ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এক তরুণীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে এক দুর্বৃত্ত।
বুধবার রাত সোয়া ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের কলা ভবনের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
রাতের ঢাকায় ওই ঘটনাকে ভয়ানক অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেছেন তরুণী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে ঘটনার বর্ণনা পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনায় ওই তরুণী বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগ থানায় গিয়ে মামলা করতে পারেননি। আলামত সংগ্রহ করে মামলা করতে হবে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাতে রিকশায় ধানমন্ডিতে আমার ভাইয়ের বাসা থেকে পুরান ঢাকায় নিজের বাসায় যাচ্ছিলাম। আনুমানিক রাত ১২টা ১৭ মিনিট থেকে ১২টা ২২ মিনিটের মধ্যে নীলক্ষেত থেকে যখন টিএসসির দিকে ঢুকছিলাম, কলা ভবনের কাছাকাছি ঘটনাটি ঘটে।
‘আমি আপসেট হয়ে পড়ি তাই জায়গাটা সঠিক বলতে পারছি না। আমি হেডফোনে গান শুনছিলাম। আমার রিকশার বাম সাইডে হঠাৎ বাইকে একটা লোক এসে আমার বুকে হাত দেয় এবং খুব জোরে টান দেয়। জোরে টান দিলে আমার জামাটা ছিঁড়ে যায়। ’
তিনি বলেন, ‘তখনও আমার কানে হেডফোন ছিল। এই অবস্থায় চিৎকার করে উঠি। আশপাশে বাইকে লোক ছিল, তবে পুলিশ ছিল না। এ সময় কেউ সাহস করে এগিয়ে আসে নাই। আমি অনেক ভয় পাই, কী করব বুঝে উঠতে পারি নাই।’
‘ওই লোক যাওয়ার সময় রাগান্বিত চোখে আমাকে কিছু একটা বলতে বলতে যাচ্ছিল। তখন রিকশাওয়ালাকে বলেছিলাম ওনাকে আটকানোর জন্য। কিন্তু তাকে আটকানো সম্ভব হয় নাই এবং তিনি দ্রুত বাইক টেনে চলে যান। ওই লোক বাইকে একাই ছিলেন। হেলমেট পরা ছিল। ভয়ে বাইকটার নামও লক্ষ করতে পারিনি।’
মামলার বিষয়ে তরুণী বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) শাহবাগ থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। মামলার আলামত সংগ্রহ করছি। আগামীকাল (শুক্রবার) মামলা করব। আমি চাই আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে।’
ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী জোটের ইয়ায়েল ব্রাউন-পিভেটকে স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করেছে।
দ্য ন্যাশনাল নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়ায়েলই হতে যাচ্ছেন দেশটির নিম্নকক্ষের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া প্রথম নারী। তিনি গর্ভপাতের অধিকারের একজন সমর্থক।
ইমানুয়েল মাখোঁর দল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর এবং ফরাসি রাজনীতির অতি-ডান ও বাম শিবির শক্তিশালী হওয়ার পর জাতীয় পরিষদে এই প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হলো।
এর আগে নির্বাচনে পার্লামেন্টে ৫৭৭টি আসনের মধ্যে ইমানুয়েলের দল জয় পেয়েছে ২৪৫টিতে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তাদের দরকার ছিল ২৮৯টি আসন।
এখনও মাখোঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে অ্যাসেম্বলিতে। তবে নতুন কোনো আইন পাস করার জন্য এই সংখ্যাগরিষ্ঠতাও যথেষ্ট নয়।
ইয়ায়েল ব্রাউন-পিভেট একজন প্রাক্তন সমাজতন্ত্রী। ২০১৬ সালে তিনি মাখোঁর পার্টিতে যোগ দেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ঘটনাপ্রবাহের দিকে আলোকপাত করে ইয়ায়েল ব্রাউন-পিভেট ফ্রান্সের গর্ভপাত অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন এবং চেম্বারকে আইন রক্ষার বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত মাসে ফ্রান্সের শ্রমমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্নিকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে ৩০ বছরের বেশি সময় পর দেশটিতে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
৬১ বছর বয়সী এই নারী রাজনীতিক বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্সের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
দেশটিতে সবশেষ নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করেন ইডিথ ক্রেসন। তিনি ১৯৯১ সালের মে মাস থেকে ১৯৯২-এর এপ্রিল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:সন্তান প্রসবের পর ইমোশনাল এবং হরমোনাল এক সাইক্লোন বয়ে যায় মাতৃমনে। মানে আনন্দ, ভয় এবং আতঙ্কের এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করে তখন। এর পরিণতি হতে পারে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা!
