নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া থেকে জলপথে প্রায় সাত লাখ মানুষের চলাচল দুই বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। নিরাপদে চলাচলের জন্য দুটি সি-ট্রাক থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ দেখিয়ে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে দুই বছর ধরে। এই সুযোগে সাবেক এক সংসদ সদস্যের মাছ ধরার নৌকা ও স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়ায় নদী পারাপারে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এমনকি সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি ও স্থানীয় প্রশাসনও একই সুরে কথা বললেও সব অভিযোগ অবশ্য বেমালুম অস্বীকার করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী।
মোহাম্মদ আলী নৌকা না পেয়ে হাতিয়া থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০১ সালে। ২০০৮ সালে তাকে নৌকা দেয়া হলেও খেলাপি ঋণের কারণে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। পরের দুই বার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদৌসকে।
নোয়াখালী-হাতিয়ার মধ্যে চেয়ারম্যান ঘাট-নলচিরা রুটের সি-ট্রাক শেখ ফজলুল হক মণি আর শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত নামের সি-ট্রাকটি চেয়ারম্যান ঘাট- চরচেঙ্গা-তমরুদ্দি রুটে চলত। দুই বছর ধরে সেগুলো বন্ধ রয়েছে।
ইজারাদারের ভাষ্য, মেরামত করা হলেও আবার নষ্ট হয়ে পড়ে। তাই সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সি-ট্রাক বিকল থাকার সুযোগে মোহাম্মদ আলীর ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার ট্রলার ও স্পিডবোটে সি-ট্রাকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে নদী পার হতে হয়।
কী বলছেন যাত্রীরা
যাত্রীদের অভিযোগ, সি-ট্রাকটি ইচ্ছা করে মেরামত না করে তাদের বেশি টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচিতে নিরাপদ যাতায়াতে নৌপথে সি-ট্রাক চালুর দাবি তুলেছে হাতিয়ার বিভিন্ন সংগঠন।
হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল্লাহ মনির বলেন, ‘উনার (মোহাম্মদ আলী) প্রয়োজন হলে সি-ট্রাক ভালো হয়ে যায়, আর মানুষের প্রয়োজন হলে বন্ধ হয়ে যায়। সি-ট্রাকের জনপ্রতি ভাড়া ১০০ টাকা হলেও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ২০০ টাকা ও স্পিডবোটে চার থেকে পাঁচ শ টাকা দিতে হয়।’
চট্টগ্রামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী চর ঈশ্বরের বাসিন্দা আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘সি-ট্রাকের ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর ব্যাবসায়িক পার্টনার। তিনিই ঘাট নিয়ন্ত্রণ করেন। গত দুই বছরে কোনো ঈদে সি-ট্রাক চলাচল করে নাই। তারা সি-ট্রাক বন্ধ রেখে তাদের মাছ ধরার বোটে দুই শ ও স্পিডবোটে পাঁচ শ টাকায় মেঘনা নদী পাড়ি দিতে বাধ্য করেন। অথচ সি-ট্রাকে অনেক কম ভাড়ায় নিরাপদে পার হওয়া যায়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাতিয়ার সাবেক এক ইউপি সদস্য বলেন, 'হাতিয়ার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়। এখানে এমপির স্বামী মোহাম্মদ আলীর একচেটিয়া দাপট। উনি যা বলেন তাই হয়।'
মাহমুদুল হাসান ফরহাদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, 'আমরা নিরাপদ নৌ পারাপারের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করে সরকারের কাছে দাবি তুলে ধরেছি।'
আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, ‘ইজারাদার কাজল তার (মোহাম্মদ আলী) লোক হওয়ায় বিভিন্ন বাহানায় সি-ট্রাক বন্ধ রেখে ট্রলার ও কয়েকটি স্পিডবোটে গাদাগাদি করে নদী পারাপারে বাধ্য করে। তারা বিআইডব্লিউটিসিতে তদবির করে পুরনো সি-ট্রাকটি বন্ধ রেখে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে নতুন সি-ট্রাক যেন চলতে না পারে তার পাঁয়তারা করছে।’
ইজারাদারের ভাষ্য
ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল বলেন, ‘সি-ট্রাকটির বয়স হয়েছে ১৫ বছর। এটার ইঞ্জিন প্রায়ই নষ্ট হয়। তাই ঠিক করতে সময় লাগে। আগামী ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে চালু হবে। নতুন সি-ট্রাকটি ভাসানচরের জন্য ঠিক করা হয়েছে। হাতিয়া রুট চার্টার আমাকে দেয়া আছে এটি এখানে কীভাবে চালাবে? আমি তো রুট ভাড়া দেই।’
সব অভিযোগের অস্বীকার মোহাম্মদ আলীর
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমার কোনো ট্রলার ও স্পিডবোট নাই, আমার কোনো ইজারা নাই, ঘাটের সঙ্গে আমার বা আমার পরিবারের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।
‘আমাদের ভিন্ন ব্যবসা আছে। আমাদের মাছের ব্যবসা আছে, মাছের ট্রলার আছে, নৌকা আছে, কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা আছে। এটা দিয়ে কোনোভাবে আমরা চলি।’
সি-ট্রাক কেন চলছে না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সি-ট্রাকের তলা ছিদ্র হয়ে গেছে। মেশিনগুলো পুরোনো। গত ২৫ বছর সরকারের কোনো নতুন সি-ট্রাক নাই। সি-ট্রাক যদি চলত, তাহলে প্যাসেঞ্জার আরও ডবল হতো। মানুষ জানে সি-ট্রাক নাই, তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে চলে আসে। সি-ট্রাক চললে বরং ইজারাদার আরও বেশি টাকা পেত।’
কী বলছেন সংসদ সদস্য
মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস সি-ট্রাকসংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই অনেক মন্তব্য করছেন। ব্যাপারটা আসলে সেটা নয়। যিনি এটার ইজারা নিয়েছেন তিনি নিজের খরচে ঠিক করতেছেন। আমি ও আমার স্বামী মোহাম্মদ আলী সাহেব বারবার তাগাদা দিচ্ছি।
‘সি-ট্রাক এখনো ডকে আছে। এক সপ্তাহ পরে আবার চলবে। শুধু ইজারাদার কেন, হাতিয়া ছোট একটি দ্বীপ, সবাই তো আমাদের লোক।’
সি-ট্রাক বন্ধের সুবিধাভোগী তো আপনারা- এই প্রশ্নে আয়েশা বলেন, ‘শুধু আমাদের না, ট্রলার স্পিডবোট সবার আছে। যেহেতু আমি এখানকার প্রতিনিধি, তাই একটা পক্ষ আমার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।
‘অনেকেই না জেনে বাহির থেকে কথা বলে। আমাদের ইশিতা-১. ২. ৩ নামের তিনটি ফিশিং ট্রলার আছে, কোনো যাত্রীবাহী ট্রলার নেই। সি-ট্রাক বন্ধ থাকলে মানুষ নদী পার হতে হলে ট্রলার বা স্পিডবোট ছাড়াতো উপায় নাই।’
প্রশাসনের বক্তব্যে স্থানীয়দের অভিযোগের প্রমাণ
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান যা বলেছেন, তাতে স্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা উঠে আসে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শেখ ফজলুল হক মনি নামে সি-ট্রাকটি হাতিয়ার এমপি সাহেবের লোকজন ভাড়া নিয়েছেন। যেটা প্রবলেম, সেটা সাংবাদিক হিসেবে আপনারা ভালো জানেন। ওই জাহাজটার রিপেয়ারসহ সব দায়িত্ব ওনাদের দেয়া আছে। তারা এত দিন ধরে বলতেছে, জাহাজ নষ্ট রিপেয়ার করবে, কিন্তু করে নাই।
‘এখন আমরা যখন প্রেশার দিয়েছি, তারা রিপেয়ার শুরু করেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপেয়ার শেষে সি-ট্রাকটি চলাচল শুরু হবে আশা করি।’
নতুন সি-ট্রাক চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভাষাসৈনিক জব্বার নামের নতুন সি-ট্রাক বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপনায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে। কিছু লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। তা দুয়েক দিনের মধ্যে শেষ করা হবে। কোনো অজুহাত দেখিয়ে যেন সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে না পারে, সে জন্যই সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলবে।’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহে ঘাটের ইজারাদারসহ একটি সভা হয়েছে। ভাসানচর ও হাতিয়ায় চলাচলের সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আমি চট্টগ্রামে বিআইডব্লিউটিসিতে কথা বলেছি। জনবলসহ অতিদ্রুত সি-ট্রাক চলাচলের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।
এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।
এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আজ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ (২৫)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন ছাত্র-জনতা। এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
মন্তব্য