সম্প্রতি ঢাকার আশুলিয়ায় হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ওই দুটি ঘটনাসহ বিভিন্ন সময়ে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত আন্তজেলা ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে শনিবার রাতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮-এর একটি দল তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন ওই ডাকাত চক্রের সর্দার হিরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ, হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা, আরিফ প্রামাণিক ওরফে আরিফ হোসেন, নুর ইসলাম, রাজু শেখ ওরফে রাজ্জাক, রেজাউল সরকার, মো. রতন, শরিফুল ইসলাম, মো. হানিফ ও নজরুল ইসলাম।
ওই সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলি, আটটি দেশি অস্ত্র, শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের চারটি টিকিট ও তিনটি ব্যাগ জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা ঢাকা-রাজশাহীগামী একটি বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিলেন।
কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘ডাকাত চক্রটি দেড় বছরে যাত্রীবেশে মহাসড়কে ১৫টির বেশি ডাকাতি করেছে। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
‘কারাগারে গিয়ে তারা জামিন নিয়ে এসে আবারও ডাকাতির কাজে লিপ্ত হন। এ ছাড়া ঢাকা-দিনাজপুরগামী একটি বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটান তারা।’
গত ২৯ মে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টারলাইন পরিবহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জুন ডাকাত মহব্বত ওরফে রয়েলকে লুণ্ঠিত মালামালসহ রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব কমান্ডার বলেন, ‘রয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব গোয়েন্দারা বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পায়। ডাকাত হীরার নেতৃত্বে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলটি গত এক মাসে তিনটি দূরপাল্লার বাসে ডাকাতি করে।
‘চক্রটি গত ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে যশোর-বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ২৫ মে ঢাকা-রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস পরিবহন এবং ২৯ মে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা থেকে কোটালীপাড়াগামী স্টারলাইন পরিবহনে ডাকাতি করে।’
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় তারা বাসচালকের হাতে ও হেলপারের পেটে ছুরিকাঘাত করে। চক্রটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনী ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কনক পরিবহন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সুরভী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সিলেট-রাজশাহী মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও রইস পরিবহন, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস ও সরকার ট্রাভেলস, রাজশাহী-বরিশাল মহাসড়কে সেবা গ্রিনলাইন পরিবহন ও তুহিন পরিবহনে ডাকাতি করেছিল।
‘তিন বছর আগে ঢাকা-দিনাজপুরগামী একটি বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনাও ঘটায় চক্রটি। সর্বশেষ তারা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টারলাইন পরিবহনে ডাকাতি করে। ডাকাতির জন্য তারা ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তজেলা বাসগুলোকে টার্গেট করে। এ ক্ষেত্রে চক্রটির কয়েকজন আগে থেকেই কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার মাধ্যমে বাসে ওঠেন।’
যেভাবে করা হতো ডাকাতি
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্য সদস্যরা পরবর্তী বিভিন্ন কাউন্টার থেকে টার্গেট করা বাসে ওঠেন। যেসব দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ছাড়া যাত্রী ওঠায় তারা এসব বাসকে প্রাধান্য দিয়ে ডাকাতি করেন।’
র্যাব মুখপাত্র আরও বলেন, ‘তারা মহাসড়কের নির্জন এলাকায় বাস ডাকাতির জন্য বেছে নিতেন। ডাকাতির পর তারা পুনরায় আশুলিয়ায় ফিরে আসেন। বিভিন্ন সময় তারা বাড়িঘরে ডাকাতি করতেন। ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার সবাই ডাকাতিসহ অন্যান্য মামলায় ২-৬ বছর মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।’
ডাকাত সদস্যদের পরিচয়
গ্রেপ্তার ডাকাতদের সম্পর্কে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হিরা শেখ এই ডাকাত চক্রের অন্যতম মূল হোতা। আগে তিনি গার্মেন্টস পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে ডাকাতির পেশায় জড়িয়ে পড়েন এবং দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে ডাকাতি করেন।
‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি বাস ডাকাতি তার নেতৃত্বে হয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবহনে ডাকাতিতে তিনি নিজে অংশ নেন। ডাকাতির সময় তিনি পরিবহনে উঠে প্রথমে বাস স্টাফদের এবং যাত্রীদের মারধর করে ভয় দেখান।
‘পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ও যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল এবং স্বর্ণালংকার লুট করতেন। তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে ৭টি মামলা রয়েছে।’
হাসান মোল্লা ডাকাত সর্দারের অন্যতম সহযোগী এবং দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে ডাকাতি করে আসছেন বলে জানান র্যাব কমান্ডার। জানান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি বাস ডাকাতির পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ডাকাতির সময় তিনি পরিবহনে উঠে প্রথমে বাস স্টাফদের এবং যাত্রীদের মারধর করে ভয় দেখান। পরে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখতেন।
তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে ১০টি মামলা রয়েছে। নুর ইসলাম, হানিফ, আরিফ, শরীফ ও রতন এই চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা পেশায় অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানচালকসহ অন্যান্য পেশার আড়ালে ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