বিষণ্ণতা শব্দটি আমাদের চারপাশে হরহামেশা শোনা যায়। সবাই আমরা কম-বেশি বিষণ্ণতায় ভুগছি।
নানা কারণে বিষণ্ণতায় ভোগে মানুষ। একেকজনের একেক কারণ। এর ফলে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।
তবে সন্তান প্রসবের পর বেশির ভাগ মায়েরা এক ধরনের বিষণ্ণতায় ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তা ‘মাতৃত্বকালীন বিষণ্ণতা’ নামে পরিচিত।
বেশির ভাগ মা প্রসবের পর ‘বেবি-ব্লু’-তে আক্রান্ত হন; যা সাধারণত মুড সুইং। এটা মূলত অকারণে কান্নাকাটি করা, আতঙ্কিত বা শঙ্কিত হওয়া, ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার মতো বিষয়গুলোতে সীমাবদ্ধ থাকে। এটি সাধারণত প্রসবের ২-৩ দিন পর শুরু হয়ে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কিছু মায়ের ক্ষেত্রে তা আরও দীর্ঘ হয়ে থাকে। তারা আরও মারাত্মক বিষণ্ণতায় (সিভিয়ার ডিপ্রেশন) ভোগেন, যাকে পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন বলা হয়। এর থেকে আরও মারাত্মক একটা কনসিকোয়েন্স হতে পারে, যাকে মেডিক্যাল ভাষায় ‘পোস্টপারটাম সাইকোসিস’ বলা হয়।
পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন কখনই চারিত্রিক সমস্যা কিংবা মায়েদের ইচ্ছাকৃত কোনো কাণ্ড নয়। দেশের বেশির ভাগ পরিবার অবশ্য এ জন্য মায়েদেরই দায়ী করে থাকে।
বাস্তবতা হলো, এটি প্রসব-পরবর্তী অন্য সব সমস্যার মতোই একটি শারীরিক জটিলতা। চিকিৎসায় তা পুরোপুরি সেরে ওঠে।
বেবি-ব্লুজের লক্ষণ এবং উপসর্গ:
পোস্টপারটাম ডিপ্রেশনের লক্ষণ এবং উপসর্গ:
মারাত্মক পোস্টপারটাম সাইকোসিসের লক্ষণ ও উপসর্গ:
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
শেষকথা
বিষণ্ণতায় ভোগা রোগীরা চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। যারা বিষণ্ণতায় ভুগছেন, তারা নিজেরা হয়তো বুঝতে পারেন না। তাই এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকে, পরিবারকে। আপনার কাছের কেউ এমন সমস্যায় ভুগলে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। তাকে একজন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
আরব পরিবারে বেড়ে ঊঠে একজন পেশাদার রেসলার হওয়া পুরুষের জন্য মোটেও কঠিন কিছু নয়। কিন্তু নারীর জন্য? হয়ত কল্পনাই করা যায় না, কিংবা অসম্ভব।
অথচ এই অসম্ভব কাজটিকেই সম্ভব করেছেন আরব বংশোদ্ভুত কানাডীয় পেশাদার রেসলার আলিয়াহ।
গত বছরের নভেম্বরে ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের (ডব্লিউডব্লিউই) ফ্ল্যাগশিপ শো স্ম্যাকডাউনের মূল ইভেন্টে আলিয়া অংশগ্রহণ করেছেন।
টানা ২০ বছর ধরে প্রতিবছরই হতে থাকা স্ম্যাকডাউন শোতে আরব নারীর অংশগ্রহণের মতো ঘটনা এই প্রথমবারের মত ঘটল।
আলিয়াহর প্রকৃত নাম নহুফ আল আরাবি। জন্মেছেন কানাডার টরেন্টোতে।
কানাডায় বেড়ে উঠলেও সিরীয় ও ইরাকি বংশোদ্ভুত হওয়ায় রেসলার হিসেবে নিজেকে তৈরি করার রাস্তাটা তার জন্য সহজ ছিল না।
