× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
They were also in Awami League
google_news print-icon

তারাও আওয়ামী লীগে ছিলেন

তারাও-আওয়ামী-লীগে-ছিলেন
আওয়ামী লীগের একসময়কার প্রভাবশালী নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী ও মোস্তফা মহসীন মন্টু। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগ ছেড়ে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে তার মন্ত্রীও বনে যান মিজানুর রহমান চৌধুরী। ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, মোস্তফা মহসীন মন্টু আওয়ামী লীগ দিয়েই শুরু করেছিলেন রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা ভিন্ন পথে হাঁটা দিয়ে আলাদা দল করেন। এখন তারা কেমন আছেন, খোঁজ নিয়েছে নিউজবাংলা।

আওয়ামী লীগের অনেক প্রভাবশালী নেতাই বিভিন্ন সময়ে দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এদের কেউ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য হারানোর কারণে আবার কেউ রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে ভিন্ন পথে হাঁটা দিয়েছেন।

এমন নেতাদের মধ্যে সবার আগে নাম আসে প্রয়াত মিজানুর রহমান চৌধুরীর। তার ধারাবাহিকতায় আছেন ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, মোস্তফা মোহসিন মন্টু প্রমুখ। তবে প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক দল থেকে বেরিয়ে গেলেও পরে আবার ফিরে এসেছিলেন।

মিজানুর রহমান চৌধুরী

বঙ্গবন্ধুর হত্যা-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ যে ভাঙ্গা-গড়ার মধ্য দিয়ে যায়, তার শুরুটা হয়েছিল মিজানুর রহমান চৌধুরীর হাত ধরে। তিনি আওয়ামী লীগের একটি নিজস্ব গ্রুপ তৈরি করেন, যা আওয়ামী লীগ (মিজান) নামে পরিচিত হয়েছিল।

পরে ১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগ ছেড়ে তিনি সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে তার মন্ত্রীও বনে যান। ২০০১ সালে পুনরায় তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দলের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

ড. কামাল হোসেন

১৯৯৩ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম গঠন করেন ড. কামাল হোসেন। তিনি এখনও দলটির সভাপতি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল প্রায় শুরু থেকেই।

১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন ড. কামাল। ১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী এবং ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন, কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্বের জেরে আওয়ামী লীগ ছেড়ে যান তিনি।

ড. কামাল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯৩ সালে আওয়ামী লীগ ছাড়লেও তিনি কার্যত দলে ছিলেন না ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যাওয়ার পর দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনে ‘সূক্ষ্ম কারচুপির’ অভিযোগ তোলেন, কিন্তু দলের তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য হয়েও দলীয় প্রধানের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’ এমনকি শেখ হাসিনার কাছে দেয়া চিঠিতে ড. কামাল নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে দলীয় কোন্দল ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকে দায়ী করেন।

একই সময় যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বহিষ্কার করা নিয়েও তিনি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন। এরপরই দলীয় প্রধানের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।

প্রয়াত ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার আত্মজীবনী ‘বিপুলা পৃথিবী’ বইতে উল্লেখ করেন, সে সময় ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে সমালোচনামুখর হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা।

বিবিসির একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের ভেতর ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের চিঠি দেন।

সে বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ড. কামাল হোসেন। পরে জুনে ড. কামাল হোসেন ‘গণতান্ত্রিক ফোরাম’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলেন।

১৯৯২ সালের ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হয়। সে কাউন্সিলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদ হারিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পান ড. কামাল হোসেন।

আওয়ামী লীগের তৎকালীন আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বিরোধীদলীয় উপনেতা আব্দুস সামাদ আজাদ ভোরের কাগজ পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, সম্মেলনের সময় ড. কামাল বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। তা ছাড়া ড. কামালের গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এদিকে সম্মেলনের পর ড. কামাল হোসেন ‘ভয়েস অব আমেরিকা’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি গণতন্ত্রায়ণের মাধ্যমে হলে ভালো হতো।’

প্রায় কাছাকাছি সময় ঢাকার মিরপুরে একটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের ডামাডোল শুরু হয়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পরাজিত ড. কামাল আশা করেছিলেন, দল উপনির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দেবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পান কামাল আহমেদ মজুমদার।

এরপর ১৯৯৩ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে ড. কামাল হোসেন ২৯ আগস্ট রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠন করেন।

এসব বিষয়ে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের বক্তব্য জানার জন্য তাকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও সেগুলো রিসিভ হয়নি। এসএমএস দিয়েও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।

