প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে সাড়ে ৯ লাখ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন।
সংগঠনটির দাবি, এই সময়ে তারা ২০ লাখ ১৭ হাজার মানুষকে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপও নির্ণয় করে দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাঁধনের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা এস এম কোরবান আলী।
‘৫০ পেরিয়ে বাংলাদেশ, ২৫-এ বাঁধন, স্বেচ্ছায় রক্তদান হোক সামাজিক আন্দোলন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ২৪ অক্টোবর রজতজয়ন্তী উদযাপন করবে সংগঠনটি। রজতজয়ন্তী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংগঠনটি জানায়, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ এ স্লোগান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে একটি বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ২৫ হাজার বৃক্ষরোপণ, রক্তের প্রয়োজনে রোগীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম 'বাঁধন অ্যাপস' তৈরি, ২৫ বারের বেশি রক্তদাতাদের সম্মাননা, বাঁধন মিলনমেলা, স্যুভেনির প্রকাশসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কোরবান আলী বলেন, ‘রক্তদান এবং রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পাশাপাশি বাঁধন করোনাকালীন প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ৩২২ ইউনিট প্লাজমা প্রদান, করোনায় ৭৪১টি পরিবার ও ৫৪৫ জন ব্যক্তিকে খাদ্যদ্রব্য সহায়তা ও ৫৩ ব্যক্তিকে নগদ অর্থ প্রদান, ৩৮৬ পরিবার ও ৫৪৫ ব্যক্তিকে ইফতারসামগ্রী প্রদান, বাঁধন ট্রান্সফিউশন সেন্টারের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩১১ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করাসহ দেশের বিভিন্ন দুর্যোগের সময় নানা সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’
বাঁধনের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের ৫৩টি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৪০টি ইউনিট নিয়ে কাজ করছে সংগঠনটি। বাঁধনে বর্তমানে ২ হাজার ৪৪৩ জন সক্রিয় কর্মীসহ সাবেক কয়েক হাজার কর্মী কাজ করছেন।’
সামাজিক ও মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রজতজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৪টি কর্মসূচি ঘোষণা করেন কোরবান আলী। বলেন, ‘আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’
এসব কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
প্রতিটি ইউনিট তার কর্ম এলাকার বাইরে অন্তত তিনটি করে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঁধনের কাজ বিদ্যমান নেই, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তদান সম্পর্কিত সচেতনতামূলক প্রচারণা, দরিদ্র থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বিনা মূল্যে রক্ত পরিসঞ্চালনের ব্যবস্থা করা, বাঁধন ট্রান্সফিউশন সেন্টারের মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে রক্তের স্ক্রিনিং ও ক্রসমেচিংয়ের ব্যবস্থা করা।
এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ২৮ অক্টোবর সাবেক ও বর্তমান কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মিলনমেলার আয়োজন করবে সংগঠনটি। সেখানে ২৫ বছরে বাঁধনের সব কর্মসূচির ছবি ফটো গ্যালারি আকারে প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাঁধনের উদ্যোক্তা মো. শাহিদুল ইসলাম রিপন, বাঁধন ফাউন্ডেশনের সভাপতি রকীব আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মীর আশাদুজ্জামান রিন্টু, কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা আসাদুল ইসলাম আসাদ, বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোনের সভাপতি মিনহাজ মাহমুদ হিমেল, সাধারণ সম্পাদক গালিব আহমেদ শিশির।
আরও পড়ুন:নতুন বছর, নতুন সম্ভাবনা এবং বাঙালিয়ানার ঐতিহ্যকে হৃদয়ে ধারণ করে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ উদ্যাপন করল পহেলা বৈশাখ ১৪৩২। রাজধানীর প্রগতি সরণি, বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম এভিনিউতে অবস্থিত সিটি ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন এই প্রাণবন্ত উৎসবে। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল বৈশাখী রঙে রাঙানো আলোকসজ্জা, মুখরিত পরিবেশ এবং বৈশাখী পোশাকে সজ্জিত মানুষের উপস্থিতি।
আয়োজনের মধ্যে ছিল সংগীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি, হস্তশিল্প প্রদর্শনী, ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্টল, নৃত্য, শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বৈশাখী সাংস্কৃতিক পটভূমির ওপর আলোচনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান, প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফত, উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক, উপ-উপাচার্য ড. জি ইউ আহসান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এ এস এম জি ফারুক এবং বিভাগীয় প্রধানরা।
