× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Dehydration and diarrhea are on the rise
google_news print-icon

পানি কমছে, বাড়ছে ডায়রিয়া ও চর্মরোগ

পানি-কমছে-বাড়ছে-ডায়রিয়া-ও-চর্মরোগ
সিলেটের সিভিল সার্জন এস এম শাহরিয়ার বলেন, ‘বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ বেড়েছে। আমাদের হিসাবে এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় সাড়ে ৪০০ লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি চর্মরোগে ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন। গোয়াইনঘাট উপজেলায় রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’

সালেক মিয়ার পায়ে ঘা হয়ে গেছে। তাতে খুব চুলকানি হয়। সালেকের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নে। পাঁচ-ছয় দিন পানিতে তলিয়ে ছিল তার বাড়ি। তবু বাড়ি ছেড়ে যাননি। পানিতে থাকতে থাকতেই পায়ে ঘা হয়ে গেছে তার।

সালেক বলেন, ‘কেবল আমার নয়, আমাদের বাড়ির আরও কয়েকজনের এমন হয়েছে, বাচ্চাদের হাতে-পায়ে ফোঁড়া উঠেছে। তাতে চুলকানি লেগেই থাকে।’

নগরের ছড়ারপাড় এলাকার একটি বস্তিতে থাকেন সুনাফর আলী। তার চার সদস্যের পরিবারের সবার ডায়রিয়া।

সুনাফর আলী বলেন, ‘এই কদিনে পচা পানির মধ্যে ছিলাম। খাওয়ার পানিও পাইনি। এখন পানি নামলেও বাসার সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’

সিলেটে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগ। বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পানি কমলে রোগবালাই আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস। তবে আক্রান্ত বেশির ভাগই এখন পর্যন্ত বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোয় রোগীর চাপ এখনও তেমন বাড়েনি।

আক্রান্তরা বাসায় চিকিৎসা নেয়ায় রোগীর সঠিক তথ্যও নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। নগরের অনেকে আক্রান্ত হলেও সিটি করপোরেশনের কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বন্যাপরবর্তী রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জেলায় ১৪০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে সিভিল সার্জন অফিস। আর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরে গঠন করা হয়েছে আরও তিনটি মেডিক্যাল টিম।

সিলেটের সিভিল সার্জন এস এম শাহরিয়ার বলেন, ‘বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ বেড়েছে। আমাদের হিসাবে এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় সাড়ে ৪০০ লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি চর্মরোগে ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন। গোয়াইনঘাট উপজেলায় রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে।



পানি কমছে, বাড়ছে ডায়রিয়া ও চর্মরোগ

‘পানিবাহিত রোগ যাতে না ছড়াতে পারে এ জন্য আমাদের মেডিক্যাল টিম ইউনিয়ন পর্যায় থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও কাজ করছে। তবে বন্যাপরবর্তী পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।’

কোন উপজেলায় কতটি মেডিক্যাল টিম কাজ করবে তাও পরিষ্কার করেছেন এই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সিলেট সদরে ১০টি, দক্ষিণ সুরমায় ৮টি, বিশ্বনাথে ১১টি, ওসমানীনগরে ৯টি, বালাগঞ্জে ৭টি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০টি, গোলাপগঞ্জে ১৬টি, বিয়ানীবাজারে ১৬টি, জকিগঞ্জে ১০টি, কানাইঘাটে ১২টি, গোয়াইনঘাটে ১০টি, জৈন্তাপুরে ১১টি এবং কোম্পানীগঞ্জে ৭টি মেডিকেল টিম থাকছে। এর বাইরে জেলা সদরে ৩টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।’

‘এসব দলে চিকিৎসক ছাড়াও নার্সসহ স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অনেকেই আছেন। প্লাবিত এলাকার সবখানেই যেন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতিটি মেডিক্যাল টিমকে নির্দেশনা দেয়া আছে।’

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ, ‘পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধির শঙ্কা থাকে। তবে এ জন্য আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।’


পানি কমছে, বাড়ছে ডায়রিয়া ও চর্মরোগ

তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য নগরের শাহী ঈদগাহ এলাকায় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে, একই সঙ্গে নগরের রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সিলেট সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

পচা ও দুর্গন্ধ যুক্ত পানি কারণে চর্মরোগ ও ডায়রিয়া বেশি ছড়াতে পারে জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তিনটি মেডিক্যাল টিম মাঠে আছে, প্রয়োজনে আরও গঠন করা হবে। এ ছাড়া নগরে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিউজবাংলা বলেন, ‘পানি পুরো নেমে যাওয়ার পর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার দল গঠন করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো এবং ময়লা দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
সিলেটে বানের জলে ১৯ হাজার খামারের মাছ
৬ দিন পর সুনামগঞ্জে বিপৎসীমার নিচে পানি
ফের বাড়ছে সুরমার পানি
মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি, পুলিশের ‘লাঠিপেটা’
সুনামগঞ্জে পানি কমলেও কাটেনি শঙ্কা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
3 passengers of an autorickshaw were killed after being hit by a bus in Feni

