সিলেটে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সড়ক, কৃষি ও মাছের। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গবাদিপশু ও গ্রামীণ অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১০০ কোটি টাকার মতো। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ১১ মে থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এখন পানি কমে এলেও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার অনেকাংশ এখনও প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে।
পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সিলেট জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসাবে, বন্যায় নগরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর সিটি করপোরেশনের হিসাবে নগরে ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাথমিক হিসাব করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে জমা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনে জমা দেয়া এসব তথ্য থেকে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাথমিক চিত্র পাওয়া যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া হিসাবে, জেলায় বন্যায় ১ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমির বোরো, ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির আউশের বীজতলা ও ১ হাজার ৪৭১ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেটের উপপরিচালক মো. কাজী মজিবর রহমান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে সিলেটে নদীরক্ষা বাঁধ রয়েছে ৫২টি। এর দৈর্ঘ্য ১৫ হাজার ৯০০ মিটার। বন্যায় ৩৮টি বাঁধের ২৮ দশমিক ৬০ মিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারের পাশপাশি সবগুলো বাঁধ উঁচু করার সুপারিশ করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সড়কের। সিলেট নগর ও জেলার ১৩টি উপজেলার সড়ক ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এ খাতে প্রায় ৪০৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এর মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ৭২ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে গেছে। সওজ সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, ভেঙে যাওয়া সড়কগুলো জরুরি মেরামতের জন্য ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। আর স্থায়ী মেরামতের জন্য প্রয়োজন ৭৫ কোটি টাকা।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংখ্যা ১২০টি। বন্যায় এসব সড়কের প্রায় ২৭৮ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৮টি। টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৪৮ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন এলজিইডির কর্মকর্তারা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, সিসিকের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডের প্রায় ২৫০ কিলোমিটার সড়ক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া কুশিঘাটের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের রিটেইংনিং দেয়ালের মাটি সরে গেছে। নদীপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা ট্রাক টার্মিনালেও। সিসিকের পাম্প হাউস ডুবে প্লাস্টার নষ্ট হয়েছে।
সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করছি। প্রতি ওয়ার্ডে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেটের মৎস্য খাতও। জেলা মৎস্য অফিসের হিসাবে, পানিতে ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দিঘি, খামারের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীর সংখ্যা ১৫ হাজার ১৬৩। ভেসে গেছে ২ হাজার ৩০৫ টন মাছ, ২ দশমিক ১৩ টন পোনা। এ ছাড়া খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকার। সব মিলিয়ে বন্যায় এখানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২২ কোটি টাকা।
এ ছাড়া গবাদিপশু, খড়-ঘাসসহ এ খাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৭০ টাকা।
পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১১ হাজার ৬৪০টি নলকূপ, ক্ষতিগ্রস্ত ল্যাট্রিনের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৪১৫টি। ৬ হাজার ৫০০ মিটার পানি সরবরাহের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাদের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ জানা যায়নি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, জেলার ছয় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে প্রাথমিকে ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া বন্যায় সিলেটের গ্রামীণ অবকাঠামোর বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেঙে গেছে অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি। তবে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি।
অন্য দিকে নগরের সুরমার তীরঘেঁষা কাজিরবাজার এলাকায় রয়েছে অর্ধশতাধিক অটো রাইস মিল। বন্যার পানিতে এসব রাইস মিলের গুদামে পানি উঠে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি উঠে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালীঘাটের ব্যবসায়ীরা। তাদের ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘সিলেটে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা আমরা করছি। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছি। কীভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায় সে নিয়েও আলোচনা চলছে।’
গত ২১ মে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