তিনি যখন রেসলার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তখন পরিবারের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। প্রথমবার যখন পরিবার তার জীবনের লক্ষ্যের বিষয়ে জানতে পারে, তাদের একটাই উত্তর ছিল, আর তা হল ‘না’।
কিন্ত এরপরেও আলিয়াহ দমে যাননি। তিনি পরিবারকে খণ্ডকালীন চাকরির কথা বলে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান। ১৬ বছর বয়স থেকেই তিনি রেসলার হওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
পরে ২০১৫ সালে তিনি ডব্লিউডব্লিউইতে ডাক পান। আর ২০২১-এ এসে তিনি স্ম্যাকডাউনেই অংশগ্রহণ করলেন।
আলিয়াহর মতে, যদি আপনার হৃদয়ে কোনো স্বপ্ন থাকে। আপনার তাকে অনুসরণ করা উচিত। সবকিছুই সম্ভব।
আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘এটা পরাবাস্তব মনে হয়। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই এটি আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।
‘ছোট থাকতে আমি রেসলিং দেখতাম, কিন্তু সত্যিই আমার মতো দেখতে বা আরব কাউকে দেখিনি। আমি আশা করি আরব নারীদের জন্য আমি ভাল উদাহরণ স্থাপন করতে পারব এবং ইচ্ছামত খেলায় যোগ দিতে তাদের অনুপ্রানিত করতে পারবো।’
মধ্যপ্রাচ্যে আলিয়াহ সবশেষ গিয়েছিলেন ২০০২ সালে। তিনি জানান, সেখানে তার অনেক আত্মীয় এখনও থাকেন। আরব নারীদের জন্য তিনি সবসময় অনুপ্রেরণা হতে চান।
তাই আলিয়াহর লক্ষ্য এবার মধ্যপ্রাচ্যে পারফর্ম করা। ডব্লিউডব্লিউই কর্তৃপক্ষও বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রচুর দর্শক থাকায় এমন উদ্যোগ প্রতিষ্ঠানটির জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক হতে পারে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে বাতিল হলো গর্ভপাত অধিকার আইন। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার ঐতিহাসিক এ রায় দেয়। এতে দেশজুড়ে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়া ১৯৭৩ সালের আইনি সিদ্ধান্ত ‘রো বনাম ওয়েড’ আর থাকছে না। ফলে প্রতিটি রাজ্যই এখন নিজস্বভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে পারবে।
রায়ে বিচারকরা জানান, সংবিধান গর্ভপাতের অধিকার দেয় না। সিদ্ধান্তের পক্ষে সমর্থন দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে তিনজন।
এ রায়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে। প্রজনন অধিকারের সমর্থকরা বলছেন, লাখ লাখ নারী গর্ভপাত পরিষেবাগুলো নিতে পারবেন না।
প্রজনন অধিকার সংগঠন গুটমাচার ইনস্টিটিউট বলছে, ১৯৭৩ সালের আইনি নজির উল্টে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৪টির বেশি রাজ্যে এখন গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিম্ন আয়ের নারীর ওপর প্রভাব ফেলবে।
BREAKING: The Supreme Court just overturned Roe v. Wade, ending our constitutional right to abortion. We know you may be feeling a lot of things right now — hurt, anger, confusion. Whatever you feel is OK. We’re here with you — and we’ll never stop fighting for you.
