‘গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে’ গিয়ে গত ২৫ মে মিরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট বাজারে এক সহযোগীসহ দুই র্যাব সদস্যের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তিন দিন কেটে গেলেও বারৈয়ারহাট পৌর বাজার এলাকায় এখনও আতঙ্ক কাটেনি।
ঘটনার পরদিন আতঙ্কিত ওই বাজারের প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি এখনও অস্বাভাবিক। শনিবার গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও অধিকাংশই বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।
ডাকাত সন্দেহে সাদা পোশাকে থাকা র্যাবের দুই সদস্যের ওপর মাদক ব্যবসায়ীরা হামলা চালিয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার র্যাবের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা হয়। মামলাগুলোতে আসামি হিসেবে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব। তাই বাজারজুড়ে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় তরুণদের মধ্যে।
শনিবার দুপুর থেকে বারৈয়ারহাট পৌর বাজার এলাকায় একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। এ সময় কেউই নিজের নাম প্রকাশ করে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তারা জানান, সেদিনের ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই বিস্মিত। এত বড় একটি ঘটনা ঘটে যাবে, কেউ চিন্তাও করেনি। অনেকেই সেদিন না বুঝে শুধু হুজুগের বশে সেই ঘটনায় জড়িয়ে গেছে। তারাই এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখনও থমথমে।
কামরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও অধিকাংশই বন্ধ। ওই ঘটনা নিয়ে স্থানীয়রা কথা বলতেও নারাজ। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের স্বজনরাও পর্যন্ত আত্মপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলছে না। এলাকায় এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এমন ঘটনার নজির নেই। স্থানীয়দের মধ্যে তাই গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও ভয় কাজ করছে।’
বারৈয়ারহাট পৌর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্যাহও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এমন আতঙ্কের আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সাথে ব্যবসায়ীরা জড়িত না। কিন্তু র্যাব জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যেতে পারে এই ভয়ে কেউ দোকানপাট খুলছে না। আবার যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের অনেক স্বজন এই বাজারের ব্যবসায়ী। তারাও ভয়ে আছেন। স্থানীয় মানুষও বাজারে আসা কমিয়ে দিয়েছে।’
হেদায়েত উল্যাহ জানান, ওই বাজারে ৫ বছর আগে বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। তখন থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের ডাকাতের ভীতি আছে। তাই ঘটনার সময় ওই দুই র্যাব সদস্যকে অনেকে ডাকাতই ভেবেছিল।
তিনি আরও জানান, শনিবার র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বারৈয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়েছে। হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের কোনো হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। তবে খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছে র্যাব।
এদিকে ওই হামলার ঘটনার পর থেকে বারৈয়ারহাট পৌর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের আনাগোনা বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বারৈয়ারহাট পৌরসভার উদ্যোগে শনিবার একটি শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টায় হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
সমাবেশে র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনাটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে সবাইকে সচেতন থাকারও আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় বারৈয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বলেন, ‘গত ২৫ মে পৌর সদরে র্যাব সদস্যদের ওপর না বুঝে ডাকাত সন্দেহে যে হামলা হয়েছে, তার জন্য আমরা অনুতপ্ত। আমরা চাই এ ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তদন্ত করে তাদের বের করা হোক। এ ঘটনায় নিরীহ কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করছি।’
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর হোসেন মামুন বলেন, ‘মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা পরিষ্কার অপরাধ। আইন হাতে তুলে নেয়ার সুযোগ নেই কারও।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই দিন র্যাব সদস্যদের দুটি অস্ত্র হারিয়ে গেছে। অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে একটি উদ্ধার করা গেছে। বুঝে বা না বুঝে অপর অস্ত্রটি যে বা যারা নিয়েছেন বিলম্ব না করে সেটি আমাদের দিয়ে যাবেন। এটি সরকারি সম্পদ। স্বেচ্ছায় এ অস্ত্র জমা না দিলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হব।’
আরও পড়ুন:মহাসড়কে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নিজকুঞ্জরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সেনাবাহিনীর সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও সেনা কল্যাণের চট্টগ্রাম শাখার কর্মকর্তা ৫৯ বছরের আবু তাহের, তার স্ত্রী ৪৮ বছলেরর সালমা আক্তার ও অজ্ঞাত আরেকজন।
নিহতের আবু তাহেরের ভাই ছাগলনাইয়ার ঘোপাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাংলাবাজারে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তারা নিহত হন।
