বাংলাদেশকে জ্বালানি ও গম দিতে চায় রাশিয়া। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ভয়ে এখনো এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা। অবশ্য প্রতিবেশী দেশ ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনছে। এ অবস্থায় রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয় এ দুটি পণ্য কিনতে বুদ্ধি-পরামর্শ চেয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
আসামের গুয়াহাটিতে নদী বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনক্লেভে যোগদান শেষে রোববার দেশে ফিরে পরদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ও উদ্ভূত পরিস্থিতির উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়। আমরা বরাবরই যুদ্ধের বিপক্ষে। করোনার পর আবার নতুন কোনো ঝামেলা নিতে চায় না বাংলাদেশ। যত তাড়াতাড়ি এর শেষ হয় তত ভালো।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের জ্বালানি ও গম দিতে চায়। আমরা এখনো তা নেইনি। আমরা তো ভয়ে। নিষেধাজ্ঞার ভয়ে। আমি তাদের কাছে (জয়শঙ্করের কাছে) ফন্দি-ফিকির জানতে চাইলাম। বললাম- তোমরা তো নিচ্ছ। কিভাবে নিচ্ছ! তারা জানাল, ফাঁক-ফোকর বের করেছে। আমিও বুদ্ধি চাইলাম।
‘আমাদের তো এনার্জি দরকার। এটা আমাদের বড় সমস্যা। তারা (পশ্চিমারা) কথায় কথায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। দেখেন না, তারা প্রতিদিনই কিছু না কিছু আবদার নিয়ে আসে। আমরা তাদেরকে বলতাম ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। এখন উন্নয়নের জন্য এক পয়সাও দেয় না। ডেভেলপমেন্ট যাতে বাধাগ্রস্ত হয়, সেজন্য চেষ্টা করছে। খালি আসে বুদ্ধি দিতে। আপনারাও তাদেরকে উৎসাহ দিতে থাকেন।’
মোমেন বলেন, ‘ভারত বড় দেশ। তাদের সবাই ভয় পায়। আমরা দরিদ্র, ছোট দেশ। আমাদের ভয়েই থাকতে হয়।
‘আমরা আলোচনা করেছি। আঞ্চলিক কিছু সংস্থা গড়ে তুলতে চাই, যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সবাই মিলে মোকাবেলা করা যায়। আমরা মাল্টি রিলেশনে বিশ্বাস করি। জোট নিয়ে ভাবি না। আমরা সার্ক করেছিলাম। তারা বলেছিল, এটা পুওর মেন ক্লাব। এখন তারা এই পুওর মেন ক্লাবের দিকেই নজর দিচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা এখানে কী একটা করছে। পশ্চিমারা, ইউরোপিয়ানরা আগে নিজেদের ঘর সামলাক। তাদের দেশে মুদ্রাস্ফীতি চার গুণ বেড়েছে। আমাদের প্রবাসীরা, যারা আমেরিকায় আছেন, তারাও সামলাতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য চারদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে। আমরা যুদ্ধ বন্ধ চাই। রাশিয়া গম ও জ্বালানি দিতে চায়। আমরা নিলে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দেয়, মাতব্বরি করতে থাকে। বড় দেশ হিসেবে ভারত এসব কীভাবে ম্যানেজ করছে সে সম্পর্কে তাদের সঙ্গে কৌশলগত আলোচনা হয়েছে।
‘গম দেবে ভারত’
গুয়াহাটিতে নদী সম্মেলনে যোগদানের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাইড লাইনে বৈঠক করেন মোমেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা হলো। আমাদের ইমিডিয়েট ইস্যু ছিলো গম। জয়শঙ্কর বললেন, গম নিয়ে সমস্যা হবে না। সরকারের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে বা বেসরকারি খাতেও আমদানিতে সমস্যা নেই। কেবল বেসরকারি খাত যদি তৃতীয় দেশে গম পাঠাতে চায়, সেটা তারা দেবে না।’
‘বাংলাদেশের কারণেই সেভেন সিস্টার্সে উন্নতি হচ্ছে’
বাংলাদেশের কারণেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স খ্যাত সাত রাজ্যের উন্নতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন যে তার রাজ্য তথা এ অঞ্চলের উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের কারণে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্সের সুবাদে আসাম, মিজোরামসহ ওই অঞ্চলের উন্নতি হয়েছে।
‘আগে আসামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো। এখন সেই সংখ্যা ১৯টি। আগে একটি হাসপাতাল ছিলো এখন বিশ্ব মানের হাসপাতালের সংখ্যা ৬টি। ৫০ বছর আগে সেখানে কিছুই ছিল না। সন্ত্রাস দমন করার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।’
জেসিসি বৈঠক ১৯ জুন
জেসিসি বৈঠক পিছিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাওয়ার শেয়ারিং বিষয়ে আমাদের সচিব পর্যায়ের মিটিং এখনও শেষ হয়নি। সড়ক এবং রেল যোগাযোগ বিষয়েও মিটিং শেষ হয়নি। এগুলো সম্পন্ন না হলে আমরা গিয়ে কী করবো?
