চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অফিস পদে নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে পার পেলেও মৌখিক পরীক্ষায় ধরা পড়েন ১৫ পরীক্ষার্থী।
বুধবার মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসলে তাদের আটক করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের ৫ জনকে অর্থদণ্ড ও ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
আটকরা হলেন, মো. ইবরাহীম, নাইমুল ইসলাম, মুরশেদুল আলম, মো. জুনায়েদ, বিপ্লব সুশীল, মনিদীপা চৌধুরী, মোজাম্মেল হোসেন, আলী আজগর, তম্ময় দে, নন্দন দাশ, মান্না দাশ, প্রীতম চৌধুরী, শেখর দাশ, রহিম উদ্দিন ও আসাদুজ্জামান।
বুধবার সকাল দশটা থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেলে তাদের আটকের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান।
তিনি জানান, মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা এই ১৫ জন পরীক্ষার্থীর খাতা যাচাই করে প্রাপ্ত নম্বরের তারতম্যের পাশাপাশি হাতের লেখায় অমিল পাওয়া যায়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা প্রক্সির বিষয়টি স্বীকার করেন। লিখিত পরীক্ষায় প্রবেশপত্র ফটোশপ করে অন্য প্রার্থীকে দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করেন তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীরা টাকার বিনিময় তাদের হয়ে লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসেন।
মানবিক পুলিশ গড়তে কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ এবং বাহিনীটিকে সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তুলতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করতে হবে। তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে।
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘জনমুখী পুলিশ সেবা নিশ্চিতকল্পে পুলিশ কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন তিনি।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, থানাপর্যায় থেকে পুলিশকে জনসম্পৃক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে মাঠপর্যায়ের পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক স্থাপন করে নাগরিক কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী প্রমুখ।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই ‘লাপাত্তা’ ছিলেন সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিমেবি) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। প্রায় আড়াই মাস পর বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই তিনি নিজ কার্যালয়ে ফেরেন। এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে উপাচার্য কার্যালয়ে এসেছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাসে জড়ো হন বেতন বঞ্চিতরা। এক পর্যায়ে চাকরি নিয়মিতকরণ ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর উপাচার্য ১৫ দিনের মধ্যে দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলে তার অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান হয়।
এর আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও বিষয়টি সুরাহা করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন উপাচার্য, ট্রেজারার, সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন ভিসি অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেও দেখা মেলেনি তার। অথচ অজ্ঞাত স্থান থেকেই তিনি গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হিসেবে মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলামকে নিয়োগ দেন।
সূত্র জানায়, ডিন হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিএনপি নেতা ডা. নাজমুল ইসলামের আশ্বাসে ভিসি অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে আসেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, উপাচার্য বৃহস্পতিবার সকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ চৌধুরী জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক বলতে কেউ নেই। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ তিনজনই লাপাত্তা। আজ যুবলীগ-ছাত্রলীগকে নিয়ে ভিসি ক্যাম্পাসে আসার খবর পেয়ে তারা অবস্থান নেন।
এ বিষয়ে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে আপস করবো না। তারা আমাদের কাছে আশ্রয় পাবে না। আর ওনাকে (ভিসি) টেককেয়ার করা কিংবা সহযোগিতার প্রশ্নই আসে না।’
স্বৈরাচারের দোসর বললেও ভিসির সইয়ে ডিন পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০তম সিন্ডিকেটের সভায় আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি সই করেছেন মাত্র। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটা এমন কিছু না। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে নাম পাল্টে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নঈমুল হক চৌধুরী নিয়োগ বাণিজ্যসহ ব্যাপক জালিয়াতি করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়াদ শেষ হলে প্রথমে চাকরি হারান রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নঈমুল হক চৌধুরী। এরপর একই পথে যেতে হয় উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকেও।
প্রথম উপাচার্যের মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। ডা. এনায়েত হোসেন যোগ দেয়ার আগেই আগের উপাচার্যের অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা স্থগিত করার নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো বেতন-ভাতা পাননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নিয়োগের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা দূর করার আশ্বাস দেন ভিসি ডা. এনায়েত। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দুই বছর হলেও এসবের কোনো কিছুই করেননি তিনি।
এ অবস্থায় সৃষ্ট জটিলতা ও বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন চলাকালেই ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ লাপাত্তা হয়ে যান। গত মাসে পদত্যাগ করেছেন রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. ফজলুর রহমান। তার বিরুদ্ধেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে ভিসি ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার জোটসঙ্গী দলের প্রধানদের প্রতীকী ফাঁসি দেয়া হয়েছে। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী নেতা ওবায়দুল কাদের, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় পার্টির জি এম কাদের।
