রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে গাড়িচাপায় মোছা. নার্গিস আক্তার নামের এক কিশোরী নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
পথশিশু মো. ইব্রাহিম বলে, ‘খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে রাস্তায় পড়ে থাকলে আমরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।’
সে আরও বলে, নার্গিস খিলগাঁও তালতলা মার্কেট এলাকায় থাকত।
কি ধরনের গাড়ি কিশোরীটিকে চাপা দিয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত কিশোরীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা এখনও জানা যায়নি। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।’
সরকার উন্নয়ন নয়, উন্নয়নের কল্পকাহিনি শোনাচ্ছে বলে মনে করেন গণফোরামের একাংশের সভাপতি ও গত নির্বাচনে সরকারবিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু।
শুক্রবার গণফোরামে তার নেতৃত্বাধীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন ড. কামাল হোসেনকে ছেড়ে আসা এই গণফোরাম নেতা।
মন্টু গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনের পর থেকেই গণফোরাম নিয়ে ‘নাটকীয়’ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার এক পক্ষের নেতা তিনি।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ড. কামালকে ছাড়াই সম্মেলন করে দলের সভাপতি হন তিনি। দল হয়ে যায় দুই টুকরো।
গত ১২ মার্চ ড. কামাল হোসেনপন্থিদের সম্মেলনে মন্টুপন্থিদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর দুই অংশ বিভিন্ন স্থানে কাউন্সিলও করছে।
মন্টু বলেন, ‘উৎপাদনহীন খাতে বরাদ্দের নামে মহা লুটপাট করছে, কিন্তু বেকার-যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেই। উন্নয়নের যে কল্পকাহিনি শোনাচ্ছেন এগুলো জনগণের উন্নয়ন নয়, আপনাদের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজদের উন্নয়ন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে দুঃশাসনের রাজত্ব কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার থেকে বহুদূর চলে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ছয় দফাকে কবর দিয়ে তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয় না। আপনারা বলুন তো এই সরকারের আমলে ছয় দফার একটি দফাও কি জীবিত আছে? পাকিস্তান আমলে ভোট-ভাতের অধিকার নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, আজ ৫০ বছর পরেও একইভাবে ভোটের অধিকার আদায়ে লড়াই করছি, বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছি। তাহলে আপনারা কীভাবে, কোন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের কথা বলছেন? মুক্তিযুদ্ধ কোটার নামে তরুণ মেধাবীদের দেশের সেবা করা ও নেয়া থেকে বঞ্চিত করছেন। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের মাধ্যমে কার্যকরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।’
সকাল ১০টায় ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে; কিন্তু এরা দুর্নীতির মাধ্যমে আরও বৈষম্য সৃষ্টি করছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিপক্ষের সনদপত্র দিচ্ছে তা স্রেফ জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি ব্যতীত আর কিছুই নয়।’
আবু সাইয়িদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু তৈরিতে আপনাদের ভূমিকার প্রশংসা করছি, কিন্তু পদ্মা সেতুর শ্বেতপত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী। এ ছাড়া গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি মহসীন রশিদ, নির্বাহী সভাপতি মহিউদ্দিন আবদুল কাদেরসহ ঢাকা মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
গণফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলনে হাবিবুর রহমান বুলুকে সভাপতি ও তাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
ভুয়া অভিযোগ তুলে, মৌলবাদী গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে উদীচী। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানায় সংগঠনটি।
শুক্রবার রাতে উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
দুপুরে একদল মুসল্লি জুমার নামাজের পর রাজধানীর উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরে ৬এ রোডে ড. রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা চালায়।
উদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়, বাসার গেটের সামনে ভ্যানে সবজির দোকান বসানো এবং গাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে যে বচসার শুরু, তা থেকে রতন সিদ্দিকীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ছাড়াও তার স্ত্রী, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য নাট্যকর্মী, শিক্ষক ফাহমিদা হক কলিকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা এবং অধ্যাপক রতন সিদ্দিকীর বাসার দারোয়ান, গাড়িচালককেও মারধর করেছে একদল দুর্বৃত্ত।
নামাজের সময় বাধা সৃষ্টি করার ভুয়া অভিযোগ তুলে এসব তাণ্ডব চালিয়েছে একদল মৌলবাদী বলেও বিবৃতিতে জানায় উদীচী।
বিবৃতিতে বলা হয়, উদীচী এ ধরনের জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এ ঘৃণ্য কাজের সাথে জড়িত সবার দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। এ ছাড়া, অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী এবং তার পরিবারের সদস্যদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানাচ্ছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা হলে সব প্রগতিশীল মানুষকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় উদীচী।
সিপিবির নিন্দা
অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী ও তার সহধর্মিণী ফাহমিদা হক কলির উপর হামলায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে সিপিবি।
সিপিবি ঢাকা নগর উত্তর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সভাপতি ডা. সাজেদুল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক লুনা নুর বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানান।
হামলাকে উগ্র সাম্প্রদায়িক বলে দাবি করে বিবৃতিতে নেতারা বলেন, 'ড. রতন সিদ্দিকীর উপর এ হামলা প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধিচর্চা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের উপর হামলা! অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থার জোর দাবি জানাই।'
যেভাবে হামলা
রতন সিদ্দিকী নিউজবাংলাকে বিকেলে বলেন, ‘‘আজকে দুপুরের সময় এক দল মুসল্লি ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে আমার বাসায় হামলা করে। তারা আমার কলাপসিবল গেইট ভাঙার চেষ্টা করে। এক ঘণ্টা চলার পর পুলিশ-র্যাব এসে তাদেরকে সরিয়ে দেয়। প্রায় শ দুয়েক লোক ছিল।’
কেন হামলা চালিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে একজন এসে বলেছে, আমি নাকি বলেছি, এখানে ধর্মের নামে ভণ্ডামি হয়। অথচ আমি কিছুই বলিনি। আমার বাসার সামনে একটি মোটরসাইকেল রাখা ছিল, সেটি সরানোর জন্য ড্রাইভার হর্ন দেয়। একজন মসজিদ থেকে এসে বলেছে, নামাজের সময় কেনো হর্ন দিল। এরপরই আরেকজন এসে বলে, আমি নাাকি ধর্মের বিরুদ্ধে বলি। এই বলে হামলা করে।’
রতন সিদ্দিকীর মেয়ে পূর্ণাভা হক সিদ্দিকী তার বাবা ও তাদের বাসায় হামলার অভিযোগ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘আজকে জুম্মার পর আমাদের গেটের সামনে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়, আমার বাবাকে ঘুষি দেয়, ধাক্কা দেয়, নাস্তিক মালাউন হিন্দু বলে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়, আমার আম্মুকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়, আমাদের ড্রাইভার এবং দারোয়ানের উপর হামলা করে।’
এই হামলার নেপথ্যে বাসার গেটের সামনে ভ্যানে করে বাজার বসানোকে বাধা দেয়াকে কারণ বলে জানান।
লেখেন, ‘আমাদের গেটের সামনে ভ্যান দিয়ে বাজার বসে আর শুক্রবার আমাদের রাস্তা পুরোটা ব্লক করে রাখে। আমাদের গাড়ি ঢোকার জন্য দুইবার হর্ন দেয়ার সাথে সাথে একজন এসে বলল গাড়ি ঢুকতে দিবে না। গাড়িতে আম্মু-বাবা ছিল, একটা বাইক গেটের সামনে। সরানোর জন্য বলল। মুহূর্তেই বলল নামাজের সময় গাড়ি ঢুকবে না।
‘বাবা গাড়ি থেকে নামার পর পর আম্মুকে আর বাবাকে মালাউন হিন্দু নাস্তিক বলে গালাগাল করে। একপর্যায়ে বলে এই বাড়িতে নাস্তিক থাকে, এরা ইসলাম অবমাননা করেছে। বলেই নারায়ে তাকবির বলে হামলা শুরু করে।’
হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া এটি মৌলবাদীদের কাজ বলেও দাবি করেন। লেখেন, ‘আমার বাবার উপর আজকে এই সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য দায়ী কারা? বাবার রাজনৈতিক আদর্শ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মৌলবাদের প্রতি সোচ্চার হওয়া, কুকুর খাওয়ানো, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কথা এগুলো অপরাধ?’
