নদীর নাম গড়াই। একদিকে রাজবাড়ী জেলা, অন্যদিকে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মহেশপুর গ্রাম। তবে এ পারে মহেশপুর গ্রামেও রাজবাড়ী জেলার কিছু অংশ আছে। নদীভাঙনের ফলে এমন হয়েছে।
এই ভৌগোলিক খামখেয়ালি সুযোগ করে দিয়েছে একদল বিকাশ প্রতারক চক্রকে। নদীর পারে ধান ও পাট ক্ষেত আর উঁচু বালুর ঢিবিতে তারা গড়ে তুলেছে তাদের ‘অফিস’।
সারি সারি মোবাইল নিয়ে তারা বসে পড়ছে এসব ‘অফিসে’। কল করছে দেশের নানা প্রান্তে। ফাঁদে ফেলছে বিকাশ কিংবা আর্থিক সেবা দেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের।
‘আপনার মোবাইলে টাকা গেছে’ অথবা ‘আপনার পিন কোডটি আমাদের বলুন’– এসব বলে তারা সূচনা করছে ডিজিটাল ধাপ্পাবাজির। এ অঞ্চলের শতাধিক যুবক জড়িয়ে পড়েছে এসব প্রতারণা চক্রে। গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এসব প্রতারকচক্র অল্পদিনেই পাকা বাড়িঘরসহ বিলাসবহল গাড়ির মালিক হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাগুরা জেলা সদর থেকে শ্রীপুর উপজেলা ১৪ কিলোমিটার। আর শ্রীপুর থেকে আরও সাত কিলোমিটার গেলে দরিয়াপুর ইউনিয়ন। এরপরই মহেশপুর গ্রাম।
গ্রামটির একটা অংশ গড়াই নদী ঘেঁষে। এখানে বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অল্প কিছু মানুষ সরকারি চাকরি করেন। নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। তবে গ্রামটির নদীর চরাঞ্চলে গেলে খটকা লাগবে। এখানকার মানুষের ভাগ্যের চাকা যেন হঠাৎ করে ঘুরে গেছে। টিনের ভাঙা ঘরগুলো মাত্র এক বছরে হয়ে গেছে পাকা দালান। চলছে দোতলার কাজ। দামি মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বেশ কিছু উঠতি যুবক, যাদের বয়স ১৬ থেকে ২৫ বছর।
স্থানীয়রা বলছেন, এসব দালানবাড়ি কেমন করে হলো তাদের জানা নেই। তবে এসব বাড়ির ছেলেরা কাজ করে। সেই কাজ হলো মোবাইলে টাকা আনে। নদীর পারে তাদের ‘অফিস’। এরা উঠতি বয়সী হলেও যারা এদের নেতৃত্ব দেয়, তাদের বয়স ৩০-এর কাছাকাছি। গ্রামের লোকেরা বলেন, ‘এরা বসে বসে কথা কয়, আর টাকা চলে আসে।’
স্থানীয়রা জানেন, অন্যের মোবাইলের টাকা এরা হতিয়ে নিচ্ছেন। তবে বিষয়টা নিয়ে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেন না। প্রাণনাশের হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখায় প্রতারকচক্র।
মাগুরা গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র মতে, প্রতারকচক্রের দুটি গ্রুপ আছে মহেশপুর ও চর মহেশপুর গ্রামে। স্থানীয়রা এটার নাম দিয়েছে ‘টোপ মারা’। আর যারা জড়িত, তারা ‘টোপ পার্টি’ নামে পরিচিত। প্রতারণায় জড়িত শতাধিক তরুণ। যাদের বাড়ি একই এলাকায়। প্রতারকরা পুলিশের নজরদারিতে আছে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রতারকচক্র এ গ্রাম থেকে ছড়িয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী গ্রামেও। মহেশপুর থেকে গোয়ালদহ, চর গোয়ালদহ, চর মহেশপুর, চৌগাছী, চর চৌগাছী, ঘষিয়াল, শ্রীকোল ইউনিয়নের বরিশাট গ্রাম এবং নয়নশার ঘাট এলাকায়ও অর্ধশতাধিক তরুণ এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছে বলে তথ্য আছে।
মহেশপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২৫০ সিসি ইঞ্জিনের ৫ লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেল চালাচ্ছে এখানকার কলেজপড়ুয়া ছেলেপেলে, যাদের পরিবারের আয় অত্যন্ত কম, পরিবার কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
ওই ব্যবসায়ী জানান, দামি মোটরসাইকেল কিনে এরা সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কিছু বলছে না। কারণ প্রায় প্রতিটি বাড়ির কেউ না কেউ এতে জড়িত। আবার যারা গ্রামের সচেতন ব্যক্তি, তারা ভয়ে মুখ খুলছে না।
তিনি আরও জানান, এদের প্রতারণায় নিয়োজিত কর্মীদের একাধিক গ্রুপ। প্রথম গ্রুপটির কাজ বিকাশ, নগদ, রকেট কিংবা অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট পর্যায়ে ঘোরাঘুরি করে তথ্য সরবরাহ করা। এজেন্টের কাছে যেসব গ্রাহক টাকা পাঠান, তাদের তথ্য এজেন্টরা ছবি তুলে দিয়ে দেন প্রথম পর্যায়ের কর্মীদের হাতে।
এরপর যাদের নামে অর্থ আসে, তাদের কাছে ফোন দেয় আরেকটি গ্রুপ। এরা নির্জন জায়গায় এ কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে মহেশপুর চরাঞ্চল উপযোগী জায়গা। এ জন্য রাজবাড়ী এলাকা থেকে চক্রের সদস্যরা নৌকাযোগে মহেশপুর চরে আসে।
মোবাইল ব্যাংকিং-এর গ্রাহক যারা টাকা পায়, তাদেরই মূলত এরা টার্গেট করে নানা ফাঁদ পাতে। ১০ জনের মধ্যে একজন টোপে (ফাঁদে) পা দিলেই এরা সফল। কারণ দিনে শতাধিক মানুষকে এরা ফাঁদে ফেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এই প্রতারণায় শতাধিক কিশোর ও তরুণ জড়িত থাকলেও এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে তিন-চার জন। এদের সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। চক্র আকারে এরা ছড়িয়ে পড়েছে মাগুরা জেলার নানা প্রান্তে।
ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারে- এমন শঙ্কায় এদের নাম-ঠিকানা সরাসরি প্রকাশ করছে না পুলিশ।
