স্বৈরাচার আইয়ুব খান সরকারের শাসন-শোষণের প্রতিবাদে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সম্মেলন শুরু হয়। চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিল মুসলিম লীগের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আফজাল।
সাবজেক্ট কমিটির এই সভায় বাঙালির অধিকার আদায়ে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন ওই প্রস্তাব গৃহীত না হলেও পরবর্তী সময়ে এই ৬ দফা হয়ে ওঠে এক দফা, স্বাধিকার আন্দোলন রূপ নেয় স্বাধীনতার সংগ্রামে। বাঙালির মুক্তির সনদ হয়ে ওঠে ৬ দফা। আর এর প্রবক্তা শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন বাঙালির একক নেতা।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন আজন্ম গণতন্ত্রপ্রেমী। ১৯৬২ সালের ২৪ জুন ৯ জন বাঙালি নেতা পাকিস্তানে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন। তাদের একজন ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। চার বছরের ব্যবধানে ৬ দফা দেয়ার পর তিনি আর ৯ জন নেতার একজন রইলেন না; হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারার এক নম্বর মুখপাত্র। আর সেটিই হয়ে ওঠে তার নেতৃত্বে রাজনীতির মূল ধারা। বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন অবিসংবাদিত জননেতা।
বার্তা সংস্থা বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৬ দফা ঘোষণার পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) পূর্ব পাকিস্তান প্রধান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ শেখ মুজিবুর রহমানকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আপনি এই যে ৬ দফা দিলেন তার মূল কথাটি কী?’ আঞ্চলিক ভাষায় এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন শেখ মুজিব- ‘আরে মিয়া বুঝলা না, দফা তো একটাই। একটু ঘুরাইয়া কইলাম।’
লাহোরে বিরোধী দলগুলোর ওই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬ দফা দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম পাকিস্তানের কয়েকটি পত্রিকায় এ দাবির উল্লেখ করে লেখা হয়- পাকিস্তানের দুটি অংশ বিচ্ছিন্ন করার জন্যই ৬ দফা দাবি আনা হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু সংবাদ সম্মেলন করে এর জবাব দেন। ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। বিমানবন্দরেই সাংবাদিকদের সামনে ৬ দফা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ৬ দফায় পাকিস্তানের প্রত্যেক প্রদেশকে স্বায়ত্তশাসন দেয়ার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ দাবি গ্রহণ তো দূরের কথা, আলোচনা করতেও রাজি হয়নি।
বঙ্গবন্ধু ঢাকায় ফেরার পর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটিতে ৬ দফা দাবি পাস করা হয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে এ দাবি গ্রহণ করা হয়। ব্যাপকভাবে এ দাবি প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ওপর বঙ্গবন্ধুর লেখা একটি পুস্তিকা দলের সাধারণ সম্পাদকের নামে প্রকাশিত করা হয়। ছয় দফার ওপর প্রথম যে প্রচারপত্রটি প্রকাশিত হয় তার শিরোনামও ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ৬-দফা কর্মসূচি’ (শেখ মুজিবুর রহমান, কারাগারের রোজনামচা, ২০১৭, পৃ: ৩০৮-৩২০)।
৬ দফার পক্ষ-বিপক্ষে সারা দেশে বক্তৃতা-বিবৃতি শুরু হয়। খান এ সবুর, মোনায়েম খাঁ ও প্রাদেশিক কিছু মন্ত্রী সংসদে ৬ দফার বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন। এমনকি ৬ দফা ইস্যুতে আওয়ামী লীগও দুই ভাগ হয়ে যায়। যদিও ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ দফাকে অনুমোদন দেয়া হয়।
১৯৬৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ দফা আওয়ামী লীগের দলীয় ইশতেহারে পরিণত হয়। এরপর ৬ দফার সমর্থনে দেশের সর্বত্র জনসভা-সমাবেশ হতে থাকে। ২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ৬ দফার সমর্থনে প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। লিফলেট, প্যাম্ফলেট, পোস্টার ইত্যাদির মাধ্যমেও এ দাবিনামা জনগণের কাছে তুলে ধরা হয়। বাংলার মানুষ লুফে নেয় এসব দাবি।
তৎকালীন সরকার ৬ দফার ভয়ে পর পর ৮ বার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৬৬ সালের ৮ মে নারায়ণগঞ্জে জনসভা শেষে ঢাকায় ফিরে আসার পর ধানমণ্ডির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ৯ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে একের পর এক মামলা দিতে থাকে সরকার।
আওয়ামী লীগ ১৯৬৬ সালের ১৩ মে প্রতিবাদ দিবস পালন উপলক্ষে জনসভা করে। ৭ জুন প্রদেশব্যাপী হরতাল ডাকা হয় এবং হরতাল সফলে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হয়।
বাংলাদেশের মানুষ ৭ জুন সফলভাবে হরতাল পালন করে ৬ দফার প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে দেয়। শাসন-শোষণের উপযুক্ত জবাব পায় পাকিস্তান সরকার। বিনা উসকানিতে জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালায়। শ্রমিক নেতা মনু মিয়াসহ ১১ জন নিহত হন।
স্বৈরাচার সরকার আওয়ামী লীগ ও ন্যাপে ভাঙন ধরানোর চক্রান্তে নামে। ৬ দফা আন্দোলন দুর্বল করতে আওয়ামী লীগ ও ন্যাপকে বাদ দিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)। ৮ দলীয় এই জোটে ছিল নূরুল আমীন ও আতাউর রহমান খানদের জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, খাজা খয়ের উদ্দিনদের কাউন্সিল মুসলিম লীগ, গোলাম আযমের জামায়াতে ইসলামী, নসরুল্লাহ খান ও সালাম খানের পাকিস্তান আওয়ামী লীগ এবং মৌলবী ফরিদ আহমদের নেজামে ইসলাম পার্টি। ৬ দফার পাল্টা তারা ৮ দফা সামনে নিয়ে আসে।
