চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুসারে সোমবার দুপুর পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হয়েছে মাত্র ২৫ জনের। সেই হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি ১৬ জনের।
তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে এ দিন সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বুথ স্থাপন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল।
সিআইডি চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা একটা একটা লং প্রসেস। লং বলতে যে ৩১ জন এখানে নমুনা দিয়েছেন তাদের নমুনার ডিএনএ প্রোফাইলিং করতে আমাদের বড়জোর ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে।
‘কিন্তু মরদেহের যে নমুনা, সেগুলোর প্রোফাইলিং করতে অন্তত ১ মাস সময় লাগবে। তাই এখন পর্যন্ত যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি, তাদের পরিচয় শনাক্তে অন্তত ১ মাস সময় লাগবে।’
বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুল লাগার পর কেটে গেছে প্রায় ৪০ ঘণ্টা। তবে এখনও নেভেনি আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ হিসেবে সেখানে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ থাকার বিষয়টি সামনে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মনির হোসেন বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দলের সহায়তায় কনটেইনারগুলো খুলে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। আমরা এভাবে কাজ করতে পারলে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে আগুন নেভাতে পারব। ইতিমধ্যে আমরা কেমিক্যাল থাকা কয়েকটি কনটেইনার চিহ্নিত করেছি। সেগুলো অপসারণ করার প্রক্রিয়া চলছে।’
‘ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ডিলারকে মারধরের অভিযোগ’ শিরোনামে গত ৪ ডিসেম্বর নিউজবাংলায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক (বীজ বিপণন) এ কে এম মনিরুজ্জামান।
গত ৭ ডিসেম্বর এ কে এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদটি সত্য নয়। তাকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লিখিত ‘অসত্য’ প্রতিবেদনটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এ কর্মকর্তা।
তার দাবি, বীজ বিতরণে অনিয়ম ও টোকেনের মিথ্যা গল্প বলা হয়েছে। কোনো ডিলারকে মারধর বা ঘুষ লেনদেনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রকাশিত প্রতিবেদন সংক্রান্ত সব তথ্য এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। প্রতিবেদনে ডিলার ও কর্মকর্তাদের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।
তা ছাড়া অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করেছেন বীজ বিতরণে অনিয়ম বা টোকেনের গল্প কাল্পনিক। বীজ বিতরণে অনিয়মের তথ্য এবং তার স্বাক্ষরিত বিশেষ টোকেনের ছবি এ প্রতিবেদকের সংরক্ষণে রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের পাঁচ নম্বর এভিনিউর একটি বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে প্রাণ হারানো মোহাম্মদ আবদুল্লাহর (১৩) শরীরের ৩৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
এ কিশোর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছিল।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, মিরপুর থেকে গত ২৪ নভেম্বর গ্যাস বিস্ফোরণে সাতজন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছিল। তাদের মধ্যে আবদুল খলিল, রুমা আক্তার ও তার ছোট ভাই মোহাম্মদের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। আজ সকালের দিকে আবদুল্লাহ নামে আরেক কিশোর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার শরীরের ৩৮ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
তিনি জানান, আর দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে স্বপ্নার শরীরের ১৪ শতাংশ ও একই পরিবারের আবদুল খলিলের ছেলে ইসমাইলের শরীরে ২০ শতাংশ দগ্ধ। এদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
গত ২৪ নভেম্বর গভীর রাতে সিলিন্ডারে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচজনসহ সাতজন দগ্ধ হন।
তাদের মধ্যে শাহজাহান মিয়া নামের একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। তার শরীরের ছয় শতাংশ দগ্ধ ছিল।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ নগরের মাসকান্দায় বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় শুক্রবার একটি কীটনাশক কারখানায় ধরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ আগুন লাগে। বাহিনীর ১১টি ইউনিটের চেষ্টায় একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘বেলা পৌনে ১১টার দিকে শিল্প এলাকার একটি কীটনাশক কারখানায় আগুন লাগার খবর পেয়ে ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
‘দীর্ঘ দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুর একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখনও ধোঁয়া বের হচ্ছে। তাই ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।
‘এ আগুনে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন সৌখিনের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত থেকে ওই দুই নেতার কথোপকথনের এক মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
