হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) এক কর্মচারীর কাছ থেকে ৮ কেজি স্বর্ণ জব্দ করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস।
ওই কর্মচারীর নাম আব্দুল আজিজ আকন্দ। বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারে কর্মরত তিনি।
তাকে আটক করতে গিয়ে বিএফসিসিতে ঢুকতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের উপকমিশনার সানোয়ারুল কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যেভাবে আটক
অভিযানে অংশ নেয়া কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেনটিভ ইউনিটের কাছে তথ্য ছিল বিমানের ক্যাটারিং সার্ভিসে কর্মরত এক ব্যক্তির মাধ্যমে স্বর্ণ পাচার হবে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর ১টার দিকে বিমানের ক্যাটারিং সেন্টারে যান কর্মকর্তারা।
তাদের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয় বিএফসিসি। এরপর একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। তখন ক্যাটারিং সেন্টার থেকে জানানো হয় আব্দুল আজিজ দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটের দিকে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন।
উপকমিশনার সানোয়ারুল কবির বলেন, ‘দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমানের ক্যাটারিং অফিসের গেটের সামনে কাস্টমসের দুই ব্যক্তিকে নজরদারিতে রাখা হয়। সাত ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে আজিজ বিমানের ক্যাটারিং অফিসের গেটের সামনে আসেন। ওই সময় তাকে আটক করা হয়।
‘তাকে তল্লাশি করে কালো স্কসটেপ দিয়ে মোড়ানো পাঁচটি স্বর্ণের বারের বান্ডিল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক ওজন প্রায় ৮ কেজি। এই স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন ও কাস্টমস আইনে মামলা হবে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় কোরবানির বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
রাজধানীর গুলশানস্থ নগরভবনে মঙ্গলবার দুপুরে ডিএনসিসির ১৪তম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা প্রতিদিনের বর্জ্য প্রতিদিন অপসারণ করছে। তাই কোরবানির বর্জ্য সরাতে ২৪ ঘণ্টা নয়, ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না। আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল আছে। বর্জ্য অপসারণে যুক্ত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু ওয়ার্ডে কোরবানির জায়গাও নির্ধারণ করা আছে।’
কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কাউন্সিলর এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কঠোর নির্দেশনা দেন মেয়র আতিক।
তিনি বলেন, ‘পশুর হাটে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢুকতে হবে। মাস্ক ছাড়া কেউ হাটে ঢুকতে পারবে না। ছয়টি পশুর হাটে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ থাকায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা খুব খুশি।
‘নিরপাদ ও সহজ লেনদেন, তাৎক্ষনিক ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ, ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকিং সুবিধা এবং ছিনতাই, মলম পার্টির খপ্পর থেকে রক্ষায় স্মার্ট হাট চমৎকার উদ্যোগ।’
ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়া, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে পাঁচ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)।
আটকেরা হলেন- লিটন মিয়া, মো. শাহ আলম, মো. ইরান, মো. আবু তাহের ও জাহিদুর রহমান শাকিব।
বেশি দামে ট্রেনের টিকিট বিক্রির সময় সোমবার রাতে তাদের কমলাপুর স্টেশন থেকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক বীনা রানী দাস।
তিনি জানান, আটকদের কাছ থেকে চারটি ট্রেনের টিকিট, পাঁচটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৬ হাজার ৯২৭ টাকা জব্দ করা হয়।
বীনা রানী জানান, তারা সংঘবদ্ধ টিকিট কালোবাজারি চক্রের সদস্য। ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকিটের বিপুল চাহিদা থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ঈদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে অল্প দামে টিকিট কিনতেন। এরপর টিকিট প্রত্যাশীদের কাছে সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করতেন।
আরও পড়ুন:মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের কারণ হিসেবে বাসমালিকদের হিংসাত্মক মনোভাবকে দুষলেন বাইকচালকেরা। এ সময় সঠিক আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বাইকচালকেরা।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান।
