চালের দাম নিয়ন্ত্রণে এভাবে মিলে মিলে অভিযান চালালে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন একজন মিল মালিক। বলেছেন, তারা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে এভাবে অভিযান কোনো সুফল বয়ে আনবে না।
বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চালকল মালিকদের সঙ্গে প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় এই কথা বলেন ওমর ফারুক নামে এক মিল মালিক।
জনাব ফারুক বাংলাদেশ অটো রাইস মিলস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি, যিনি ফ্রেস অ্যাগ্রো অটোমেটিক নামে একটি রাইস মিল প্রতিষ্ঠা করেছেন।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশে দেশে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দেশের প্রধান এই খাদ্যশস্য নিয়েও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
হাওরে আগাম বন্যার পর অতি বৃষ্টিতে দেশে ধানের প্রধান মৌসুম বোরো ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে। এর পাশাপাশি গম আমদানিতে দেখা দেয়া অনিশ্চয়তার কারণে বাড়তি চাপ পড়তে যাচ্ছে চালের বাজারে।
ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে গম আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে আমদানির প্রধান উৎস ভারত ইউরোপে গম পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য নয় জানানো হলেও ব্যক্তি পর্যায়ে গম আমদানি অনিশ্চিত হয়ে গেছে। ফলে গমের অপূর্ণ চাহিদা চাল দিয়ে পূরণ করতে গেলে বাজারে বাড়তে চাপ তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে এই প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে, বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। সরকারি হিসেবেই এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৩ থেকে প্রায় ৮ শতাংশ। চিকন চালের চেয়ে মোটা চালের দাম বেশি বাড়ায় স্বল্প আয়ের মানুষরা বিপাকে আরও বেশি। কারণ, এই চালের ভোক্তা তারাই।
এই পরিস্থিতিতে সরকার চাল আমদানি উন্মুক্ত করার ঘোষণার পাশাপাশি অবৈধ মজুত রুখতে বাজারে ও মিলে মিলে অভিযান শুরু করেছে। দেশ থেকে চাল কিনে মোড়কজাত করে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
অভিযানের মধ্যে রাজধানীতে চাল সরবরাহের অন্যতম উৎস কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেন মিল মালিকদের সঙ্গে। সরু চালের প্রধান মোকাম কুষ্টিয়ার খাজাগনরের প্রায় ৩০ জন অটো রাইস মিলের মালিক এতে অংশ নেন।
সভায় কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রবিউল ইসলাম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী, সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ও মিল মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় সভা শুরু হয়ে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে শেষ হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কী এমন ঘটলো যে আপনারা দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন। এসব বন্ধ করেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে প্রত্যেক মিলারকে তাদের মজুত, ধান কেনা, চাল বিক্রি, কোথায় বিক্রি করছেন, ধান কোথায় থেকে কতো দরে কিনছেন প্রতিদিনের হিসাব প্রতিদিন খাদ্য বিভাগকে দিতে হবে।
‘জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আজই একটি কাগজে ফরম্যাট দেবেন। সেটা পূরণ করে প্রতিদিন খাদ্য বিভাগে দাখিল করতে হবে।’
মিল মালিকরা বলেন, এবার ধানের দাম বেশি, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর এভাবে অভিযান চলতে থাকলে বাজারে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
ফ্রেস অ্যাগ্রো অটোমেটিক অটো রাইস মিলের মালিক ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা করব, কিন্তু অভিযান চাই না। অভিযান চললে চাল উৎপাদনে ঘাটতি হবে। এতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে।’
কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘যেভাবে প্রশাসন অভিযান চালাচ্ছে তাতে কোনো কাজ হবে না। তারা লাইসেন্স দেখছে, ভুয়া ব্র্যান্ডিং ধরে জরিমানা করছে। আসল জায়গায় হাত দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মজুত কোথাও হচ্ছে, সেটা ধরতে হবে। প্রয়োজনে গোয়েন্দা নজরদারি করে মজুতদারদের শাস্তি দিতে হবে। শাস্তির ভয়ে হলেও দাম কমে যাবে।
আব্দুল খালেক নামে অন্য এক মিল মালিক বলেন, ‘করপোরেট ব্যবসায়ীরা চাল ব্যবসায় নেমে ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা ইচ্ছামতো ধান কিনছে। কৃষকরা যত দাম চাচ্ছে, তারা দিচ্ছে। এ কারণে দাম যেমন বাড়ছে, তেমনি আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’
