বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টরন্টো ফ্লাইট শুরুর সম্ভাব্য দিন ২৮ জুন। অথচ এখনও টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিতে পারছে না রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি। এক্ষেত্রে বাধা হয়ে আছে এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির পদ্ধতি-বিএসপি চালুর অনুমোদন না পাওয়া।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বুধবার কুর্মিটোলায় বিমান বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমন তথ্য জানান।
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট শুরু ইস্যুতে আমরা ২৮ জুন লক্ষ্য ধরেই অগ্রসর হচ্ছি। সেখানে ফ্লাইট চালু করতে সব লাইসেন্স ও এগ্রিমেন্ট আমরা পেয়ে গেছি।
‘আমরা যদি বলি যে এই তারিখ থেকে ফ্লাইট শুরু হবে তাহলে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে কেউ টিকিট কাটতে পারবেন। কিন্তু শুধু ওয়েবসাইট দিয়ে ব্যবসা হয় না। সেজন্য বিএসপির প্রয়োজন রয়েছে।
‘বিএসপির সঙ্গে এজেন্সির সম্পর্ক রয়েছে। কারণ এজেন্সি টিকিট না করলে সেই টাকা বিমানে যোগ হবে না। এটা ইন্ট্রিগ্রেট করতে বিজনেস লাইসেন্স লাগে, যা আমরা এখনও পাইনি। আর সেজন্য টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিচ্ছি না।’
টরন্টো রুটের ফ্লাইট চালানোর ক্ষেত্রে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে কেন স্টপওভার বা টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং হবে তারও ব্যাখ্যা দেন আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। বলেন, ‘আমরা যখন ফ্লাইটটি নিয়ে আসবো এটা টরন্টো থেকে ঢাকা চলে আসবে সরাসরি। যাওয়ার সময় ইস্তান্বুল হয়ে যাবে। আসার সময় ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা লাগবে। আর যাওয়ার পথে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলার সময়টাতে ইস্তান্বুলে টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং হবে।
‘আজ যুদ্ধ শেষ হলে কালই ফ্লাইট সরাসরি টরন্টো যাবে। আমরা যে ফ্লাইটটি নিয়ে গেলাম সেটি রাশিয়া হয়ে যায়নি বলে যাত্রী কম নিতে হয়েছে। যখন রাশিয়ার ওপর দিয়ে যাবো তখন আমরা কেবিন ফ্যাক্টর অনুযায়ী যাত্রী নিতে পারব।’
বিমানের এমডি বলেন, ‘এভিয়েশনের দৃষ্টিভঙ্গিতে এটা অবশ্যই ভায়াবল হবে। আমরা ইস্তান্বুল যাচ্ছি এজন্য যে যাওয়ার পথে আমরা একটি টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং করলাম। এটা আমরা যাত্রী নিয়েও যেতে পারতাম। তা আপাতত নিচ্ছি না। যাত্রী নিতে গেলে সেটার জন্য ল্যান্ডিং ফি, টাইমিং ফি এগুলো লাগবে। সে তুলনায় যাত্রী না নিয়ে গেলই বরং খরচ কম।
‘আরেকটি কারণ হলো এতে ক্রু লে-ওভার হবে। ইস্তাম্বুল দিয়ে গেলে আমাদের ক্রু-টাইম বেঁচে যাবে। ৬ থেকে ৮টি ক্রুর টাইমিং আমরা সেট করতে পারবো। এটা বিরাট ব্যাপার।
ইস্তাম্বুলে ঢাকা থেকে কয়েকটি ফ্লাইট যায়। ওখানে কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক পার্টস বা ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে সেটি আমরা ঠিক করতে পারব। এ জন্যই ইস্তাম্বুলে টেকনিক্যাল ল্যান্ডিংয়ে আমরা এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করব।’
গত ২৬ মার্চ টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৭০ যাত্রী নিয়ে উড়াল দেয় বিমানের প্রুভেন (পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক) ফ্লাইট। ঢাকা থেকে উড়াল দিয়ে টানা সাড়ে ১৮ ঘণ্টা আকাশে থেকে কানাডায় পৌঁছে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার।
দেশি এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে একটানা এতক্ষণ আকাশে ওড়ার নজির আর নেই। বিশ্বেও এমন নজির খুব কম। যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বলছে, যাত্রী নিয়ে সেভেন এইট সেভেন উড়োজাহাজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ একটানা ওড়ার রেকর্ড এটি।
ঢাকা থেকে আকাশপথে টরন্টোর যে দূরত্ব, এটিকে এভিয়েশনের পরিভাষায় বলা হয় ‘আল্ট্রা লং হওল’। বিশ্বে এ ধরনের গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চলার নজিরও খুব বেশি নেই।
এয়ারলাইন্সগুলো সাধারণত তৃতীয় কোনো গন্তব্যে স্টপওভার করেই ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর একটি বড় কারণ, এ ধরনের দূরত্বে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে উড়োজাহাজে পর্যাপ্ত জ্বালানি বহন করতে হয়। বাড়তি জ্বালানি বহন করার কারণে উড়োজাহাজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে কমিয়ে রাখা হয় যাত্রীসংখ্যা। এভিয়েশনের পরিভাষায় এটিকে বলে লোড পেনাল্টি।
