× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The way Chhatra League BNP clash in Khulna
google_news print-icon

খুলনায় ছাত্রলীগ-বিএনপি সংঘাত যেভাবে

খুলনায়-ছাত্রলীগ-বিএনপি-সংঘাত-যেভাবে
সংঘর্ষে আহত বিএনপির এক নেতা। ছবি: নিউজবাংলা
খুলনা মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড় থেকে পৃথক দুটি রাস্তা ধরে ১০০ মিটার এগোলেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় কার্যালয়। নিজ নিজ কার্যালয়ে পূর্বঘোষিত সমাবেশে যোগ দিতে ছাত্রলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার পথে এই মোড়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

খুলনায় একই দিনে পাশাপাশি স্থানে ছাত্রলীগ ও বিএনপির সমাবেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সংঘর্ষে বিএনপি অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ছাত্রলীগের প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ১৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড় এলাকায় এ সংঘাতের সূত্রপাত হয়।

পিকচার প্যালেস মোড় থেকে চারদিকে চারটি রাস্তা চলে গেছে। মোড় থেকে পৃথক দুটি রাস্তা ধরে ১০০ মিটার এগোলেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় কার্যালয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ একটি মিছিল বের করে।

খুলনায় ছাত্রলীগ-বিএনপি সংঘাত যেভাবে
সংঘর্ষে আহত পুলিশের এক সদস্য। ছবি: নিউজবাংলা

ছাত্রলীগের মতোই পূর্ব ঘোষণা দিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। খালেদা জিয়াসহ দেশের নাগরিকদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে তারা এই কর্মসূচির ডাক দেয়।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা পৃথক মিছিল নিয়ে পিকচার প্যালেস মোড় হয়ে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময়ই দুপক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ।

খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার বলেন, ‘পিকচার প্যালেস মোড় হয়ে মিছিল আকারে আমাদের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে দু’পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়।’

তবে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, ‘সমাবেশে আসার জন্য তেরখাদা উপজেলা বিএনপির একটি মিছিল কেসিসি মার্কেট এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ের দিকে আসার সময় ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করে।

‘এরপরই ডুমুরিয়া থানা বিএনপির একটি মিছিল গোলকমনি পার্ক এলাকা থেকে সমাবেশে আসার পথে পিকচার প্যালেস মোড়ে এসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়। এ সময় যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী রক্তাক্ত জখম হন।’

মিল্টন বলেন, ‘রক্তাক্ত কর্মীদের নিয়ে মিছিলকারীরা সমাবেশস্থলে পৌঁছলে উপস্থিত দলীয় কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। শীর্ষ নেতারা তাদেরকে শান্ত করে সমাবেশের কাজ চালিয়ে যান। পরে বিকেল ৫টার দিকে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র, রড, লাঠি, বাঁশ নিয়ে পিকচার প্যালেস মোড় হয়ে বিএনপি অফিসের দিকে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।’

‘এ সময় থানা মোড়ে অবস্থানরত বিএনপি কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে স্লোগান শুরু করে। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলইশ ব্যারিকেড ভেঙে ধেয়ে এসে বিএনপির সমাবেশে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে।’

আহত

সংঘর্ষের পর বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, হামলা-সংঘর্ষে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন দাবি করেন, সংর্ঘষে তাদের দলের ১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।

খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন ব‌লেন, ‘এ ঘটনায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ১৪ জন সদস‌্য আহত হয়েছেন।’

আটক

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, ‘সংর্ঘষের পর পুলিশ বিএনপি অফিসের দরোজার তালা ভেঙে একের পর এক নেতাকর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

‘এ সময় নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা রেহানা ঈসা, মহিলা দল সভাপতি আজিজা খানম এলিজা, ডুমুরিয়া বিএনপির সরোয়ার হোসেনসহ অন্তত ২০ জনকে পুলিশ আটক করে।’

ওসি হাসান আল মামুন ব‌লেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৩৭ জনকে আটক করেছি।’

খুলনায় ছাত্রলীগ-বিএনপি সংঘাত যেভাবে

পুলিশ যা বলছে

ওসি হাসান আল মামুন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের কাজে বাধা প্রদানসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে পিকচার প্যালেস মোড় থেকে বিএনপি অফিস পর্যন্ত এলাকাজুড়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

