নদীর নাম গড়াই। একদিকে রাজবাড়ী জেলা, অন্যদিকে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মহেশপুর গ্রাম। তবে এ পারে মহেশপুর গ্রামেও রাজবাড়ী জেলার কিছু অংশ আছে। নদীভাঙনের ফলে এমন হয়েছে।
এই ভৌগোলিক খামখেয়ালি সুযোগ করে দিয়েছে একদল বিকাশ প্রতারক চক্রকে। নদীর পারে ধান ও পাট ক্ষেত আর উঁচু বালুর ঢিবিতে তারা গড়ে তুলেছে তাদের ‘অফিস’।
সারি সারি মোবাইল নিয়ে তারা বসে পড়ছে এসব ‘অফিসে’। কল করছে দেশের নানা প্রান্তে। ফাঁদে ফেলছে বিকাশ কিংবা আর্থিক সেবা দেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের।
‘আপনার মোবাইলে টাকা গেছে’ অথবা ‘আপনার পিন কোডটি আমাদের বলুন’– এসব বলে তারা সূচনা করছে ডিজিটাল ধাপ্পাবাজির। এ অঞ্চলের শতাধিক যুবক জড়িয়ে পড়েছে এসব প্রতারণা চক্রে। গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এসব প্রতারকচক্র অল্পদিনেই পাকা বাড়িঘরসহ বিলাসবহল গাড়ির মালিক হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাগুরা জেলা সদর থেকে শ্রীপুর উপজেলা ১৪ কিলোমিটার। আর শ্রীপুর থেকে আরও সাত কিলোমিটার গেলে দরিয়াপুর ইউনিয়ন। এরপরই মহেশপুর গ্রাম।
গ্রামটির একটা অংশ গড়াই নদী ঘেঁষে। এখানে বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অল্প কিছু মানুষ সরকারি চাকরি করেন। নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। তবে গ্রামটির নদীর চরাঞ্চলে গেলে খটকা লাগবে। এখানকার মানুষের ভাগ্যের চাকা যেন হঠাৎ করে ঘুরে গেছে। টিনের ভাঙা ঘরগুলো মাত্র এক বছরে হয়ে গেছে পাকা দালান। চলছে দোতলার কাজ। দামি মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বেশ কিছু উঠতি যুবক, যাদের বয়স ১৬ থেকে ২৫ বছর।
স্থানীয়রা বলছেন, এসব দালানবাড়ি কেমন করে হলো তাদের জানা নেই। তবে এসব বাড়ির ছেলেরা কাজ করে। সেই কাজ হলো মোবাইলে টাকা আনে। নদীর পারে তাদের ‘অফিস’। এরা উঠতি বয়সী হলেও যারা এদের নেতৃত্ব দেয়, তাদের বয়স ৩০-এর কাছাকাছি। গ্রামের লোকেরা বলেন, ‘এরা বসে বসে কথা কয়, আর টাকা চলে আসে।’
স্থানীয়রা জানেন, অন্যের মোবাইলের টাকা এরা হতিয়ে নিচ্ছেন। তবে বিষয়টা নিয়ে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেন না। প্রাণনাশের হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখায় প্রতারকচক্র।
মাগুরা গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র মতে, প্রতারকচক্রের দুটি গ্রুপ আছে মহেশপুর ও চর মহেশপুর গ্রামে। স্থানীয়রা এটার নাম দিয়েছে ‘টোপ মারা’। আর যারা জড়িত, তারা ‘টোপ পার্টি’ নামে পরিচিত। প্রতারণায় জড়িত শতাধিক তরুণ। যাদের বাড়ি একই এলাকায়। প্রতারকরা পুলিশের নজরদারিতে আছে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রতারকচক্র এ গ্রাম থেকে ছড়িয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী গ্রামেও। মহেশপুর থেকে গোয়ালদহ, চর গোয়ালদহ, চর মহেশপুর, চৌগাছী, চর চৌগাছী, ঘষিয়াল, শ্রীকোল ইউনিয়নের বরিশাট গ্রাম এবং নয়নশার ঘাট এলাকায়ও অর্ধশতাধিক তরুণ এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছে বলে তথ্য আছে।
মহেশপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২৫০ সিসি ইঞ্জিনের ৫ লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেল চালাচ্ছে এখানকার কলেজপড়ুয়া ছেলেপেলে, যাদের পরিবারের আয় অত্যন্ত কম, পরিবার কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
ওই ব্যবসায়ী জানান, দামি মোটরসাইকেল কিনে এরা সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কিছু বলছে না। কারণ প্রায় প্রতিটি বাড়ির কেউ না কেউ এতে জড়িত। আবার যারা গ্রামের সচেতন ব্যক্তি, তারা ভয়ে মুখ খুলছে না।
তিনি আরও জানান, এদের প্রতারণায় নিয়োজিত কর্মীদের একাধিক গ্রুপ। প্রথম গ্রুপটির কাজ বিকাশ, নগদ, রকেট কিংবা অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট পর্যায়ে ঘোরাঘুরি করে তথ্য সরবরাহ করা। এজেন্টের কাছে যেসব গ্রাহক টাকা পাঠান, তাদের তথ্য এজেন্টরা ছবি তুলে দিয়ে দেন প্রথম পর্যায়ের কর্মীদের হাতে।
