এ উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে আসামিরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
তিনি অভিযোগে জানান, ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে তার প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকি দেয় এবং তারা বলেন, ইকবালুর রহিমকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো নেতাকে দিয়ে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করায় তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে বাদী নয়নকে আসামিদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তাকে অপহরণ করে আসামি আবু ইবনে রজবীর সদর উপজেলার বাঙ্গিবেচা ঘাটের পাশে তার রিসোর্টে নিয়ে গিয়ে আটক করে রাখা হয়। পরে আসামিদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে বাদী ওই দিন বিকেলে তার স্কুলের কর্মচারী সাক্ষী মিজানুর রহমান ও মিজানুর রহমান জুয়েলের মাধ্যমে আসামি রশিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ধীমান সরকারকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা হিসেবে পরিশোধ করেন।
আসামিরা চাঁদা পেয়ে অবশিষ্ট ৭০ লাখ টাকা স্বল্প সময়ের মধ্যে দেওয়ার অঙ্গীকারে ওলিউরকে ছেড়ে দেয়।
ওলিউর তার মামলায় অভিযোগ করেন, আসামি ইকবালুর রহিমের প্রভাবে পরবর্তী সময়ে আসামি সৈয়দা সেলিনাল মমতাজ বাদী হয়ে তার কন্যাকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি নিয়মিত মামলা এবং অপরটি নারী নির্যাতন আইনে। এই মামলা দুটি অনেক অর্থের বিনিময়ে আপস-নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এরপর নয়ন নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্য চলে যান। বর্তমানে দেশে মামলা দায়ের ও বিচারের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর ৬৫ বছর বয়সী আসামিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে পারি। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
‘রাত ৯টার দিকে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী দাবিদার শিশুটির ফুফু জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের বাড়ির পাশের মুদি দোকানে যায় শিশুটি। দোকানের মালিক শিশুটিকে চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দোকানের ভেতরে নিয়ে যান। সে সময় তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। হঠাৎ তিনি (ফুফু) সেখানে উপস্থিত হলে হাতেনাতে বিষয়টি ধরে ফেলেন।
ফুফুর অভিযোগ, তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে উল্টো মুদি দোকানি ও তার ছেলেরা তার ওপর চড়াও হন। অভিযুক্তের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষণের অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা উল্টো নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
শিশুটি বলে, ‘শুধু আমি একা না, দাদার দোকানে যারাই যায় আশেপাশে কেউ না থাকলে তিনি বাচ্চাদের তার কোলে নিয়ে বসায়। বিস্কুট দেয়, বেলুন দেয়। তারপর শরীরে হাত দেয়।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মুদি দোকানির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আগেও পাওয়া গিয়েছিল। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত দোকানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে প্রদত্ত ‘নো অর্ডার’ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে বিভিন্ন মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হয়ে থাকে। বিষয়টির প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময়ে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
“ফলে ‘নো অর্ডার’-এর প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট হতে কোনো মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হলে আবেদনকারীর প্রার্থিত প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়নি এবং চেম্বার কোর্ট বিতর্কিত আদেশ বা রায়ের বিষয়ে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই আবেদনটি নিষ্পত্তি করেছেন মর্মে গণ্য করতে হবে।”
মন্তব্য