‘দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টাকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর চরম মারমুখী হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তখন সরকারি অস্ত্র-গুলি ও জান-মাল রক্ষার্থে কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিআর শেল নিক্ষেপ এবং শর্টগানের গুলি ছোড়া হয়। পুলিশ ১২৭ রাউন্ড শর্টগান ও ৪৩ রাউন্ড গ্যাসগান ফায়ার করে। এ ঘটনায় ডিউটিতে নিয়োজিত ১৪ জন পুলিশ আহত হন।’

ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত থাকায় খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ বিএনপির মোট ৩৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

‘মামলায় ৯২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয়ে ৭০০-৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বিএনপির সঙ্গে না থাকার ঘোষণা ৬০ নেতার
বিএনপির প্রতিবাদ সভায় ছাত্রলীগের ‘হামলা’
বিএনপির ষড়যন্ত্র রুখতে পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসান: কৃষিমন্ত্রী
বিএনপি নির্বাচনে আসতে ভয় পায়: তথ্যমন্ত্রী
রামদা হাতে সেই তরুণ ছাত্রলীগ নেতা ডিটু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Action against policemen absent from duty Home Affairs Adviser

চাকরিতে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

চাকরিতে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বুধবার বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা ও ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহীদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: আনসার
উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনও কাজে যোগ দেয়নি, এমন পুলিশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমরা তাদের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান করছি। আপনারাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।’

যেসব পুলিশ সদস্য এখন পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি তাদের আর যোগ দিতে দেয়া হবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বুধবার বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা ও ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহীদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনও কাজে যোগ দেয়নি, এমন পুলিশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমরা তাদের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান করছি। আপনারাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।’

যারা কাজে যোগদান করেননি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছেন বলেই হয়তো তারা লুকিয়ে আছেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য কর্মস্থলে এখনও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।

গত ১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জনস্বার্থেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হয়েছে। জনগণ এর সুফল পাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ওই সময় তার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট, উপমহাপরিচালক, বাহিনীর পরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার পতনের শহীদ সব ছাত্র-জনতাকে স্মরণ করা হয়।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ আজ নবজাগরণে উজ্জীবিত। বিগত সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের হতে পারেনি বলেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী সরকার দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

আরও পড়ুন:
নির্দলীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
মাজারে হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
বসুন্ধরার প্রতারণা, প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবাদিকদের স্মারকলিপি
আইএলও কনভেনশনে স্বাক্ষর ছাড়া এগোনো কষ্টকর হবে
স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে আসুন একযোগে কাজ করি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
10000 T shirts stolen from Gazipur recovered in Chittagong

গাজীপুর থেকে চুরি হওয়া ১০ হাজার টি-শার্ট চট্টগ্রামে উদ্ধার

গাজীপুর থেকে চুরি হওয়া ১০ হাজার টি-শার্ট চট্টগ্রামে উদ্ধার চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অভিযানে উদ্ধারকৃত টি-শার্ট থাকা কার্টন ও গ্রেপ্তার তিনজন। কোলাজ: নিউজবাংলা
পুলিশ জানায়, অভিযানের একপর্যায়ে কাভার্ড ভ্যানগুলো আতুরার ডিপো চলে যাওয়ার পথে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের জালে ধরা পড়ে। আটকের স্থানটি পাঁচলাইশ থানাধীন হওয়ায় জ্যেষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আটককৃত চোরাই গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই কাভার্ড ভ্যানগুলো এবং আটক তিনজনকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গাজীপুর থেকে চুরি হওয়া ১ হাজার ৯টি কার্টনভর্তি ১০ হাজার ৯০টি টি-শার্টের একটি চালান উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বায়েজিদ বোস্তামী থানা।

চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ থানাধীন আতুরার ডিপো এলাকা থেকে মঙ্গলবার বিকেলে তিনটি কাভার্ড ভ্যানবোঝাই পণ্য উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় মোশাররফ (২৪), মো. আজাদ (৩৬) ও মো. গণি (২৯) নামের তিন ব্যক্তিকে, যারা কাভার্ড ভ্যানগুলোর চালক।

সিএমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে জানানো হয়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ছয়টার সময় গাজীপুরের ট্রপিক্যাল নিটেক্স বিডি লিমিটেডের ১০ হাজার ৯০টি টি-শার্ট একটি সংঘবদ্ধ চক্র চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে এসব পণ্য চট্টগ্রামের অক্সিজেন থেকে আতুরার ডিপোর দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ জানতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে বায়েজিদ বোস্তামী থানার একটি চৌকস টিম সংশ্লিষ্ট এলাকায় অভিযান চালায়।

পুলিশ আরও জানায়, অভিযানের একপর্যায়ে কাভার্ড ভ্যানগুলো আতুরার ডিপো চলে যাওয়ার পথে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের জালে ধরা পড়ে। আটকের স্থানটি পাঁচলাইশ থানাধীন হওয়ায় জ্যেষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আটককৃত চোরাই গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই কাভার্ড ভ্যানগুলো এবং আটক তিনজনকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণের মামলায় চালক হেলপার গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ ও সেবা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে
চট্টগ্রামে ১৮ ওসিসহ ৩০ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক হলেন আনোয়ার পাশা
চট্টগ্রামে ট্রাকে চাঁদাবাজি: যুবদল নেতা আটক, বহিষ্কার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Fire vandalized former MP Badals grave in Chittagong

চট্টগ্রামে সাবেক এমপি বাদলের কবরে ভাঙচুর, আগুন

চট্টগ্রামে সাবেক এমপি বাদলের কবরে ভাঙচুর, আগুন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামে আহমদুল্লাহ খান বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত গাড়ি নিয়ে এসে মইন উদ্দীন খান বাদলের কবরে আগুন দেয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর করে। কোলাজ: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, লাল রঙের একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা শুরুতে বাদলের কবরে ভাঙচুর চালায়। এরপর সেখানে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাবেক কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদলের কবরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।

বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামে আহমদুল্লাহ খান বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত গাড়ি নিয়ে এসে এ ঘটনা ঘটায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বোয়ালখালী থানা পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, লাল রঙের একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা শুরুতে বাদলের কবরে ভাঙচুর চালায়। এরপর সেখানে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মইন উদ্দীন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান ফেসবুকে লিখেন, ‘কতিপয় সন্ত্রাসী আজ দুপুরে গাড়ি নিয়ে এসে মইন উদ্দীন খান বাদলের পৈত্রিক ভিটার কবরে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়…এখন কবরেও মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না।’

ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ সরকারের আমলে যদি মানুষ কবরেও শান্তিতে থাকতে না পারে, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

‘বাদল কখনও কোনো দুর্নীতির সঙ্গে ছিলেন না। তার কোনো বদনাম নেই। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।’

মইন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যু হয় ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর, যিনি চট্টগ্রাম-৭ ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জাসদের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন।

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক হলেন আনোয়ার পাশা
চট্টগ্রামে ট্রাকে চাঁদাবাজি: যুবদল নেতা আটক, বহিষ্কার
চট্টগ্রামে শিপইয়ার্ডে বিস্ফোরণ: দগ্ধ একজনের মৃত্যু
দগ্ধ ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, সাতজনকে ঢাকায় প্রেরণ
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতিরও পদত্যাগ, ভেঙে গেছে পর্ষদ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Irregularity in allocation money against upazila agriculture officer

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরাদ্দের টাকায় অনিয়মের অভিযোগ

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরাদ্দের টাকায় অনিয়মের অভিযোগ নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনটি বরাদ্দে ১০০টি বেডের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও জানেন না কৃষকরা। আলাদা তিনটি স্মারকে বরাদ্দের তিনটি কপি এসেছে নিউজবাংলার প্রতিবেদকের হাতে, যেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন করেননি এ কর্মকর্তা। 

কিশোরগঞ্জে কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনটি বরাদ্দে ১০০টি বেডের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও জানেন না কৃষকরা।

আলাদা তিনটি স্মারকে বরাদ্দের তিনটি কপি এসেছে নিউজবাংলার প্রতিবেদকের হাতে, যেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন করেননি এ কর্মকর্তা।

কৃষকদের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বরাদ্দের পুরোটাই এ কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০২৪ সালে একটি স্পেশাল বরাদ্দ আসে কিশোরগঞ্জে। সেটিও এ কর্মকর্তা ভাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এ বরাদ্দে ছিল চার লাখ ৬০ হাজার টাকা।

এসবের বাইরে কৃষকের মাঠ দিবস, প্রশিক্ষণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন ২০২৩ সালের ২৮ মে থেকে নিকলী উপজেলায় কর্মরত।

