নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় মামলার হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে এরশাদ মিয়া নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সুখারী ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এরশাদ মিয়ার বাড়ি একই গ্রামে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর ইকবাল।
স্বজনদের বরাতে ওসি জানান, গ্রামের সবুজ মিয়ার সঙ্গে এরশাদ মিয়ার জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এর জেরে প্রায় ৮ মাস আগে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও চলছে।
প্রতিপক্ষের মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন এরশাদ মিয়া। এ সময় ওত পেতে থাকা সবুজ মিয়ার লোকজন তার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে এরশাদ গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এরশাদের ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, তার ভাই মামলার হাজিরা দিয়ে লুকিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। খবর পেয়ে সবুজ মিয়ার লোকজন তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘হাসপাতালে আসার আগেই এরশাদ মিয়ার মৃত্যু হয়েছে।’
ওসি জাফর ইকবাল বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কৃষকের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:গৃহবধূ হত্যা মামলায় প্রথমপক্ষের শ্যালকসহ স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে গাইবান্ধার একটি বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন, সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন ব্যাপারির ছেলে সাইফুল ইসলাম ও একই উপজেলার বসন্তেরপাড়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে করিম মিয়া। তারা সম্পর্কে শালা-দুলাভাই।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্যা কনক নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এজাহারে বলা হয়, সাইফুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই তার প্রথম স্ত্রী পারভীন বেগমের ভাই করিম মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী পারভীন আকতারকে গলা কেটে হত্যা করেন। সেই মরদেহ কয়েক দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত পারভীন আকতারের ভাই আজিজুল রহমান সাঘাটা থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন সাইফুল ও করিম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্যা কনক বলেন, ‘হত্যায় অংশ নেয়া দুইজনের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। তবে বাকি তিন আসামি নিরপরাধ হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছে আদালত।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের খুন হওয়ার ঘটনা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার সহকর্মী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
তাই বৃষ্টিতে ভিজেই মহাসড়কে দাড়িয়ে শিক্ষক উৎপলের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সাভার উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন সাভারের আওতাধীন অন্তত ২১টি শিক্ষক সংগঠনের ১০০ জনের বেশি শিক্ষক এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাভার অঞ্চলের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষক হত্যার মতো এমন নেক্কারজনক ঘটনার সাক্ষীও আমাদের হতে হচ্ছে, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাদের শিক্ষকরা আজ নিরাপদ বোধ করছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই দেরিতে হলেও ঘটনার মূল আসামি জিতুকে গ্রেপ্তার করার জন্য। একই সঙ্গে দাবি জানাই, দ্রুত এই মামলার বিচার কার্য শেষ করে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের। পাশাপাশি নিহত শিক্ষকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে তিনি সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে সকল শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও করেন।
মানববন্ধনে হাজী ইউনুস আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অন্যতম দাবি, দ্রুত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, যাতে আর কখনও কোনো শিক্ষকের উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার সাহস কেউ দেখাতে না পারে। একই সঙ্গে আর কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি আমাদের।’
একই দাবিতে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু। পরদিন রোববার সকালে সাভারের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। একই দিন উৎপলের বড় ভাই অসীম কুমার আশুলিয়া থানায় জিতুকে প্রধান আসামিসহ অজ্ঞাত তিন থেকে চারজনের নামে হত্যা মামলা করেন।
পরে বুধবার কুষ্টিয়ার কুমারখালি থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। একই দিন রাতে গাজীপুর থেকে মামলার প্রধান আসামি জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
শিক্ষক উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের শফিউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় অপর তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন অন্য একজন।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন সদস্যদের ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাজুল ইসলাম, জাহেদ মিয়া ও ছালেক মিয়াকে। খালাস পেয়েছেন সাব্বির আহমেদ।
এর আগে গত ১৭ মে মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও গাজী তামিম।
২০১৮ সালের ২১ মার্চ এ মামলায় পাঁচজনের নামে তদন্ত সম্পন্ন করে তদন্ত সংস্থা। পরে তারা প্রসিকিউটশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে দুটি অভিযোগ আনে। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে রায়ের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রাখে ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় নববধূকে বাবার বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নালিতাবাড়ী পৌর এলাকার কালিনগর মহল্লায় বুধবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িতের অভিযোগে পুলিশ স্থানীয় রহুল আমিন নামের এক যুবক ও তার ভাবিকে গ্রেপ্তার করেছে। ২৫ বছরের রহুল মাদক সেবন করতেন বলে জানা গেছে।
১৮ বছরের দিতি খাতুন কালিনগর মহল্লার মুছা মিয়ার মেয়ে।
মেয়েকে হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে হত্যা মামলা করেন মুছা মিয়া।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ‘আসামিদের আজ দুপুরে আদালতে তোলা হবে।’