সাদেক হোসেন আরও বলেন, বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি গাড়ি সিএনজিটিকে চাপা দিলে মারা যান তারা।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল মহসিন সুজন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গেল সপ্তাহের তিন দিনের প্রবল বর্ষণে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানির স্রোতে ইতোমধ্যে হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা গ্রামের নদীর বামতীর বাঁকে অন্তত ১৫০ মিটার বাঁধ ধসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর এমন আগ্রাসী রূপে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয়রা।
পাউবো গাইবান্ধার তথ্য অনুযায়ী, জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও করতোয়ার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ির তিস্তামুখ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০১ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো ও স্থানীয়রা জানান, প্রবল বৃষ্টি আর নদীর স্রোতে বুধবার থেকে হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা গ্রামের করতোয়া নদীর বামতীর এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ব্লক ধসে ভাঙন শুরু হয়। এতে অন্তত দেড় শ মিটার বাঁধ ধসে যায়।
বাঁধের চলমান ভাঙন রক্ষা করা না গেলে ২০টির বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান এলাকাবাসী। এ ছাড়া হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে জিও ব্যাগের মাটি-বালি সংকট দেখা দিয়েছে বলেও জানায় পাউবো কর্তৃপক্ষ।
হোসেনপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর পানি বৃদ্ধি পেলেই এই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এখন এখানে অর্ধেক বাঁধ ধসে গেছে। বাঁধ ছিঁড়ে গেলে এখানকার ২০টির বেশি গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাড়িঘর তলিয়ে যাবে; নষ্ট হবে ফসলি জমি, মাছের ঘের। মানুষ ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।’
তিনি জানান, এখানে এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলাচ্ছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ এলাকার লোকজন সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছে। এখানকার ভাঙন রোধে পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
পাউবো গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘গেল ২৪ ঘণ্টায় করতোয়ায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেস্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির কারণে স্রোতের সঙ্গে পলাশবাড়ীর হোসেনপুরে বাঁধ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘ভাঙন শুরুর পর থেকেই আমরা জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ভাঙনের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে গেছে।’
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ভারি বৃষ্টিপাতে মাটির ঘর ধসে দুই সহোদরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুইজন হলো ওই গ্রামের কৃষক মন্নাফ মিয়ার সন্তান ১২ বছর বয়সী রাফিন ও ১০ বছর বয়সী মিশু।
এ ঘটনায় শিশু দুটির বাবা মন্নাফ, মা রোকসানা ও তাদের সহোদর ইশু আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ইশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিজয়নগর থানার ওসি রাজু আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মন্নাফ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে মাটির ঘরে থাকতেন। শুক্রবার ভোররাতে সবাই একসঙ্গে ওই মাটির ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় ভারি বৃষ্টি শুরু হলে তাদের মাটির ঘরটি ধসে পড়ে। এতে তারা পাঁচজনই মাটির নিচে চাপা পড়েন।
‘পরে তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মন্নাফের এক মেয়ে রাফিন ও ছেলে মিশুকে মৃত বলে জানান।’
এ ব্যাপারে পত্তন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাটির ঘর ভেঙে চাপা পড়া পরিবারটি সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান রতনের আত্মীয় হয়। অতি বৃষ্টিতে মাটিতে নরম হয়ে ভেঙে পড়ে পাঁচজনই মাটি চাপা পড়ে।
‘ওই সময় বিকট শব্দ হলে প্রতিবেশীরা এসে মাটি চাপা থেকে তাদের বের করেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ. ইরফান উদ্দিন আহমেদ জানান, মাটি চাপা পড়ে এক পরিবারের দুই ভাই-বোনের মৃত্যুর বিষয়টি দুঃখজনক। জেলা প্রশাসক শাহগীর আলমের সঙ্গে কথা বলে আর্থিক সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর মোহনায় শুক্রবার দুপুরে এ দুর্ঘটনায় পড়ে স্পিডবোটটি।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী ফিরোজা খাতুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের ডেইলপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নারী সদস্য।
টেকনাফ উপজেলার ইউএনও আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুপুরে দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলমের মালিকানাধীন স্পিডবোটটি ২১ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে নদীর মাঝামাঝি মোহনায় হঠাৎ তলা ফেটে সেটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার খবরে কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। অবৈধভাবে এ রুটে চলাচলকারী স্পিডবোটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘নাফ নদীতে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবিতে সাবেক এক নারী ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিদের বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