গত ১০ বছর তারা বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছেন। ডাকাতির সময় তারা বাসের ড্রাইভারকে জিম্মি করে নিজেরাই বাসের ড্রাইভিং সিটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতেন।
গ্রেপ্তার আরিফ ও শরীফ চালক এবং সুপারভাইজারকে অস্ত্রের মুখে গাড়ির পেছনের সিটে হাত-পা বেঁধে রেখে পাহারা দিতেন। গ্রেপ্তার শরীফ ৮ থেকে ১০ বছর ধরে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছেন। তার নামে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধে ৮টি মামলা রয়েছে। আরিফের নামে দস্যুতার মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তার নুর, হানিফ ও রতন ডাকাতির সময় অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের মালামাল লুট করতেন। নুরের নামে ডাকাতি, অস্ত্র, বিস্ফোরক আইনে বিভিন্ন থানায় ৪টি মামলা রয়েছে। হানিফের নামে ডাকাতি ও মাদক আইনে ২টি মামলা রয়েছে। রতনের নামে ডাকাতি ও মাদক আইনে বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।
এর আগে তারা এসব মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ ছাড়া রাজু ও রেজাউল এই চক্রের অন্যতম সদস্য।
রাজু দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছেন। তার নামে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৩টি মামলা রয়েছে। তিনি ডাকাতির সময় অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের মালামাল লুট করতেন। রেজাউল ডাকাতির সময় গাড়ির গেটে পাহারা দিতেন। তার নামে মাদক, ডাকাতি, ছিনতাই ও অস্ত্র আইনে মোট ৬টি মামলা রয়েছে।
পরিবহনে ডাকাতির সময় তারা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণালংকার লুটের কাজ করতেন। গ্রেপ্তার নজরুল ডাকাত দলটির লুটকৃত স্বর্ণ কিনে সেগুলো গলিয়ে বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে বিক্রি করতেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের নামে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলিস্তানে একটি মার্কেটে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর এক যুবকের সাড়ে তিন লাখ টাকা খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তার এক সহকর্মী। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে কেউ অজ্ঞান করে টাকা নিয়ে গেছেন।
সেই যুবকের নাম কবির হোসেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কবির কুইক লিংক টেকনোলজি নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি।
প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং কর্মকর্তা আশরাফুল হায়দার জানান, তারা রাউটার এবং সিসি ক্যামেরা বিক্রি কনে। কবির বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করে টাকা সংগ্রহ করেন। পরে সেখানকার লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বিকালে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়।
আশরাফুল বলেন, নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে টাকা সংগ্রহ করে উৎসব পরিবহনে ফিরে আসেন। পরে কাপ্তান বাজার ইলেট্রিক মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন।
অজ্ঞান হওয়ার আগে কবিরের কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা ছিল জানিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘সেই টাকা আর পাওয়া যায়নি।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অচেতন অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিক্যালে আনা হয়। তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ওয়ারী থানাকে জানানো হয়েছে।’
খাল-নদী সংস্কারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের খনন। নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
নগরীর শহীদ নগর এলাকায় বুধবার বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পুনর্খনন কাজের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের খাল-নদীগুলো সংস্কার করতে হবে। সংস্কারে কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। তবে যারা খাল-নদী দখলের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন, আমাদের কাজে তারা মনঃক্ষুণ্ন হতেই পারেন।
‘দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরী ঢাকা। এর পরিবেশ ঠিক করতে হবে আমাদের। ঢাকার পরিবেশ সুন্দর করার মাধ্যমে আমাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। ঢাকাকে উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য খাল এবং নদীগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।’
মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সিএস ম্যাপ অনুযায়ী আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনর্খনন কাজ এগিয়ে নেয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশের খনন হবে। নদীর সীমানা নির্ধারণ করে বেষ্টনী দেব।
‘আদি বুড়িগঙ্গা, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, চকবাজার ও পুরান ঢাকা ঘিরে কীভাবে একটি নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে চেষ্টা চলছে। নদীর প্রবাহ ও নদী পুনরুদ্ধার করে একটি বাসযোগ্য নগরী উপহার দেয়া হবে।’
দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে বুড়িগঙ্গায় খননকাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘সাড়ে ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী অর্থবছরে আরও বেশি বরাদ্দ রাখা হবে। আনন্দের বিষয় যে আমরা কাজটি শুরু করতে পেরেছি।’
পরে নগরীর ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মেয়র। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।
আরও পড়ুন:অর্থপাচার মামলায় এসএম গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমসহ আট জনের বিরুদ্ধে আরও পাঁচ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে বুধবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এই পর্যন্ত ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে এই মামলায়। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ জুলাই দিন ঠিক করেছেন বিচারক।