স্বজনদের বরাতে ওসি জানান, এক সপ্তাহ আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার চেল্লাখালী সন্যাসীভিটা এলাকার খাইরুল ইসলামের সঙ্গে দিতির বিয়ে হয়। বিয়ের পর দিতিকে তার বাবার বাড়ি কালিনগর রেখে খাইরুল কর্মস্থল ঢাকায় চলে যান।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে একই এলাকার রহুল আমিন তার ভাবি রাহেলাকে নিয়ে দিতিদের বাড়িতে যান। এ সময় রাহেলার ডাক শুনে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে রহুল দা দিয়ে দিতির মাথায় কুপিয়ে পালিয়ে যান।
পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে পরামর্শ দেন। ময়মনসিংহ নেয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নকলা উপজেলায় দিতির মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাহেলাকে আটক করে ও রহুল আমিনকে খুঁজতে থাকে। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রহুল আমিন নিজেই ঘটনাস্থলে পুলিশের কাছে এসে হত্যার কথা স্বীকার করে।’
এ ঘটনায় দিতির মা মনোয়ারা বেগম জানান, রাতের খাওয়া শেষে তারা ঘুমাতে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাহেলা এসে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। দিতি দরজা খোলা মাত্রই রহুল তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যান। পরে রাহেলাও চলে যান। তখন পুলিশে খবর দেয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘কী কারণে তারা আমার মেয়েডারে মারল আমরা জানি না। আমার মেয়ের খুনিদের বিচার চাই।’
এদিকে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আফরোজা নাজনীন ও ওসি বাদল।
ওসি বছির আহমেদ বাদল বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। কী কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে দ্রুতই আমরা আসল ঘটনা উদ্ধার করতে পারব।মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নড়াইলে কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারই রিটটি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা রিট দায়েরের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। আজকেই রিটটি দায়ের করে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।’
এর আগে গত ২৮ জুন এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন এই আইনজীবী। পরে বিষয়টি নিয়ে রিট করতে পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট।
প্রেক্ষাপট
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশের পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।
শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
পুলিশের সামনে এমন ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা দিয়ে অপদস্থ করার ঘটনায় কারও দায়িত্বে গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্বপন কুমারকে জুতার মালা পরানোর পর তার আশপাশে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ বাহিনীর অন্তত ১০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে যেখানে দাঁড় করিয়ে জুতার মালা পরানো হয়, তার তিন-চার হাত দূরেই দৃশ্যত নির্বিকার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছিলেন নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ৪৫ বছর বয়সী মমিনুল হক মুরাদপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আকবর হোসেনের বড় ভাই। মমিনুল পেশায় কৃষক ছিলেন।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বনিক এসব তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মমিনুল হক ছেলে ও ভাতিজাকে নিয়ে গরু কিনতে গিয়েছিল। ফেরার পথে বাংলাবাজারে চলন্ত রিকশায় তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
তার ওপর কারা, কেন হামলা করেছে তা পুলিশ বের করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আকবর হোসেন বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যা। সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে কুপিয়ে চলে গেছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী বিশেষ ক্ষেত্রে প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগে অভিভাবকের সম্মতিতে বিয়ের অনুমতির জন্য কোন আদালতে যেতে হবে, তা নির্ধারণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
এ-সংক্রান্ত রিটে সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে আইনসচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইলিয়াস আলী মণ্ডল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
ইলিয়াস আলী জানান, বয়স নির্ধারণে বিশেষ প্রেক্ষাপটে ছাড় পাবেন এমন বিধান রেখে সংসদে ‘বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭’ হয়েছে। তাতে নারীদের মতো পুরুষরাও বিশেষ প্রেক্ষাপটে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করার সুযোগ পাবেন।
বিভিন্ন মহলের আপত্তির মধ্যেই ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ মেয়েদের বিয়ের বয়সে ছাড়ের বিধান রেখে আলোচিত ‘বাল্যবিয়ে নিরোধ বিল-২০১৬’ সংসদে ওঠে ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর। ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ‘চাইল্ড ম্যারেজ রেসট্রেইন্ট অ্যাক্ট-১৯২৯’ বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি সংসদে তোলা হয়।
কী বলা হয়েছে বিলে
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্ক সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এবং বাবা-মার সম্মতি অনুযায়ী বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে হলে তা এ আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
যা আগে অপ্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রে শুধু নারীদের কথা উল্লেখ ছিল। এ ছাড়া ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত রাখা হয়েছে।
আইনে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স আগের মতো ১৮ বছর রাখা হলেও ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ের সুযোগ রাখা হয়। এতে ক্ষেত্রবিশেষে ১৮ বছরের আগেও বিয়ে দেওয়া যেতে পারবে।
বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্ক সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এবং বাবা-মার সম্মতি অনুযায়ী বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ের কার্যক্রম হলে তা এ আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
আইনজীবী ইলিয়াস আলী বলেন, ‘এখন তাহলে প্রশ্ন হলো এখানে কোন আদালত তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এখন অভিভাবকরা কোন আদালতে যাবেন। নারী-শিশু আদালত, বিশেষ আদালত নাকি কোথায়। আবার এ বিষয়ে কোনো বিধিও করা হয়নি। তা হলে যদি কেউ তার সন্তানকে বিয়ে দিতে বা করাতে চান কোন আদালতে যাবেন, সেই প্রশ্নে রিট করা হয়।’
আইনটি ২০১৭ সালের ১১ মার্চ গেজেট প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য