মিল মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কৃষক ছাড়া অন্য কোনো মজুতদারের কাছ থেকে ধান কিনলে দাম বেশি পড়ে যায়। এ কারণে এই মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের থামাতে হবে।’
খুচরা বিক্রেতা রিপন হোসেন বলেন, ‘আমরা মিল থেকে কিনে বিক্রি করি। তারা দাম বাড়ালে আমাদেরও দাম বেশি নিতে হচ্ছে।’
মিলে মিলে অভিযান কুষ্টিয়াতে চালের দাম কমাতে পারেনি। বাজারে সরু চাল কেজিতে এখন ৬৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে ৭ দফায় দাম বেড়েছে ১১ টাকা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
সবার আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তিনি বলেন, একদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপণ্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে শতাধিক পণ্য ও সেবায় নতুন করে ভ্যাট আরোপ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
এক বিবৃতিতে সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন বা সংস্কার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তা করার যেন কেউ নেই। টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইন দিনে দিনে বড় হচ্ছে।
‘এখন প্যান্ট-শার্ট পড়েও স্বল্প দামে চাল-ডাল কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসংখ্য মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম হওয়ায় অনেকেই ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে না পেরে একবুক কষ্ট নিয়ে খালি হাতে ঘরে ফিরছে।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম কেনা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবকরা সন্তান ও পরিজনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন না; কিনতে পারছেন না জীবন রক্ষাকারী ঔষধ।
‘এমন বাস্তবতায় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা।’
জিএম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি। আমরা মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা বলেই যাব।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে সরকার দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন:বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত।
সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এ সাক্ষাৎ হয়।
ওই সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য দুই বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারে উন্নীত করার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের আকার বৃদ্ধি, বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগ সম্ভাবনা, হালাল ফুড সনদ প্রাপ্তি ও ইকোনমিক কমিশন গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের জন্য ভাতৃপ্রতিম দেশ। বিভিন্ন খাতে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার ইতিহাস রয়েছে বাংলাদেশ ও তুরস্কের। এর মধ্যে ব্যবসা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত।
তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তুরস্ককে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ হালাল রপ্তানিকারক দেশ উল্লেখ করে বাংলাদেশের হালাল খাবারের বাজার সম্প্রসারণে তুরস্কের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হালাল সনদ প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের হালাল অ্যাক্রিডিটেশন অথরিটি ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের মধ্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হালাল সনদ প্রাপ্তি সহজ করবে। হালাল খাবার রপ্তানি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ এখন অনেক সহজ করা হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সেবা, নির্মাণশিল্প এবং তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
ওই সময় তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তুরস্কের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তুরস্ক থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
তিনি জানান, বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইল খাতকেন্দ্রিক। তুরস্ক বাংলাদেশে টেক্সটাইল খাতের বিভিন্ন যন্ত্র ও কেমিক্যাল রপ্তানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক তৈরি পোশাক আমদানি করে। তুরস্ক কেবল টেক্সটাইল খাতে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বহুমুখীকরণ করতে চায়।
তিনি বাংলাদেশে রিনিউবল এনার্জি, গাড়ি নিমাণ শিল্প, ফার্মাসিটিক্যালস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত, লজিসটিক্স ও নির্মাণ শিল্প খাতে তুরস্কের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী মুস্তাফা তাজকু এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব ) মো. আবদুর রহিম খান।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে আমদানিকৃত ২৪ হাজার ৬৯০ টন সিদ্ধ চাল নিয়ে ‘এমভি তানাইস ড্রিম’ নামের জাহাজটি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে।