পহেলা বৈশাখের এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলে এবং এক অনন্য মিলনমেলায় পরিণত হয়। সাংস্কৃতিক মনোরম পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোডম্যাপ অনুযায়ী মে মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তবে নির্বাচন কমিশন কতদিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করবে তা রোডম্যাপে উল্লেখ নেই।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই রোডম্যাপ এর কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সংবলিত রোডম্যাপ প্রকাশ করা হলো।
গণমাধ্যমে পাঠানো রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়, ডাকসু নিয়ে অংশীজনদের আলোচনা শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরে।
একই মাসে ডাকসু সংশোধিত গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে তা ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয়। এর আগে এ বিষয়ে ছয়টি সভা করা হয়। এই গঠনতন্ত্র এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়, গত জানুয়ারি মাসে ‘ডাকসু ইলেকশন কোড অব কনডাক্ট রিভিউ কমিটি’ করা হয়। তারা সাতটি সভা করে। এটিও চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন তা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, মে মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। একই সঙ্গে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। একই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্সেস), ‘বি’ ইউনিট (কলা ও আইন অনুষদ), ‘সি’ ইউনিট (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) এবং ‘ডি’ ইউনিটের (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, শাখা পরিবর্তন) ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবিবার দুপুরে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ডি’ ইউনিটের স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রত্যেক শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে লগইন করে নিজ নিজ ফলাফল দেখতে পারবেন। এ ছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট www.jnu.ac.bd অথবা https://jnuadmission.com অথবা www.admission.jnu.ac.bd -এ জানা যাবে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আগামী ৮ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত উল্লিখিত ওয়েবসাইটে (www.admission.jnu.ac.bd) লগইন করে বিষয় পছন্দ (Subject Choice) দিতে পারবেন।
‘এ’ ইউনিটের তিন শিফটে মোট আসন ৮৬০টি। সবগুলো আসন বিজ্ঞান বিভাগের জন্য।
প্রথম শিফটে মোট আসন ২৮৪টি। দ্বিতীয় শিফটে মোট আসন ২৮৭টি। তৃতীয় শিফটে মোট আসন ২৮৯টি।
এ ইউনিটে ৮৬০ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসেন ৪৪ হাজার ২২৩ জন।
‘বি’ ইউনিটের তিনটি শিফটে আসন ৭৮৫টি। প্রথম শিফটে মোট আসন ২৯৪টি, যার মধ্যে মানবিকে ২১৬, বাণিজ্যে ৩৭, এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৪১টি।
দ্বিতীয় শিফটে মোট আসন ২৯২টি, যার মধ্যে মানবিকে ২১৮, বাণিজ্যে ৩৫ এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৩৯টি।
তৃতীয় শিফটে মোট আসন ১৯৯টি, যার মধ্যে মানবিকে ১২৪, বাণিজ্যে ১০ এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৬৫টি।
‘সি’ ইউনিটের দুটি শিফটে মোট আসন ৫২০টি।
প্রথম শিফটে মোট আসন ২৩০টি, যার মধ্যে শুধু বাণিজ্য বিভাগে ২৩০টি।
দ্বিতীয় শিফটে মোট আসন ২৯০টি, যার মধ্যে বাণিজ্যে ২৩১, মানবিকে ১৬ এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৪৪টি।
‘ডি’ ইউনিটের দুটি শিফটে মোট আসন ৫৯০টি।
প্রথম শিফটে মোট আসন ২৯৪টি, যার মধ্যে মানবিকে ১৯২, বাণিজ্যে ৩৩ এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৬৯টি।
দ্বিতীয় শিফটে মোট আসন ২৯৬টি, যার মধ্যে মানবিকে ১৯৩, বাণিজ্যে ৩২ এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৭১টি।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ডি’ ইউনিট, ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘বি’ ইউনিট, ২২ ফেব্রুয়ারি ‘এ’ ইউনিট এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
রাত দুইটায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত এবং প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে হল থেকে রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে একদল শিক্ষার্থী।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে শুরু হয়ে মলচত্বর, ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়।
পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চায় না ছাত্রজনতা। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া মানে জুলাই শহীদের সঙ্গে প্রতারণা করা।
মিছিলে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফাহিম বলেন, আওয়ামী লীগকে ফেরাতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রে যারা মদদ দেবে, তারা যেই হোক না কেন, ছাত্রসমাজ রুখে দাঁড়াবে।
ঢাবির ছাত্রী তাবাসসুম বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। দেড় হাজার মানুষ হত্যার পর তারা ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। অথচ সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অন্তর্ভুক্ত করতে এখন থেকে নানা ফন্দি-ফিকির হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেবে না ছাত্রসমাজ।