প্রকল্পগুলো কী ও বরাদ্দের পরিমাণ কত

কৃষি সম্প্রসারণের আওতাধীন ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের অনুকূলে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ভাসমান বেডে মসলা, লতাজাতীয় ও লতাবিহীন সবজি প্রদর্শনী রাজস্ব ব্যয় বাবদ নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুকূলে ব্যয় মঞ্জুরিসহ চার লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। লতাজাতীয় ২৩টি প্রদর্শনীর জন্য দুই লাখ ৩০ হাজার (প্রতিটি প্রদর্শনীর ব্যয় ১০ হাজার) টাকা ও লতাবিহীন ২৩টি প্রদর্শনীর জন্য দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০২৪ সালের ২ মে পাওয়া এ বরাদ্দের একটি প্রদর্শনীও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

ভাসমান বেডে লতাজাতীয় সবজি ও লতাবিহীন সবজি প্রদর্শনীর জন্য ২০২৪ সালের ২১ মে নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুকূলে ব্যয় মঞ্জুরিসহ বরাদ্দ দেয়া হয় তিন লাখ টাকা।

ভাসমান বেডে মসলা প্রদর্শনীতে পাঁচটিতে বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা (প্রতিটি প্রদর্শনীতে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ)। ভাসমান বেডে লতাজাতীয় সবজি প্রদর্শনীর জন্য ১০টি প্রদর্শনীতে বরাদ্দ প্রদান করা হয় ১ লাখ টাকা। এ ছাড়াও ভাসমান বেডে লতাবিহীন সবজির ১৫টি প্রদর্শনীতে বরাদ্দ প্রদান করা হয় দেড় লাখ টাকা। এখানে ৩০টি প্রদর্শনীতে মোট তিন লাখ টাকা বরাদ্দের একটি প্রদর্শনীও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

একই বছরের ৬ জুন ভাসমান বেডে মসলা প্রদর্শনীর ১১টিতে বরাদ্দ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা (প্রতিটি প্রদর্শনীতে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ)। ভাসমান বেডে লতাজাতীয় সবজি প্রদর্শনীর জন্য ৯টি প্রদর্শনীতে বরাদ্দ প্রদান করা হয় ৯০ হাজার টাকা।

এ ছাড়াও ভাসমান বেডে লতাবিহীন সবজি চারটি প্রদর্শনীতে বরাদ্দ প্রদান করা হয় ৪০ হাজার টাকা। এখানে ২৪টি প্রদর্শনীতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দের একটি প্রদর্শনীও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

কোন খাতে কী বরাদ্দ জানেন না উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, প্রদর্শনীর বিভিন্ন উপকরণ ক্রয় বাবদ সরকার বরাদ্দ দেয় উপজেলা কর্মকর্তা বরাবর। প্রদর্শনী অনুযায়ী কৃষক নির্বাচন করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে। তারা কৃষক নির্বাচন করে নিশ্চিত করেন উপজেলা কর্মকর্তাকে।

একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে উপসহকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা।

নিয়ম অনুযায়ী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক নির্বাচন করে উপজেলা অফিসে জমা দেবেন। পরবর্তী সময়ে কৃষি কর্মকর্তা উপকরণ কিনে নির্ধারিত একটি তারিখে কৃষকদের অফিসে আসতে বলবেন। পরে সেখান থেকে উপকরণ বিতরণ রেজিস্ট্রারে (স্টক রেজিস্ট্রার) সাক্ষর রেখে মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয় কৃষককে। এ ক্ষেত্রে তিনি কোনো উপসহকারীর সঙ্গে সমন্বয় করেননি।

সমন্বয় না করলে প্রদর্শনীতে কী কী উপকরণ বরাদ্দ এসেছে সেগুলো উপসহকারী কর্মকর্তা কিংবা কৃষকদের জানারও সুযোগ থাকে না।