এটি অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের প্রথম চালান।
ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হবে। এর প্রথম চালান আগামীকাল দেশে আসছে।
এরই মধ্যে আমদানিকৃত জাহাজ থেকে এসব চাল দ্রুত খালাসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে।
বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং দাম সহনীয় পর্যায়ের রাখার লক্ষ্যে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিতে বিদ্যমান সব আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম আয়কর অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ কর অব্যাহতির এই সুবিধা দেয়া হয়েছে।
এনবিআর সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১৫ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত আলাদা তিনটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এসব প্রজ্ঞাপনে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পামওয়েল বিক্রির ওপর স্থানীয় পর্যায়ে প্রদেয় মূল্য সংযোজন কর ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়া এসব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে প্রদেয় মূসক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক ছাড়া অন্য কোনো শুল্ক-করাদি অবশিষ্ট নেই। এ লক্ষ্যে সবশেষ তিনটি এসআরও জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর আগে গত ১৭ অক্টোবর ও ১৯ নভেম্বর জারি করা শুল্ক-করাদি অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন দুটি সয়াবিন ও পামওয়েলের ক্ষেত্রে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রযোজ্য ছিল। ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং ভোক্তাসাধারণের জন্য ভোজ্যতেলের মূল্য সহনীয় রাখার উদ্দেশ্যে সয়াবিন ও পামওয়েলের পাশাপাশি এবার অপরিশোধিত-পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল ও ক্যানোলা তেলের আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর এবং মূসক কমানো হলো।
সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পামওয়েলের ঊর্ধ্বমুখী দর বিবেচনায় নিয়ে রমজান মাসে পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন তিনটির মেয়াদ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।
সানফ্লাওয়ার তেল ও কেনোলা তেলের কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি, আগাম কর ও অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এবং মূল্য সংযোজন কর কমানোর কারণে এসব তেলের আমদানি ব্যয় লিটার প্রতি ৪০-৫০ টাকা কমবে।
এনবিআর আশা করছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নেয়া এসব পদক্ষেপে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে বাজার মূল্য সর্বসাধারণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
আরও পড়ুন:কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী যে ঘাটতি ছিল, সেই ঘাটতি মোকাবিলা করতে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আলু আমদানি করা ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
সোমবার সাভারের হরিণধরায় বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) পরিদর্শন শেষে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তবে শুধু ভারত নয়, চীন ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও বাংলাদেশে পণ্য আমদানি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের বাণিজ্য বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে আলুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক। বর্তমানে দেশে পেঁয়াজ, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমেছে। তবে চাল ও তেলের দাম বেড়েছে। শুধু দাম বাড়ছে- কথাটা সঠিক নয়, বিশ্ববাজারেও নানা কারণে এসব পণ্যের দাম বেশি।’
শেখ বশির উদ্দীন বলেন, ‘হাজারীবাগ থেকে যখন সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়, তখন থেকে (ট্যানারি) মালিকরা অনেক সমস্যায় ভুগছিলেন। কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের সুফল উদ্যোক্তারা ঠিকমতো পাননি। তাই আজ আমরা পরিদর্শন করে সমস্যা কোথায় কোথায় তা জানার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে এবং আগামী কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ট্যানারির সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আউয়াল নান্নু, বিটিএর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহসহ আরও অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জে শীতের আমেজ বাড়তে শুরু করেছে। ঘন কুয়াশার চাদরে ছেয়ে গেছে গ্রামাঞ্চলের পথঘাট।