গত ২২ মে সিটি করপোরেশনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক এক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবুল মোমেন দ্রুত সময়ের মধ্যে নগরের প্লাবিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বাসাবাড়ির তালিকা প্রণয়ন ও করণীয় বিষয়ক বিস্তারিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:মেঘনা নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার উপকূলীয় অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করলেও বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে।
নদীর তীরবর্তী এলাকার বসত বাড়িসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠে গেছে। ভেসে গেছে অনেক মাছের ঘের ও পুকুরের মাছ; ডুবে গেছে ফসল। এই দুর্ভোগের মধ্যেও ভাঙন আতংকে রয়েছে প্রায় দু শ পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড লক্ষ্মীপুর কার্যালয় বলছে, পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রভাবে ভাটা পড়লে লোকালয় থেকে পানি নেমে যায়, আবার জোয়ার আসলে পানি ঢুকে পড়ে। এমনটি আরও কয়েক দিন থাকবে।
স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরবর্তী কমলনগর উপজেলার কালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, চরমার্টিন, চরলরে ইউনিয়ন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চরআবদুল্লাহ ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ সব এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নদী ভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সহেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে রামগতি উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপ চর আবদুল্যা ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বড়খেরী, চরগাজী, চরআলেকজান্ডারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে গত দুই দিন ধরে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড লক্ষ্মীপুর কার্যালয় কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সামনে পূর্ণিমা, তাই নদীতে পানি বাড়ছে। গত দুই দিনে নদীর পানি ৪/৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রভাবে ভাটা পড়লে লোকালয় থেকে পানি নেমে যায়, আবার জোয়ার আসলে পানি ঢুকে পড়ে। এটি আরও কয়েক দিন থাকবে।’
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকটি এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীকে গালি দেয়ার অভিযোগে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
উপজেলার সহোগলপুর গ্রাম থেকে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৪২ বছর বয়সী আবু তালেব গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাজারপাড়ার বাসিন্দা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গাংনী থানায় তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সাইফুল ইসলাম।
ওসি সাইফুল জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশেও তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ৬ আগস্ট আবু তালেব ফেসবুক লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গালিগালাজ করেন। পরে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নজরে আসে।
এ ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেন আবু তালেব। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ অবস্থান জানতে পেরে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ বাদী হয়ে আবু তালেবের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করেছে। আজ (বৃহস্পতিবার) তাকে আদালতে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে যৌতুক চেয়ে না পেয়ে নির্যাতনের পর স্ত্রীকে তাড়িয়ে দুই সন্তানের পায়ে খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই নারী তার স্বামীকে মাদকাসক্ত দাবি করে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বুধবার রাতে অভিযোগের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
এর আগে বিকেলে পৌর এলাকার সবুজবাগ কোবা মসজিদের পাশের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ৯ বছরের শিশু আরোবি ও তার ভাই ৫ বছর বয়সী আলিফ বর্তমানে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত নুর আলমের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার পূর্ব মাতাপুর গ্রামে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ১১ বছর আগে নুর আলম ও জয়মেনা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে এক মেয়ে ও ছেলের জন্ম হয়। মাদকাসক্ত নুর আলম কাজকর্ম না করে যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন।
গত ২৮ জুলাই যৌতুকের টাকার জন্য ছেলে ও মেয়েকে বাসায় আটকে রেখে জয়মেনা খাতুনকে বের করে দেন নুর আলম। জয়মেনা বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পরে খেলতে যাওয়ায় মেয়ে আরোবি ও ছেলে আলিফকে মারধর করেন নুর আলম। এ সময় গরম খুন্তি চেপে ধরে মেয়ের ডান পায়ের তালু ও ছেলের বাঁ পায়ের তালু ঝলসে দেন। খবর পেয়ে জয়মেনা বেগম সন্তানদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর পত্নীতলায় কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং যৌনবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