কাদের সিদ্দিকী

নিজের প্রতিষ্ঠিত দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি। ‘বঙ্গবীর’ হিসেবেই সমধিক পরিচিত। আওয়ামী লীগে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অল্প দিনের হলেও দলটির নেতা হিসেবে ছিলেন প্রভাবশালী। মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বেসামরিক ব্যক্তি যিনি ‘বীর-উত্তম’ খেতাবপ্রাপ্ত। মুক্তিযুদ্ধে তার যেমন অভাবনীয় ভূমিকা ছিল, তেমনি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সাহসী, প্রকাশ্য এবং সশস্ত্র প্রতিবাদটাও তিনিই করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী গড়ে তুলেছিলেন কাদেরিয়া বাহিনী। পরে সেই বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদ করতে গিয়ে শেরপুর-ময়মনসিংহ অঞ্চলের পাহাড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। একপর্যায়ে ভারতে চলে যান। ১৯৯০ সালে দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের ১ নম্বর কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। কাদের সিদ্দিকী সংসদ সদস্য হন। কিন্তু এর দুই বছরের মাথায় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ছাড়েন আওয়ামী লীগও।

নিউজবাংলার পক্ষ থেকে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি, লালন করি, তার আদর্শে জীবনযাপন করি। যে দলই করি, ‘পিতা পিতাই’। তার আদর্শেই রাজনীতি করি। সেই দর্শন থেকেই আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলাম।’’

মোস্তফা মহসিন মন্টু

একসময়ে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা ছিলেন তিনি। বর্তমানে গণফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে একই দলের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।

রাজনীতিতে মোস্তফা মহসিন মন্টুর হাতেখড়ি হয় ছাত্রলীগ দিয়ে। একসময় তার নামে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ছিল। পরে যুবলীগ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগেরও শীর্ষ পদে ছিলেন।

১৯৯২ সালে মোস্তফা মহসিন মন্টু আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থাতেই বহিষ্কৃত হন। ১৯৯৩ সালে গণফোরাম প্রতিষ্ঠিত হলে সেই দলে যোগ দেন তিনি।

১৯৯১ সালে টিএসসিতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিটিং চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গুলি করে হত্যা করা হয় ছাত্রলীগ নেতা মনিরুজ্জামান বাদলকে। আওয়ামী লীগের দলীয় তদন্তে মোস্তফা মহসিন মন্টু চিহ্নিত হন বাদল হত্যার মূল হোতা হিসেবে। এ কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মন্টুকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।

২৯ মিন্টো রোডে বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাসভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বহিষ্কার করা হয়। এ বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে ঘটে নাটকীয় ঘটনা।

দলের তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ এবং ড. কামাল হোসেন এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। এমনকি ড. কামাল মন্টুর পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দেন। তার সে বক্তব্য খণ্ডন করে মতিয়া চৌধুরী সন্ত্রাসের বিপক্ষে এবং শেখ হাসিনার অবস্থানের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দেন।

বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়ে ড. কামাল তখন ইংরেজিতে ‘স্ল্যাং’ (গালি) ব্যবহার করেন। এর প্রতিবাদ করেছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক (পরবর্তী সময়ে সাধারণ সম্পাদক) আব্দুল জলিল।

বহিষ্কারের পর মোস্তফা মহসিন মন্টু ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের সম্মেলনের আয়োজন করলেও আওয়ামী লীগ ছাড়তে বাধ্য হন।

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে তার কাছে ফোনে জানতে চাওয়া হয়। মন্টু এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেক দিন আগের ঘটনা তেমন মনে নেই। তখন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ঘটনাই ঘটেছিল। আমার বিরুদ্ধে অন্যায় অভিযোগ তোলা হয়েছিল। লাভ-ক্ষতি কার হয়েছে সেটা সময় বিচার করবে, তবে আমি আজন্ম রাজনীতি করতে চেয়েছি, করছিও।’

এ ছাড়া প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক দল থেকে বেরিয়ে বাকশাল পুনরুজ্জীবিত করলেও পরে ’৯২ সালে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী এবং অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হন।

আরও পড়ুন:
কেমন আছেন সেই সব জ্যেষ্ঠ নেতা
ঝড়ের গতিতে উত্থান, উল্কার বেগে পতন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Hamanti and Magnolias mo smell in the courtyard of Uttara Ganabhaban

উত্তরা গণভবনের আঙিনায় হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার ম-ম গন্ধ

উত্তরা গণভবনের আঙিনায় হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার ম-ম গন্ধ ছবি: সংগৃহীত

নাটোর জেলার উত্তরা গণভবনে এখন হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার ভরা মৌসুম। সাতটি করে হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার রুপে রসে গন্ধে অনন্য হয়ে উঠেছে উত্তরা গণভবনের আঙিনা। এছাড়া দুটি হোয়াইট এলামন্ড গন্ধ বিলিয়ে যাচ্ছে। ফুলের কানে ভ্রমরের গুঞ্জনে মোহনীয় চারিদিক।