জেলার শহরাঞ্চলে সকালের দিকে হালকা কুয়াশা দেখা যায়, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিলীন হয়ে যায়। রোদের দেখা মিললেও তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমে এসেছে। বাতাস শুষ্ক হয়ে উঠছে।
পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে আসায় মানুষের পোশাক-আশাকেও আসছে পরিবর্তন। কানটুপি, হাত মোজা, সোয়েটার, জ্যাকেটসহ নানা রকম গা গরম রাখার কাপড় পরতে শুরু করেছেন অনেকেই। বাজারে বাড়তে শুরু করেছে শীতের পোশাকের চাহিদা।
নারায়ণগঞ্জে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণি বিতানে ব্যবসায়ীরা শীতের পোশাক বিক্রি শুরু করেছেন।
চাষাড়া হকার্স মার্কেট, সলিমুল্লাহ রোড, বঙ্গবন্ধু রোড, শায়েস্তা খাঁ রোডসহ নগরের বিভিন্ন প্রান্তে সড়কের পাশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পোশাকের পসরা বসিয়েছেন।
শিশু, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধসহ প্রায় সব বয়সীদের জন্য মিলছে গা গরমের কাপড়। নতুন, পুরাতন উভয় ধরনের পোশাক মিলছে এখানে।
রঙিন সোয়েটার, ডেনিম-লেদার জ্যাকেট, উলের হাত মোজা, পায়ের মোজা, কানটুপি, শালসহ নানান পোশাক কিনছেন ক্রেতারা।
চাষাড়ায় হকার্স মার্কেটের সামনে বেশ কয়েকটি দোকানে শীতের পোশাক বিক্রি শুরু হয়েছে। দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। বাছাই করে পছন্দের পোশাক কিনছেন তারা।
কেউ নিজের জন্য, কেউ সন্তানের জন্য অথবা কেউ বাবা-মায়ের জন্য পোশাক কিনছেন।
সকাল থেকে বেচাকেনা শুরু হয়। তবে সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের ভিড় জমে যায় বলে জানান বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, শীতের মৌসুম উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের পোশাক সংগ্রহ করা হয়েছে। ঠান্ডা পড়ায় মানুষের শীতের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করেন দোকানগুলোতে।
দেশের নানা পোশাক কারখানা, চীন, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশের পোশাক রয়েছে বিক্রেতাদের কাছে। মার্কেট, ফুটপাত উভয় জায়গাতেই শীতের গরম কাপড় বিক্রি শুরু হয়েছে।
মার্কেটগুলোতে কাপড়ের দাম বেশি থাকে। ফুটপাতে নতুন, পুরাতন বিভিন্ন রকমের কাপড় পাওয়া যায়। এসব দোকানে সাশ্রয়ী দামে বাছাই করে ভালো কাপড় নেওয়া যায়।
চাষাড়ায় দীপ হোসাইন ফাহিম নামের এক বিক্রেতা বলেন, ‘শীতের প্রথম থেকেই বেচাকেনার ধুম পড়ে। এ সময়টাতে ভালো বিক্রি হয়, শীতের শেষের দিকে পোশাক বিক্রি কম হতে থাকে। এবার চায়না, ফিলিপাইন থেকে ফুল স্লিভ ভেলভেট টি-শার্ট এনেছি। তরুণদের মধ্যে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই বিভিন্ন ডিজাইনের ভারী কাপড়ের টি-শার্ট সংগ্রহ করেছি। বেচাকেনা ইদানীং ভালো হচ্ছে।’
মো. সাইফুল ইসলাম নামে অপর এক বিক্রেতা বলেন, ‘শীত আসছে বলে সোয়েটার, জ্যাকেট, মোটা কাপড়ের ফুল স্লিভ টি-শার্টসহ নানা ধরনের শীতের পোশাক বিক্রি করছি। বিকাল চারটা থেকে এইখানে বসি রাত ১০টা পর্যন্ত। ‘আমাদের কাছে ছোট, বড় সব ধরনের সাইজের কাপড় আছে। বাচ্চা, নারী, পুরুষ সব বয়সের ও সব সাইজের কাপড় আছে। নিজের মতো করে ক্রেতাদের বেছে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কেট থেকে যে মোটা কাপড়ের গেঞ্জি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা রাখবে, সেটা আপনারা এইখানে ১০০ টাকায় পাবেন। বাইরের থেকে কাপড় এলে বেশির ভাগ কাপড় পাইকারিতে বিক্রি হয়। এ ছাড়াও আরেকটি অংশ ফুটপাতে বিক্রি হয়।’
মা ও মেয়েকে নিয়ে ফুটপাতে গরম কাপড় দেখছেন শিমু আক্তার। কাপড় দেখার মাঝে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া অফিস থেকে বলেছে, এবার নাকি শীত বেশি পড়বে। তাই আমার মেয়ের জন্য শীতের পোশাক কিনব। সন্ধ্যায় আমার মা ও মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছি। শীতের কাপড় ফুটপাত থেকে কেনা হয়। রিভারভিউ মার্কেট থেকেও কেনা হয়।
‘বড় বড় শপিং মলের চাইতে ফুটপাতেই কাপড় বেশি কেনা হয়। এখন চাষাড়ায় দোকানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি। এইখানে কম দামে ভালো কাপড় পাওয়া যায়। দুটো দোকানে কাপড় দেখেছি। সামনে কয়েকটা দোকান দেখা বাকি।’
ফুটপাতের একটি স্টলে লেদার জ্যাকেট বাছাই করতে করতে জাহাঙ্গীর নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে আমি বহুদিন ধরে ইউরোপে বসবাস করছি। দেশে এসেছি কিছু দিন আগে। বিদেশে আবার ফিরতে হবে। সেখানে অনেক ঠান্ডা, তাই এখান থেকেই শীতের পোশাক নিয়ে নিচ্ছি।