বাগেরহাটে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরিকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার শরণখোলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফয়জুল ইসলাম ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে।
ওই কিশোরীকে শুক্রবার দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরণখোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শরণখোলা উপজেলার একটি গ্রামে ওই কিশোরীর বাবা গত ২৩ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায়। এ সময় তার মা তাকে পাশের ফুফুর বাড়িতে রেখে ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনায় যান।
এ সুযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশী ফয়জুল ইসলাম মিজান ওই কিশোরিকে ধর্ষণ করে। খুলনা থেকে তার মা বাড়িতে আসলে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা খুলে বলে।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঘটনা শুনে কিশোরীর মা শরনখোলা থানায় মামলা করলে আমাদের অভিযানে গভীর রাতে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
কুমিল্লা অঞ্চলের রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন অর্ধশতাধিক সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো মানুষ।
এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার কুমিল্লা-নোয়াখালী রেল রুটের কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার তপইয়ায় কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা রেললাইনে শুয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, লাকসাম-নোয়াখালী, লাকসাম-চাঁদপুর ও লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল রুটের বিভিন্ন অবৈধ রেল ক্রসিংয়ে খুঁটি গেড়ে সড়ক বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে স্থানীয়রা জানান, তিন দিন আগে অর্ধশতাধিক স্থানে সড়ক বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন কয়েক লাখ মানুষ। এতে বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের পরিবহন ও রোগীর অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারছে না। বন্ধ রয়েছে মালামাল পরিবহন।
তাদের দাবি, রেল সড়ক থেকেও তপইয়া সড়কের বয়স বেশি।
লাকসাম মনপাল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মোতালেব, মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন,আলী আকবর ও তপইয়া গ্রামের মাইন উদ্দিন জানান, তপইয়া রেলওয়ে ক্রসিং দিয়ে তপইয়া, কৃষ্ণপুর, মনপাল, রাজাপুর, রামপুর, ষোলদনাসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের লাখো মানুষ চলাচল করে। সড়কটি বন্ধ হওয়ায় রেললাইনের পশ্চিমের গ্রামগুলোর শিক্ষার্থী ও রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ ছাড়াও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স ও অটোরিকশার চালকরা।
সড়কটি দ্রুত চালুর দাবি জানান তারা। নইলে আরও বড় কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দেন তারা।
স্থানীয় উত্তরদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন বলেন, ‘তপইয়ায় সড়ক বন্ধ হওয়ায় এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ বিষয়ে আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’
রেলওয়ের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মুরসালিন রহমান বলেন, ‘লাকসাম-নোয়াখালী, লাকসাম-চাঁদপুর ও লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল রুটের বিভিন্ন অবৈধ রেল ক্রসিংয়ে সড়ক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনা বন্ধে এই পদক্ষেপ। এ বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে রেলওয়ে ব্যবস্থাপক পূর্বাঞ্চলের বরাবরে লিখিত দিতে পারেন।’
আরও পড়ুন:রাতের আঁধারে বরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়ায় কন্ট্রাক্টর বাড়ির একটি পুকুর ভরাট করার কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। বেশ কয়েকটি ট্রাক ঘটনাস্থলে পুকুর ভরাটের জন্য বালু নিয়ে আসে। একটি একটি করে ট্রাক থেকে বালু ফেলা হচ্ছিল পুকুরে। ওই সময় একটি ট্রাকের পেছনের দুই চাকার পাশ থেকে বালু সরানোর কাজ করছিলেন ইউনুস ও হাবিব। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
ট্রাকটি পেছনের দিকে সরে যায় এবং তার চাকার নিচে চাপা পড়েন ৫৯ বছর বয়সী ইউনুস ও ৩৮ বছর বয়সী হাবিব। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাদের।
পশ্চিম কাউনিয়ার হাজেরা খাতুন স্কুল সংলগ্ন সড়কে শুক্রবার রাত একটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ইউনুস ও হাবিব ওই এলাকার কন্ট্রাক্টর বাড়িতে মামুন চৌধুরীর বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। দুইজনই পেশায় ছিলেন দিনমজুর।
ফায়ার সার্ভিস বরিশাল সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আলামিন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাকার নিচে চাপা পড়া দুই শ্রমিককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি। ট্রাকটিকে তার চালক পেছনে নিয়েছিল নাকি নিজ থেকে পেছনে চলে যায়, সে বিষয়ে কেউ কিছু জানাতে পারেনি, তবে খুব ভয়ানকভাবে ট্রাকের পেছনের দুই চাকার নিচে দুই শ্রমিক চাপা পড়েন।’
এ বিষয়ে কাউনিয়া থানার এসআই শহীদুল ইসলাম জানান, মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি জানিয়ে কাউনিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে সবাই পালিয়ে গেলেও ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য