ভারতের বিভিন্ন কারাগারে ১ হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশী নাগরিক আটক রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই পদ্ধতিগত কারণে অনিয়মিত অবস্থানের দায়ে অভিযুক্ত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রোববার জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানান। চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সঙ্গে ভারতের সীমানা বিদ্যমান। সামাজিক যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষাসহ নানা কারণে দুই দেশের দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, কোনো সূত্রে খবর পেলে ভারতে বাংলাদেশের মিশনগুলো তা যাচাইপূর্বক কারাগারে আটক বাংলাদেশির বিষয়ে নিশ্চিত হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় আইন সহায়তা দিয়ে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের মুক্ত করে দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে নারী ও শিশু পাচার রোধ, উদ্ধার ও পুনর্বাস সংক্রান্ত একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতে পাচারের শিকার নারী ও শিশুদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত কার্যক্রম নেয়া হয়ে থাকে।
মিয়ানমারে আটক ৬৩
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে জানান, মিয়ানমারে বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচিত মোট ৬৩ জন আটক রয়েছেন। তারা অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করছেন। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে।
মিয়ানমারে আটক ৬৩ জনের মধ্যে ১০ জনের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশিষ্ট ৫০ জনের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান। মিয়ানমারে বন্দি বা কারাভোগরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাস সক্রিয়।
‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব দেশেও পড়েছে’
মোকাব্বির খানের অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে জানান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বহুমাত্রিক প্রভাব পড়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল ও রাসায়নিক সার সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ভূমিকা রয়েছে। লজিস্টিক ব্যবস্থায় সংকট এবং যুদ্ধের কারণে খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেলের বাজার বিশ্বব্যাপী অস্থির হয়ে উঠেছে।
‘বাংলাদেশে আমদানি করা গমের সিংহভাগ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। ইউক্রেন থেকে আমরা ভোজ্যতেলও আমদানি করে থাকি। কিন্তু যুদ্ধের ফলে এসবের সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে গম ও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে গম ও তেল দিয়ে তৈরি খাবারের দাম।’
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে বিকল্প উৎস থেকে খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল ও রাসায়নিক সার আমদানির পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানান তিনি।
ড. মোমেন জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিলাস পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও বিচক্ষণ নির্দেশনার সুবাদে ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত বাংলাদেশ ভালভাবেই সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।
আরও পড়ুন:পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ধরনের উদ্যোগ সাংবাদিকদের পেশাগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। সোমবার (৮ই সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির সঙ্গে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রায় দুই হাজার সদস্যের মধ্যে বিমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বেসরকারি খাতকেও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বিমা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও সাংবাদিকদের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে প্রতি তিন মাস পরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মপরিধি বাড়ানো হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া লেজিসলেটিভ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নেও সরকার কাজ করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে যাঁরা ত্যাগস্বীকার করেছেন, তাঁদের লড়াইয়ের গল্প জনগণের নিকট তুলে ধরতে হবে। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের অবদান গণমাধ্যমে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
ইলিশ মাছ রপ্তানি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তাণি ২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়,প্রতিবছরের ন্যায় চলতি ২০২৫ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১,২০০ (এক হাজার দুইশত) মে.টন ইলিশ ভারতে শর্তসাপেক্ষে রপ্তানির জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সে আলোকে আগ্রহী রপ্তানিকারকগণের নিকট হতে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ৫টা পর্যন্ত) হার্ড কপিতে আবেদন আহবান করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ১২.৫ মার্কিন ডলার সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে যারা আহবান ব্যতিরেকেই আবেদন করেছেন, তাদেরকেও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে।
মন্তব্য