নিকলী সদর ইউনিয়নের ষাইটধার গ্রামের কৃষক মিয়া হোসেন জানান, বিগত দুই বছর পূর্বে ৮০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছিলেন তিনি। তখন ১০ কেজি বীজ, এক বস্তা ইউরিয়া আর এক বস্তা ডিএপি সার ছাড়া কিছুই পাননি। এরপর আর তার অনুকূলে কোনো বরাদ্দ আসেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিকলী উপজেলার গুরই, সিংপুর ও সদর ইউনিয়নের একাধিক কৃষক জানান, অন্যান্য বছর আগস্টের মধ্যেই তাদের ভাসমান বেড তৈরির বরাদ্দ দেয়া হতো। এবার তাদের কাউকেই কোনো প্রকার বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে তারা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করার পর তাদের জানানো হয়েছে, এ বছরের বরাদ্দ আসেনি।

কৃষকরা জানান, বরাদ্দ এলে তাদের দেয়া হবে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

প্রান্তিক কৃষকদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করে নিউজবাংলা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণের আওতাধীন ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের আওতায় আলাদা তিনটি বরাদ্দে ১০০টি বেডের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। আলাদা তিনটি স্মারকে বরাদ্দের তিনটি কপি আসে এ প্রতিবেদকের হাতে, যেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন করেননি এ কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তার ভাষ্য

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বরাদ্দ আসার বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করেন। খানিকটা পর বলেন, ‘কয়েকটা ছোট বরাদ্দ এসেছে। পানি বেশি থাকায় সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। অচিরেই সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’

একপর্যায়ে বরাদ্দের কপি দেখানোর পর বিশেষ বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কৃষি সম্প্রসারণের আওতাধীন ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের তৎকালীন উপ প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বিবেকানন্দ হীরা তার ব্যাচমেট। হঠাৎ একদিন হীরা তাকে ফোনে বলেন, ‘তোমার নামে একটি স্পেশাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তুমি বরাদ্দের টাকাটা উত্তোলন করে আমাকে পাঠিয়ে দাও। অফিসের বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচে সেটি ব্যয় করা হবে।’ তিনিও তার কথামতো সেটি করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আপনারাও তো বোঝেন, অনেক সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে হয়। আমিও সেটি করেছি।

‘তারপরও বিষয়টি যেহেতু আপনাদের নজরে চলে এসেছে আমি তার সাথে কথা বলে অচিরেই বাস্তবায়ন করে নেব।’

এ কথার একপর্যায়ে তিনি ফোনে কথা বলেন হীরা নামের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে।

সাখাওয়াত তাকে বলেন, ‘তুমি যে একটা স্পেশাল বরাদ্দ দিয়েছিলে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেছে।’

নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আরও আছে। এর আগে এ কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায়। সেখানেও তার বিরুদ্ধে কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ, সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।

এ বিষয়ে জাতীয় একটি পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। পরে সেখান থেকে তাকে বদলি করা হয় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে, তবে সেখানে গিয়ে বেশি দিন থাকতে হয়নি তার। তিনি চলে আসেন কিশোরগঞ্জের নিকলীতে।

মোহনগঞ্জে থাকা অবস্থায় অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সেখানে কোনো প্রকার অনিয়ম দুর্নীতি করেননি বলে দাবি করেন সাখাওয়াত।

এ কর্মকর্তার দাবি, সেখানকার এক সাংবাদিক তার কাছে থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন। দেননি বলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন।

যা বললেন তৎকালীন উপ প্রকল্প পরিচালক

কৃষি সম্প্রসারণের আওতাধীন ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের তৎকালীন উপ প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বিবেকানন্দ হীরার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ প্রকল্পের মেয়াদ আগস্টেই শেষ হয়ে যায়। এ প্রকল্পের সবকিছুই ক্লোজ হয়ে গেছে। তিনিও বর্তমানে এ প্রকল্পের দায়িত্বে নেই।

তিনি জানান, তার জানা মতে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দও কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। তারপরও যদি কোনো কর্মকর্তা সেটি বাস্তবায়ন না করে আত্মসাৎ করে থাকেন, তবে এর দায়ভার একান্তই তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপপরিচালকের ভাষ্য

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘যদি কোনো কর্মকর্তা এ ধরনের অনিয়ম বা আত্মসাৎ করে থাকেন এবং তদন্তে এসবের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।’

আরও পড়ুন:
মিঠামইনে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ 
বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজন নিহত 
ভৈরবে গণজমায়েত প্রতিরোধে মহাসড়কে আওয়ামী লীগ
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
123 tons of onions entered through Hili land port

