বরিশালের উজিরপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডার মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাকিব হাসান বুধবার রাতে তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে উপজেলার শোলক এলাকায় রাত ১০টার দিকে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
৬২ বছরের চিত্ত দত্ত ও ৬০ বছরের আব্দুল হক সরদারের বাড়ি একই এলাকায়।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আরশাদ নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, আব্দুল হক কিছুদিন আগে চিত্ত দত্তের বড় ভাই মন্টু দত্তের কাছ থেকে জমি কেনেন। সম্প্রতি চিত্ত দত্তের আরেক ভাই শংকর দত্তের ছেলে দুর্জয় দত্ত সেই জমির কিছু গাছ কেটে বিক্রি করেন।
বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সন্ধ্যায় আব্দুল হক লোকজন নিয়ে দুর্জয় দত্তের কাছে গাছ বিক্রির কারণ জানতে চান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয় এবং দুর্জয় দত্তকে চড়-থাপ্পড় দেন আব্দুল হক সরদারের লোকজন।
এ ঘটনা দেখে চিত্ত দত্ত ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় আব্দুল হকের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়, হাতাহাতিও করেন।
দুর্জয় দত্ত জানান, ঝগড়ার একপর্যায়ে চিত্ত দত্ত মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে চিত্ত দত্তকে হাসপাতালে নেয়ার কিছু সময় পর আব্দুল হক সরদারও অসুস্থ বোধ করেন। পরে তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাকিব হাসান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
ওসি আলী আরশাদ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। প্রাথমিকভাবে জেনেছি মৃত্যুর আগে জমিজমা নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীতে গরুবোঝাই ট্রলারডুবি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নদী থেকে মৃত ৬টি গরু উদ্ধার করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘিওর বাজার এলাকায় পুরাতন ধলেশ্বরী নদীতে ২৭টি গরু নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়।
৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বেলা দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ২১টি জীবিত ও ৬টি মৃত গরু উদ্ধার করেন।
ঘিওর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রেজাউল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল থেকে কয়েকজন খামারি ও ব্যবসায়ী ২৭টি গরু বিক্রির জন্য সকালে রাজধানীর গাবতলীর কোরবানির পশুর হাটের উদ্দেশে রওনা দেন। ঘিওর বাজারের কাছে ধলেশ্বরীর পানির ঘূর্ণিতে গরুবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান।
ব্যবসায়ীদের বরাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জানান, রেজাউল উদ্ধার করা মৃত ছয়টি গরুর দাম প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ছিল।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহগুলোর মধ্যে আটজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক।
এই আটজন হলেন আকতার হোসেন, আবুল হাশেম, বাবুল মিয়া, মনির হোসেন, মো. সাকিব, মো. রাসেল, মো. শাহাজান ও আব্দুস সুবহান প্রকাশ আব্দুর রহমান।
সুমন বণিক বলেন, ‘বুধবার রাতে আমরা ডিএনএ পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছি। প্রথম দফায় আটটি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই মরদেহগুলোর মধ্যে পাঁচটি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দুটি আঞ্জুমানে মুফিদুলে এবং একটি কক্সবাজারে রয়েছে। আমরা এই আটজনের পরিবারকে খবর দিয়েছি, তারা এসে মরদেহ নিয়ে যেতে পারবে।’
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। বাংলাদেশে এর মালিকানা স্মার্ট গ্রুপের। গ্রুপের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমানই ডিপোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তার ছোট ভাই মুজিবুর রহমান।
এই ডিপোতে গত ৪ জুন রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। রাত ১১টার দিকে প্রথম বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
একে একে ছুটে যায় চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও পরে যোগ দেয় কয়েকটি ইউনিট। ৫ জুন সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৫টি। কিন্তু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর ৮ জুন দুপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম দুই দিনে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন। বুধবার পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ছয়জনের। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫১ জন হিসাব করা হচ্ছে।