এর আগে উপজেলার গোবরচাঁপা বাজারে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে থানায় মামলা করেন সৌখিন। ওই মামলায় আরও ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছেন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত এই নেতা। রোববার দুপুরে বদলগাছী সাংবাদিক সংস্থার কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বেলাল হোসেন সৌখিন বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এডিট করা ফেক মোবাইল কল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আমার এবং বিএনপির ইমেজ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।’
সৌখিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিগত ২০১৩ সালে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক দুটি মামলা করে। একটি বিস্ফোরক ও আরেকটি দ্রুত বিচার আইনে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় ক্লিনহার্ট অপারেশনে। সেখানে আমাকে অনেক নির্যাতন করা হয় শুধু বিএনপির রাজনীতি করার জন্য।’
বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম খানের সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ এডিট করা ফেক মোবাইল রেকর্ড।’
তিনি বলেন, ‘কল রেকর্ডটি আগস্ট মাসের। প্রকৃত তথ্য এই যে, শামসুল আলম খান ইতোপূর্বে তার একটি ব্যাংক চেক গচ্ছিত রেখে আমার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করেন। সেটির নম্বর: ঈউ/অ- ২৮৮৫০৯২ (ডাচ বাংলা ব্যাংক)। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এভাবে আরও অনেকের কাছ থেকেই তিনি টাকা ধার করেছেন বলে লোকমুখে জেনেছি।
‘অতি সম্প্রতি জানতে পারি যে তিনি কিছু কিছু পাওনাদারকে ধারের টাকা পরিশোধ করছেন। এ কারণে আমি তার কাছে আমার পাওনা টাকার জন্য কল করেছিলাম। এছাড়া পাওনা টাকা নেয়ার জন্য তার সামনা-সামনি হলে তিনি আমাকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ভয় দেখাতেন। আমি গত ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগের বিস্ফোরক মামলার বিবাদী হওয়ার কারণে আগস্ট মাসের কল রেকর্ডটি নতুন করে এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। বাস্তবে আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত শামসুল আলম খানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
সৌখিন আরও বলেন, ‘পাওনা চাওয়া সংক্রান্ত কল রেকর্ডটি এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। সেটি আবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশও করা হয়েছে। শুধু আমাকে এবং আমার দল বিএনপিকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই ফেক কল রেকর্ডটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
‘আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সে সঙ্গে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খান বলেন, ‘ঘটনার দিন নওগাঁয় আদালতে একটা কাজে গিয়েছিলাম। ওই সময় একটা অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। নিজেকে চাংলার সৌখিন পরিচয় দিয়ে আমার কাছে টাকা দাবি করা হয়।’
আরও পড়ুন:‘কিশোরগঞ্জে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে গত ৮ নভেম্বর নিউজবাংলায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলার সদর উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা ফাহিমা আক্তার ফাহিম।
১০ নভেম্বর ফাহিমা আক্তার ফাহিম স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদটি সত্য নয়, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ছাড়াও তার বক্তব্য ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ছাড়া প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখিত ‘অসত্য প্রতিবেদন’টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
তার দাবি, প্রদর্শনী বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের ধার্যকৃত উপকরণের সম্পূর্ণ অংশই কৃষকদের সরবরাহ করা হয়েছে। অনাবাদি পুষ্টি বাগান প্রকল্পের প্রদর্শনীতে কীটনাশক সরবরাহ না করে টাকা আত্মস্যাৎ করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রদর্শনীতে কীটনাশক সরবরাহের কোনো বরাদ্দ বা পদ্ধতি এই প্রকল্পে নেই।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের দুটি মডেল গ্রামের একটি সুন্দিরবন ব্লকে পাঁচজন কৃষকের বাড়িতে এবং অন্যটি মহিনন্দ ব্লকের পাঁচজন কৃষকের বাড়িতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যার সুফল কৃষকেরা পাচ্ছেন। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মডেল গ্রামের অস্তিত্ব নেই বলে সংবাদে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রদর্শনী সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কৃষক ভাইদেরকে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে উপযুক্ত সময়ে প্রদর্শনীর উপকরণ সরবরাহ করা হয়। মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের প্রদর্শনীর স্থাপনা তৈরির কাজ সম্পন্ন করে কৃষক ভাই মাত্র মাশরুম উৎপাদনে যাচ্ছে, এমতাবস্থায় প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেছে বিবেচনায় নিয়ে অর্থ আত্মসাতের বর্ণিত বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
‘কৃষকগণ বলেছেন, কৃষি বিভাগের বিভিন্ন প্রদর্শনী আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে তাদের সুবিধাজনক সময়ে তারা বাস্তবায়ন করেন। প্রদর্শনী স্থাপন এবং সুফল ভোগ একটি চলমান যুগপৎ প্রক্রিয়া। কৃষকগণ প্রদর্শনীর সুবিধা পাচ্ছেন এবং পাবেন, যা পূর্বেই উপজেলা কৃষি অফিস তাদেরকে অবহিত করে রাখেন।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য