অপরুপ স্থাপত্য শৈলীর রাজপ্রাসাদ আর বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসা অসাধারণ সব সামগ্রীর সংগ্রহশালাকে ছাড়িয়ে যায় গণভবনের দুষ্প্রাপ্য কিছু গাছের সমাহার। এর বেশির ভাগটাই ফুল গাছ। এরমধ্যে পারিজাত, ম্যাগনোলিয়া, নাগালিঙ্গম, এগপ্লান্ট, হোয়াইট এলামন্ড, সুরভিকা আর হৈমন্তি অন্যতম। এসব ফুল গাছের উপস্থিতি জানান দেয়, উত্তরা গণভবন শুধু রাজপ্রাসাদই নয় সুবিশাল পুষ্প সাম্রাজ্যও বটে।

এরমধ্যে পারিজাত চক্রাকারে পাতার রঙ পাল্টিয়ে লাল রঙের ফুলের থোকায় পরিণত হয় বসন্তে। এগপ্লান্টে প্রায় সারা বছর দু’একটা ফুল থাকলেও শীত আর বর্ষা এর ভরা মৌসুম। নাগালিঙ্গম আর ম্যাগনোলিয়া বসন্তে ফুটলেও বিস্তৃতি বর্ষাকাল পর্যন্ত। সুরভিকা ফোটে মূলত শীতকালে। গ্রীষ্মের তাপদাহকে উপেক্ষা করে হোয়াইট এলামন্ড তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে এখন।

আর বসন্তে পাতা হারিয়ে হৈমন্তি গাছগুলো হয়ে পড়ে বিবর্ণ। বসন্তের শেষার্ধে ফুল আসতে শুরু করলেও গ্রীষ্মে হৈমন্তির রুপ হয়ে ওঠে অপরুপ। সারাগাছ জুড়ে ফুল আর ফুল, কোন পাতা নেই। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে এ যেন শুভ্র সুন্দর শান্তির পরশ। গ্রীষ্মের এই ফুল সুবাস ছড়াবে অন্তত দুই মাস। এটিই হৈমন্তির ভরা মৌসুম। শরতে আরো একবার হৈমন্তি শুভ্র সুন্দর হয়ে ওঠার চেষ্টা করে। তবে এত ফুলের প্রাচুর্য আর সুবাস তখন থাকে না।

গণভবনের সিংহ দুয়ার পেরিয়ে সোজা এগিয়ে গেলে ইটালিয়ান গার্ডেনের প্রবেশপথের আগে দাঁড়িয়ে আছে একটি হৈমন্তি। ইটালিয়ান গার্ডেনে একটি, হরিণনিবাসে একটি, সংগ্রহশালার সাথে একটি, রাজপ্রাসাদের সামনে দুইটি হৈমন্তি গাছ। আর রাণীমহলে একটি হৈমন্তি গাছ। ধীরে বর্ধনশীল হৈমন্তির সাতটি গাছের মধ্যে রাজপ্রাসাদের সামনের গাছটি ফুলে ফুলে সবচেয়ে সমৃদ্ধ।

দুষ্প্রাপ্য গাছের তালিকায় আছে ম্যাগনোলিয়া। এর সংখ্যাও সাতটি। কুমার প্যালেস এর সাথে একটি ছাড়া অন্য ছয়টি ইটালিয়ান গার্ডেনে। কাঁঠাল পাতার মত প্রায় পাঁচ মিটার উঁচুতে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাগনোলিয়ার প্রতিটি গাছে শত শত ফুলের কলি আর ফুল। বিরাট আকৃতির সাদা ফুল অকৃপণভাবে সুবাস ছড়িয়ে যাচ্ছে। ইটালিয়ান গার্ডেনকে সুশোভিত করে রাখে অতিকায় দুটো হোয়াইট এলামন্ড। এখন শুধু সুশোভিতই নয় সারা গাছ জুড়ে সাদা ঝিরিঝিরি ফুল রাশি পুরো গার্ডেনকে সুরভিত করে রেখেছে।

জেলা প্রশাসক ও উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আসমা শাহীন বলেন, হৈমন্তী, ম্যাগনোলিয়া আর হোয়াইট এলামন্ড গণভবনকে সুশোভিত সুরভিত করে রেখেছে। প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীদের আগমনে মুখর উত্তরা গণভবনের আঙিনা। সৌন্দর্য পিপাসুদের মধ্যে অনেকেই গ্রীষ্মের এই তাপদাহে এসব ফুল গাছের তলায় দু’দণ্ড শান্তির পরশ খুঁজে পাচ্ছেন। দুষ্প্রাপ্য এসব গাছের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন সদা সচেষ্ট।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Wish was that the corpse returned home to be a judge

ইচ্ছা ছিল বিচারক হওয়ার, বাড়িতে ফিরলেন লাশ হয়ে

ইচ্ছা ছিল বিচারক হওয়ার, বাড়িতে ফিরলেন লাশ হয়ে ঢাবি ছাত্রী আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। ছবি: সংগৃহীত
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। ২৪ বছরের এ তরুণী ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ২০২০-২১ সেশনে ভর্তি হন ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও স্থিতিস্থাপকতা বিভাগে। এ বিভাগের পড়াশোনা শেষ করে আইনের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিচারক হতে চেয়েছিলেন আনিকা।