যতদিন পর্যন্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত লড়াই চলবে জানিয়ে বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার হতেই হবে। গণভোটের মাধ্যমে হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধি শুক্রবার বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র নাইমুর রহমান সীমান্তের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিতে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মৃত্যু হয় তার।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানান তার সহপাঠীরা। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুমাইয়া ফারাহ খান বলেন, ‘আজ ভোর ৫টায় সীমান্ত শ্যামলীতে কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। সে খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। আমরা যতটুকু জেনেছি গত দুই দিন আগে পেটে ব্যথা নিয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়।
‘গতকাল ওর একটা সাজার্রি করার কথা ছিল। ওর বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছে। মা এবং বোন আছে। বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ওদের পরিবার ঢাকাতেই থাকে। তবে ওকে দাফনের জন্য কিশোরগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
সীমান্তের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যে ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এ তালিকায় চিহ্নিত অনেক হামলাকারীর নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।
বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই তালিকায় রয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান ও ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নসহ আরও অনেকে।
তালিকায় নাম নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবি জুবায়ের বলেন, ‘তানভীর হাসান সৈকত, ইউনুসসহ স্পষ্ট ফুটেজ থাকা অনেক সন্ত্রাসীর নামই লিস্টে নাই। কাদের ইশারায় এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রশাসনকে তা স্পষ্ট জানাতে হবে। অপূর্ণাঙ্গ এই লিস্ট আমরা মানি না।’
সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা ১২৮ জনের লিস্ট কারা তৈরি করছে, এইটা আমরা জানতে চাই। চোখের সামনে আমাদের যারা জসীম উদ্দীন হলের মাঠে ফেলে আমাকে আর হামজা ভাইকে পিটিয়ে মাথা ফাটানো মেহেদী হাসান শান্তের নাম নাই। আমার বোনদের যারা ভিসি চত্বরে পেটাল, তাদের নাম আসে নাই।’
তিনি লিখেন, ‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হইলো একটা সিঙ্গেল নারীকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কার করে নাই। অথচ নির্যাতনের মাত্রা হিসাব করলে এরা পুরুষ ছাত্রলীগের থেকেও ভয়ংকর ছিল। নারী ছাত্রলীগার সন্ত্রাসীদের কারা শেল্টার দিচ্ছে?’
স্মৃতি আফরোজ সুমি লিখেন, ‘বহিষ্কৃতদের তালিকা করার তদন্তের দায়িত্ব কি কোনো লীগারকে দেওয়া হয়েছিলো? লিস্ট দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। না হলে স্পষ্ট ফুটেজ, প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রতি হল থেকে ১০ থেকে ১৫ জনের নাম বাদ পড়ে কীভাবে?’
সুমাইয়া ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘১৫ জুলাই ছাত্রলীগের সবচেয়ে অমানবিক কাজ ছিল ঢাকা মেডিক্যালে হামলা। সেই হামলায় বেশির ভাগ হামলাকারী ছিল জগন্নাথ হলের। অথচ জগন্নাথ হল থেকে মাত্র দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিভু মন্ডল, রাজিব বিশ্বাসের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও বাদ পড়ে গেল!’
এদিকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন এবি জুবায়ের।
১২৮ জনের তালিকায় দুইজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই ছিলেন না, এমন নামও এসেছে।
তাদের কীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এসবসহ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ১৬ মার্চ (রবিবার) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেওয়াজ অনুযায়ী তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘একজন প্রাক্তন উপাচার্য ও অধ্যাপকের মৃত্যুতে পরিবারের সম্মতিক্রমে জানাজার সময় ও স্থান সম্পর্কে সকলকে অবহিত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে মাইকিং, শোকবার্তা প্রকাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ মোনাজাতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত সকল প্রথা অনুসরণ করা হয়েছে।
‘উল্লেখ্য, পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমেই অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ও দাফনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অসুস্থ হয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার পরের দিন ৭ মার্চ শুক্রবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান হাসপাতালে তাকে দেখতে যান এবং তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়।
‘ইন্তেকালের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং প্রশাসনের অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ মরহুমের জানাজা ও দাফন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং দাফন প্রক্রিয়ায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য