প্রথম দুই দিনে উদ্ধার ৪১ মরদেহের মধ্যে পরিচয় পাওয়া যায় ২৫ জনের। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনজন। ৬ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয় ছয়টি। এরপর প্রথম দফায় ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় মেলে আটটি মরদেহের। সেই হিসাবে এখন পর্যন্ত পরিচয় শনাক্ত হয়নি আরও ১৫ জনের।
আরও পড়ুন:দুদিন পরই ঈদুল আজহা। রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ছুটছেন কর্মজীবীরা। সড়ক, মহাসড়কসহ নৌপথে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোথাও এখন পর্যন্ত যানজট লাগেনি। এই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ৯৬ কিলোমিটার বেয়ে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লায় ফিরে শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে আসলাম। পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে দেখি কুমিল্লা এসে গেছি। কোথাও যানজট নেই। পরিবার নিয়ে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে আসতে পেরে ভালো লাগছে।’
ঢাকা থেকে কুমিল্লার ওপর দিয়ে ফেনী, চট্টগ্রাম ,খাগড়াছড়ি কক্সবাজারের হাজারো মানুষের যাতায়াত। এসব জেলার যাত্রীরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশটি যানজটমুক্ত থাকলে স্বস্তিতে থাকেন যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী যাত্রী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘পথে ট্রাফিক পুলিশ ও কিছু কমিউনিটি পুলিশের তদারকি নজরে পড়েছে। এই ব্যবস্থা সারা বছর করা গেলে মানুষ আরও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবেন।’
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এবার হাইওয়ে পুলিশে জনবল সংকট নেই। সড়কে চাঁদাবাজি রোধে মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আমাদের সদস্যরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।
‘ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, সড়কে দুর্ঘটনার খবর পেলে সর্বোচ্চ ১০মিনিটের মধ্যে যেন ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় সে জন্য গঠন করা হয়েছে ১৫টি কুইক রেসপন্স টিম। এই টিমে আছে ৫টি রেকার। হাইওয়ে পুলিশের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি বাড়তি ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ৩৪টি মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।’
সড়ক ও জনপদ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের ৪০ জন সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। মহাসড়কের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করে দেয়া হবে। ৭ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত অবিরাম এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এবার যানজটের কোনো শঙ্কা নেই।’
বিএম কনটেইনার ডিপোর জন্য প্রয়োজনীয় ২৫টি সংস্থারই হালনাগাদ লাইসেন্স ও ছাড়পত্র আছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকপক্ষসহ তদারকি সংস্থাকে দায়ী করে প্রতিবেদন জমা পড়ার এক দিন পর এই দাবি করা হলো।
নগরীর লালখান বাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই দাবি করেন দেশে ডিপোর মালিকায় থাকা স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।
সীতাকুণ্ডে ওই ডিপোতে গত ৪ জুন রাতে আগুন লাগে। কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর ডিপোর আগুন নেভে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম দুই দিনে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন। বুধবার পর্যন্ত দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ছয়জনের। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহত ৫১ জন।
এ ঘটনায় গঠিত বিভাগীয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়। সেদিন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ডিপো কর্তৃপক্ষসহ সব সরকারি তদারকি সংস্থার দায় পেয়েছি। আগুন লাগার কারণও আমরা আইডেন্টিফাই করেছি। ডিপোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ২০টি সুপারিশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আইএমডিজি কোডের সঙ্গে মিলিয়ে বিপজ্জনক কার্গোব্যাগ মেইনটেইন চুক্তিটি সংশোধনের সুপারিশ করেছি, বন্দরের নেতৃত্বে যে মনিটরিং কমিটি আছে, সেটাকে আরও সক্রিয় করার কথা বলেছি, অফডক প্রতিষ্ঠার জন্য যে ২৫টি দপ্তরের সনদ লাগে, সেগুলো এক জায়গায় আনার সুপারিশ করেছি।’