— Planned Parenthood (@PPFA) June 24, 2022
বিচারকরা জানান, আগের আইনে ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত বৈধ ছিল। এটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই।
রো বনাম ওয়েডের রায়ে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, সংবিধানের অধীনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার একজন নারীর গর্ভাবস্থা বন্ধ করার ক্ষমতাকে রক্ষা করে।
সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯২ সালের সাউথইস্টার্ন পেনসিলভানিয়া বনাম ক্যাসি প্ল্যানড প্যারেন্টহুড নামে একটি রায়ে গর্ভপাতের অধিকারকে পুনরায় নিশ্চিত করেছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, গর্ভপাতের বিষয়ে ‘অযথা বোঝা’ চাপিয়ে দেয়া আইনগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রক্ষণশীল বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো বলেন, ‘রো এবং প্ল্যানড প্যারেন্টহুড বনাম কেসি ভুল ছিল। এটি অবশ্যই বাতিল করা উচিত।
‘আমরা মনে করি যে রো এবং কেসিকে অবশ্যই বাতিল করা উচিত। সংবিধানে গর্ভপাত উল্লেখ নেই। এ ধরনের অধিকার সাংবিধানিক বিধান দ্বারা সুরক্ষিত নয়।’
বিচারপতি ক্লারেন্স থমাস, নিল গর্সুচ, ব্রেট কাভানাফ এবং অ্যামি রায়ের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে দেয়া তিন বিচারপতি ট্রাম্পের নিয়োগপ্রাপ্ত।
উদারপন্থি বিচারপতি স্টিফেন ব্রেয়ার, সোনিয়া সোটোমায়র এবং এলেনা কাগান ভিন্নমত পোষণ করেন।
তারা জানান, ‘এটা আদালতের জন্য দুঃখের খবর। তবে লাখ লাখ আমেরিকান নারী আজ একটি মৌলিক সাংবিধানিক সুরক্ষা হারিয়েছেন। আমরা ভিন্নমত পোষণ করছি।’
জনমত জরিপ দেখা গেছে, বেশির ভাগ আমেরিকান গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থন করেন।
গত মাসের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথিতে ঐতিহাসিক গর্ভপাত অধিকার আইন বাতিল হতে পারে বলে আভাস মিলেছিল। রাজনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো সেই নথি প্রকাশ করেছিল।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনে রাজশাহীগামী আন্তনগর বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন শারমিন ইসলাম। কোলে তার তিন মাসের সন্তান।
কিছুক্ষণ পর শিশুটি কেঁদে উঠলে তাকে বুকের দুধ খাওয়াতে এদিক-সেদিক আড়াল খুঁজতে থাকেন শারমিন। উপযুক্ত কোনো স্থান না পেয়ে লোক সমাগমের মধ্যেই অস্বস্তি নিয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে সন্তানকে খাওয়ান তিনি।
এভাবে জনসমাগমস্থলে বসে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পরিস্থিতিকে অনিরাপদ ও সন্তানের প্রতি জুলুম বলে মনে করেন শারমিন।
তিনি বলেন, ‘একজন নবজাতককে এভাবে অনিরাপদভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো তার প্রতি জুলুম। কাপড়ের ঢাকনা দিয়ে দুধ পান করানো তার জন্য ঝুঁকি। তারপরেও তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য এ ঝুঁকি আমাকে নিতে হয়েছে।
‘স্টেশনে একটা ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকলে আমরা সহজেই স্বাচ্ছন্দ্যে বেবিকে বুকের দুধ পান করাতে পারি। কর্তৃপক্ষের বিষয়টি ভাবা উচিত।’
এ ভাবনা এক বছর বয়সী সন্তানের মা পারুল বেগমেরও। রেলস্টেশনে কথা হয় তার সঙ্গে।
পারুল বলেন, ‘রাজশাহী যাব। সঙ্গে কেউ নেই। আমি জানি না আমার পাশের আসনে কে টিকিট কেটেছেন।
‘যেহেতু ট্রেন নিরাপদ বাহন তাই এতেই ভ্রমণ করি৷ কিন্তু ট্রেনের ভেতরে কোনো ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা নাই। ভেতরেও এ সেবা নিশ্চিত করা উচিত। তাহলে আমরা অস্বস্তিতে পড়ব না।’