ফেনীতে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ আরোহী নিহত

ফেনীতে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ আরোহী নিহত প্রতীকী ছবি
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল মহসিন সুজন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

মহাসড়কে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নিজকুঞ্জরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন সেনাবাহিনীর সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও সেনা কল্যাণের চট্টগ্রাম শাখার কর্মকর্তা ৫৯ বছরের আবু তাহের, তার স্ত্রী ৪৮ বছলেরর সালমা আক্তার ও অজ্ঞাত আরেকজন।

নিহতের আবু তাহেরের ভাই ছাগলনাইয়ার ঘোপাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাংলাবাজারে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তারা নিহত হন।

সাদেক হোসেন আরও বলেন, বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি গাড়ি সিএনজিটিকে চাপা দিলে মারা যান তারা।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল মহসিন সুজন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Clash between two groups of Awami League at Prime Ministers birthday event 10 injured

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের দু গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ১০

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের দু গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ১০ মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে আহত এক কর্মী। ছবি: নিউজবাংলা
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন সরে পড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’

মুন্সীগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়।

পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেন ও গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সংঘর্ষে আহত আব্দুল মালেক, মো. জামাল, সোহাগ, রাসেল, সাদ্দাম ও আফসার হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

গুরুতর আহত ৪৮ বছর বয়সী মনির হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-কর্মী ও সংঘর্ষের সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের পর থেকেই মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। মিছিলে মিছিলে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা।

অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহর নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি ট্রলারে নেতা-কর্মীরা আসছিলেন।

তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলের দিকে রওনা দিয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের ভাই মনির হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেন বলেন, ‘ট্রলারে করে গজারিয়ার সাধারণ সম্পাদক জিন্নাহর লোকজন শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার লঞ্চঘাটের অদুরে বেড়িবাঁধে আসেন। সেখানে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ে ধাক্কা লাগে জিন্নাহর লোকজনের। এরপর তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার বড় ভাই মনির হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে।’

গজারিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মনসুর খান জিন্নাহ বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তবে আমার সঙ্গে ঘটনাটা ঘটেনি, এতে আমার কয়েকজন লোক আহত হয়েছে।’

সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন সরে পড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chhatra League worker killed in BNP attack in Chittagong

চট্টগ্রামে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত

চট্টগ্রামে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত হাসপাতালে নিহতের স্বজনের আহাজারি। ছবি: নিউজবাংলা
জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিকেলে ওসমানপুর ইউনিয়নে বিএনপির প্রোগ্রাম ছিল। এসময় ছাত্রলীগও পাশাপাশি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে বিএনপি লোকজন মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের উপর হামলা করে। হামলায় নোমান নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে দাবি করছেন। ঘটনায় ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছে, তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ওসমানপুর এলাকায় শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ নোমান ওসমানপুর এলাকার প্রয়াত নুরুজ্জামানের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিকেলে ওসমানপুর ইউনিয়নে বিএনপির প্রোগ্রাম ছিল। এ সময় ছাত্রলীগও পাশাপাশি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে বিএনপির লোকজন মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে। হামলায় নোমান নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে দাবি করছেন। ঘটনায় ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছেন, তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
ওসমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘আজমপুর বাজারে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী নুরুল আমিনের প্রোগ্রাম ছিল। এ সময় খবর পেয়ে আমরা এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিই। তাদের প্রোগ্রাম শেষে লাঠিসোটা ও অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এসে মুহুরি প্রজেক্ট থেকে আজমপুর বাজার পর্যন্ত ভাঙচুর চালায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টি অফিসেও হামলা করে। আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না, তারা আমাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ নেতা হাসান রাফি আরফিন, যুবলীগ নেতা সাত্তার সুজন দুখু, ছাত্রলীগ কর্মী নোমানসহ বেশ কয়েকজনকে আহত করে। তাদের মধ্যে নোমানের মৃত্যু হয়েছে।’
‘পুরো হামলাটা বিএনপি নেতা নুরুল আমিনের নির্দেশেই হয়েছে বলে ধারণা আমাদের।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Tourists flock to Moulvibazar to spend a three day holiday