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে টিএসসির পায়রা চত্বরে সোমবার দুপুরে ‘ছাত্র-জনতার ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে করে এই প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ পরিষদের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করার আগে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কেউ পা হারিয়েছেন, হাত হারিয়েছেন আর কেউ চোখ হারিয়েছেন। ভাই তার বোন হারিয়েছেন, পিতা তার সন্তান হারিয়েছেন, মা তার ছেলেকে হারিয়েছেন। তারা কেউ কি আর কখনও ফিরে আসবে? তাহলে আওয়ামী লীগ কোন যুক্তিতে ফিরে আসতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের যেসব নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
‘মেট্রো রেলে আগুন না দিলে কিংবা পুলিশ হত্যা না করা হলে এতো সহজে বিপ্লব অর্জন করা যেত না’ মন্তব্য করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলামকে শো-কজ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসিব আল ইসলাম (সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক-শোতে মেট্রো রেলে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
এতে আরও বলা হয়, হাসিব আল ইসলামকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তার আপত্তিকর মন্তব্যের যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসির ‘প্রযত্নে বাংলাদেশ’ টক-শোতে অংশ নিয়ে হাসিব এমন মন্তব্য করেন। টক-শোতে হাসিব আল ইসলামের পাশাপাশি বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনি অংশগ্রহণ করেন।
নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করে জনগণের হাতে সেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির৷
রোববার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে মতবিনিময়কালে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক এই মন্তব্য করেন৷
জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদের মুখ্য দালাল ছিল মন্তব্য করে নাছির উদ্দীন বলেন, জাতীয় পার্টি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের দুষ্কর্মের সহযোগী হওয়ার কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে। তবে আমি জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানাই।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই মুহুর্তে মব কালচার সৃষ্টি করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং বাংলাদেশ বিরোধী বিদেশি গোষ্ঠীগুলোর পাতানো ফাঁদে পা দেয়াটা হবে অদূরদর্শী আচরণ।’
মতবিনিময় সভায় ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল কোনো দখলদারত্ব, নির্যাতন, গেস্টরুম কালচার, খুন, ধর্ষণের রাজনীতি প্রশ্রয় দেবে না। ছাত্রদল একুশ শতকের উপযোগী মেধাভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
‘ছাত্রদলের রাজনীতিতে নারী শিক্ষার্থীদের যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা রাজনীতিতে অধিক হারে নারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ছাত্রীদের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
মতবিনিময় শেষে নাসির উদ্দীন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন৷
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোন না কেন ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না।
শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের খুব ভালো সম্পর্ক। তার বন্ধু দু’দলের মধ্যেই আছেন। সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর।
‘ড. ইউনূস একজন গ্লোবাল লিডার। তাই যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোন না কেন তা আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশের) সম্পর্ক ভালো। আমরা চাচ্ছি তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তাতে আমরা সারা বিশ্বের সাপোর্ট পেয়েছি। পতিত স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে ভারত থাকা সত্ত্বেও তা কোনো কাজে আসেনি। জনগণ জেগে উঠলে কোনো অপশক্তিই টেকে না।’
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদ নয়জন সংখ্যালঘু মারা যাওয়ার বিষয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় এখানে রিলিজিয়াস মোটিভেশনের চেয়ে পলিটিক্যাল অ্যাফিলিয়েশন বা অন্য কোনো কারণ ছিল। লবিস্টরা হয়তো এ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করেছেন। বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বক্তব্য ভোটের রাজনীতির কৌশল। কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আমেরিকায় অবস্থানরত ভারতীয়রা বেশিরভাগই কমলাকে সমর্থন দেয়ায় ট্রাম্প ভারতীয় হিন্দুদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘আগামী মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না’ শীর্ষক ছায়া সংসদে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, প্রফেসর ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হাসিব, আশিকুর রহমান অপু ও মো. আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।
রাজধানী ঢাকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রেখেই আলাদা প্রশাসন ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
ঢাবির অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠনের দাবিতে ফের দু’দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার ঢাকা কলেজের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী সাগর।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের মূল দাবি থেকে সরে আসব না। সাত কলেজের সমন্বয়ে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি, সেটি আমাদের থাকবেই। মন্ত্রণালয় সাত কলেজের বিষয়ে যে কমিটি করেছে, সে কমিটি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করার কথাও বলেন এই শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাত কলেজ নিয়ে যেকোনো ধরনের চক্রান্ত প্রতিরোধ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ‘অবিবেচক’ বক্তব্য প্রত্যাহার, কমিটি বাতিল, কমিশন গঠন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
একইসঙ্গে সাত কলেজের সব ক্যাম্পাসে দাবির পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে জানান যে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকছে। তবে তাদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে তাদের বিষয়টা আলাদাভাবে দেখা হবে।
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সাত কলেজের প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন। তাদের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজ আলাদাভাবে করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘সাত কলেজের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার ও ডেডিকেটেড কর্মকর্তা থাকবেন। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে কথা বলে করা হবে।’
এ বিষয়ে শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বস্তুত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপদেষ্টাদের বৈঠকে সাত কলেজের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রেস সচিবের এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মন্তব্য