এ ছাড়া ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বাসার সামনে পুলিশ ও র্যাব উপস্থিত হয় বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:বারবার ধরনা দিয়েও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলের কাছ থেকে মূল সার্ভারের পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা যায়নি, এ কারণে আটকে আছে গ্রাহকদের টাকা।
ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রতিষ্ঠানের ধানমন্ডি কার্যালয়ে অডিটের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘এক পাসওয়ার্ডেই আটকে আছে ইভ্যালির গ্রাহকদের অর্থ। বারবার ধরনা দিয়েও সিইও মোহাম্মদ রাসেলের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড উদ্ধার করতে পারেনি পরিচালনা পর্ষদ।’
তিনি বলেন, ‘ইভ্যালিরর কাছে এখন প্রায় ২৫ কোটি টাকার পণ্য রয়েছে। পাওনাদারদের তথ্য না পাওয়ায় ২৫ কোটি টাকার পণ্য থাকলেও তা দেয়া যাচ্ছে না। এর ব্যাংকে যে টাকা আছে, তা দিয়ে গ্রাহকদের পাওনা মেটানো সম্ভব নয়।’
এ মাসেই ইভ্যালির অডিট কার্যক্রম শেষ হবে এমন আশা প্রকাশ করে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চলতি মাসের শেষ নাগাদ ইভ্যালির অডিটের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়া যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সদস্য সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, মাহবুবুল করিম, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ ও আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ইভ্যালির প্রধান কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সিইও রাসেলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন গ্রাহকরা।
তাদের দাবি, ইভ্যালির রাসেলকে মুক্তি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দিলে প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়াবে। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাবেন। মার্চেন্ডরাও পাবেন। মিলবে বিনিয়োগকারীও।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা এক মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও সিইও রাসেলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
পণ্য অর্ডার দিয়ে টাকা জমার পর পণ্য ও অর্থ ফেরত না পেয়ে গত সেপ্টেম্বরে ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন এক গ্রাহক। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৮ অক্টোবর আদালত ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় পাঁচ সদস্যের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়।
আরও পড়ুন:গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়া জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) এক সদস্যকে ৫ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে যশোর জেলার অভয়নগরের নওয়াপাড়া সুন্দলীবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামির নাম মেহেদী হাসান। তার বাড়ি লামনিরহাটের হাতিবান্ধা থানায়।
এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান শুক্রবার দুপুরে সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, মেহেদী গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এটিইউ জানায়, ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট রাতে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার টংতাশা এলাকায় অভিযান চালায় স্থানীয় ডিবি পুলিশ। ওই সময় জেএমবির কয়েকজন সক্রিয় সদস্য বৈঠকে বসেছিলেন। এই বৈঠকে মেহেদী ছিলেন। তারা সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং নাশকতামূলক কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বৈঠকে মিলিত হয়। ডিবির অভিযান পরিচালনার সময় পালিয়ে যান মেহেদী।
এরপর ৫ বছর যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন ছিলেন মেহেদী। বগুড়া, যশোর ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি তৎপরতা ও পরিকল্পনায় তার উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তার নামে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ট্রাকচাপায় সিদ্দিক আলী নামে এক ট্রাকচালকের সহযোগী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের সহকর্মী আব্দুল জলিল জানান, সিদ্দিক পেশায় ট্রাকচালকের সহযোগী। যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল ডেমরা রোডে একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
তিনি জানান, সিদ্দিকের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহতের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
রাজধানীর খিলগাঁও নন্দিপাড়া এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় আমেনা বিবি নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোনিয়া পারভীন বলেন, নন্দিপাড়া এলাকায় স্বামী জহির উদ্দিনসহ পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন ৮০ বছর বয়সী আমেনা বিবি। সকালে হাঁটাহাঁটি করতেন তিনি। আজ সকালে বাসার সামনে দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময়ে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, ঘটনার পর স্থানীয়রা চালককে আটক করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে পদ্মা সেতু-মেট্রোরেল প্রজেক্টই বাস্তবায়ন হতো না বলে মনে করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
হোলি আর্টিজান হামলার ষষ্ঠ বার্ষিকীতে শুক্রবার ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
হোলি আর্টিজান হামলায় তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সালাউদ্দিন নিহত হন। তাদের স্মরণে গুলশান মডেল থানার সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ নামে এই দুই অফিসারের ভাস্কর্য বানানো হয়। প্রতি বছর হোলি আর্টিজানের হামলার বার্ষিকীতে ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় তাদের স্মরণে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হোলি আর্টিজানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর আমরা যদি ঘুরে দাঁড়াতে না পারতাম, তবে আজ যে পদ্মা সেতু দেখছি, মেট্রোরেল দেখছি, তার কোনো প্রজেক্টই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো না। কোনো বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিশিয়ান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করতে আসত না। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘হরকাত-উল-জিহাদের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের উত্থান হয় ও জেএমবির উত্থান ঘটে। এরপর ইরাকে যখন আইএসের উৎপাত শুরু হয়, তখন বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য দেশের কিছু মানুষ তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বে হোলি আর্টিজানে হামলা চালায়।’
তিনি বলেন, ‘হোলি আর্টিজানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর থেকেই বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গি দমনে নতুন একটি ইউনিট খোলে। এই ইউনিটের অধিকাংশ সদস্যই বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন। এরপর দেশের যেসব জায়গায় জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, সেখানেই জঙ্গিদের আস্তানা তছনছ করে দেয়া হয়েছে।’
জঙ্গি দমনে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন না বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। বলেন, ‘এখনও জঙ্গি তৎপরতা মাঝে মাঝে চোখে পড়ছে। জঙ্গিদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভিটিসহ সব বিষয়ে আমরা মনিটরিং করছি।
‘এ ছাড়া বিভিন্ন সময় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটসহ বিভিন্ন মেট্রো ও জেলা পুলিশ মিলে একটি করে ছোট ইউনিট করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হচ্ছে। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক নস্যাৎ করে দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য