নিউজবাংলার পক্ষ থেকে মহেশপুরে এ রকম একটি গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা একজনের বাড়িতে যাওয়া হয়। বুধবার বিকেল ৩টায় তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বারবার মোবাইলে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তরুণের বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ছাদে কাপড় শুকাতে দেখা গেলেও বাড়িটি ফাঁকা পাওয়া যায়।
প্রতিবেশীরা জানান, তারা সকালেও ছিল। এখন কেউ নাই।
এই গ্রুপ প্রধান কী করেন, জানতে চাইলে প্রতিবেশীরা কিছু জানেন না বলে জানান।
২০২০ সালের ৩০ আগস্ট শ্রীপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। এতে ১০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি হ্যাক করছে এবং বিকাশ কোম্পানির গ্রাহকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে শ্রীপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে ৯টি কম্পিউটার, ১০টি মোবাইল ফোনসেট, সাতটি হার্ডডিস্ক ও একটি ইন্টারনেট মডেম।
মামলার পরই প্রতারকচক্র সতর্ক হয়ে যায়। মামলাটি এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
পুলিশ বলছে, মহেশপুর এলাকাটির ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকচক্র। মাগুরা, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার সীমানা হওয়ায় এ এলাকায় থানার পুলিশের নজরদারি কম থাকে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন দপ্তর থেকে মোবাইলে প্রতারণার অভিযোগ আসে। তবে তা দেশের নানা প্রান্তে ঘটায় শ্রীপুর থানায় কেউ মামলা দিতে আসে না। এ জন্য প্রতারকচক্র বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
দরিয়াপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আব্দুর সবুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মহেশপুর এলাকায় একবার গিয়েছি চরাঞ্চলে নদীভাঙন দেখতে। কিন্তু চরে মনে হলো কিছু যুবকের হাট বসেছে। তাদের কাছে অনেক মোবাইল দেখেছি। তারা কথা বলছিল। পরে শুনেছি, এরা নানা অপকর্মে জড়িত। বিকাশের টাকা এরা হাতিয়ে নেয় বলে শুনেছি।
‘উপজেলার আইনশৃঙ্খলা সভায় এটা আমি তুলেছি। প্রশাসন বলেছে, তারা এটা নিয়ে কাজ করছে। আমি চাই বিপথগামী তরুণরা সঠিক পথে আসুক। এসব প্রতারণার কোনো প্রমাণ হাতেনাতে যদিও আমি পাইনি, তবু যদি এটা প্রমাণিত হয়, তবে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা প্রিটন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে মে মাসে এসেছি। এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিকাশ প্রতারকচক্রের তথ্য আমি পেয়েছি। স্থানীয়রা যদি সহযোগিতা করে, তবে এদের নির্মূল করা সম্ভব। পুলিশের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা আছে এদের প্রতিরোধ করার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে নতুন করে আরও একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে।
এবিসি নিউজের বরাতে জানা যায়, ফেডারেল প্রসিকিউটররা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা করেছেন।
হান্টারের বিরুদ্ধে ৫৬ পৃষ্টার অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি ইউক্রেন, চীন, রোমানিয়াসহ অন্য দেশে ব্যবসা ও স্কিম চালিয়ে প্রচুর সম্পদ আয় করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করলেও ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তার ফেডারেল ট্যাক্স অন্তত ১.৪ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেননি। তার বিরুদ্ধে কর না দেয়া, ভুয়া করের রিটার্ন দাখিল, সঠিকভাবে কর না ধার্য করাসহ মোট ৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে হান্টার বাইডেনের ১৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ।
এর আগে, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী ৫৪ বছর বয়সী হান্টার বাইডেনকে গত সেপ্টেম্বরে আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
নাটোর জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এ কে আজাদ সোহেল নামের এক বিএনপি নেতার।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো সোহেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লেলিন জানান, গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ কে আজাদ সোহেলকে আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে ৩০ নভেম্বর আদালত থেকে তার জামিন নেয়া হয়। কারাগার থেকে সোহেলকে আনতে গেলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সোহেলকে রাজশাহী মেডিক্যালের বারান্দার বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। জামিনের পরে কারা কর্তৃপক্ষের মারফতে পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনা জানলে তারা গিয়ে সোহেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।’
