সাত দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে জনসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে ‘যুগপৎ ধারা’য় আন্দোলনে একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে দুই ঘণ্টার রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠান শেষে এ কথা জানান তিনি।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে এই বৈঠক হয়। সংলাপে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিএনপিকে সাত দফা প্রস্তাব দেয়া হয়। ক্ষমতায় গেলে কী কী করতে হবে, সেই বিষয়গুলো সন্নিবেশিত আছে এই সাত দফায়।
দুপুর সোয়া ১২টায় হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন মির্জা ফখরুল। সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়।
সংলাপে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ বিদ্যমান সংবিধানের মৌলিক সংশোধনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে দেশের সব মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য’ একমত হওয়ার কথা জানান ফখরুল। জানান, যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা যেটা শুরু করেছি, সেটা অতি দ্রুত শেষ করে একটা যৌক্তিক পর্যায়ে এসে পৌঁছতে পারব এবং এই সরকার যারা আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে, যারা আমাদের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে হত্যা করছে, তাদের বিরুদ্ধে একটা ফলপ্রসূ আন্দোলন করে এতে জয়যুক্ত হতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, ‘যে বিষয়গুলোতে আমরা একমত হয়েছি তা হচ্ছে যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে। সংসদ বাতিল করে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। তাদের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, তাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমেই ভবিষ্যতে পার্লামেন্ট ও সরকার গঠিত হবে।’
গণসংহতির সঙ্গে ধারণাগত কোনো পার্থক্য নেই বলেও জানান বিএনপি নেতা। বলেন, ‘আমাদের আলোচনায় মৌলিক কোনো মতভেদ দেখিনি। তবে নির্বাচনকালীন সরকারের নামের বিষয়ে মতভিন্নতা থাকতে পারে, অন্তর্বর্তীকালীন না নিরপেক্ষ সরকার। এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে এটা স্পষ্টভাবে মনে করি, বর্তমান সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন দরকার। এইভাবে যদি একটা জাতীয় রূপরেখা আজকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে হাজির হয়, তাহলে জনগণ নতুন করে আন্দোলিত হবে। একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারব।’
সাকি মনে করেন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক যে ক্ষমতা আছে, যেটার ওপরে ভর করে বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। এই ক্ষমতাকাঠামোর বদল দরকার। সে জন্য আমরা সাংবিধান সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, নিম্ন আদালতকে উচ্চ আদালতের অধীনস্থ করতে হবে, সমস্ত দিক থেকে তার নিয়োগ-বদলি, পদোন্নতিসহ …।
‘উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি করতে হবে এবং জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন করার কোনো রকম তৎপরতা কিংবা কোনোভাবেই জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা যাবে না।
‘আমরা মনে করি এই সরকারের পতনের পরে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রটি কীভাবে চলবে, এই বিষয়ে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুণগত রূপান্তর বা গণতান্ত্রিক রূপান্তর, নতুন একটা গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত তৈরির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নতুন স্বপ্ন তৈরি হতে পারে।’
গণসংহতির সাত প্রস্তাব
১. আইন বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য স্বচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি এবং জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন না করার কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন। নিম্ন আদালতের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সার্বিক কার্যক্রম তদারকির ক্ষমতা উচ্চ আদালতের অধীনস্ত করা, সব গণবিরোধী, নাগরিক অধিকার খর্বকারী, উপনিবেশিক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সৃষ্ট আইন যা এখনো বলবৎ আছে সেসব আইন বাতিল করে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও স্বাধীন দেশের উপযোগী আইনকানুন ও আইনি কাঠামো তৈরি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য আইন প্রণয়ন।
২. সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যেমন নির্বাচন কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল, মহা হিসাব-নিরীক্ষক, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ইত্যাদিতে সাংবিধানিক কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ পদ্ধতি প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার করা। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে গঠিত সংসদের সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধিদের দ্বারা এই কমিশন গঠিত হবে।
৩. রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট বিধান প্রণয়ন। সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন ও প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার।
৪. সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রবর্তন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রচারণায় টাকার খেলা, পেশিশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজি, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ব্যবহারের পথ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার।
৫. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার করে সংসদ সদস্যদের (কেবলমাত্র সরকার গঠনে আস্থা ভোট ও বাজেট পাসে ভোট প্রদান ব্যতিরেকে) স্বাধীনভাবে জনগণের প্রতিনিধিত্ব ও সকল বিলে ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করা। সরকার ও দলের ক্ষমতাকে পৃথকীকরণে আইন প্রণয়ন।
৬. বিদ্যমান সংবিধানের ‘স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার বদলে স্থানীয় সরকারব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নাগরিক সেবা এবং এর প্রয়োজনীয় বাজেট প্রণয়ন, কর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার।
৭. দেশের সমস্ত অর্থনৈতিক ও ব্যবস্থাপনাগত আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রাণ-প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইনি বিধান। জাতীয় সম্পদ ব্যবহার ও জাতীয় নিরাপত্তা ব্যতীত সকল আন্তর্জাতিক চুক্তি সংসদে আলোচনা বাধ্যতামূলক করা। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত অঙ্গীকার অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আইনি সুরক্ষা এবং ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও লিঙ্গীয় পরিচয় নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জীবন সম্পদ মর্যাদার নিরাপত্তা বিধান।