শহরের কাঁঠালতলী এলাকায় বুধবার রাত ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব-৫। এ সময় তার বাড়ি থেকে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক ৪০ বছরের সালাম হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার বর্ষাইল গ্রামে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘গত ১১ জুলাই পত্নীতলার কাদাইল বাজার এলাকা থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে একটি সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যান সালাম হোসেন ও তার সহযোগীরা। পরে অপহরণকারীরা ফোন করে মেয়েটির বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন।
‘অপহরণের পর প্রথমে নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ এলাকার একটি বাসায় সালামসহ তার অপর দুই সহযোগী চয়ন উদ্দীন ও আলমগীর হোসেন ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। পরে নওগাঁ শহরের কাঁঠালতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে আটকে রেখে তাকে যৌনবৃত্তিতে বাধ্য করেন তারা।’
অপহরণের পর পত্নীতলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মেয়েটির বাবা। পাশাপাশি র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অপহৃত কিশোরীর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় সালাম হোসেনকে।
সালামকে পত্নীতলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সালামের সহযোগীদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।’
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ্ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করবেন।’
আরও পড়ুন:নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ক্ষেতে পানি দিতে গিয়ে সেচ মোটরের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের নোয়াদিয়া দরগাবাড়ি গ্রামের পাশের হাওরে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কৃষক মনির হোসেনের বাড়ি একই গ্রামে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী।
স্থানীয়দের বরাতে এসআই মোহাম্মদ আলী জানান, কৃষক মনির হোসেন বিকেলে জমিতে সেচ দেয়ার জন মোটর চালাতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন। পরে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মনির হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের নিম্নাঞ্চল। এতে ফসলহানির পাশাপাশি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদী পারের কয়েক হাজার পরিবার।
এতে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকের। তারা বলছেন, আউশের ক্ষেত ও আমনের বীজতলার পাশাপাশি শ শ মাছের ঘেরও ভেসে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
পিরোজপুর সাগর উপকূলবর্তী হওয়ায় নিম্ন বা লঘুচাপের প্রভাব পড়ে ব্যাপক।
এবার সাগরে লঘুচাপের কারণে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এরই মধ্যে দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চল।
পিরোজপুরের শারিকতলা, ডুমুরিতলা, ইন্দুরকানী, ভাণ্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলে অতি জোয়ারে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।
নদীর পারের এলাকা শংকরপাশা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মো. কাসেম হোসেন বলেন, ‘গতকাল ও আজ সকাল থেকে যেমন ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। এতে ঘরের উঠানে নদীর পানি উঠেছে। বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তায় আছি। ওরা তো আর পানি বুঝে না, খেলতে নেমে যায়। তাই চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে।’
পাড়েরহাট এলাকার গাজীপুর গ্রামের মনিকা বেগম বলেন, ‘কচা নদীর গাজীপুরের বাঁধ ভেঙে আমাদের এলাকার অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। তবে জোয়ারে পানি এলেও ৬-৭ ঘণ্টা পর পানি নেমে যায় ভাটায়।’
ঝনঝনিয়া গ্রামের কৃষক মন্টু মিয়া বলেন, ‘এখন চলছে আউশ ধানের মৌসুম। ইতোমধ্যে ধান কাটাও শুরু করেছি। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি ও নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে মাঠ। এতে ধানের ক্ষতি হবে।’
সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শিপন চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘পানি স্থায়ী না হলে কৃষি ফসলের ক্ষতির তেমন আশঙ্কা নেই। তবে আমান বীজতলা লাগাতে কৃষকদের কিছুটা ভোগান্তি হবে।’
তিনি আরও বলেন, এ বছর জেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ও ৬১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগের সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসাইন বুধবার বিকেলে আকবরশাহ থানায় মামলা করেন।
আসামিরা হলেন, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম, তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও ওই স্থাপনার তত্ত্ববধায়ক মো. হৃদয়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (চট্টগ্রাম মহানগর) হিল্লোল বিশ্বাস।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘নগরীর পাহাড়তলী মৌজার লেকসিটি এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের একটি অভিযোগ পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা। এ সময় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ ও গাছ কাটার প্রমাণ পাওয়া যায়।
‘স্থাপনা বলতে টিনশেড সেমিপাকা একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া অন্তত ৩ হাজার ঘণফুট পাহাড় ও তিনটি বড় গাছ কেটে নিয়েছে ওরা। বুধবার শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়। শুনানিতে ওই স্থাপনার তত্ত্বাবধায়ক হৃদয় এসে জমির প্রকৃত মালিক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলে জানান।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য