ঢাকা থেকে সরাসরি টরন্টো যেতে সময় লাগে প্রায় ১৬ ঘণ্টা। এই রুটে বিমান ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ। এই উড়োজাহাজগুলোর জ্বালানি খরচ অন্যগুলোর চেয়ে অন্তত ২০ শতাংশ কম। সে সুবাদে এগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে একটানা ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় আকাশে উড়তে পারে।
সাড়ে ১৮ ঘণ্টা উড়াল দিয়ে বিমানের যে উড়োজাহাজটি টরন্টোয় গিয়েছিল, এই পথ পাড়ি দেয়ার জন্য সেটিতে বহন করা যেত সর্বোচ্চ ১৪০ যাত্রী। অথচ বিমানের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ২৯৮ জন।
১৬ ঘণ্টায় টরন্টো পৌঁছানোর রুট ব্যবহার করে যদি এই উড়োজাহাজটি দিয়ে সরাসরি টরন্টো ফ্লাইট করা হতো, তাহলে সেখানে সর্বোচ্চ বহন করা যেত ২৩০ যাত্রী।
ঢাকা থেকে জাপানের নারিতা হয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং কানাডার টরন্টো হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে আকাশপথে যুক্ত হতে বেশ কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছে বিমান। কিন্তু করোনার কারণে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
এ রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচল পুরোদমে শুরু হলে এয়ারলাইন্সটি তার বহরে থাকা লম্বা পাল্লার উড়োজাহাজগুলোর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিমানের বহরে লম্বা দূরত্বে উড়তে সক্ষম অন্তত ১০টি উড়োজাহাজ থাকলেও রুট না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সেগুলোর সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ও চারটি বোয়িং ৭৭৭ মডেলের উড়োজাহাজ। এর প্রত্যেকটি ১৬ ঘণ্টার বেশি টানা উড়তে সক্ষম।
লম্বা দূরত্বের মধ্যে বর্তমানে ফ্লাইট চালু রয়েছে শুধু লন্ডন রুটে। এ রুটে সরাসরি যেতে সময় লাগে প্রায় ১১ ঘণ্টা।
বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করা কোনো এয়ারলাইন্সেরই ঢাকা থেকে টরন্টোয় সরাসরি ফ্লাইট নেই। বিমান আশা করছে, নারিতা ও টরন্টোয় ফ্লাইট শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক আন্তর্জাতিক যাত্রী তারা পাবে।
পর্যটন ভিসা খুললে নারিতা, হজের পর মালেতে উড়ালের প্রস্তুতি
টরন্টো ছাড়াও আরও চারটি নতুন রুটে ফ্লাইট শুরুর প্রক্রিয়ার কথা জানান বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ‘নারিতার ক্ষেত্রে জাপান সরকার পর্যটন ছাড়া অন্য দুটি ক্ষেত্রে ভিসা চালু করেছে। পর্যটন এখনও ওপেন করেনি। এই রুটে ড্রিমলাইনার চালালে সেক্ষেত্রে আমাদের ক্যাপাসিটি দেয়া আছে ১৪০ জন। সঙ্গত কারনেই আমরা যাবো না। ২৯০ আসন ওপেন করার পর আমরা নারিতা যাবো। আমাদের দিক থেকে আমরা রেডি।’
আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘মালেতে গ্রীষ্মকালীন যে সূচি তাতে সে অনুযায়ী আজ থেকেই সেখানে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনার কথা। কিন্তু পারছি না। কারণ আমরা নিজস্ব ফ্লাইটে হজ যাত্রী নিচ্ছি। মালেতে ফ্লাইট পরিচালনা করলে হজযাত্রী বহনের জন্য ৫ তারিখ থেকে এটা বন্ধ রাখতে হতো। এ জন্য আমরা হজের পর মালেতে ফ্লাইট শুরু করব।
‘এরপর চেন্নাই ও বাহরাইনে আমরা ফ্লাইট পরিচালনা করবো। আমরা নতুন রুটের কথা ভাবছি।’
আরও পড়ুন:দেশে চলমান ডলার সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও সংকটের সমাধান হচ্ছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমন পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৫৩৩ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার। মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রির কারণে রিজার্ভ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মার্চ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এক সপ্তাহ আগে বা ২০ মার্চ তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ বিলিয়ন ডলারের উপরে। এরপর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির ছাড়পত্রের পর রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি বিল মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডলার সংকট কাটাতে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কারেন্সি সোয়াপ কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় প্রায় ১৭৫ কোটি ডলার রেখে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি তারল্য সহায়তা নিয়েছে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর জমা রাখা ডলার বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে চলতি মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) ও অন্যান্য আমদানি বিল পরিশোধের চাপে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।