আরও পড়ুন:এপ্রিল মাসকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয় উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সময়সূচি পুনঃবিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকার বাস্তবতার ভিত্তিতে এই বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করবে।’
আজ মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো (এপ্রিলের প্রথম দিকে নির্বাচন) নিয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। আমরা আশা করি, সরকার এই বিষয়টি বাস্তবতার আলোকে বিবেচনা করবে।’
অন্তবর্তী সরকার যে সময়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে, তা সঠিক নয় বলেও দাবি এই বিএনপি নেতার।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রথম দিনই বলেছি যে, এই সময় নির্বাচনের জন্য ভালো নয়। রমজান মাস শেষ হবে, ঈদ হয়ে যাবে, তারপর কয়েকদিন পর নির্বাচন হবে। একটু ভাবুন, রমজান মাস জুড়ে প্রার্থী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা কী ধরনের পরিস্থিতিতে পড়বেন।’
ফখরুল আরও বলেন, তিনি এখন থেকেই চিন্তিত যে প্রতিদিন ইফতার পার্টি আয়োজন করতে হবে, যা নির্বাচনী ব্যয় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করবে।
তিনি রমজান মাসে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অসুবিধাগুলো তুলে ধরে বলেন, বিশেষত তীব্র গরম এবং বৃষ্টিপাত বা ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, তীব্র গরমের কারণে নির্বাচনী সমাবেশের জন্য লোকজন জড়ো করা সম্ভব হবে না। ‘কর্মসূচিগুলো রাতের দিকে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, অতীতে দুটি বিতর্কিত নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশে প্রায় সব জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দল বলেছে যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব, এবং আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে এটি একটি বাস্তবসম্মত বিকল্প।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, কারণ এটি নির্বাচনমুখী দল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিপ্লবী দল না, আমরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চাই।’
ফখরুল বিএনপির সংস্কার না করার যে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তা খণ্ডন করে বলেন, ‘এটা মিথ্যা প্রচারণা।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপি প্রথম দল হিসেবে ভিশন-২০৩০ কর্মসূচি তুলে ধরে এবং গণঅভ্যুত্থানের আগেই ৩১ দফা সংস্কারের খসড়া উপস্থাপন করেছিল।
ফখরুল সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্মীদের জাতিকে বিভক্ত না করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশ একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ: আমরা গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই এবং আমরা চাই দেশটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত হোক। আমরা ভোট দিতে চাই, আমাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করতে চাই এবং সংস্কার দেখতে চাই। সুতরাং, অযথা বিভেদ সৃষ্টি করবেন না।’
ফখরুল সতর্ক করে বলেন, দেশে কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি হলে তা বিদেশি শক্তি এবং ষড়যন্ত্রকারীদের দেশের ক্ষতি করার সুযোগ করে দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠক রাজনীতিতে এই মুহূর্তে প্রধান ইভেন্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও এই ইভেন্টের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাদের সাক্ষাতের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ বৈঠকের মাধ্যমে রাজনীতির নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ অনেক কিছুর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এখন এটা নির্ভর করবে আমাদের নেতারা সেটাকে কীভাবে নেবেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে সম্পূর্ণ এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এই সাক্ষাৎকারে তার সাফল্য প্রার্থনা করছি।
বৈঠকের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা না থাকলেও আগামী নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা এর মাধ্যমে সমাধান হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাদের যথেষ্ট রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। তবে, তারা প্রত্যেকে নিজ-নিজ সেক্টরে যথেষ্ট অভিজ্ঞ।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে বলে জাতীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ঘোষণা গোটা জাতিকে হতাশ করেছে বলে অভিহিত করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি।
শনিবার (৭ জুন) সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছে দলটি।
বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ও জনতার বিপুল ত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের অযৌক্তিক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।’
এ সময় রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি।
এর আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে বিবৃতিটি দেওয়া হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে এই ঘোষণা দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ। বারবার গুম, হত্যা, কারাবরণ, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েও তারা ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ঐকমত্য গঠনের কথা বললেও অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
তারা বলেন, ‘এ কারণে বৈঠকে মনে করে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না; তা নিয়ে জনগণ উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাষ্যে, এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন দিলে তা আবহাওয়াজনিত জটিলতা ও রমজান মাসে প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে, যা পরবর্তীতে নির্বাচনের সময়সূচি পেছানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়— এমন কোনো সুস্পষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করা হয়নি।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাণী দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য এক পর্যায়ে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে রূপ নেয়।