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা লজিক্যাল সিকোয়েন্স অনুযায়ী ব্যাখ্যা করে আমাদের মতামত দিয়েছি। এটা এভাবে বললে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। তবে বিস্ফোরণের পেছনে মালিক, সরকারি তদারকি সংস্থা ও শিপিং লাইনের দায় পেয়েছি আমরা।’
তবে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘২০১০ সালে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম ডিপো প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫টি সংস্থারই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়ে কমপ্লায়েন্স মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র হালনাগাদ রয়েছে। সব ধরনের লাইসেন্স ও ছাড়পত্রের কপি সরকারি সব তদন্ত কমিটিকে দেয়া হয়েছে।’
অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শতাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএম ডিপোর কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। ইতোমধ্যে ডিপোতে অক্ষত থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত ২৬ জন ও আহত ৪৩ জনের পরিবারকে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মে ও জুন মাসের বেতন ও কোরবানির বোনাস দেয়া হয়েছে। নিহত-আহতদের বাড়িতে, বাসায় বেতন-ভাতা ও বোনাসের টাকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
ওই সময় বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক মাইনুল আহসান, পরিচালক শফিকুর রহমান, ইয়াসিন মজুমদারসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর চারজনকেই কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কাউসার আলমের আদালতে বৃহস্পতিবার বিকেলে আসামিদের তোলা হয়। এর আগে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নূর নাহার ইয়াসিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি মো. নাঈম।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। তাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আসামিদের নেয়া হয় আদালতে।
আসামিরা হলো সিদ্ধিরগঞ্জের মোহাম্মদ নাঈম, মো. যুবরাজ, মো. দিপু ও মো. পিয়াস। তবে মামলার আরেক আসামি মোহাম্মদ রোহান পলাতক।
তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) আবু বকর সিদ্দিক এজাহারের বরাতে জানান, ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল নাঈমের। গত ২৯ জুন নাঈম তাকে সিদ্ধিরগঞ্জে রোহানদের বাড়ির ছাদে ডেকে নেয়। সেখানে আসামিরা তাকে ধর্ষণ করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনার পর বেশ কিছুদিন ভয়ে মেয়েটি পরিবারকে তা জানায়নি। অসুস্থ বোধ করলে গত বুধবার রাতে সে তার মা-বাবাকে ধর্ষণের বিষয়টি জানায়। এরপরই মামলার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু চালুর পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহন কমলেও ঈদের আগ মুহূর্তে বেড়েছে। ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমাতে এই নৌপথে নেমেছেন অনেকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২১ এবং আরিচা-কাজিরহাটে চারটি ফেরি চলাচল করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গত কয়েক দিনের তুলনায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে ফেরি ও লঞ্চঘাটে।
মোংলাগামী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘চাকরির জন্য মিরপুর ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। গাবতলী থেকে বাসে পাটুরিয়া হয়ে মোংলা যাতায়াত করি। গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে মোংলা যেতে বেশি সময় লাগে।’
সাতক্ষীরা যাবেন আবু হেনা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ঢাকার উত্তর সিটিতে চাকরি এবং বসবাস করি। আমাদের জন্য পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া যাতায়াতের জন্য সুবিধা, বিশেষ করে বড় উৎসবে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। রাস্তায় ভোগান্তি কম হয়, খুব একটা যানজটে পড়তে হয় না।’
মাগুরা, ঝিনাইদহ ও যশোরের রাসেল শেখ, পলাশ মিয়া ও হাবিবুল্লাহ জানান, ‘আমরা পাটুরিয়া দিয়ে যাচ্ছি। মাওয়া দিয়ে আমাদের উল্টা হয়। গাবতলী বা শ্যামলী থেকে সায়েদাবাদ যেতে গাড়িতে ভোগান্তি। সময় নষ্ট আর প্রচুর কষ্ট করতে হয়। পাটুরিয়া দিয়ে গেলে এত কষ্ট করতে হয় না। শুধু ফেরিঘাটে একটু সময় লাগে। এ কারণে উত্তর ঢাকার অধিকাংশ লোক এখনও পাটুরিয়া হয়ে গ্রামের বাড়িতে যায়।’