গত বছরের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। তার ইচ্ছা ছিল এলাকায় বিচারক হয়ে ফেরার; ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ দেওয়ার। সে ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে সোমবার লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এ ছাত্রী।

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি ছাত্রীনিবাস থেকে রবিবার রাতে ঝুলন্ত অবস্থায় আনিকাকে উদ্ধার করে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

আনিকার বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে। সেখানে সোমবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, তার শতবর্ষী দাদা আলহাজ সোলাইমান আলী মণ্ডল হতভম্ব হয়ে এদিক-সেদিক দেখছেন। কান্না থামছিল না ফুফু আক্তার বানুর।

আনিকার এমন মৃত্যুতে বিস্মিত পরিবারের সদস্য ছাড়াও প্রতিবেশীরা চেয়েছেন ঘটনার রহস্য উদঘাটন।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। ২৪ বছরের এ তরুণী ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ২০২০-২১ সেশনে ভর্তি হন ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও স্থিতিস্থাপকতা বিভাগে।

এ বিভাগের পড়াশোনা শেষ করে আইনের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিচারক হতে চেয়েছিলেন আনিকা।

গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনে নওগাঁয় সম্মুখসারিতে ছিলেন আনিকা। পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় মাইক হাতে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে সড়কে দাঁড়ান তিনি।

সুষ্ঠু তদন্ত দাবি

পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আনিকার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক।

বকুল নামের একজন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‌‘আমি গিয়ে দেখি আনিকার মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, কিন্তু অর্ধেক মেঝেতে লেগে ছিল। আমার জানা মতে একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল।

‘আমরা ঢাকায় আছি। তার বাবা পাগল হয়ে গেছে। তবে আমরা যখন যাই, তখন দেখি লক ভাঙা ছিল। মনে হয় তাকে কেউ নামানোর চেষ্টা করেছিল।’

বুটেক্স ছাত্র আটক

আনিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) এক ছাত্রকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

বাহিনীর ধারণা, প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন ঢাবির এ ছাত্রী। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
অনিয়ম করে বীজ, সারের ডিলারশিপ কৃষি কর্মকর্তা, কলেজ প্রভাষকের
নওগাঁয় হত্যা মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন
নওগাঁয় ধর্মঘটে বন্ধ পেট্রল পাম্প: কী বলছেন ভুক্তভোগীরা
ঢাকা থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্রী নওগাঁয় উদ্ধার
মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেল তিন বন্ধুর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Dealership Agriculture Officer of the Seed Fertilizer by irregularities is a college lecturer

অনিয়ম করে বীজ, সারের ডিলারশিপ কৃষি কর্মকর্তা, কলেজ প্রভাষকের

অনিয়ম করে বীজ, সারের ডিলারশিপ কৃষি কর্মকর্তা, কলেজ প্রভাষকের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘ইউএনও, কৃষি অফিস যাচাই-বাছাই করে জেলা কমিটিকে প্রস্তাব পাঠাই। তারপর অনুমোদন দেওয়া হয়। সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পূর্ব অনুমতিও নিতে পারত এ ক্ষেত্রে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

নওগাঁয় অনিয়ম করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিইসি) বীজ ও সারের ডিলারশিপ নিয়েছেন সরকারি কলেজের প্রভাষক ও কৃষি কর্মকর্তা। তাদের স্বজনদেরও একই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন তারা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০০৯ অনুসারে, একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে অন্য কোথাও থেকে কোনো ধরনের সুযোগ- সুবিধা নেওয়ার বিধান নেই। একই সঙ্গে একজন ব্যক্তি একের অধিক ডিলারশিপ নিতে পারবেন না।

অন্যদিকে আচরণ বিধিমালার ১৭ (১) নম্বর ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অন্য বিধান অনুসারে, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যবসায় জড়াতে পারবেন না অথবা দায়িত্বের বাইরে অন্য কোনো কাজ কিংবা চাকরি নিতে পারবেন না।’

অনিয়মে যুক্তদের ভাষ্য

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী নওগাঁতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ফজলে রাব্বি। তিনি তার স্ত্রী সম্পা বেগমের নামে বিএডিসির বীজের লাইসেন্স বাগিয়ে নিয়ে কৌশলে ডিলারশিপ বিক্রি করে খাচ্ছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই নওগাঁ শহরে বসবাস করলেও তারা পোরশা উপজেলায় ‘সাইফ ট্রেডার্স’ নামের ঠিকানা ব্যবহার করে লাইসেন্স নিয়ে রেখেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্পা বেগম তার নামে লাইসেন্স স্বীকার করে বলেন, ‌‘আমি নওগাঁ বসবাস করলেও পোরশায় আমার দোকান রয়েছে। ওখানে একটি ছেলে আছে। সে দোকান চালায়।’

দোকানের ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী রাব্বি নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। তিনি সব বলতে পারবেন।’