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকল ১২৩ টন পেঁয়াজ

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকল ১২৩ টন পেঁয়াজ পেঁয়াজভর্তি ট্রাক। ছবি: বাসস
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, নতুন নিয়ম সার্ভারে সংযুক্ত হওয়ায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমে আসবে বলে তারা আশা করছেন। ফলে পেঁয়াজের দাম বাজারে অনেকাংশে কমে আসবে।

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে নতুন শুল্কায়নে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

এর ফলে পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত আটটা নাগাদ নতুন শুল্কায়নে ভারতীয় চারটি ট্রাকে ১২৩ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে।

হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতে পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ৫৫০ ডলার থেকে ১৪৫ ডলার কমিয়ে ৪০৫ ডলার নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি কাস্টমস সার্ভারে সংযুক্ত না হওয়ায় গত ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ভারতের সার্ভারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সংযুক্ত হওয়ায় সেই জটিলতা কাটিয়ে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বেড়ে দাম কমবে বলে প্রত্যাশা আমদানি-রপ্তানিকারক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংকটের অজুহাতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। এরপর গত মার্চ মাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।

ভারতের ওই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়ায় দফায় দফায় দাম বাড়তে থাকে। এরপর প্রায় ৫ মাস পর গত ৪ মে ন্যূনতম ৫৫০ ডলার রপ্তানি মূল্য এবং ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ভারত সরকার।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, নতুন নিয়ম সার্ভারে সংযুক্ত হওয়ায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমে আসবে বলে তারা আশা করছেন। ফলে পেঁয়াজের দাম বাজারে অনেকাংশে কমে আসবে।

স্থলবন্দর উদ্ভিদ বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহ বাড়িয়েছেন। মঙ্গলবার নতুন করে আরও চার ব্যবসায়ী এলসি খুলেছেন। এসব পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করলে পণ্যটির বাজারদর নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশসহ ৬ দেশে এক লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
সিরাজগঞ্জে খালাস হচ্ছে ভারতীয় ১৬৫০ টন পেঁয়াজ
ভারত থেকে দর্শনায় পৌঁছেছে পেঁয়াজের প্রথম চালান
ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে
ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করবে টিসিবি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Announcement of shutdown in Chabi on demand of appointment of Vice Chancellor

উপাচার্য নিয়োগ দাবিতে চবিতে শাটডাউনের ঘোষণা

উপাচার্য নিয়োগ দাবিতে চবিতে শাটডাউনের ঘোষণা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজকের (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে মানববন্ধন ও শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেল ৪টায় আবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজকের (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি নিয়ে নয়-ছয় আর নয় আর নয়, ‘ঢাবি রাবি ভিসি পেল, চবি কেন পিছিয়ে গেল’, ‘আর নয় বিজ্ঞাপন, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘ঢাবি রাবি স্বর্গে, চবি কেন মর্গে’, ‘শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য, ভিসি হবে দক্ষ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ভিসি নিয়োগের একটি গুঞ্জন শোনা যায়। রোববার ভিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের সাথে এই প্রজ্ঞাপন-প্রজ্ঞাপন খেলা বন্ধ করুন। ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।’

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ’আমরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি কিন্তু এখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। আমরা কি আন্দোলনই করে যাব শুধু?

‘বাংলাদেশের অন্য সব স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হলেও আমরা এখন‌ো ভিসি পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ অতিসত্বর ভিসি নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার। আমরা শিক্ষার্থী, আমাদের জায়গা হচ্ছে পড়ার টেবিলে। আমাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিন।’

আরও পড়ুন:
‘শিক্ষার্থীরাই এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা’
চবিতে ছাত্রলীগের দফায় দফায় হামলা, ছাত্রীদের হেনস্তা
চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
চট্টগ্রামে কোটাবিরোধীদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন
কোটাবিরোধী আন্দোলনের পরিসর বাড়ছে চট্টগ্রামে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Agitation until an elected government is established Salahuddin
চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ

নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন: সালাহউদ্দিন

নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন: সালাহউদ্দিন বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীতে মিছিল বের করে বিএনপি। ছবি: নিউজবাংলা
জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, ‘রাষ্ট্রের অতি জরুরি কিছু সংস্কার করে দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার গঠন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। উন্নয়ন যেমন গণতন্ত্রের বিকল্প নয়, তেমনই সংস্কারও ভোটের বিকল্প নয়।’

নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি রাখার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর আলমাস মোড়ে গণতন্ত্রের শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি আলমাস মোড় হয়ে কাজীর দেউরী, লাভ লেইন, জুবলী রোড, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি হয়ে লালদিঘি পাড়ে গিয়ে শেষ হয়।

নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন: সালাহউদ্দিন
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর আলমাস মোড়ে শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: নিউজবাংলা

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশটি পরিচালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, জয়নাল আবদীন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় শোভাযাত্রার সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন আমরা করেছিলাম। তা হয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। সেই কেয়ারটেকার সরকার বিলুপ্ত করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নতুনভাবে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রবর্তন করেন।

‘অন্তহীন সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, রক্ত, শ্রম আর প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের মানুষ পুনরায় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা, এই গণতন্ত্রের জন্য যারা যুদ্ধ করেছে, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম শহীদ রংপুরের সাঈদ। দ্বিতীয় শহীদ চকরিয়ার পেকুয়ার সন্তান, আমার সন্তান ওয়াসিম।’

তিনি বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক সংগ্রামে-আন্দোলনে, যুদ্ধে চট্টগ্রাম সবসময় নেতৃত্ব দিয়েছে। আপনারা যদি মনে করেন যে সবকিছু এমনি এমনি এসেছে, তাহলে এটা ভুল কথা। এই গণঅভ্যুত্থানে, এই গণবিপ্লবে শহীদদের মধ্যে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী। ১১৩ জনের বেশি ছাত্রদলের নেতাকর্মী।

‘এই আন্দোলন সংগ্রামে সাতশ’র বেশি মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৪২৩ জন শুধু বিএনপির নেতাকর্মী। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে দুই হাজার ৭০০ মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে শত শত মানুষ বিএনপির নেতাকর্মী।

তিনি বলেন, ‘এত রক্ত, এত ঘাম, এত প্রাণ, এত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা দিবস, বাংলাদেশের নতুন গণতন্ত্র দিবস। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে।

‘কিন্তু গণতন্ত্র, এই নতুন স্বাধীনতা, এই বিজয়কে যদি আপনারা অর্থবহ করতে চান, তাহলে ধৈর্য্য ধরতে হবে। আন্দোলন জারি রাখতে হবে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে হবে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যতদিন পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, সংসদ প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা রাজপথে এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।’

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণহত্যাকারীদের আর কোনোদিন জায়গা হবে না। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের, গণহত্যাকারীদের কোনো রাজনীতি চলবে না। যদি গণহত্যাকারীদের রাজনীতি চলে, তাহলে বাংলাদেশ আবার পরাধীন হবে। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের এখানে তাঁবেদারি চলবে না।

‘যদি সত্যিকারভাবে স্বাধীন-সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, সাম্যভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাইলে শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদের পরস্পরের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ আইনের চেয়ে বড় নন।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাবৃন্দকে আহ্বান জানাই, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনমুখী সংস্কার সাধন করুন এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, বিগত ১৭ বছর নির্যাতনের পরও বিএনপিকে স্তব্ধ করতে পারেনি। আগামী ১৭ বছর চেষ্টা করলেও পারবে না। রাত যত গভীর হয় ভোর তত নিকটে আসে।

‘আওয়ামী লীগ মনে করেছিল ভোর বুঝি আর হবে না। কিন্তু সকাল ঠিকই হয়েছে। শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। হাসিনার মত স্বৈরশাসক ইতিহাসেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তাই বলে আমাদের নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের কেউ যেন আশ্রয় না পায়। আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেক টাকা। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে জবরদস্তির শাসন কায়েম করেছিল। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিতদের শাসন ফিরিয়ে আনাই হবে রাষ্ট্রের বড় সংস্কার।’

জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্রের পথে নতুন করে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রের অতি জরুরি কিছু সংস্কার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার গঠন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। উন্নয়ন যেমন গণতন্ত্রের বিকল্প নয়, তেমনই সংস্কারও ভোটের বিকল্প নয়।’

আরও পড়ুন:
সংস্কারের নামে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবেন না: গয়েশ্বর
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে সমাবেশ বিএনপির
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিএনপির ৪২২ জন নিহত: ফখরুল
সিলেটে এবার মাঠের শক্তি দেখাতে নামছে বিএনপি

মন্তব্য

p
উপরে