জেলা শহরের বিআরটিসি বাস কাউন্টারেও শিশুর মায়েদের এমন অস্বস্তিতে পড়তে হয় প্রতিনিয়ত।
রংপুর যাওয়ার জন্য শিশুসন্তানকে নিয়ে সেখানে অপেক্ষায় আছেন রিয়া আক্তার নামে এক যাত্রী। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় বেশ বিব্রতই দেখাচ্ছিল তাকে।
তিনি বলেন, ‘বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। এখানে কোনো ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা নাই। তাই লোকসম্মুখে বসে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।
‘আমরা মায়েরা যেকোনো পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে দুধ পান করাব। তাই বলে কি ফিডিংয়ের উন্নত ব্যবস্থা হবে না? সরকারের বিষয়টি নিয়ে কাজ করা উচিত।’
শুধু পরিবহন স্পটই নয়, জেলার ক্লিনিকগুলোতেও ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নেই।
শহরের বাসিন্দা হেলাল উদ্দীন বিশাল জানান, তার ছোট বাচ্চা আছে। বাইরে গেলে তার স্ত্রী সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে বিব্রত বোধ করেন। কারণ কোথাও কোনো আড়াল পান না।
হেলাল বলেন, ‘অনেক শিশু ডাক্তারের চেম্বারে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নেই। শহরে ও শহরের বাইরের এলাকাসহ অনেক শিশু চিকিৎসক বসেন। তাদের কাছে অনেক রোগীও আসেন। কিন্তু সে চেম্বারগুলোতে বুকের দুধ পান করাতে গিয়ে বিব্রত হন মায়েরা।
‘রাস্তাঘাটে চলন্ত রিকশা ও ইজিবাইকেও শিশুদের ওড়না দিয়ে ঢেকে দুধ পান করাতে দেখেছি। সে ক্ষেত্রে পাবলিক ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারও হতে পারে।’
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিদিন নরমাল ও সিজার ডেলিভারি হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৮০-১০০ জন শিশু ভর্তি থাকছে। এখানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার রয়েছে। কিন্তু ক্লিনিকগুলোতে তাদের সেবার মানের কথা চিন্তা করে উদ্যোগ নিতে পারেন ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার বানানোর। এটা নিঃসন্দেহে একটা সভ্য সুবিধা নবজাতক ও মায়েদের জন্য।’
কাপড়ে ঢেকে দুধ খাওয়াতে গেলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে শিশুর? এর জবাবে ডা. রাকিবুল বলেন, ‘সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর সময় অবশ্যই মায়ের নজর সন্তানের ওপর রাখতে হবে। নাহলে দুধ গলায় আটকে গেলে বা বাচ্চাকে দেখতে না পেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
‘শাড়ির আঁচল কিংবা ওড়না দিয়ে ঢেকে দুধ পান করানো ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব স্থানে জনসমাগম রয়েছে, সেসব স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন খুবই জরুরি।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জোহা জানান, জনসমাগমস্থলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
একই আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমানও।
তিনি বলেন, ‘রেলস্টেশনের একটি নিজস্ব অথরিটি আছে। ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারের বিষয়ে আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। এ ছাড়া প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে যেখানে পাবলিক সার্ভিস দেয়া হয়, সবখানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করব।’
স্কুলের সহপাঠীদের বিক্ষোভের মুখে নোয়াখালীর চাটখিলে ১৩ বছরের এক কিশোরীর বিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার দুপুরে উপজেলার ৪ নম্বর বদলকোট ইউনিয়নের মধ্য বদলকোট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মুসা।