ব্যাংকিং শিল্প-সংশ্লিষ্টরা সংবাদ মাধ্যমেক বলেন, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মুদ্রা অদলবদলের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও ডলার ফেরত নিচ্ছে।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান ও সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার ওয়াংচুক।
বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নেমে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছান তিনি। সেখানে বিশ্রাম ও দুপুরের খাবারের পর জেলা শহরের কাছে ধরলা সেতুর পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত প্রস্তাবিত ভুটান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
দুপুর ১টা ২০ মিনিটে সেখানে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রায় ২০মিনিট অবস্থান করে সবকিছু দেখেন এবং তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাজা স্থান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি এলাকাটি ঘুরে দেখেন এবং সবার সঙ্গে ছবি তোলেন। পরিদর্শনকালে জোন এলাকাটি তার পছন্দ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়াও ইকোনোমিক জোন এলাকায় অ্যাগ্রোবেজড ও ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ভুটানের বিনিয়োগকারী এবং বাংলাদেশের স্থানীয়দের চাহিদার ওপর নির্ভর করবে ইকোনোমিক জোনে কী ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে। পরে জোন এলাকা থেকে তিনি ১টা ৪০ মিনিটে সোনাহাট স্থলবন্দরের উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করেন।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী এম এ আরাফাত, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
রাজা জিগমে খেসার ওয়াংচুক বলেন, ‘জায়গাটি আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। আমি কাজ শুরু হলে আবারও এখানে আসব।’
এরপর বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনি সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকায় পৌঁছান। সেখানে ২০ মিনিট অবস্থানের পর তিনি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গোলকগঞ্জ দিয়ে ভুটানের উদ্দেশে ভারতে প্রবেশ করেন। সোনাহাট থেকে সড়ক পথে ভুটানের দূরত্ব প্রায় ১৬০ কিলোমিটার।
সফর শেষে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘উনি শতভাগ সন্তষ্ট। জায়গা দেখেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখেছেন। সবকিছু মিলিয়ে উনি সন্তষ্টি প্রকাশ করেছেন।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে কী ধরনের কার্যক্রম হতে পারে, সে বিষয়ে রাজা জানিয়েছেন, এখানকার স্থানীয় লোকজনের কী ধরনের চাহিদা রয়েছে এবং ভুটানের বিনিয়োগকারী লোকজনের কী চাহিদা রয়েছে- তার ওপর ভিত্তি করে এখানে কী ধরনের শিল্পকারখানা হবে তা নির্ধারণ করা হবে। তবে কৃষিনির্ভর ও ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১০/২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই সফরের মধ্য দিয়ে অনুন্নত কুড়িগ্রাম উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক জোনের জন্য জায়গা খুঁজতে বলেছিলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা সফলতার মুখ দেখছি।
‘এটি বাস্তবায়ন হলে এলাকার বেকার মানুষ কাজ পাবে। সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে পিছিয়ে পড়া এই জেলা।’
আরও পড়ুন:ঈদের ছুটির আগেই গার্মেন্টসসহ সব সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে হবে। ঈদের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। আর কোনোক্রমেই ঈদের ছুটি সরকারি ছুটির কম হবে না। সূত্র: ইউএনবি
ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৭৭তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বুধবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক উভয়ের মধ্যে আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে যাতায়াতের সুবিধা অনুযায়ী আসন্ন ঈদের ছুটি দেয়া হবে।’