কিশোরগঞ্জে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সব তথ্য এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
প্রতিবেদনে প্রদর্শনীর তালিকাভুক্ত কৃষক এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।
অভিযুক্ত ওই কৃষি কর্মকর্তা প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করেছেন, দুটি মডেল গ্রাম প্রদর্শনী তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। কৃষক তার সুফল ভোগ করছেন। এখানে বাস্তবচিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। তার তথ্যচিত্র প্রতিবেদকের সংরক্ষণে রয়েছে।
২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একটি মডেল গ্রামের জন্য ২ লাখ ৬ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এরপর ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আরেকটি মডেল গ্রামের জন্য বরাদ্দ আসে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এ দুটি প্রদর্শনীতে বরাদ্দের চার লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন করে একটিও বাস্তবায়ন করেননি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বক্তব্য সংগ্রহের পর তড়িঘড়ি করে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা শুরু করেন তিনি।
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, সুন্দিরবন ব্লকের মডেল গ্রামের প্রদর্শনী বরাদ্দ পাওয়া হাবিবুর রহমানসহ প্রত্যেক কৃষককে সব উপকরণ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বাস্তবে সেখানে কোনো কার্যক্রম তখন শুরুই হয়নি। এ ছাড়া মহিনন্দ ব্লকে গিয়ে দেখা যায়, তড়িঘড়ি করে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ওই গ্রামের রফিকুল ইসলাম, ইসরাফিল, হাবুল মিয়া, হাদিস আর জাবিরকে দিয়ে করানো হচ্ছে মডেল গ্রামের প্রদর্শনী। তাদের মধ্যে রফিকুল, হাবুল আর ইসরাফিলের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেক আগে মডেল গ্রামের প্রদর্শনী পেয়েছেন। এ বিষয়ে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি এবং অফিসের রেজিস্টারে স্বাক্ষরও নেয়া হয়নি।
মূলত যাদের দিয়ে মডেল গ্রামের প্রদর্শনী বাস্তবায়ন দেখানো হচ্ছে তারা মডেল গ্রামের বরাদ্দপ্রাপ্ত কৃষকই না। এ ছাড়াও ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারি স্পন ও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনীর জন্য ৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। বছরের শুরুতে বরাদ্দ আসলেও কাজ শুরু হয় অক্টোবর শেষ সাপ্তাহে। সেখানেও বরাদ্দের পুরো টাকা পাননি কৃষক।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মো: ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে এ বদলি করা হয়।
প্রকল্পগুলোর প্রদর্শনী নামমাত্র বাস্তবায়ন, কোথাও আবার বাস্তবায়ন না করেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
আদেশের এক কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদও বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বদলি হওয়া কৃষি কর্মকর্তার নাম ফাহিমা আক্তার, যিনি ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর থেকে সদর উপজেলায় কর্মরত ছিলেন।
এর আগে একই উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা পদে ছিলেন তিনি।
এ কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ‘কিশোরগঞ্জে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। তাকে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় বেশির ভাগ প্রদর্শনীতে মোট বরাদ্দের ৩০ শতাংশও কৃষক পাননি।
ওই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগ, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ছয়টি প্রকল্প থেকে (ফ্রিপ প্রকল্প, ময়মনসিংহ প্রকল্প, পার্টনার, অনাবাদি, রাজস্ব প্রকল্প ও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনী) কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন ফাহিমা।
আরও পড়ুন:প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে বিল ভাউচার, কোথাও কোথাও নামমাত্র বাস্তবায়ন, কোথাও আবার কৃষকের ফসলি জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রদর্শনী দেখিয়ে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠা কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে এ বদলি করা হয়।
এ আদেশের এক কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদও বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বদলি হওয়া কৃষি কর্মকর্তার নাম সুমন কুমার সাহা, যিনি ২০২৩ সালের ১৭ মে থেকে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় কর্মরত ছিলেন।
এ কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে গত ২ নভেম্বর ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। এরপর ৩ নভেম্বর তাকে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
তাড়াইল উপজেলায় পাঁচটি প্রকল্পে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুমন সাহা প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তার দাবি, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সব উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। যদিও তার এমন দাবি নাকচ করেছেন সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য, কোনো প্রদর্শনীর বরাদ্দের পরিমাণ জানেন না তারা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য