ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদ ভবনের দোতলায় ঘোরাঘুরি করে দুই ছাগল। সেখানেই খাবার খায়। মেঝেতে মল-মূত্র ত্যাগ করে; নষ্ট করে টবের গাছ।
কর্মদিবসগুলোতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাছলিমা আক্তারের কার্যালয়ের সামনে দেখা যায় এমন চিত্র।
উপজেলা পরিষদ ভবনে ছাগল দুটির উৎপাত নিয়মিত সইতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন সেখানকার একাধিক কর্মী। ছাগলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সেবাগ্রহীতারাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীদের অভিযোগ, উপজেলা পরিষদের বারান্দা ও বাগানের সৌন্দর্য বাড়াতে যে গাছ লাগানো হয়েছে, তা খেয়ে নষ্ট করছে ছাগলগুলো। ভবনের বারান্দাসহ যেখানে-সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করছে এগুলো।
তাদের ভাষ্য, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা ছাগলের উৎপাতে বিরক্ত হলেও প্রাণী দুটি ইউএনওর হওয়ায় খোলেন না মুখ।
কী বলছেন সেবাগ্রহীতারা
সালথা বাজারের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী পরিমল চন্দ্র সাহা বলেন, “উপজেলা অফিসের দোতলার সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে দেখি সিঁড়িতে ছাগলের পায়খানা ছড়িয়ে আছে। ছাগল প্রস্রাব করায় সিঁড়ি পিচ্ছিল হয়ে গেছে। সিঁড়ির রেলিং ধরে দুর্গন্ধে নাক চেপে উপরে উঠে দেখি, ইউএনওর রুমের সামনে দুটি ছাগল।
“আমি চেঁচিয়ে ছাগল তাড়াতে গেলে ইউএনওর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পিয়ন আমাকে চুপ করতে বলে বলেন, ‘এগুলা স্যারের (ইউএনও) ছাগল। কথা বইলেন না।’ আমি শুধু বললাম, ‘ইউএনও স্যারের সঙ্গে তার ছাগলও অফিস করে!’”
উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ থাকবে পরিষ্কার-পরিছন্ন, যেখানে মানুষ সেবা নিতে এসে পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবে, কিন্তু এ কী অবস্থা দেখছি?’
ইউএনও-সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য
কর্মস্থলে ছাগলের বিচরণ নিয়ে জানতে চাইলে সালথার ইউএনও তাছলিমা আক্তার বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ বাউন্ডারির মধ্যেই আমার, চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার। আমি ও চেয়ারম্যানসহ অনেকেই ছাগল পালন করি। সামনে কোরবানির ঈদ হওয়ায় ছাগলগুলো পালন করছি। আমার দুটো ছাগল আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাগলগুলো ছেড়ে পালন করা হয়। এতে অনেক সময়ই পরিষদের বারান্দায় চলে আসে।’
গাছের ক্ষতি ও মেঝে নোংরা করার পরও ছাগল উপজেলা পরিষদে কেন আনা হয় জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘ছাগলগুলো বারান্দায় আসলে তো আর মেরে ফেলতে পারি না। তাদেরকে তাড়িয়ে দিই।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল্লাহ আহসান বলেন, ‘সরকারি অফিস চত্বরে গবাদি পশু পালনের কোনো সুযোগ নেই, তবে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে পালন করে তাতে জনগণকে বিরক্ত বা মালের ক্ষতি করা যাবে না। আইনিভাবে কোথাও নেই সরকারি প্রতিষ্ঠানে গবাদি পশু লালন-পালন করা যাবে।
‘অনেক সময় সরকারি কোয়ার্টারের ভেতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গবাদি পশু লালন পালন করে থাকে, তবে সেটা অবশ্যই কোয়ার্টারের মধ্যে বেঁধে পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অফিসের মধ্যে মানুষকে বিরক্ত করার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে কেউ চাইলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। সেনসেটিভ ইস্যু নিয়ে শাস্তিগত ব্যবস্থা কী হতে পারে, তা বলতে পারছি না।’
অফিস চত্বরে ছাগল পালন করে জানমালের ক্ষতি হলে কোনো ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই কর্মকর্তার কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে এ রকম কোনো শাস্তির ব্যবস্থা আছে কি না আমার জানা নাই, তবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়ে থাকলে তারা তাদের বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার সালথা উপজেলা পরিষদে ছাগল পালনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্কে সালথার নির্বাহী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। এটা তার বিষয়। আপনি তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলেন।’
ছাগল পালনের বৈধতা আছে কি না জানতে চাইলেও একই উত্তর দেন ডিসি।