‘আমি নিজ দেশের পোশাক পছন্দ করি, বিদেশি পোশাক খুব কম পরি। মূলত, আমাদের দেশের তৈরি পোশাকই বিদেশে যাচ্ছে। ব্র্যান্ডিং, সিল দিয়ে শুধু দাম বেড়ে যায়।’
লতা দেবনাথ নামে এক তরুণী বলেন, ‘শীত নেমেছে। তাই শীতের জন্য গরম কাপড়ের পোশাক কিনতে হবেই। বাবা-মায়ের জন্য পোশাক কেনাকাটা করতে হবে। তাই মাকে সঙ্গে নিয়ে কাপড় কিনতে এসেছি।
‘ফুটপাতে দামের তুলনায় ভালো শীতের কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়। বেশ কয়েকটি কালেকশনও আছে। সময় নিয়ে বাছাই করে কাপড় নিতে হয়।’
তাসমিয়া আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘শীত এসে পড়েছে, তাই বাচ্চাদের ও স্বজনদের জন্য গরম কাপড় কিনতে বেরিয়েছি। ফুটপাত ও শপিং মল দুই জায়গাতেই পোশাকের কেনাকাটা হয়। পছন্দমতো স্বল্প দামে ভালো কাপড় নেয়ার চেষ্টা করি। চাষাড়ায় ফুটপাতে দোকানগুলো দেখছি। ভালো কাপড় পেলে নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে মসুর ডাল, খোলা সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, এলএনজি, সার এবং ক্রুড ও পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম তেল কিনবে সরকার।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে বুধবার দুপুরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত আলাদা তিনটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক ছাপার অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্ট বলেন, ‘আমরা তাড়াতাড়ি প্রসেস করে, যৌক্তিক যে জিনিসগুলো ক্রয় করা প্রয়োজন, সেগুলো অনুমোদন দিয়ে থাকি। আজকে আমরা বিভিন্ন ধরনের সার কেনার অনুমোদন দিয়েছি। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকের বৈঠকে নবম, দশম শ্রেণির পাঠ্যবই মুদ্রণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাঠ্যবই আমরা শিগগিরই চাচ্ছি। জানুয়ারির মধ্যে আমরা পাঠ্যবই করে ফেলতে বলেছি। চেষ্টা করবে, তবে জানুয়ারির মধ্যে হয়তো সবগুলো করে ফেলতে পারবে না।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, খোলাবাজারে বিক্রয় কর্মসূচির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৩৮ লাখ ১০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ও ১ লাখ ১০ হাজার লিটার পাম অয়েল কিনবে ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (টিসিবি)।
রাজশাহীর নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড থেকে টিসিবির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৫ টাকা ৯৭ পয়সা। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৪০ টাকা। ৩৮ লাখ ১০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল কিনতে ব্যয় হবে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
টিসিবির জন্য পাম অয়েলও কেনা হবে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকেই। ১ কোটি ১০ লাখ লিটার খোলা পাম অয়েলের প্রতি লিটার ১৩০ টাকা দরে মোট ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করবে বাংলাদেশ অয়েল গ্যাস অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
৭০৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিটি এমএমবিটিইউ ১৫.০২ ডলারে এলএনজি সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড।
এ ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডিএনওসি) থেকে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ৩৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ লাখ টন মুরবান ক্রুড পেট্রোলিয়াম (এএলসি) আমদানি করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
বৈঠকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে।
ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড, ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর অ্যান্ড কোং ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা পরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭০ কোটি ১৬৪ লাখ টাকা।
প্রস্তাবে পেট্রোলিয়ামের পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
সৌদি আরবের এসএবিআইসি এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ২২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকায় জেএসসি ফরিন ইকোনমিক করপোরেশন ‘প্রোডিন্টর্গ’ থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার, মরক্কোর ওসিপি থেকে ২৮০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার এবং মরক্কো থেকে ২৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মূল্যে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি করবে।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সরবরাহকারীকে চুক্তি প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য