ইউএনও জানান, বদলকোট ইউনিয়নের দারুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর বিয়ে বন্ধের দাবিতে লাল পতাকা হাতে বিক্ষোভ করে তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় সহপাঠীরা। পরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
এ সময় কম বয়সে বিয়ে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে কনের বাবাকে ২ হাজার ও বরপক্ষকে ৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে দেয়া হবে না মর্মে মুচলেকা দেয় তার পরিবার।
বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করা ও এ ধরনের বিয়ে বন্ধ করার জন্য উপজেলায় একটি কমিটি রয়েছে বলেও জানান ইউএনও।
চীনে একটি রেস্তোরাঁয় একদল নারীর ওপর নৃশংস হামলার ঘটনায় একজন উপপুলিশ পরিচালককে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তাংশান শহরের ওই হামলায় একদল পুরুষ চারজন নারীকে মারধর করেন। ভাইরাল ভিডিওটি চীনে জেন্ডারকেন্দ্রিক সহিংসতা ইস্যুতে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলা পুলিশের উপপরিচালক এবং অন্য কর্মকর্তারা ঘটনার দিন অকারণে সময়ক্ষেপণ করেছেন।
প্রাদেশিক জননিরাপত্তা বিভাগের ওই প্রতিবেদনে এটা স্পষ্ট করা হয়নি যে পুলিশের উপপরিচালক লি-কে চাকরিচ্যুত নাকি বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ১০ জুন রাতে উত্তর হুবেই প্রদেশের লুবেই জেলার তাংশান শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ঘটে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, বারবিকিউ রেস্তোরাঁয় একজন এগিয়ে যাচ্ছেন এক নারীর দিকে। একসময় ওই নারীর পিঠে হাত রাখেন ওই ব্যক্তি। নারীটি তাকে তখন ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। পুরুষটি উঠেই ওই নারীকে মারধর শুরু করেন। তার আগে আরেকজন ওই নারীকে টেনে বাইরে নিয়ে যান। সেখানে মেঝেতে ফেলে তাকে মারধর করতে থাকেন।
ভিডিওতে দলটিকে তাদের সঙ্গে খাবারে অংশ নেয়াদের ওপরও হামলা চালাতে দেখা যায়। এ সময় অন্য এক নারী তাদের থামাতে গেলে তাকে ধাক্কা মারা হয়।
আহত দুই নারীকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সামান্য আঘাত। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, তাদের কথা সত্যি না। আঘাত বেশ গুরুতর। ভিডিওতে আরও দুই নারীর রক্তাক্ত চেহারা দেখা গেছে।
গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় ৩টা ৯ মিনিটে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাদের ডাকা হয়েছিল ২টা ৪১ মিনিটে। অর্থাৎ খবর পাওয়ার আধঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এই সময়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন অবৈধ জুয়া, অপহরণসহ নানা অপরাধে যুক্ত থাকতে পারেন। তারা কোনো অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশকে ধুয়ে দিচ্ছেন অনেকে। ঘটনাটি তীব্র ক্ষোভ আর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে নেট দুনিয়ায়।
চীনের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি এখন এটি। সেখানে বলা হচ্ছে, নারীর প্রতি সহিংসতা এখনও সাধারণ বিষয়!
অনেকেই হামলাকারীদের কঠিন বিচারের দাবি জানাচ্ছেন। অনেকে আবার বলছেন, এই দলের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের সম্পর্ক ভালো ছিল।
পুলিশ অবশ্য এসব মানতে নারাজ। হুবেই প্রাদেশিক জননিরাপত্তা বিভাগ বলছে, দেরিতে পুলিশ পাঠানো এবং শৃঙ্খলার গুরুতর লঙ্ঘনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় মোট পাঁচজন তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য