সভায় অংশ নেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন, শ্রম অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবির, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ বাদল এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর তা আমদানি করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (টিসিবি)।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
তবে বৈঠকে পেঁয়াজের দাম প্রকাশ করা হয়নি। কারণ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আবারও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আসবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ভারতের ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে জিটুজি (সরকার বনাম সরকার) ভিত্তিতে এসব পেঁয়াজ আমদানি করবে টিসিবি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের জানান, ক্রয় প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আসার পর পেঁয়াজের দাম প্রকাশ করা হতে পারে।
চালু হয়েছে শিল্প গোষ্ঠী কল্লোল গ্রুপ অফ কোম্পানির নিজস্ব ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম কল্লোলমার্ট ডটকম।
বাংলাদেশে অন্যতম দ্রুত-সম্প্রসারণশীল ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী সব পণ্যের সমাহার নিয়ে অনলাইন জগতে প্ল্যাটফর্মটির যাত্রা শুরু হয়।
এর মধ্য দিয়ে ভোক্তাদের কাছে কম মূল্যে মানসম্পন্ন নিজস্ব পণ্য সহজলভ্যে পৌঁছে দিতে চায় কল্লোল গ্রুপ।
এখন থেকে ই-কমার্স সাইট ‘kallolmart.com’ এর মাধ্যমে ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভোক্তারা দেশের যেকোনো জায়গা থেকে ঘরে বসে সহজেই কল্লোল গ্রুপের জেট ডিটারজেন্ট পাউডার, জেট লিকুইড, ফে টিস্যু, ফে এয়ার ফ্রেশনার, ফে কটন বাডস, ফে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মামা নুডলস, নিউট্রি-সি, সিস্টেমা টুথ ব্রাশ, মামা ডিশ ওয়াস, উজালাসহ যেকোনো পণ্য কিনতে পারবেন।
কল্লোল গ্রুপ অফ কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ভোক্তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই তৈরি হয় আমাদের নিজস্ব ই-কমার্স সাইট কল্লোলমার্ট ডটকম। এ ছাড়াও ভোক্তারা এখন তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও প্রিয় ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো কল্লোল মার্টের মাধ্যমে আকর্ষণীয় মূল্যে দ্রুত ও নিরাপদে নিজেদের দোরগোড়ায় পেতে পারেন।’
কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের হেড অফ ডিজিটাল মার্কেটিং রিফাত আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘরে ঘরে কল্লোল গ্রুপের পণ্য পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যেই আমাদের নিজস্ব ই-কমার্স সাইট kallolmart.com-এর যাত্রা শুরু। এ ছাড়াও কল্লোল মার্ট ভোক্তাদের নিজস্ব ও প্রকৃত পণ্যের নিশ্চয়তাও দিচ্ছে, যা তাদের গুণগত মান নিশ্চিত করবে।
‘গ্রাহকদের সর্বোত্তম সেবা বিবেচনায় বর্তমানে আমরা দেশজুড়ে ফ্রি হোম ডেলিভারির সুবিধা দিচ্ছি এবং পণ্য বুঝে পাওয়ার পরই গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। খুব শিগগিরই অনলাইন পেমেন্ট সুবিধা যুক্ত করা হবে।’
রমজানে চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে আমদানি করা আলুর আরেকটি চালান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে এসেছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ৩২টি ট্রাকে এক হাজার টন আলু নিয়ে আসা হয়েছে বেনাপোলে।
আলুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ইন্টিগ্রেটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস। আলুর চালান বন্দর থেকে খালাস নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছে ট্রান্সমেরিন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ১৩ ও ১৪ মার্চ ২০০ টন করে এবং ১৯ মার্চ ৩০০ ও ২৪ মার্চ রাতে ৩০০ টন আলু আমদানি করা হয়।’
ট্রান্সমেরিন লজিস্টিক লিমিটেড সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘চারটি চালানে ভারতীয় ৩২টি ট্রাকে এক হাজার টন আলু আমদানি করা হয়। প্রতি টন আলুর আমদানি খরচ পড়েছে ১৯৪ ডলার।’
এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমদানি করা আলুর তিনটি চালানের ৭০০ টন ইতোমধ্যে বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। শেষ চালানের ৩০০ টন বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে।
‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খালাসের অনুমতি চাইলে দ্রুত ছাড়করণে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
এর আগে গত বছরের ২ ডিসেম্বর ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ৭৪ টন আলু আমদানি করা হয়। এরপর চলতি মাসে চারটি চালানে আরও এক হাজার টন আলু আমদানি করা হয়েছে।
পাঠাও-বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, নিয়ে এলো ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা ‘পাঠাও পে’। এটি একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা, যার লক্ষ্য বাংলাদেশের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ল্যান্ডস্কেপ বদলে দেওয়া। পাঠাও পে-এর বিশাল পরিধির সেবা আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করবে, যাতে এর ব্যবহারকারীগণ যেভাবে চান সেভাবে লেনদেন করতে পাবেন, প্রয়োজনে অর্থের যোগান পাবেন এবং যেভাবে উচিত সেভাবে নিজের আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই সফট লঞ্চে, শুধুমাত্র ছোট পরিসরে মনোনীত ইউজারদের পাঠাও-এর ইনার সার্কেল-এ যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে, যারা পাবেন পাঠাও পে-এর প্রিমিয়াম ফিচারগুলোর এক্সক্লুসিভ এক্সেস ও এক্সাইটিং সব অফার।
পাঠাও পে বিভিন্ন সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে পেমেন্ট এক্সপেরিয়েন্সকে দ্রুত, ফ্লেক্সিবল এবং ঝামেলাহীন করবে। ব্যবহারকারীগণ পাবেন কিছু নতুন ধরনের সুবিধা, যেমন: Split Pay-এর মতো আকর্ষণীয় ফিচার, যা একাধিক ব্যবহারকারীদের নিজেদের মধ্যে বিলটি ভাগ করে পরিশোধ করার সুবিধা দিবে। এছাড়াও রয়েছে ATOM, যা ব্যবহারকারীদের পাঠাও পে ব্যবহার করে ওয়ালেটে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলেও সরাসরি সোর্স অফ ফান্ড থেকে সেই সময়েই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিবে। ইউজারগণ তাদের কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার বা নগদ-এর মাধ্যমে সহজেই ফান্ড অ্যাড করতে পারবেন। ফান্ড জমা হলেই, ইউজার তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কার্ড বা পার্টনার এটিএম-এ ক্যাশআউট অপশন থেকে ক্যাশ টাকা তুলতে পারবেন।
এই সফট লঞ্চে থাকছে ব্যবহারকারীদের জন্য বিশাল ক্যাশব্যাক পাওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগ। প্রত্যেক ব্যবহারকারী পাঠাও পে-এর মাধ্যমে পাঠাও সার্ভিসের জন্য পেমেন্ট করে পাবেন ৫৫০ টাকা পর্যন্ত, ৫০% ক্যাশব্যাক। পাঠাও ফুড-এর দু’টি অর্ডারে পাঠাও পে দিয়ে পেমেন্ট করে পাবেন সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি অর্ডারে ১২৫টাকা পর্যন্ত)। একইভাবে, পাঠাও কার-এর দু’টি রাইডে পাবেন সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি রাইডে ১০০টাকা পর্যন্ত), পাঠাও বাইক-এর দুটি রাইডে পাবেন সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি রাইডে ৫০ টাকা পর্যন্ত)। ইউজার এই ক্যাশব্যাক পাবেন ক্রেডিট ট্রানজেকশন হওয়ার পরবর্তী কার্যদিবসে।
দেরি না করে এখনই আপডেট করে ফেলুন পাঠাও অ্যাপ অথবা জয়েন করুন ইনার সার্কেল-এর ওয়েটলিস্টেঃ https://forms.gle/nJZFG4jGtF61sEME8
এই লঞ্চের মাধ্যমে পাঠাও পে, পাঠাও-এর ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের পরিধি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করেছে, এবং সার্বজনীন ও সহজতর ফিন্যান্সিয়াল ল্যান্ডস্কেপে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, যা বাংলাদেশী ব্যবহারকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য-পূর্ণ, সুবিধাজনক হয়ে আর্থিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠাও বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে নতুন সুযোগ সৃষ্টি, সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন ও জীবনমানের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। পাঠাও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম; রাইড শেয়ারিং, ফুড ডেলিভারি ও ই-কমার্স লজিস্টিকস সেবা খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। পাঠাও আপনাদের সাথে আছে ১ কোটিরও বেশি গ্রাহক এবং ৩ লাখ চালক-ডেলিভারি এজেন্ট, ১ লক্ষ মার্চেন্ট ও ১০ হাজার রেস্টুরেন্টের সুবিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে পাঠাও এবং তাঁদের উপার্জনক্ষম করে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে ও অবদান রাখছে। প্রেস রিলিজ
মন্তব্য