আদালতে যে পাঁচ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন হোসাইনী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার কনস্টেবল মিনহাজুল আবেদীন, গুলশান থানার এএসআই বুলবুল হক আনাছ, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার এএসআই নুরে আলম ও বাগেরহাট সদর মডেল থানার এএসআই তারক চন্দ্র দাস।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
আলোচিত এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মোরাদ হোসেন, সামসাদ হোসেন, আনিছুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, কামাল হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। তারা জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত।
জি কে শামীমকে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আটক করে র্যাব। এ সময় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার হয়। এ ব্যাপারে র্যাব বাদী হয়ে মানি লন্ডারিং, মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করে।
আরও পড়ুন:আত্মসমর্পণের পর জামিন পাননি ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাজা পাওয়া চার কর্মকর্তা। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
গ্রাহকদের ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালত ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দেয়। তখন চার আসামি পলাতক থাকায় তাদের নামে পরোয়ানা জারি হয়।
বুধবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলমের উপস্থিতিতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- ডেসটিনি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর সাকিবুজ্জামান খান (অব.), সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেস্ট এভিয়েশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোল্লা আল আমিন, সুনীল বরণ কর্মকার ও হেড অব ফাইন্যান্স কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিম।
এ মামলায় গত ১২ মে রায় দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
রায়ে অন্য আসামিদের পাশাপাশি মেজর সাকিবুজ্জামান খানের (অব.) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানা হয়। মোল্লা আল আমিনের চার বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, সুনীল বরণ কর্মকারের ৮ বছর কারাদণ্ড ও ৫ কোটি টাকা জরিমানা এবং কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিমের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:রাজধানীর রায়ের বাজার পুলপার বটতলা এলাকায় এক যুবককে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের নাম মো. রবিন। তার বয়স ২৩ বছর।
রবিন রায়েরবাজার কাঁচাবাজারের পাশে একটি বাসায় থাকেন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক।
গুরুতর আহত অবস্থায় রবিনকে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিলশাদ নামে সিএনজি চালকের মাধ্যমে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবকের পেটে, পিঠে চার থেকে পাঁচটি ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তখনন হয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রবিনের বন্ধু বাবু জানান, রবিনসহ তারা তিনজন রায়েরবাজার বটতলা এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী মিঠুর ছেলেসহ ৫/৬ জন তাদের পথ রোধ করে। সেখান থেকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায় পাশের রাস্তায়। সেখানে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গতকাল ওই এলাকায় দুই গ্রুপের মারামারি হয়। এরই জেরে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে তার বন্ধুরা জানান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:শিশুদের সঙ্গে সময় কাটালেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সুপ্রিম কোর্টে নবনির্মিত ‘বিজয় ৭১ ভবনে’ বুধবার ডে কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি।
বিকেল ৪টায় তিনি ফিতা কেটে সেন্টারটি উদ্বোধন করেন।
ওই সময় তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান। পরে ছবি তোলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।
নতুন এই ডে কেয়ার সেন্টারে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সন্তানরা রয়েছে।
আরও পড়ুন:সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিতে নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বলেন, ‘২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি জ্ঞানভিত্তিক, সুখি-সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশে পরিণত হবে।’
বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা/কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে, বিদ্যুৎসেবা আরও বাড়াতে হবে। টিমওয়ার্কের জন্যই এ অর্জন দ্রুত হয়েছে। টিমওয়ার্ক করেই কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে।
‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা। কখন কোন কাজ সম্পাদন করতে হবে তার টাইমলাইন থাকায় সাফল্য পেতে সহজ হয়। অতীতে ভালো করলেও বিগত দুটি বছরে অর্জিত সম্মানজনক অবস্থান বিদ্যুৎ বিভাগ ধরে রাখতে পারিনি। আগামীতে প্রথম স্থান পেতে হবে।
‘আমাদের যে অর্জন হয়েছে তা ধরে রাখা হবে। রক্ষণাবেক্ষণের জায়গায় আরও সচেতন হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার পান নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহসিন চৌধুরী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুল হক এবং অফিস সহায়ক আফরোজা আক্তার।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরক্ত সচিব ও এপিএ টিম লিডার মোহসিন চৌধুরী, পিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, পাওয়ার সেলের ডিজি মোহাম্মদ হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য