নিহতের বড় ভাই শামীম হোসেন জানান, বিনা অপরাধে তার ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কারাগারে অসুস্থ হয়ে রাজশাহীতে মারা যায় সে।
নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ বলেন, ‘এ কে আজাদ সোহেলকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সেখানে নির্যাতনের পরে সে স্ট্রোক করে, কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়।’
এ বিষয়ে নাটোর জেলা কারাগারের জেলার মোশফিকুর রহমান জানান, ২১ নভেম্বর এ কে আজাদ সোহেলকে জেলহাজতে নিয়ে আসা হয়। তিনি নাশকতার মামলার আসামি ছিলেন। ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় অসুস্থ হলে প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে রাজশাহী মেডিক্যালে স্থানান্তর করেন। পরে তিনি রাজশাহী কারাগারের আওতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সোহেলের অসুস্থতার কথা পরিবারকে জানানো হয়েছিলো কি না, এমন প্রশ্নে জেলার বলেন, ‘প্রতিনিয়তই অনেকে এ রকম অসুস্থ হয়। রাজশাহীর দূরত্ব অল্প হওয়ায় পরিবারকে খবর দেয়া তখন জরুরি মনে হয়নি।’
আরও পড়ুন:ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৩৩টি থানাসহ সারা দেশের ৩৩৮টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমোদনে পর ওসিদের এ বদলি কার্যক্রম শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের ৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত ৩০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যেসব থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরির মেয়াদ হয়েছে, তাদের অন্যত্র বদলি করতে চিঠি দেয় ইসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ৩৩৮ থানার ওসির বদলির প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওসি বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন।
২০০৯ সালে নিষিদ্ধ হলেও সদস্য সংগ্রহসহ সাংগঠনিক নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর। তবে বিভিন্ন সময় সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা গেলেও আড়ালে থেকে গেছেন শীর্ষ নেতারা।
কাটআউট পদ্ধতিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করায় কোনোভাবেই শীর্ষ নেতাদের শনাক্ত করতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা। অবশেষে হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা তৌহিদুর রহমান ওরফে তৌহিদ ওরফে সিফাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
বুধবার রাতে কক্সবাজার থেকে তৌহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তৌহিদ হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ ২-৩ জনের মধ্যে একজন।
সিটিটিসি জানায়, তৌহিদের পরিবারের একজন সদস্য সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর হিজবুত তাহরীর একটি অনলাইন সম্মেলন করে। তারা সম্মেলনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার টানায়, অনলাইন প্রচারণা ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। সম্মেলনে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৩ সালের একটি সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে হিজবুত তাহরীর। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কয়েকজন শিক্ষকের প্রকাশ্য প্রচেষ্টায় সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিজবুত তাহরীর প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে না। তারা প্রচলিত আইন মানে না বলেও প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছো’
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেসব এলাকা সিসিটিসির আওতায় নেই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কম, সেসব স্থান আগে থেকে রেকি করে তারা পোস্টার লাগাত। পোস্টার লাগানোর সময় আমরা অনেককে হাতেনাতে গ্রেপ্তারও করেছি। কিন্তু শীর্ষ নেতাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার চ্যালেঞ্জ ছিল।
‘তারা হাইলি রেডিক্যালাইজড এবং কাটআউট পদ্ধতিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচের সারির কাউকে গ্রেপ্তার করা গেলেও তার উপরের কারও বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যেত না। অবশেষে সিটিটিসি অনেক সাফল্যের সঙ্গে হিজবুত তাহরীরের সবচেয়ে বড় নেতাদের একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।’
টার্গেট উচ্চবিত্ত ও মেধাবীদের
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হিজবুত তাহরীর সাধারণত উচ্চবিত্ত ও মেধাবীদের টার্গেট করে প্রচারণা চালায়। তাদের ভাবনা, যদি এই শ্রেণিকে রিক্রুট করতে পারে তাহলে প্রতিষ্ঠিত সমাজে সমর্থন পাবে এবং খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তারা সদস্য সংগ্রহের জন্য বিশ্বিবদ্যালয়গুলোকেও টার্গেট করে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার তৌহিদের পরিবারের একজন সদস্য সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা। এ ছাড়া পরিবারের বেশ কয়েকজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তৌহিদ ২০১১ ও ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারও সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘ ১২ বছরে তৌহিদ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে চলে আসে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে তৌহিদ হিজবুত তাহরীরের ফুলটাইম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের অনলাইন সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন তৌহিদ।’