মানববন্ধনে মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের পেছনে বাসমালিকদের হিংসাত্মক মনোভাব রয়েছে দাবি করে বাইকচালক মমিন তাজ বলেন, ‘ঈদে বাসমালিকদের আয় কমে যাওয়ার ভয় থেকেই তারা ওপর মহলে চাপ সৃষ্টি করে এই বাইক চলাচল বন্ধ করেছে। আমরা ঝামেলাবিহীনভাবে বাড়ি ফেরার জন্য মহাসড়কে বাইক চলাচলের অনুমতি চাই।’
বাইকচালক মেজবাহদ্দিন বলেন, ‘নিরাপত্তার ইস্যুতে আন্তমহাসড়কে বাইক চলাচল বন্ধ কার্যকরী সমাধান নয়। বরং মহাসড়কে আইনের প্রয়োগ করে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয়া হোক। কেননা এই ঈদে বাড়ি ফেরার জন্য বাস-ট্রেনের টিকিট পাওয়া ঝামেলা। এ ছাড়া যাতায়াতেও কষ্ট।’
মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক বাইকচালক উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিজের শরীরে আগুন দিয়ে ব্যবসায়ী গাজী আনিসের আত্মাহুতির ঘটনায় হেনোলাক্স গ্রুপের মালিক নূরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আনিসের বড় ভাই নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক গোলাম হোসেন খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নূরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের নামে মামলা হয়েছে।
সোমবারের ঘটনার পর থেকে হেনোলাক্স গ্রুপের মালিক নূরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ফোন নম্বরও বন্ধ।
প্রসাধনসামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানি হেনোলাক্সে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত না পেয়ে হতাশায় সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গায়ে আগুন দেন ৫০ বছর বয়সী ব্যবসায়ী গাজী আনিস। মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসক জানিয়েছিলেন আনিসের মুখমণ্ডলসহ শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
স্বজনরা জানান, গাজী আনিসুর রহমান কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামে। তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন বিশ্বাস মারা গেছেন। ছয় ভাইয়ের মধ্যে আনিস তৃতীয়।
গাজী আনিস সবশেষ ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছিলেন। আবার অংশীদারত্বে ব্যবসা করছিলেন। হেনোলাক্স কোম্পানিতে তিনি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। এই টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন বলে জানান স্বজনরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই গাজী আনিস নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আশপাশের মানুষ দৌড়ে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তার শরীরের অনেকটা দগ্ধ হয়।
উদ্ধারকারীদের একজন স্বদেশ বিচিত্রার রিপোর্টার। তিনি বলেন, ‘বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশের সহযোগিতায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়।
‘হাসপাতালে আনার পথে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। দগ্ধ ব্যক্তি জানান, তিনি হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাবেন। ওই কোম্পানি পাওনা টাকা দিচ্ছে না। এ নিয়ে চার মাস আগে তিনি মানববন্ধন করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। সেই হতাশা থেকে তিনি গায়ে আগুন দিয়েছেন।’
গাজী আনিসের ভাই গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন। তিনি হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাবেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই টাকা উদ্ধারে চেষ্টা করে আসছিলেন।’
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক গোলাম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, আত্মহত্যার চেষ্টাকারী আনিস হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান। ওই টাকা উদ্ধারে দীর্ঘদিন চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়ে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন।’
পাওনা টাকা উদ্ধারে গাজী আনিস দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২৯ মে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন। সেখানে তিনি জানান, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নূরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রে ২০১৮ সালে তিনি এই টাকা হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করেন।
গত ৩১ মে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সব শেষ স্ট্যাটাস দেন গাজী আনিস। সেখানেও হেনোলাক্সের মালিক মো. নূরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের বিচার দাবি করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেছিলেন তিনি।