আরও পড়ুন:বিএনপি ও সমমনা বিরোধীদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় বোরবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর বরাতে পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে ইউসুফ পরিবহনের একটি বাস টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে চন্দ্রা এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় এক নারীসহ ১০ থেকে ১২ জন অল্প বয়সের যাত্রী ওই বাসে ওঠেন। পরে যাত্রী নিয়ে গাড়িটি যাত্রা শুরু করার একটু পরেই চন্দ্রা ফ্লাইওভার এলাকা পার হওয়ার আগে বাসে থাকা নারী আগুন আগুন বলে চিৎকার করেন। আগুন দেখে তাৎক্ষণিকভাবে সব যাত্রী ও চালক বাস থেকে নেমে যান। পরে বাসে ওঠা যাত্রীরাই এ আগুন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান জানান, খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে সম্পূর্ন বাসটি পুড়ে যায়। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান বলেন, ‘আগুনে বাসটি পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় রডবোঝাই চলন্ত একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় চালক ও তার হেলতার অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তারা দুজনই আগুনে দ্বগ্ধ হন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে বাসে আগুন দেয়ার ‘প্রস্তুতির সময়’ পেট্রলবোমাসহ তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সাহেব কাচারী বাজারের রাঘরপুর এলাকা থেকে রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মহানগরীর বাঘমারা এলাকার ৩০ সুমন চন্দ্র দেবনাথ, চর গোবদিয়া এলাকার ৩০ বছর বয়সী খাইরুল, ও বাদেকল্পা এলাকার ২৪ বছর বয়সী আকরাম হোসেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে ময়মনসিংহ সদরের সাহেব কাচারী বাজারের রাঘরপুর এলাকায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। মিছিল থেকে বাসে আগুন দেয়ার প্রস্তুতির সময় হাতেনাতে পেট্রলবোমাসহ ছাত্রদলের তিননেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আগামী ১৭ ডিসেম্বরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম রোববার মাদারীপুরে তার বড়িতে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, আগে-পরে অনেক বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ১৭ ডিসেম্বরের পর সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এবারের নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে এবার ২৯টি দলের দুই হাজারের ওপর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, তবে বিএনপি না আসায় কিছুই করার নেই। নির্বাচনে বিএনপির অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী নৌকায় নির্বাচনও করছেন। এতে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ থাকবে না।
এ সময় মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, অগাামী ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থী ছাড়াও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্বতন্ত্রভাবে ভোটে যেতে অনুমতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও একই ঘোষণা দিয়েছেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তৃতীয় দিনে দিনাজপুরের ৬টি আসনের ৩৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
জেলা রিটার্নিং অফিসার রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এ তথ্য জানান।
এ সময় দিনাজপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবু হোসাইন বিপুর মনোনয়নপত্রে সমর্থকের তালিকায় ত্রুটি পাওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে দিনাজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ, দিনাজপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হক ও দিনাজপুর-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনেওয়াজ ফিরোজ শাহের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার শাকিল আহমেদ বলেন, ‘দিনাজপুরের ৬টি সংসদীয় আসনের মোট ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ সময় ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ ছাড়া ৩০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ রয়েছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের মধ্যে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সফিকুল ইসলাম রোববার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমানের নেতৃত্বে শনি ও রোববার দুদিন মিলে ১১টি সংসদীয় আসনের ১০৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ায় ২৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমেদ খান, ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে মোহাম্মদ আবু বক্কর ছিদ্দিক, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে এ.