গ্রেপ্তারের পর তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অনলাইন সম্মেলনের বিষয়ে জানার পর কনফিউজড ছিলাম- সম্মেলনগুলো দেশের ভেতরে নাকি বাইরে থেকে করা হয়েছে! এখনও স্থানগুলো এক্স্যাক্টলি শনাক্ত করতে পারিনি, তবে বাংলাদেশের কোথাও করেছে। আশা করছি জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানতে পারব। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের মঞ্চে উপস্থিত তিনজনের মধ্যে দুইজন বক্তব্য দেন ও একজন উপস্থাপক ছিলেন। আমরা প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি, আশা করছি বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে পারব। তাদের সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল, বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা পোস্টার কোথায় ছাপায়- এটা আমাদেরও প্রশ্ন। জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব। যারা পোস্টার টানায় তাদেরকে হয়ত হাতেনাতে দুয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি বিভিন্ন সময়। কিন্তু তারা কাটআউট, স্লিপার সেল পদ্ধতিতে কাজ করে। তাদের রিক্রুট কৌশলটাও একটু অন্যরকম। বিভিন্ন গ্রুপকে টার্গেট করে মেসেজ দেয় তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। আমরা বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব।’
কারাগারে রেডিক্যালাইজেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারাগারে আমাদের কোনো সুপারভিশন থাকে না। তবে যারা অথোরিটি আছে, আশা করি তারা এ বিষয়ে সচেতন। আমরা যতটুকু জানি, জঙ্গিদের আলাদা সেলে সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখা হয়। এরপরও তারা সুযোগ নিয়ে নিজেদের কাজ করতে পারে। তবে আমরা কারাগারে ডিরেডিক্যালাইজড সিস্টেমের মধ্যেও যাচ্ছি, খুব শিগগিরই আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করব। জঙ্গিরা জেল থেকে বের হয়ে সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়েও চলে আসছে, আমরা এ বিষয়ে কনসার্ন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৃহস্পতিবার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
রিটে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবসহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে বলা হয়, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদণ্ড, কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংবিধানের ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংবিধান ছাড়াও জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সনদ, ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং ১৯৮৪ সালের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনে মৃত্যুদণ্ডকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এসব দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বাংলাদেশের। এরই মধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশ মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে। রিট আবেদনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবি করা হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিধান আমাদের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশসহ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান এবং নেপালেও মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘যেসব আন্তর্জাতিক দলিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিষিদ্ধ করার পক্ষে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে সেসব দলিল অনুসরণ করাই আন্তর্জাতিক আইনের রীতি। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদেও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
রিটটি আগামী সপ্তাহ হাইকোর্টের যেকোনো একটি বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন:পৃথক তিনটি অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর দুই সক্রিয় সদস্যসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রুহুল আমিন, মো. রিয়াজুল ইসলাম ও আরিফ হোসাইন ওরফে মো. আরিফুল ইসলাম রাহাত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এই তথ্য জানান এটিইউ-এর পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল।
তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের কাশিমপুরের লতিফপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সক্রিয় সদস্য রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন বুধবার এটিইউ-এর আরেকটি দল যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১ নম্বর রোহিতা ইউনিয়নের গাংগুলিয়া এলাকা থেকে সংগঠনটির আরও এক সক্রিয় সদস্য রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। যশোর সিটি কলেজের দর্শন বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন, দুটি সিম কার্ড ও একটি মেমোরি কার্ড জব্দ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ও সাইবার স্পেস ব্যবহার করে ‘আনসার আল ইসলাম’-এর প্রচারণাসহ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত ও তথাকথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করত। বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে তারা সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। দেশের আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নাশকতার জন্য তারা পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করে আসছিল।’
তাদের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে নিয়মিত মামলা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এ সময় এটিইউ আরও জানায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মডেল থানাধীন পোস্তগোলা এলাকা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ মোট ৯টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আরিফ হোসাইন ওরফে মো. আরিফুল ইসলাম রাহাত নামের এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ২০২১ সালে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করেন। চলতি বছর থেকে তিনি ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতিসহ বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এটিইউ আরও জানায়, আরিফুল ইসলাম রাহাত এইচএসসি পাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের শিবিরের কর্মী হিসেবে যোগদানে উৎসাহিত করতে ‘ব্রিজিং প্রজেক্ট’ চালু করেন। এ কর্মসূচির আওতায় তিনি শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন এবং তাদের সম্পর্কে অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতেন। পরে যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের শিবিরের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর থেকে দুই শিশু অপহরণের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ।
মামলার পাঁচ ঘণ্টা পর বুধবার রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অপহরণ হওয়া শিশুদের একজনের বয়স সাড়ে চার বছর ও আরেকজনের ৯ বছর।
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন মো. ইব্রাহিম রনি ও আফজাল মাতুব্বর।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বুধবার রাজধানীর মিরপুর মনিপুর কাঠালতলা এলাকার একটি বাসা থেকে চার বছর ছয় মাস বয়সী শিশুকে অপহরণ করা হয়। এই ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় শিশুটির প্রতিবেশী রনিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে পরিবার।
‘এর পর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য ছায়া তদন্তে নামে মিরপুর বিভাগের একটি গোয়েন্দা টিম।’
শিশুটির পরিবার ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তার রনি তাদের প্রতিবেশী। পাঁচ বছর আগে এই বাসায় ভাড়া ছিলেন। কিছু দিন আগে আবারও এই বাড়িতে ভাড়া নেন রনি। বুধবার দুপুরে দিকে শিশুটিকে আইসক্রিম কিনে দেয়ার কথা বলে নিয়ে যান তিনি।
পুলিশের কাছে গেলে ছেলেকে আর পাবেন না বলে হুমকি দেয়া হয় উল্লেখ করে শিশুটির বাবা বলেন, “অপহরণকারী আমাকে কল দিয়ে বলে ছেলেকে ফিরে পেতে হলে এক লাখ টাকা দিতে হবে। এত টাকা দেয়া সম্ভব না জানালে অপহরণকারী বলে, ‘আমরা জানি আপনি টাকা দিতে পারবেন। আর পুলিশ বা ৯৯৯-এ কল দিলে ছেলেকে জীবিত ফিরে পাবেন না।”
পরবর্তী সময়ে এই তথ্য পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রনিকে গ্রেপ্তার ও শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘৯ বছর বয়সী অপর শিশুটি মাদ্রাসার ছাত্র। তাকে গত ১৮ নভেম্বর দুপুরে মাঠে খেলতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পল্লবী থানার সেকশন-৭ নম্বর এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। পরে শিশুটির পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার করলে ছায়া তদন্তে নেমে অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিম।’
নগরবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বাসা ভাড়া ও ফ্ল্যাটে সাবলেট ভাড়া দেয়ার সময় ভাড়াটিয়ার পুরো ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বরসহ ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম পূরণ পূর্বক বাসা ভাড়া দেয়ার অনুরোধ রইল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য