কমফোর্ট লাইন পরিবহনের চালক বিল্লাল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চাইলেই বাস নিয়ে পদ্মা সেতু পার হওয়া যায় না। ওই রুটের পারমিট লাগে। যারা রুট পারমিট পাইছে, তারা পদ্মা সেতু দিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা যারা রুট পারমিট পাই নাই, তারা এই রুটে চলাচল করছি।’
পাটুরিয়া লঞ্চ মালিক সমিতির সুপারভাইজার পান্না লাল নন্দি বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর তো যাত্রী একেবারে কমে গিয়েছিল। ঈদের আগে দেখে যাত্রী কিছুটা বেড়েছে। আগের মতো না হলেও ৬০ ভাগ যাত্রী এখন লঞ্চে পার হচ্ছে। কয়েক দিন আগে আধা ঘণ্টা পর লঞ্চ ছাড়া হলেও এখন ১০ মিনিট পরপর ছাড়া হচ্ছে। ৩৩টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, পদ্মার সেতুর উদ্বোধনের পর দৌলতদিয়ায় যাত্রী ও যানবাহন কমে গেলেও এখন বেড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক মানুষ ঈদে পাটুরিয়া দিয়ে যাতায়াত করছেন।
আরও পড়ুন:নিউজবাংলার প্রতিবেদন দেখে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুরে এক সঙ্গে জন্ম নেয়া তিন শিশুর পরিবারকে গাভী উপহার দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
একই সঙ্গে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের জন্য নিউজবাংলার প্রশংসাও করেছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রীর উপহার পেয়ে তিন সন্তানের মা লাভলী বেগম ও বাবা লিটন উদ্দিনের মুখে ফুটেছে হাসি।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর এক সঙ্গে চার মেয়ের জন্ম দেন লাভলী। জন্মের পরই এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। অন্য তিন মেয়ে লাবন্য, লাবিবা ও লামিশাকে নিয়ে শুরু হয় এই দম্পতির নতুন জীবনযুদ্ধ। কারণ তাদের ঘরে আগেই এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। এখন পাঁচ সন্তান নিয়ে কীভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন দিনমজুর লিটন।
পরিবারটির মানবেতর জীবনযাপন নিয়ে গত ২২ মার্চ নিউজবাংলায় একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার হয়। সেটি নজরে আসলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শিশুদের দুধ কেনার জন্য গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উপহার হিসেবে নিউজবাংলার প্রতিনিধির মাধ্যমে লাভলী-লিটন দম্পতিকে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন প্রতিমন্ত্রী।
এরপর পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ হিসেবে তিনি জেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে গত মঙ্গলবার একটি দুধেল গাভী কিনে দেন।
লাখ টাকার গাভী উপহার পেয়ে বিস্ময় যেন কাটছে না লিটন উদ্দিনের। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পলক ভাই এই গাভী দেয়াতে আমাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। ৪০০ টাকা দিন হাজিরায় কাজ করে আমি বাচ্চাদের মুখে দুধ তুলে দিতে পারতাম না। তাতে আমার খুবই কষ্ট হত। ঈদের আগে এত বড় একটা উপহার পাব, তা ভাবিনি। কখনও ১ লাখ টাকা দিয়ে গাভী কিনতে পারব, তা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি।
‘আমাদের পরিবারের সবাই আনন্দিত। এখন আর বাচ্চাদের দুধের কষ্ট থাকল না। দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন পলক ভাইকে নেক হায়াত দেন।’
মা লাভলী বেগম বলেন, ‘নিউজবাংলার খবর দেখে এর আগেও পলক ভাই ১০ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা দিয়ে বাচ্চাদের দুধ কিনেছিলাম। আবার ঈদের উপহার হিসাবে একটা গাভী কিনে দিয়েছে। এখন আর বাচ্চাদের দুধের চিন্তা নাই। গাভী থেকে ছয় লিটার করে দুধ হচ্ছে। এখন আমরা সন্তানসহ খুব ভাল আছি।’
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘গণমাধ্যম যে প্রকৃতই সমাজের দর্পণ, তা আমরা আরেকবার প্রমাণ পেলাম নিউজবাংলার মাধ্যমে। আমাদের নাটোরের একটি অস্বচ্ছল পরিবার, যাদের ঘরে চারটি সন্তান একসঙ্গে জন্মগ্রহণ করে।
‘সংবাদটি নিউজবাংলার মাধ্যমে জানতে পেরে তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে প্রাথমিকভাবে বাচ্চাদের দুধ কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা করি। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করার উদেশ্যে একটি গাভী কিনে দেই। এই ধরণের ছোট ছোট মানবিক কাজ আমাদের জেলাকে, আমাদের পুরো দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একটি স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তুলতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য