সাইফ ট্রেডার্স নামের কোনো দোকান পোরশা বাজারে পাওয়া যায়নি। দোকানের সঠিক ঠিকানা কোথায় জানতে চাইলে সম্পা কোনো সদুত্তর না দিয়ে কথা না শোনার ভান করে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফজলে রাব্বির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই লাইসেন্সটা আমার স্ত্রী সম্পার নামে করা আছে।’

নিয়মিত বীজ তোলেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভাই অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান। আপনাদের অনেক সাংবাদিক আসে; চা খেয়ে যায়।

‘সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। আপনি অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান।’

ওই বক্তব্যের পর সংযোগটি কেটে দেন তিনি।

এদিকে জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার মেসার্স জিমান ট্রডার্স নামে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন নিয়ে রেখেছেন বিএডিসির সার লাইসেন্সের ডিলারশিপ। প্রোপাইটারে জায়গায় রয়েছে তার নিজের নাম।

তার ছেলে জিমানের নামে নিয়ামতপুর বাজারে রয়েছে দোকান। নিয়মিত বিএডিসির সার ও বীজ তুলে বিক্রি করেন তিনি।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্সটা অনেক আগে করা ছিল। তখন আমার কলেজ সরকারি হয়নি। ২০১৮ সালে আমার কলেজ সরকারি হয়েছে।’

‘তাহলে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সরকারি ডাবল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। এটার সুযোগ রয়েছে কী?’

উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই একাধিক জায়গা হতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি তিন মাস আগে ডিসি অফিসে লাইসেন্স বাতিলের আবেদন জানিয়েছি।’

এদিকে ধারাবাহিকভাবে গত মাসেও সরকারি গুদাম থেকে সার তুলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সটা আমার ছেলের নামে হস্তান্তর করা হবে। তার প্রক্রিয়া চলছে।’

অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলার ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলাম তার নিজ নামে নিয়ে রেখেছেন বিসিআইসির সার ডিলারশিপ। সরকারি গুদাম থেকে নিয়মিত সার তুলে উপজেলার আমাইতাড়া বাজারে বিক্রি করছেন তিনি।

এ বিষষে জানতে ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আসলে ওটা অনেক আগে করা হয়েছিল। পরে আমার কলেজ সরকারীকরণ হয়।

‘সরকারি একাধিক জায়গা হতে সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি বেআইনি হয়েছে। আমি লাইসেন্সটা ট্রান্সফার করে দেব।’

‘আপনি তো এখনও নিয়মিত সার তোলেন।’ এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আসলে এখন ইরি-বোরো মৌসুম চলছে তো। তাই একটু তুলতেছি।’

যা বলছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা

ডিলারশিপের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা এটা করতে পারে না।’

‘আপনার অধিদপ্তরে এমন অনেকে রয়েছে। তাহলে তাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?’

এমন প্রশ্নে প্রোগ্রামের ব্যস্ততার কথা বলে ফোন লাইন কেটে দেন এ কর্মকর্তা।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘ইউএনও, কৃষি অফিস যাচাই-বাছাই করে জেলা কমিটিকে প্রস্তাব পাঠাই। তারপর অনুমোদন দেওয়া হয়।

‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পূর্ব অনুমতিও নিতে পারত এ ক্ষেত্রে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

আরও পড়ুন:
নওগাঁয় হত্যা মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন
নওগাঁয় ধর্মঘটে বন্ধ পেট্রল পাম্প: কী বলছেন ভুক্তভোগীরা
ঢাকা থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্রী নওগাঁয় উদ্ধার
মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেল তিন বন্ধুর
গলা কেটে হত্যা: দাফন-কাফনে সহযোগিতা করেও হলো না রক্ষা

মন্তব্য

জমিদার বাড়িতে ডাকাত আতঙ্ক

জমিদার বাড়িতে ডাকাত আতঙ্ক কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি। ছবি: নিউজবাংলা
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়িটিতে অজ্ঞাত কয়েকজন মুখোশধারী হানা দেয়। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে চারজনকে দেখা যায়।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িতে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অজ্ঞাত মুখোশধারীরা গত রবিবার রাতের বেলায় জমিদার বাড়ির পুরোহিতকে ধরে নিয়ে জঙ্গলে বেঁধে রাখে। টাকা-পয়সা এবং জমিদারেরও খোঁজ করে তারা।

এমন পরিস্থিতিতে ডাকাত আতঙ্কে রয়েছেন বাড়ির লোকজন।

মুখোশধারীরা ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশপাশে তল্লাশি চালানোর কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।

এতে দেখা যায়, রবিবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী নেলী চক্রবর্তী ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমে দুজন মুখোশধারী ধরে জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সঙ্গে পুরোহিতকে বেঁধে ফেলে।

জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর আগে স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়েছিলাম। এর মধ্যেই দুজন মুখোশধারী আমাদেরকে ধরে বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এ সময় মুখোশধারীরা জমিদার কোন ঘরে জানতে চায়। সিন্দুকের খোঁজও চায় তারা।