ওই স্ট্যাটাস থেকে জানা গেছে, গাজী আনিস নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মো. আনিসুর রহমান। নিজের লেখা নিয়ে উচ্চ ধারণা পোষণ না করলেও নিজেকে কবিতাপ্রেমী মানুষ বলেও দাবি করেছেন আনিস।
তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষী ভাই বোন বন্ধু। আমি মো. আনিসুর রহমান (গাজী আনিস) একজন কবিতা প্রেমিক মানুষ। নিজে হয়তো ভালো কবিতা লিখতে পারি না, কিন্তু আমি ভীষণ ভাবে কবিতা ভালবাসি।’
নিজেকে একজন ব্যবসায়ী দাবি করে জীবনে প্রচুর উপার্জন করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনিস লিখেছেন, ‘আমার রোজগারের সবচেয়ে বড় অংশ স্থানীয় স্কুল মাদ্রাসা মসজিদ এবং অসহায় দুস্থ মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি, সেইসাথে নিজেও সুখী স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং সৎ জীবন যাপন করেছি।’
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে উঠে আসে হেনোলাক্সের মালিকের সঙ্গে তার পরিচয় ও সম্পর্ক গভীর হওয়ার বিভিন্ন দিক।
আনিসুর রহমান লিখেছেন, ‘২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নূরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আমার সখ্যতা এবং আন্তরিকতা গড়ে উঠে। আমি কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি এবং কুষ্টিয়া শহরেই বসবাস করি।’
কাজেকর্মে ঢাকায় যাতায়াত করতে হতো আনিসকে। যার মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত দম্পতির সঙ্গে তার সখ্য আরও গভীর হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনিস লিখেছেন, ‘তবে প্রতিমাসেই নিজের প্রয়োজনে ঢাকা এলে তাদের সাথে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হতো এবং উপহার বিনিময় ও ভালো রেস্তোরাঁয় আমরা একসাথে খাওয়া-দাওয়া করতাম এবং বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতাম। যেহেতু আমি স্বাচ্ছন্দ্য দিনযাপনে অভ্যস্ত এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী নিজস্ব গাড়িতেই সব সময় যাতায়াত করি। আমি মো. নুরুল আমিন এবং ফাতেমা আমিনের সঙ্গে নিজের খরচায় দেশের বাইরেও একাধিকবার বেড়াতে গিয়েছি।’
বিদেশে বসেই ওই দম্পতি তাকে হেনোলাক্সে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে স্ট্যাটাসে।
তিনি লেখেন, ‘২০১৮ সালে কলকাতা হোটেল বালাজীতে একইসাথে অবস্থান কালে উনারা আমাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগের এবং যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আমি প্রথমে অসন্মতি জ্ঞাপন করলেও পরবর্তীতে রাজি হই এবং প্রাথমিক ভাবে এককোটি টাকা বিনিয়োগ করি। পরবর্তীতে তাদের পীড়াপীড়িতে আরও ছাব্বিশ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করি (অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেয়া)।’
১ কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলেও সেটির প্রমাণ সাপেক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো কাগজপত্র না থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন আনিস।
তিনি লিখেছেন, ‘বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ-পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করি, কিন্তু উনারা গড়িমসি করতে থাকেন।
‘একপর্যায়ে উনারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার উনাদের লোকজন দ্বারা আমাকে হেনস্তা ব্ল্যাকমেইল করেন এবং করার চেষ্টা করেন। বর্তমানে লভ্যাংশ’সহ আমার ন্যায্য পাওনা তিনকোটি টাকার অধিক।’
প্রতিকার চেয়ে কুষ্টিয়ার আদালতে মামলাও করেছিলেন মো. আনিসুর রহমান। মামলার কাজ আদালতে চলমান থাকলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি অবশ্য উল্লেখ করেননি।
স্ট্যাটাসটি লেখার দুদিন আগে অর্থাৎ ২৯ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও এ ঘটনার প্রতিকার চাওয়ার বিষয়টিও যোগ করেন স্ট্যাটাসে। আনিস দাবি করেন, এ বিষয়ক তথ্য তুহিন আহমেদ ও রাজু হামিদের কাছে রয়েছে। তাদের মোবাইল নম্বরও শেয়ার করেছেন তিনি।
স্ট্যাটাসের শেষ দিকে এসে তিনি লিখেছেন, ‘ভীষণ মানসিক নিপট খরায় আমি উল্লেখিত তথ্যাদি উপস্থাপন করলাম। আমার সামনে বিকল্প পথ না থাকায় ফেসবুকেও সবাইকে জানালাম।
‘আমি এই প্রতারক দম্পতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি। সেইসাথে যারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী তারাও সোচ্চার হবেন বলে আশা করছি।’
ব্যক্তিজীবনের তিন কন্যার পিতা আনিস। বড় মেয়ে মেধা রহমান আঁচল এইচএসসি পরীক্ষার্থী, মেজো মেয়ে প্রতিভা রহমান অহনা এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং ছোট মেয়ে জয়িতা রহমান অবনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে বলেও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সবাইকে জানান আনিস।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