ক্ষমতাসীনদের চক্রান্তের সেই দুর্দিনে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমেনা বেগম পিডিএমের ৮ দফা প্রত্যাখ্যান করে ২৯ মে এক বিবৃতি দিয়ে ৬ দফার সমর্থনে ৭ জুন হরতাল পালনের আহ্বান জানান।
ওই দিনের হরতাল সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কারাগারে বসে লেখেন, ‘১২টার পর খবর পাকাপাকি পাওয়া গেল যে, হরতাল হয়েছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে। তারা ৬ দফা সমর্থন করে মুক্তি চায়। বাঁচতে চায়, খেতে চায়, ব্যক্তিস্বাধীনতা চায়, শ্রমিকের ন্যায্য দাবি ও কৃষকের বাঁচার দাবি চায়, এর প্রমাণ এই হরতালের মধ্যেই হয়ে গেল।’ (কারাগারের রোজনামচা, পৃ: ৬৯)।
অবশ্য আরেক জায়গায় তিনি লেখেন, “মওলানা ভাসানী সাহেবও ছয় দফার বিরুদ্ধে বলেছেন, কারণ দুই পাকিস্তান নাকি আলাদা হয়ে যাবে। (শেখ মুজিবুর রহমান, কারাগারের রোজনামচা, ২০১৭, পৃ: ৫৭)।
রংপুরের মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়া তখন মওলানা ভাসানীর ডেপুটি। ৬ দফার ওপর মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘৬ দফা কর্মসূচি কার্যকর হইলে, পরিশেষে উহা সমস্ত দেশে এক বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব জাগাইয়া তুলিবে।’ (শেখ মুজিবুর রহমান, কারাগারের রোজনামচা, ২০১৭, পৃ: ৫৭)। তিনি আরও যোগ করেন, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট হতেন তাহলে ৬ দফা বাস্তবায়িত হতে দিতেন না। যাদু মিয়ার এ বিবৃতি ফলাও করে প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালের ২ জুনের ‘মর্নিং নিউজ পত্রিকায়।
৬ দফা সৃষ্টির পেছনে মূল কারণ ছিল মূলত পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক বৈষম্য। জন্মের পর থেকে পাকিস্তান যেসব বৈদেশিক সাহায্য পেয়েছে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তার বেশির ভাগ ব্যয় হয় পশ্চিম পাকিস্তানে।
পূর্ব পাকিস্তানের ‘সোনালি আঁশ’ পাট বিদেশে রপ্তানি করে যে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো সেটাও চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানে। বৈদেশিক বাণিজ্যের ৬০ শতাংশ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের। কিন্তু প্রায় পুরো অর্থ ব্যয় হতো পশ্চিম পাকিস্তানে।
পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের ১৯৭০ সালের রিপোর্টে দেখা যায়- উন্নয়ন ও রাজস্ব খাতে পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানে ৬০ শতাংশ বেশি ব্যয় করা হয়েছে। ফলে পশ্চিমের মাথাপিছু আয়ও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৭ দিনের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ৬ দফার আশু পটভূমি তৈরি হয়েছিল। এই যুদ্ধের সময় লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সামরিক দিক থেকে সম্পূর্ণ অরক্ষিত। সে কারণে এই অঞ্চলের রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।’
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর একটি বক্তব্য ‘যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি নতুন গুরুত্ব পেয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে’ উল্লেখ করেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
রাজনৈতিক ইতিহাসবিদ মহিউদ্দিন আহমদ তার ‘আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৮-১৯৭০’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘ছয় দফা হঠাৎ করে আসমান থেকে পড়েনি। দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি ও ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এর তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি হচ্ছিল। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছিল রাজনীতিবিদদের সঙ্গে অর্থনীতিবিদদের যুগলবন্দি, স্বাধিকারের দাবিতে যারা এক মোহনায় মিলেছিলেন।’
২০২০ সালের ৭ জুন এক কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ৬ দফা নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৬ দফার দাবিগুলো ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজস্ব চিন্তার ফসল এবং ঐতিহাসিক এ বিষয় গঠনে অন্য কেউ জড়িত ছিলেন না, যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল স্বাধীনতার দিকে।
‘আমি জানি যে এটি অবশ্যই তার (বঙ্গবন্ধু) নিজস্ব চিন্তা-ভাবনার ফসল ছিল।’
৬ দফা দাবি পালন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘১৯৫৮ সালে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান। তখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধু ঢাকার বাইরে যেতে পারেননি। এ সময় তিনি আলফা বীমা সংস্থায় যোগদান করেন। তাজউদ্দীন আহমদও ওই সময় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং মুক্তি পাওয়ার পর তিনি তার কাজের জন্য নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চলে যান। পরে বঙ্গবন্ধু নিজেই নারায়ণগঞ্জে গিয়ে তাজউদ্দীন আহমদকে ঢাকায় নিয়ে এসে আলফা বীমা সংস্থায় চাকরি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ হানিফকে বঙ্গবন্ধু আলফা বীমা সংস্থায় নিজের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সব সময় চিন্তা করতেন। সেই চিন্তা-ভাবনাগুলো লিখে রাখতেন এবং ওই লেখাগুলো হানিফকে দিতেন টাইপ করার জন্য। এ জন্য কেবল হানিফই এ (৬ দফা দাবি) সম্পর্কে জানতেন। কারণ তিনি সেটি টাইপ করেছিলেন। অন্যথায় এটি সম্পর্কে কেউ জানত না।
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য