‘বাড়ির তিন তলায় ওঠার চেষ্টাও করে। ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশেপাশে তল্লাশি চালায়।’

বাড়ির কেয়ারটেকার স্বপন সাহা বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত জমিদার বাড়িতে চাকরি করছি। দেশের বিভিন্ন জায়গার লোকজন এখানে ঘুরতে আসেন। পুরো বাড়ি তাদের ঘুরে দেখানোর পাশাপাশি বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করি।

‘কিন্তু অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই ঘটনার পর থেকে বাড়ির লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।’

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িটিতে জমিদারের একমাত্র শেষ বংশধর মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বসবাস করছেন। নিঃসন্তান ব্যক্তিটির স্ত্রী কিছুদিন আগে লোকান্তরিত হন। বাড়িটিতে বর্তমানে তিনি ছাড়া কয়েকজন কর্মচারী ও পুরোহিত অবস্থান করছেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়িটিতে অজ্ঞাত কয়েকজন মুখোশধারী হানা দেয়। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে চারজনকে দেখা যায়।

বাড়ির মালিক মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বলেন, ‘মুখোশধারীরা হয়তো ধনদৌলত নিতে কিংবা আটকে রেখে টাকা-পয়সা দাবি করতে চেয়েছিল। তবে বাড়ির লোকজন সজাগ হয়ে যাওয়ার মুখোশধারীরা সেটা করতে পারেনি।’

জানতে চাইলে হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
তাড়াইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত: পুলিশ
নোয়াখালীর বয়ারচরে ডাকাতদলের তাণ্ডব, আটজনকে কুপিয়ে জখম
বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও জমিতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার
প্যারোলে মেলেনি মুক্তি, বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান
জামালপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে নিহত ১, আটক ২

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Petrol Pumps closed in Naogaon strike What the victims say

নওগাঁয় ধর্মঘটে বন্ধ পেট্রল পাম্প: কী বলছেন ভুক্তভোগীরা

নওগাঁয় ধর্মঘটে বন্ধ পেট্রল পাম্প: কী বলছেন ভুক্তভোগীরা ধর্মঘটে বুধবার সকাল ৮টা থেকে নওগাঁর সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকরা। কোলাজ: নিউজবাংলা
আবদুল মান্নান নামের এক বাইকচালক বলেন, ‘আমি জানতাম না পেট্রল পাম্প মালিকদের ধর্মঘট চলছে। পেট্রল পাম্পে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। তেল দেওয়া হচ্ছে না। এখন তেল ছাড়া আমরা কীভাবে চলি? আগে জানানো হলে তাও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’

বিনা নোটিশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, বগুড়ার আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে।

এ ধর্মঘটে বুধবার সকাল ৮টা থেকে নওগাঁর সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকরা।

কী বলছেন ভুক্তভোগীরা

যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী লোকজনও। তাদের একজন বেসরকারি সিম কোম্পানির কর্মী আল-আমিন।

তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে সকাল সাড়ে আটটায় মোটরসাইকেল নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে তেল শেষ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আধা কিলোমিটার ঠেলে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় পেট্রল পাম্পে নিয়ে আসি।

‘পাম্প বন্ধ থাকায় আবার ঠেলে নিয়ে চলে যেতে হয়। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

আবদুল মান্নান নামের এক বাইকচালক বলেন, ‘আমি জানতাম না পেট্রল পাম্প মালিকদের ধর্মঘট চলছে। পেট্রল পাম্পে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। তেল দেওয়া হচ্ছে না।

‘এখন তেল ছাড়া আমরা কীভাবে চলি? আগে জানানো হলে তাও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’

নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত মেসার্স সাকিব ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেকেই অফিসগামী মোটরসাইকেল আরোহী ও জ্বালানিচালিত বিভিন্ন যানবাহনগুলো পাম্পে এসে বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যানবাহন চালকদের। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান যানবাহন চালকরাও।

‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সকল পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও বন্ধ রাখতে হয়েছে।’

প্রেক্ষাপট

পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সওজ বগুড়া। ওই সময় সান্তাহারের হামিম ফিলিং স্টেশন ও আনিকা ফিলিং স্টেশনে তেলের মিটার উচ্ছেদ করা হয়।

তারা জানান, পূর্বঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি না দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
ডাকাতি করতে এসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় সাতজন গ্রেপ্তার
শৈত্যপ্রবাহ: নওগাঁয় এক দিনে তাপমাত্রা কমল ৬.৪ ডিগ্রি
নওগাঁয় বিএনপির দুই নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার
সিলেটে কর্মবিরতির ডাক পরিবহন শ্রমিকদের
১৮ ডিসেম্বর বিজয়ের পতাকা ওড়ে নওগাঁর আকাশে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The bus fares increased by the train closed more than doubled