‘আমরা দেখলাম ওইসব মিটিং শেষ হতে দুই সপ্তাহ লাগবে। আমরা তা তাদের জানালাম। কিন্তু দেখা গেলো, ওই সময় তাদের আবার অন্য মিটিং আছে। তারপর তারা বললেন, তাহলে এটা ১৯ তারিখ করা হোক। আমরা তাতে রাজি হলাম। ১৮ তারিখে অন্য কিছু হয়তো আছে। তাই বলা যায় ১৯ তারিখে জেসিসি মিটিং হবে। ১৮ তারিখে আরো কিছু বাইলেটারাল মিটিং আছে। আমরা এবার কোনো ফরমাল মিটিং করিনি।’
‘অন্য মন্ত্রণালয়গুলোকে তাগাদা দিয়েও কাজ হচ্ছে না’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসলে পোস্ট বক্স। অন্য মন্ত্রণালয় কাজ এগিয়ে নিলে আমরা এসে তা ফিট করে দিতে পারি। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করতে পারছে না। এসব ক্ষেত্রে আমরা তাগাদা দিতে পারি। কিন্তু তাগাদা দিয়েও সুবিধা হচ্ছে না।
‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ চলাচল উদ্বোধন করবেন। কিন্তু তা হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না জানতে চাইলে তাদের উত্তর- ওইখানে ড্রেজিং লাগবে।’
‘জাতিসংঘ মনে করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশেই থাকা উচিত’
মোমেন বলেন, ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লি মানতে নারাজ। ভারত থেকে রোহিঙ্গা আসার বিষয়টি আমি সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে বলেছি। তারা অফিশিয়ালি এটা স্বীকার করেননি। তারা বলেছেন, এটা দালালের মাধ্যমে হয়ে থাকতে পারে।
‘সাম্প্রতিক সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ গ্রান্ডি আমাকে বলেছেন, তারা (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশে ভালো আছে। তাদের বাংলাদেশেই থাকা উচিত। আমি বলেছি, এটা আমরা মানতে পারছি না। আপনারা মিয়ানমারে নজর দিন। বিগত পাঁচ বছর মিয়ানমারে কোনো সহিংসতা নেই। সেখানে পরিবেশ উন্নত করে তাদের সেখানে নিয়ে যান।’
নদী সম্মেলন
শিলংভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স আসামের গুয়াহাটিতে ২৮-২৯ মে নদী বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনক্লেভের আয়োজন করে। এতে যোগ দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। আমন্ত্রিত হিসেবে এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও যোগ দেন।
এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে রোববার দেশে ফেরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরদিন সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই সম্মেলন নিয়ে কথা বলেন তিনি।
মোমেন জানান, এই অঞ্চলে বন্যা সম্পর্কে আগাম সতর্কতা জানিয়ে দিতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ-ভারত নির্বিশেষে সব নদী সচল চাই। আমরা সবাই বন্ধু-রাষ্ট্র। ভারত নদী নিয়ে এ অঞ্চলে আসিয়ান দেশগুলোকেও সম্পৃক্ত করতে চায়।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার চীনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে জানান, অধ্যাপক ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী চায়না সাদার্ন এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট আজ দুপুর একটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়ে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনে এটি হলো অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এক সপ্তাহ ধরে ওই হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর তার জীবনাবসান হলো বলে পারিবারিক একটি সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে।
ওই সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সন্জীদা খাতুন ডায়াবেটিস, নিউমোনিয়া ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন। এর আগেও একই অসুস্থতায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
রাজধানীর ধানমণ্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সদ্যপ্রয়াত এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের প্রতি সর্বজনের শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করা হয়েছে।
সন্জীদা খাতুনের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন সামগ্রিকভাবে বাঙালির মানস ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। তার জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল।
তার বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী।
সন্জীদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষকতা দিয়েই তার কর্মজীবন শুরু। ঢাবির বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে প্রদত্ত ‘নো অর্ডার’ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে বিভিন্ন মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হয়ে থাকে। বিষয়টির প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময়ে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
“ফলে ‘নো অর্ডার’-এর প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট হতে কোনো মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হলে আবেদনকারীর প্রার্থিত প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়নি এবং চেম্বার কোর্ট বিতর্কিত আদেশ বা রায়ের বিষয়ে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই আবেদনটি নিষ্পত্তি করেছেন মর্মে গণ্য করতে হবে।”
৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে মঙ্গলবার এক বার্তায় এমন তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে স্টারলিংক তার বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবাদানকালে এনজিএসও নীতিমালা মেনে কোম্পানিটি স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আইআইজি ব্যবহার করবে।
এর আগে গেল ৮ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশে গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপনে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংকের অংশীদার হয়ে কাজ করছে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান।
স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল তখন বাংলাদেশ সফর করে। ওই সফরে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
তিনি জানান, ভূমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের মতো কার্যক্রম পরিচালনায় এসব সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে। স্টারলিংক টিম এ কাজের জন্য কিছু নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পত্তি এবং কিছুক্ষেত্রে হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে স্টারলিংক।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘স্টারলিংক বাংলাদেশের শহরে কিংবা প্রান্তিক অঞ্চলে, উত্তর অঞ্চল কিংবা উপকূলে লোডশেডিং কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝামেলামুক্ত রিলায়েবল এবং হাইস্পিড ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা দেবে। এটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা এবং উচ্চমান কোয়ালিটি সার্ভিসের নিশ্চয়তা দেবে।
‘যেহেতু বাংলাদেশে টেলিকম গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সীমিত এবং প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে এখনও লোডশেডিংয়ের সমস্যা রয়েছে, তাই স্টারলিংক আমাদের উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও এবং এসএমই ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড এবং ডিজিটাল ইকোনমিক ইনিশিয়েটিভগুলোকে বেগবান করবে। আমরা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের সাথে একটা বোধগম্য মডেল বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রাখব।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা মাস্ককে জানান, এই সফরে মাস্ক বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন, যারা এই প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী হতে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে থাকা ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুদকের আলাদা দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
মির্জা আজমের নামে ১৮টি ও স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া তাদের ১৯ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অষ্টম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আগামীকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে বিষয় করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি, টহল জোরদার এবং গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘ঈদ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে অভিযান বৃদ্ধি করা হবে।’
মন্তব্য