এরপর যাদের নামে অর্থ আসে, তাদের কাছে ফোন দেয় আরেকটি গ্রুপ। এরা নির্জন জায়গায় এ কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে মহেশপুর চরাঞ্চল উপযোগী জায়গা। এ জন্য রাজবাড়ী এলাকা থেকে চক্রের সদস্যরা নৌকাযোগে মহেশপুর চরে আসে।
মোবাইল ব্যাংকিং-এর গ্রাহক যারা টাকা পায়, তাদেরই মূলত এরা টার্গেট করে নানা ফাঁদ পাতে। ১০ জনের মধ্যে একজন টোপে (ফাঁদে) পা দিলেই এরা সফল। কারণ দিনে শতাধিক মানুষকে এরা ফাঁদে ফেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এই প্রতারণায় শতাধিক কিশোর ও তরুণ জড়িত থাকলেও এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে তিন-চার জন। এদের সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। চক্র আকারে এরা ছড়িয়ে পড়েছে মাগুরা জেলার নানা প্রান্তে।
ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারে- এমন শঙ্কায় এদের নাম-ঠিকানা সরাসরি প্রকাশ করছে না পুলিশ।
নিউজবাংলার পক্ষ থেকে মহেশপুরে এ রকম একটি গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা একজনের বাড়িতে যাওয়া হয়। বুধবার বিকেল ৩টায় তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বারবার মোবাইলে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তরুণের বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ছাদে কাপড় শুকাতে দেখা গেলেও বাড়িটি ফাঁকা পাওয়া যায়।
প্রতিবেশীরা জানান, তারা সকালেও ছিল। এখন কেউ নাই।
এই গ্রুপ প্রধান কী করেন, জানতে চাইলে প্রতিবেশীরা কিছু জানেন না বলে জানান।
২০২০ সালের ৩০ আগস্ট শ্রীপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। এতে ১০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি হ্যাক করছে এবং বিকাশ কোম্পানির গ্রাহকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে শ্রীপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে ৯টি কম্পিউটার, ১০টি মোবাইল ফোনসেট, সাতটি হার্ডডিস্ক ও একটি ইন্টারনেট মডেম।
মামলার পরই প্রতারকচক্র সতর্ক হয়ে যায়। মামলাটি এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
পুলিশ বলছে, মহেশপুর এলাকাটির ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকচক্র। মাগুরা, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার সীমানা হওয়ায় এ এলাকায় থানার পুলিশের নজরদারি কম থাকে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন দপ্তর থেকে মোবাইলে প্রতারণার অভিযোগ আসে। তবে তা দেশের নানা প্রান্তে ঘটায় শ্রীপুর থানায় কেউ মামলা দিতে আসে না। এ জন্য প্রতারকচক্র বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
দরিয়াপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আব্দুর সবুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মহেশপুর এলাকায় একবার গিয়েছি চরাঞ্চলে নদীভাঙন দেখতে। কিন্তু চরে মনে হলো কিছু যুবকের হাট বসেছে। তাদের কাছে অনেক মোবাইল দেখেছি। তারা কথা বলছিল। পরে শুনেছি, এরা নানা অপকর্মে জড়িত। বিকাশের টাকা এরা হাতিয়ে নেয় বলে শুনেছি।
‘উপজেলার আইনশৃঙ্খলা সভায় এটা আমি তুলেছি। প্রশাসন বলেছে, তারা এটা নিয়ে কাজ করছে। আমি চাই বিপথগামী তরুণরা সঠিক পথে আসুক। এসব প্রতারণার কোনো প্রমাণ হাতেনাতে যদিও আমি পাইনি, তবু যদি এটা প্রমাণিত হয়, তবে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা প্রিটন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে মে মাসে এসেছি। এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিকাশ প্রতারকচক্রের তথ্য আমি পেয়েছি। স্থানীয়রা যদি সহযোগিতা করে, তবে এদের নির্মূল করা সম্ভব। পুলিশের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা আছে এদের প্রতিরোধ করার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।
এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।
এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আজ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ (২৫)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন ছাত্র-জনতা। এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
মন্তব্য