কে.এম আবদুর রফিক, মোশাররফ হোসেন আজাদ, ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বদর উদ্দিন আহমেদ, মো. নজরুল ইসলাম, মো. ফয়জুর রহমান, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ডা. খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আবদুল মান্নান আকন্দ, জাহাঙ্গীর আলম খান ও সেলিমা বেগম। ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল আহমেদ, আবুল মনসুর, মো. হাবিবুর রহমান খান ও মুক্তিজোটের বাদশা দেওয়ান, ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী খিজির হায়াত খান, কানিজ ফাতেমা ও একেএম ওয়াহিদুজ্জামান, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার আহমদ ও মোহাম্মদ আবুল হোসেন এবং ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ, মো. আ. রহমান ফকির, তরিকত ফেডারেশনের মো. কায়কোবাদ হোসেন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এবিএম জিয়া উদ্দিন।
এর আগে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। ময়মনসিংহের ১১টি আসনে মোট ১০৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১, দুই সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ২৯, জাতীয় পার্টির ১১, জাসদের ৭, তৃণমূল বিএনপির ৬, বিএনপির সাবেক দুই এমপিসহ স্বতন্ত্র ৯ এবং অন্য দলের ৩৪ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলায় খড়বোঝাই করা একটি চলন্ত ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
সদর উপজেলার শশরা ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ট্রাকচালক রবি সরদার জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে বীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ট্রাকে খড়বোঝাই করে ময়নমনসিংহের ভালুকার উদ্দেশে রওনা হন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলার গাবুড়া বাজার পার হলে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত চলন্ত ট্রাকটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জালিয়াপাড়া পেট্রল পাম্পের সামনে ট্রাকটি থামিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তিনি ও স্থানীয়রা। খবর পেয়ে দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ট্রাকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাহ আল মামুন জানান, দুর্বৃত্তরা চলন্ত ট্রাকে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে।
রোববার রাজশাহী-১ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালত) আবু সাঈদ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
ওমর ফারুক চৌধুরীকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনুসন্ধান কমিটি জানতে পেরেছে, ওমর ফারুক চৌধুরী প্রতীক বরাদ্দের আগেই বিধি লঙ্ঘন করে তানোরে দুটি সভা করে নৌকায় ভোট চান। এটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৬ (ঘ) বিধি ১২ লঙ্ঘন। এটি নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়েছে।
এতে বলা হয়, ওমর ফারুক চৌধুরী কেন আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের সভা করেছেন তা মঙ্গলবার বেলা ৩টায় স্বশীরের উপস্থিত হয়ে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে রাজশাহী-১ আসনের অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজের (দ্বিতীয় আদালত) কার্যালয়ে লিখিত ব্যাখা প্রদানের জন্য তাকে নির্দেশ দেয়া হলো।
এর আগের দিন শনিবার বিকেলে ওমর ফারুক চৌধুরী তানোর পৌরসভার গোকুল ও বুরুজ এলাকায় সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের নিয়ে সমাবেশ করেন। এসব সমাবেশ থেকে তিনি আসন্ন নির্বাচনে সবাইকে নৌকার পক্ষে থাকার আহ্বান জানান।
তফসিল ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দের আগে এ ধরনের সমাবেশ আচরণবিধির লঙ্ঘন। এর আগেও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি ভেঙে তানোর ও গোদাগাড়ীতে উপকারভোগীদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সভা করে নৌকায় ভোট চান তিনি।
এসব সমাবেশ দৃষ্টিতে পড়লে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দেন। এর ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিবেদন দেন।
ইসি এই সংসদ সদস্যকে সতর্ক করার জন্য একটি চিঠি দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে সতর্কও করেন। কিন্তু কয়েকদিন পার না হতেই তিনি আবার আচরণবিধি ভেঙে সভা করেন। এবার তাকে এর জবাব দিতে হচ্ছে অনুসন্ধান কমিটির কাছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য