দীর্ঘ ওই ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস নিজেই স্বীকার করেছেন বন্দর ও করিডর ইস্য অন্তবর্তী সরকারের তিনটি নির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
এ ছাড়াও ওই ভাষণে ব্যবহৃত কিছু শব্দ রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা অতিক্রম করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির নেতারা।
চোখের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে আজ শুক্রবার রাতে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি ব্যাংককের রুটনিন আই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী মির্জা ফখরুলের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান শুক্রবার দুপুরে বাসস’কে জানান, দলের মহাসচিব রাতে দেশে ফিরবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রাত ১১টায় ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন মির্জা ফখরুল। তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি রাত ১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
এর আগে, চোখের জটিলতাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে গত ১৩ মে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।
নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে অকার্যকর ও গতানুগতিক এবং একতরফা বলে সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও দরিদ্রতার মতো অর্থনৈতিক দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলো সমাধানে এবারের বাজেট সুর্নিদিষ্ট কৌশল দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) বাজেট নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে অন্তর্বতী সরকারকে। আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জড়িত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট তৈরি করবে, যাতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ন্যূনতম স্তর তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতা ও যুব প্রতিনিধিদের নিকট থেকে মতামত নিতে পারত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি এমনটি হতো, তাহলে বাজেট একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হত। এটি দেশের বিভিন্ন অংশের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত করত। কিন্তু সেই সুযোগটি ব্যবহার করা হয়নি। ফলে, বাজেটটি একপেশে, অংশগ্রহণমূলক নয় এবং গতানুগতিক হয়ে গেছে। এতে নতুন চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন নেই।’
বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বাজেট চূড়ান্ত করার আগে এই ধরনের আলোচনা আরও জরুরি ছিল, যেহেতু ২০২৫-২৬ অর্থবছরে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের উপর তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে তাদের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করে বিএনপি।
সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে।
বাজেট সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানকে মাথায় রেখে তৈরি করা উচিত উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট সেই বৈষম্যমুক্ত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়নি, যার জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর যেমন উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, দরিদ্রতা বৃদ্ধি, কম বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের কম সুযোগের স্পষ্ট সমাধান দেওয়া হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, বাজেটটি অপ্রয়োজনীয় এবং দুর্নীতিপ্রবণ প্রকল্পগুলোতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে, অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে গুমের অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিন এই অভিযোগ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য যাদের নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন সালাহউদ্দিন। এ সময়ে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ আইনজীবীরা সাথে ছিলেন। পরে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ তুলে দেন তিনি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিনকে তুলে নেওয়া হয় বলে তখন অভিযোগ করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। অন্যদিকে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।
সে সময় সালাহউদ্দিন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান। দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা ছিলেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম। পরে পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা হন নাহিদ। তবে নাহিদ ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) উপদেষ্টা পদে থাকাবস্থায় লক করে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এনআইডির তথ্য ফাঁসের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি।
তবে অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় ৫ দিন পর আনলক করে দেওয়া হয় নাহিদের এনআইডি।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগকে এনটিএমসি জানায়, ‘ভণ্ডবাবা’ গ্রুপের অ্যাডমিন নাহিদ ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তার এনআইডির নম্বরও দেওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগকে। এরপর তদন্তে নামে অনুবিভাগ। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর লক করা হয় নাহিদের এনআইডি।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, ‘ভণ্ডবাবা’ হোয়াটসঅ্যাপের কোনো গ্রুপ নয়। এটি টেলিগ্রামের একটি গ্রুপ। আর নাহিদ ওই গ্রুপের অ্যাডমিন নন।
তার এনআইডির বিপরীতে কোনো তথ্য পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায়, গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এনআইডি আনলক করে দেয় সংস্থাটি।
এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, যেহেতু এই ভোটার কর্তৃক ডাটা সরবরাহ করার বিষয়ে কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি এবং অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, সেহেতু মো. নাহিদ ইসলামের এনআইডি আনলক করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নথি উত্থাপন করা হলে ২২ সেপ্টেম্বর এনআইডির মহাপরিচালক তখন এনআইডিটি আনলক করার সিদ্ধান্ত দেন।
এভাবেই পাঁচ দিনের জন্য লক থাকে সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের এনআইডি।
বর্তমান এনআইডি মহাপরিচালক এসএম হুমাযুন কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, সে সময় আমি ছিলাম না। তাই সেটি আমার বিবেচনার বিষয় নয়। আর পুরোনো বিষয় যেটির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সেটির মতামতও দিতে চাই না।
মন্তব্য