৩ দিনের ছুটি কাটাতে মৌলভীবাজারে পর্যটকদের ভিড়

৩ দিনের ছুটি কাটাতে মৌলভীবাজারে পর্যটকদের ভিড় সিলেটের মৌলভীবাজারের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছুটি কাটাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। ছবি: নিউজবাংলা
লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, ‘ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। তবে এখন পর্যটকদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শনিবার পর্যন্ত পর্যটক আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’

যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুটা সময় দূরে থাকার আকাঙ্ক্ষা মনে মনে সবাই পোষণ করে। বাংলাদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাইতো দুই-একদিনের ছুটি পেলেই মানুষ ছুটে যায় ঘুরতে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সরকারি টানা ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে এবার সিলেটের মৌলভীবাজার।

জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে যেন পা ফেলার জায়গা নেই।

অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমকে সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় টহল দিতে দেখা যায়।

ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কমলগঞ্জের সকল পর্যটন এরিয়ায় পুলিশের একটি টিম নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছি। নিরবিঘ্নে পর্যটকরা যেন ঘুড়তে পারেন সে জন্য আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষণ করছি।’

জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পদ্মকন্যা নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাহক বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষ্মীনারায়ণ দিঘী, ২০০ বছরের প্রাচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাঘীছড়া লেক, আলিনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, অপরূপ শোভামণ্ডিত উঁচু নিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ পদ্মছড়া চা বাগান, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মনিপুরী, প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মনিপুরী, টিপরা ও গারোসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবন ধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জনপদ পর্যটকদের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সরকারি টানা তিন দিনের ছুটিতে এসব আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। বৃহস্পতিবার থেকে মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মেলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণ পিয়াসুদের। এদের মধ্যে সপরিবারে ও দম্পতিদের ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। এ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুড়ে দেখতে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন এখানে।

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া ঘুরতে যাওয়া সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বললে, ‘এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে ঘুরতে এসেছি। বানরের লাফালাফি দেখেছি। তা ছাড়া হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ যাদুঘড় ও লেকের পানি সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে। মন চাচ্ছে না ফিরে যেতে। যেকোন ছুটি পেলে আবার আসবো।’

লাউয়াছড়া টিকেট কালেক্টর শাহিন আহমদ জানান, শুক্রবার পর্যটকের উপচেপড়া ভির ছিল। সামাল দিতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। এমন আগে কখনও হয়নি। শুক্রবার মোট পর্যটক এসেছেন ১ হাজার ৩২৩ জন। প্রাপ্তবয়স্ক ১ হাজার ১১২জন, ছাত্র ১৯০ জন ও বিদেশী ২১ জন। মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৭১ হাজার ৮০০ টাকা।

লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, ‘ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। তবে এখন পর্যটকদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শনিবার পর্যন্ত পর্যটক আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে। তবে লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের উপস্থিতি সব সময়েই বেশি হয়ে থাকে যা আমাদের জন্যে অত্যন্ত আনন্দের।’

শ্রীমঙ্গলের ওয়াটারলিলি রিসোর্টে এমডি ওয়ালিদ আহসান নাহিদ বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে আমার হোটেলে কোনো রুম খালি নেই। মানুষ আমাদের শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসছেন এটা আমাদের জন্য আনন্দের। তবে তাদের রুম দিতে পারতেছি না এতে একটু খারাপই লাগছে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমরা সবসময় নিয়োজিত আছি। পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করছি।’

আরও পড়ুন:
বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকায় জরিমানা
কুলাউড়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, স্বামী-শ্বশুর গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ২০
পথ ভুলে সুন্দরবনের গহীনে, পাঁচ ঘণ্টা পর উদ্ধার
ষাট গম্বুজ মসজিদ ঘুরে দেখলেন ২৮ বিদেশি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Alleged rape of intellectually challenged girl in Natore Youth arrested

নাটোরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নাটোরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার প্রতীকী ছবি
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঘটনা শুনে কিশোরির মা শরনখোলা থানায় মামলা করলে আমাদের অভিযানে গভীর রাতে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

বাগেরহাটে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরিকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জেলার শরণখোলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফয়জুল ইসলাম ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে।

ওই কিশোরীকে শুক্রবার দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শরণখোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শরণখোলা উপজেলার একটি গ্রামে ওই কিশোরীর বাবা গত ২৩ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায়। এ সময় তার মা তাকে পাশের ফুফুর বাড়িতে রেখে ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনায় যান।

এ সুযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশী ফয়জুল ইসলাম মিজান ওই কিশোরিকে ধর্ষণ করে। খুলনা থেকে তার মা বাড়িতে আসলে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা খুলে বলে।

পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঘটনা শুনে কিশোরীর মা শরনখোলা থানায় মামলা করলে আমাদের অভিযানে গভীর রাতে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A 293 crore dream embankment is floating in the ocean

সাগরে মিশে যাচ্ছে ২৯৩ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ

সাগরে মিশে যাচ্ছে ২৯৩ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ চট্টগ্রামের পশ্চিম বাঁশখালীর বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলা
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।  বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক দল খুব তাড়াতাড়ি পরিদর্শনে আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এরপর ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেলে বেড়িবাঁধ ভাঙন রোধ করা যাবে।’

চট্টগ্রামের পশ্চিম বাঁশখালীর মানুষের প্রাণের দাবি একটি টেকসই বেড়িবাঁধ। কিন্তু তাদের সেই দাবি পূরণ হচ্ছে না কোনোভাবেই। বিদ্যমান বাঁধটুকুও অস্তিত্ব হারাচ্ছে। কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি সাগরের বুকে হারিয়ে যেতে বসেছে।

বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকায় সাগর বুকে দিনে দিনে মিলিয়ে যাচ্ছে বেড়িবাঁধ। প্রকল্প কাজে ধীরগতি ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী এর বড় কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেড়িবাঁধ না থাকার কারণেই ১৯৯১ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে এই জনপদে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর ঘূর্ণিঝড় আয়লা, সিডর, কোমেন, রোয়ানুর কবলে পড়ে প্লাবিত হয়ে শত শত একর ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ব্লক তৈরি ও লুটপাট-দুর্নীতি বেড়িবাঁধ টেকসই না হওয়ার অন্যতম কারণ। উপকূলীয় এই বেড়িবাঁধ নিমাণ কাজের বাজেট যা ছিল তা কেবল ছোট থেকে ছোট হয়ে এসেছে। এসব ঢাকতে অপরিকল্পিত নকশা প্রণয়ন ও যেনতেনভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কারণে মাত্র এক বছরের মাথায় তা হারিয়ে যাচ্ছে সাগর বুকে।

অনেকের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে। আর নতুন গতিপথে স্রোত এখন সরাসরি আঘাত হানছে বেড়িবাঁধে। প্রবল স্রোতের ধাক্কায় বাঁধের কিনারাতে তৈরী হচ্ছে গভীর খাড়ি (কূপ)। তা ক্রমশ বেড়িবাঁধের ভিত নড়েবড়ে করে দিয়ে ভাঙন ত্বরান্বিত করছে।

সাগরে মিশে যাচ্ছে ২৯৩ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ

স্থানীয়রা বলছেন, স্রোতের গতিপথ বদল, চর জেগে ওঠা- এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের। তারা এটার সম্ভাব্যতা যাচাই না করে ‘ধর তক্তা মার পেরেক’ টাইপের কাজ কেন করবে? আর তার খেসারত কেন উপকূলবাসী দেবে?

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সাড়ে ৭ বছর আগে ২৫১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৫ সালের ১৯ মে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) তা পাস হয়। বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর পাড়ে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বাঁধ নির্মাণে কয়েক দফা সময় বাড়ানো হয়। ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় এতে ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, ভাঙন রোধ ও পুনরাকৃতিকরণের পাশাপাশি ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণের কথা রয়েছে। ২০২২ সালে প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকার মধ্যবর্তী দুটি স্থান ধসে গিয়ে বেড়িবাঁধের বেশিরভাগ অংশ সাগরে মিলিয়ে গেছে। সিসি ব্লক বেষ্টিত বাঁধের যেটুকু টিকে আছে তাতে বিশালাকার ফাটল সৃষ্টি হয়ে নিচের দিকে ক্রমশ দেবে যাচ্ছে।

ভারী কোনো জোয়ার এলেই পুরোপুরি মিশে যাবে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি হলে তড়িঘড়ি করে জিও ব্যাগ ফেলে বিষয়টি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে পাউবো। অধিকন্তু জিও ব্যাগ ভর্তি করা হচ্ছে বাঁধের খুব কাছ থেকে বালু নিয়ে। আবার কোথাও ২০০ মিটার দূরত্বে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে জিও ব্যাগ পূর্ণ করার জন্য।

সম্প্রতি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় সৃষ্ট বন্যার পানি সাঙ্গু হয়ে নেমে এসেছে বঙ্গোপসাগরে। বলতে গেলে এরপর থেকে এই বাঁধে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

তবে, এই জিও ব্যাগ ভাঙন কতটা ঠেকাতে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দিহান এলাকার সচেতন মহল।

পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কফিল উদ্দিন কফিল বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি একটি টেকসই বেড়িবাঁধ। কোনো বড় জোয়ার এলে বা আবহাওয়ার ভারি পূর্বাভাস পেলে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি বেড়ে যায় আমাদের মধ্যে। এই আতংক আমাদের সারাজীবনের সঙ্গী।

'ভেবেছিলাম স্থায়ী বেড়িবাঁধ হলে আমাদের সেই দুঃখটা ঘুচবে। কিন্তু বছর না যেতেই বেড়িবাঁধের এই হাল কেন, তার জবাব সংশ্লিষ্টরাই দিতে পারবেন। আমি কারও দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলতে চাই না। যেটা চাই তা হলো এটির যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে স্থায়ী একটা সমাধান।’

সাগরে মিশে যাচ্ছে ২৯৩ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ
জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধের ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ছবি: নিউজবাংলা

স্থানীয় বাসিন্দা অ্যডভোকেট মাইনুল হোসেন সোহেল বলেন, ‘খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থা ভয়াবহ। বড় জোয়ার এলেই প্লাবিত হবে গোটা ইউনিয়ন। এলাকার মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ভীতি কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সাতকানিয়া, লোহাগাড়ায় যে ভয়াবহ বন্যা ও প্রাণহানি হল সে বিষয়টা ইউনিয়নবাসীকে ভাবাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোপূর্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতে লবণাক্ত পানি ঢুকে ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ ধানি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে গেছে। উপকূলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। দীর্ঘদিন এই বেড়িবাঁধ অরক্ষিত ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল একটি টেকসই বেড়িবাঁধ হবে। উল্লেখযোগ্য বরাদ্দও আমরা পেয়েছিলাম। কিন্তু যে কাজ দেখছি তাতে মনে হয় না কাঙ্ক্ষিত মান অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। আশা করি সংশ্লিষ্ট পক্ষ এসব অভিযোগের সুরাহা করবে এবং দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ভূমিকা রাখবে।’

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম হায়দার বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড আপদকালীন অবস্থা ঠেকাতে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধের অবশিষ্ট অংশ ঠেকাতে কাজ করছে। সাঙ্গু নদীর মোহনায় যে চর জেগে উঠেছে তা অপসারণ করা না হলে এই বাঁধের ভাঙন রোধ করা যাবে না। যেকোনো মুহূর্তে আমরা পুরো ইউনিয়নের সবাই বিলীন হয়ে যাব।’

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক দল খুব তাড়াতাড়ি পরিদর্শনে আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এরপর এটি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেলে বেড়িবাঁধ ভাঙন রোধ করা যাবে।’

পাউবোর চট্টগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানার জন্য বেশ কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া মেলেনি।

তবে ওই দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা ওই চর। এটা ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরাই ভাল বলতে পারবেন।’

আরও পড়ুন:
কপোতাক্ষের বাঁধ মেরামতের স্বেচ্ছাশ্রমে হাজারো মানুষ 
খোলপেটুয়ার ভাঙনে ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ
স্বেচ্ছাশ্রমে ২ কিমি বেড়িবাঁধ
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধে ভাঙন, ২০০ ফুট বিলীন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Natore rescues Guisap and frees him

নাটোরে গুইসাপ উদ্ধার করে অবমুক্ত

নাটোরে গুইসাপ উদ্ধার করে অবমুক্ত নাটোরে উদ্ধার করা গুইসাপ হাতে পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী। ছবি: নিউজবাংলা
গুইসাপটি উদ্ধার করা পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ধানের জমির পাশে মাছ ধরার জালে একটি গুইসাপ আটকে যায়। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে আমিসহ আরও কয়েকজন মিলে গুইসাপটিকে উদ্ধার করি এবং পাশেই নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করা হয়।’

নাটোরে একটি গুইসাপ উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে পরিবেশকর্মীরা।

জেলার সদরের হাফরাস্তা এলাকা থেকে শুক্রবার দুপুরে গুইসাপটি উদ্ধার করা হয়।

গুইসাপটি উদ্ধার করা পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ধানের জমির পাশে মাছ ধরার জালে একটি গুইসাপ আটকে যায়। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে আমিসহ আরও কয়েকজন মিলে গুইসাপটিকে উদ্ধার করি এবং পাশেই নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসময় উপস্থিত জনসাধারনের উদ্দেশ্যে পরিবেশের জন্য বন্যপ্রাণীর ইতিবাচক দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে গুইসাপ কোনো সাপই নয়। এর কোনো বিষ নেই, মানুষকে দংশনও করে না।’

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী গুইসাপ সংরক্ষিত; তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতিসাধন করা একেবারেই নিষিদ্ধ বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য

p
উপরে