এতে পাস করেছেন ৬ হাজার ১১১ জন। পাসের হার ৮.৫৮। ১ হাজার ৩৩৬ আসনের বিপরীতে এই ইউনিটে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৭১ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
‘ঘ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান, সহযোগী সমন্বয়কারী কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীমা জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘ঘ’ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একটি সম্মিলিত ইউনিট। এখানে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক- তিন শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারেন। একে বিভাগ পরিবর্তন ইউনিটও বলা হয়ে থাকে। এই ইউনিটের মাধ্যমে ১১টি অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের ৫৫টি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
‘ঘ’ ইউনিটের এবারের ফলাফলে বিজ্ঞান শাখা থেকে ৪ হাজার ৮১১ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ১ হাজার ৫ জন আর মানবিক শাখা থেকে ২৯৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বিজ্ঞান শাখা থেকে ১ হাজার ১১ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ২৯৭ জন আর মানবিক শাখা থেকে ২৮ জন এবার এই ইউনিটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফলাফল জানতে পারছেন। এ ছাড়া রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক বা টেলিটক নম্বর থেকে ‘DU GHA Roll No’ ফরম্যাটে ১৬৩২১ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফলাফল জানা যাচ্ছে।
এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ৭ জুলাই বেলা ৩টা থেকে ২৮ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে।
কোটায় আবেদনকারীদের ১৮ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তা যথাযথভাবে পূরণ করে ওই সময়ের মধ্যে ডিন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
কারও ফলাফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা নিরীক্ষার জন্য ১ হাজার টাকা ফি দেওয়া সাপেক্ষে ১৭ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন কার্যালয়ে আবেদন করা যাবে।
‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ১১ জুন। এই ইউনিটের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ শেষ হলো।
আরও পড়ুন:রাজধানীর ডেমরার সানারপাড় এলাকার একটি ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে গিয়ে মো. রায়হান নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ভবনের একজন বলেন, ওই কিশোরকে জানালার বাইরে দেখতে পেয়ে চোর চোর চিৎকার শুরু করে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। এ সময় দ্রুত নামতে গিয়ে পড়ে যান তিনি।
মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
ওই ভবনের সদস্য সামী আহমেদ বলেন, ‘সবাই যখন ঘুমে তখন মজুমদার ভিলার পাঁচতলায় ভোর ৪টার দিকে এই কিশোর সম্ভবত মোবাইল চুরি করতে ভবনের ওপরে উঠে। তখন এই বাসার লোকজন তাকে দেখে ফেলে। চোর চোর বলে চিৎকার করলে সে ভয় পেয়ে তাড়াহুড়া করে পালানোর চেষ্টা করে। তখন সে অসাবধানতাবশত পাঁচতলা থেকে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘১৮ বছর বয়সী কিশোরীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।’
প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানি হ্যানোলাক্সে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত না পেয়ে হতাশায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গাজী আনিস চিকিৎসাধীন অবস্থার মারা গেছেন। মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আনিস বিভিন্ন সময় হেনোলাক্স গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে ফেসবুকেও লেখালেখি করেছেন তিনি, করেছেন সংবাদ সম্মেলনও।
গত ৩১ মে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সব শেষ স্ট্যাটাস দেন গাজী আনিস। সেখানেও হেনোলাক্সের মালিক মো. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের বিচার দাবি করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেছিলেন তিনি।
ওই স্ট্যাটাস থেকে জানা গেছে, গাজী আনিস নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মো. আনিসুর রহমান। নিজের লেখা নিয়ে উচ্চ ধারণা পোষণ না করলেও নিজেকে কবিতাপ্রেমী মানুষ বলেও দাবি করেছেন আনিস।
তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষী ভাই বোন বন্ধু। আমি মো. আনিসুর রহমান (গাজী আনিস) একজন কবিতা প্রেমিক মানুষ। নিজে হয়তো ভালো কবিতা লিখতে পারি না, কিন্তু আমি ভীষণ ভাবে কবিতা ভালবাসি।’