ট্রেন বন্ধে বাস ভাড়া বাড়ল দ্বিগুণের বেশি

ট্রেন বন্ধে বাস ভাড়া বাড়ল দ্বিগুণের বেশি ট্রেন না পেয়ে খুলনা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ছবি: নিউজবাংলা
শ্রমিকদের একজন সান্তনু বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা কয়েকজন এখানে এসে বসে আছি। কয়েকজন গিয়ে বাসের খোঁজ নিয়েছে; কোনো ব্যবস্থা হয়নি। অতিরিক্ত ভাড়ায় আমরা যেতে পারছি না। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি ট্রেন চালু হয় কি না। না হলে সন্ধ্যার দিকে বাসে করে রওনা দেব।’

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষ ট্রেন ব্যবহার করেন। হঠাৎ করে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে বাসের ওপর বাড়তি যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ফলে অস্বাভাবিকভাবে বাসের টিকিটের মূল্য বেড়ে গেছে।

খুলনা থেকে নওগাঁ যাওয়ার জন্য সকালে রেলওয়ে স্টেশনে এসেছিলেন কয়েকজন শ্রমিক।

তারা জানান, খুলনা থেকে নওগাঁ যেতে তারা সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে কোনো টিকিট পাননি। বাসে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। তাতে ভাড়া গুনতে হবে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ পথে নিয়মিত ভাড়া ৫০০ টাকার বেশি নয়।

শ্রমিকদের একজন সান্তনু বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা কয়েকজন এখানে এসে বসে আছি। কয়েকজন গিয়ে বাসের খোঁজ নিয়েছে; কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

‘অতিরিক্ত ভাড়ায় আমরা যেতে পারছি না। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি ট্রেন চালু হয় কি না। না হলে সন্ধ্যার দিকে বাসে করে রওনা দেব।’

সান্তনুর মতো অনেক দূরপাল্লার যাত্রীকে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তবে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা বাসে করে গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন।

খুলনা থেকে উত্তরবঙ্গে দৈনিক একাধিক ট্রেন যাতায়াত করে। এর মধ্যে কপোতাক্ষ ও সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস খুলনা থেকে রাজশাহী, রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস খুলনা থেকে চিলাহাটি, মহানন্দা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রকেট এক্সপ্রেস খুলনা থেকে পার্বতীপুর, নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে গোয়ালন্দ ঘাট, বেনাপোল ও মোংলা কমিউটার খুলনা থেকে বেনাপোল যাতায়াত করে।

এ ছাড়া সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে ঢাকাতে যাতায়াত করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এর মধ্যে কোনো ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যায়নি। ফলে হাজার হাজার হাজার যাত্রী স্টেশনে এসে ফিরেছেন।

রেলওয়ের রানিং স্টাফরা মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এ সুবিধা সীমিত করা হয়।

ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত বুধবার রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম দেয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা।

খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সোমবার রাত ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ। আজ কোনো ট্রেন চলেনি। টিকিট বুকিং দেওয়া যাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

এ সমস্যার সমাধান কবে হবে, তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন:
ট্রেনের বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু
বাকৃবি: ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক আটজন
ট্রেনযাত্রীদের অধিকার রক্ষার ১০ দফা দাবিতে গণস্বাক্ষর
এডিপি বাস্তবায়নে সরকারের নজর ছোট ও গণমুখী প্রকল্পে
প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিমা সুবিধা দেবে ‘আমি প্রবাসী’ ও গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The trial is going on in the court of Jhalkathi

ঝুঁকি নিয়ে বিচারকাজ চলছে ঝালকাঠির আদালতে

ঝুঁকি নিয়ে বিচারকাজ চলছে ঝালকাঠির আদালতে ঝালকাঠির আদালত ভবনের বাইরের এবং ভেতরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। কোলাজ: নিউজবাংলা
আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।’

দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে নব্বইয়ের দশকে নির্মিত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি।

এমন পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালতে কর্মরতদের।

সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থদের অবহিত করে গণপূর্ত বিভাগের ঝালকাঠি অফিস ২০১৯ সালে চিঠি চালাচালি করলেও বিষয়টি এখনও ফাইলবন্দি।

ভবনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের দাবি আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।

ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর জরাজীর্ণ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৫ নভেম্বর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠান।

ভবন পরিদর্শনকালে তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী, গণপূর্তের ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উপস্থিত ছিলেন। ওই প্রতিবেদনের একটি কপি সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।

কী ছিল পরিদর্শন কপিতে

ঝালকাঠি গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী অনিরুদ্ধ মন্ডল, মো. বদরুজ্জামান, মো. ইমরান বিন কালাম এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল-মাসুম স্বাক্ষরিত ওই পরিদর্শন কপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ভবনটির দুই তলায় করিডোরের বেশ কিছু স্থানে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়ছে। এ ছাড়াও নলছিটি কোর্ট রুমের পরিদর্শনকারীদের বসার ওপরের ছাদের অংশ খসে পড়েছে। এ সমস্ত স্থানে মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে আছে। দ্বিতীয় তলা এবং নিচ তলার করিডোরের বেশ কিছু বিম ও কলামে ফাটল লক্ষ করা গেছে।