নিজেকে একজন ব্যবসায়ী দাবি করে জীবনে প্রচুর উপার্জন করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনিস লিখেছেন, ‘আমার রোজগারের সবচেয়ে বড় অংশ স্থানীয় স্কুল মাদ্রাসা মসজিদ এবং অসহায় দুস্থ মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি, সেইসাথে নিজেও সুখী স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং সৎ জীবন যাপন করেছি।’
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে উঠে আসে হেনোলাক্সের মালিকের সঙ্গে তার পরিচয় ও সম্পর্ক গভীর হওয়ার বিভিন্ন দিক।
আনিসুর রহমান লিখেছেন, ‘২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আমার সখ্যতা এবং আন্তরিকতা গড়ে উঠে। আমি কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি এবং কুষ্টিয়া শহরেই বসবাস করি।’
কাজে কর্মে ঢাকায় যাতায়াত করতে হতো আনিসকে। যার মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত দম্পতির সঙ্গে তার সখ্যতা আরও গভীর হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনিস লিখেছেন, ‘তবে প্রতিমাসেই নিজের প্রয়োজনে ঢাকা এলে তাদের সাথে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হতো এবং উপহার বিনিময় ও ভালো রেস্তোরাঁয় আমরা একসাথে খাওয়া-দাওয়া করতাম এবং বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতাম। যেহেতু আমি স্বাচ্ছন্দ্য দিনযাপনে অভ্যস্ত এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী নিজস্ব গাড়িতেই সব সময় যাতায়াত করি। আমি মো. নুরুল আমিন এবং ফাতেমা আমিনের সঙ্গে নিজের খরচায় দেশের বাইরেও একাধিকবার বেড়াতে গিয়েছি।’
বিদেশে বসেই ওই দম্পতি তাকে হেনোলাক্সে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে স্ট্যাটাসে।
তিনি লেখেন, ‘২০১৮ সালে কলকাতা হোটেল বালাজীতে একইসাথে অবস্থান কালে উনারা আমাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগের এবং যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আমি প্রথমে অসন্মতি জ্ঞাপন করলেও পরবর্তীতে রাজি হই এবং প্রাথমিক ভাবে এককোটি টাকা বিনিয়োগ করি। পরবর্তীতে তাদের পীড়াপীড়িতে আরও ছাব্বিশ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করি (অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেয়া)।’
এক কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলেও সেটির প্রমাণ সাপেক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো কাগজপত্র না থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন আনিস।
তিনি লিখেছেন, ‘বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করি, কিন্তু উনারা গড়িমসি করতে থাকেন।
‘এক পর্যায়ে উনারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার উনাদের লোকজন দ্বারা আমাকে হেনস্তা ব্ল্যাকমেইল করেন এবং করার চেষ্টা করেন। বর্তমানে লভ্যাংশ’সহ আমার ন্যায্য পাওনা তিনকোটি টাকার অধিক।’
প্রতিকার চেয়ে কুষ্টিয়ার আদালতে মামলাও করেছিলেন মো. আনিসুর রহমান। মামলার কাজ আদালতে চলমান থাকলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি অবশ্য উল্লেখ করেননি।
স্ট্যাটাসটি লেখার দুদিন আগে অর্থাৎ ২৯ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও এ ঘটনার প্রতিকার চাওয়ার বিষয়টিও যোগ করেন স্ট্যাটাসে। আনিস দাবি করেন, এ বিষয়ক তথ্য তুহিন আহমেদ ও রাজু হামিদের কাছে রয়েছে। তাদের মোবাইল নম্বরও শেয়ার করেছেন তিনি।
স্ট্যাটাসের শেষ দিকে এসে তিনি লিখেছেন, ‘ভীষণ মানসিক নিপট খরায় আমি উল্লেখিত তথ্যাদি উপস্থাপন করলাম। আমার সামনে বিকল্প পথ না থাকায় ফেসবুকেও সবাইকে জানালাম।
‘আমি এই প্রতারক দম্পতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি। সেইসাথে যারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী তারাও সোচ্চার হবেন বলে আশা করছি।’
ব্যক্তি জীবনের তিন কন্যার পিতা আনিস। বড় মেয়ে মেধা রহমান আঁচল এইচএসসি পরীক্ষার্থী, মেজো মেয়ে প্রতিভা রহমান অহনা এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং ছোটো মেয়ে জয়িতা রহমান অবনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে বলেও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সবাইকে জানান আনিস।
প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হ্যানোলাক্সে বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত না পাওয়ার হতাশা নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সোমবার বিকেলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা।
চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য