‘ভবনটির নিচ তলায় হাজতখানার ছাদের বেশ কিছু অংশসহ করিডোরের বিভিন্ন অংশে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়েছে। এসব স্থানেও মরিচা পড়ে রড বের হয়ে আছে। নিচ তলার বিভিন্ন কলাম এবং বিমের ফাটল লক্ষ করা গেছে। কিছু স্থানে কলাম ফেটে রড বের হয়ে গেছে।’

পরিদর্শন প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘ভবনটির দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ১৯৮৯-৯০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২০০৪-০৫ সালে তৃতীয় তলার উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে বিম কলামে ফাটল থাকায় এবং ছাদের কনক্রিট খসে পড়ায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
‘এমতাবস্থায়, উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত ডিজাইন বিভাগের মতামতসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রয়োজন।’

প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ

সম্প্রতি জজ আদালত ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, ভবনের ছাদের ওপর থেকে খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফাটল ধরেছে অনেক পিলারেও। ভারি বৃষ্টি এলেই ছাদ ও দেয়াল চুষে পানি পড়ে মেঝেতে। নষ্ট হয়ে যায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র।

দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় তিন তলা ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিচারকের এজলাস, খাসকামরা, পেশকার, সেরেস্তাদারের কক্ষ, নকল কক্ষ, হাজতখানাসহ প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে আদালতের কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

যা বলছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা

আদালতের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কথা হয় আবদুর রহমান, তৈয়ব আলী, কামরুল ইসলাম, মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে।

তাদের একজন বলেন, ‘আদালত ভবনের ভিতরে প্রবেশের পর কার্যসম্পাদন করে বের হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকি আতঙ্কে। প্রায় সময়ই ছাদের পলেস্তারা খসে নিচে পড়ে।

‘বর্ষায় তো বারান্দায় পানি জমে যায়। দেয়ালে পানি চুষে অনেক ফাইল নষ্ট হয়ে যায়।’

আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, ‘ভবনটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। বিচারকরা যদি ভালো পরিবেশে বিচারকার্য পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে বিচারকার্যে মনোনিবেশও করতে পারেন না।

‘ঝালকাঠির বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সকলেই আমরা এ ভোগান্তিতে রয়েছি। বিভিন্ন সময়ে উচ্চপদস্থদের বিষয়টি অবগত করলেও এখনও কোনো ভূমিকা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’

আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।

‘আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা এবং নতুন ভবন নির্মাণ অথবা টেকসই সংস্কারের জন্য গণপূর্তের চিঠি চালাচালি হলেও দীর্ঘদিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাইনি। জনস্বার্থে দ্রুত নতুন আদালত ভবন নির্মাণ জরুরি।’

আইনজীবী আক্কাস সিকদার বলেন, ‘বর্তমানে এ আদালতে ১৬ হাজার দেওয়ানি মামলা এবং দেড় হাজার ফৌজদারি মামলা চলমান। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।

‘আদালত ভবনের নিচ তলায় হাজতখানার পশ্চিম দিকে মসজিদের সামনে একাধিকবার ধসে পড়েছে ছাদের অংশ। এখন এই ভবন অস্থায়ী সংস্কার না করে এটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন করা উচিত।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নব্বই দশকে দোতলা জজ আদালত ভবনটি নির্মাণের পর ২০০৬ সালে এর ওপর আরও এক তলা বর্ধিত করে তৃতীয় তলায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে নিচ তলার অনেক পিলারে ফাটল ধরেছে। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আদালতের স্টাফ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে।

‘হাজতখানা সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে নেওয়া হয়েছে। ভবনে আগতদের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। দ্রুত এটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’

জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ ঝালকাঠির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আমানুল্লাহ সরকার একই ধরনের বক্তব্য দেন।

তাদের একজন বলেন, ‘ভবন পরিদর্শনের রিপোর্ট ২০১৯ সালে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে আছে।

‘সেখান থেকে অর্ডার হলেই গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য কার্যসম্পাদন করবে।’

ক্যাপশন: ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন। ছবি: নিউজবাংলা

ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ভেতরের জরাজীর্ণ অংশ। ছবি: নিউজবাংলা

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ধারণা পুলিশের
স্কুলের পাশে ইটভাটা, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পরিবেশ কর্মকর্তার
ওকালতনামা না থাকায় চিন্ময়ের পক্ষে ঢাকার আইনজীবীর ৩ আবেদনই নাকচ
ধাক্কা দিয়ে পথচারীর সঙ্গে প্রাণ হারালেন বাইক চালকও
‘আজ সেই দুষ্টু লোকেরা কোথায়?’

মন্তব্য

p
উপরে