পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগ তাদের বিকৃত মস্তিষ্কের উদ্ভট আবিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় বিএনপি ও তার দোসরদের বুক জ্বালা করে।
বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ঢাকার নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে পদ্মা সেতু হবে না; এ সরকার কখনো তা করতে পারবে না। বাস্তবতা হলো, পদ্মা সেতু হয়ে গেছে; এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। তাই বিএনপি ও তার দোসরদের বুকে বড় জ্বালা। অথচ পদ্মার দুই পাড়সহ সারা দেশে জনগণের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি দেশের জনগণকে কী দেখাবে- এমন প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘তাদের দেখানোর কিছু নেই। বিএনপির শাসনামলে হাওয়া ভবনের দুর্নীতি, তারেক রহমানের দুর্নীতি আর তাদের নেত্রীর এতিমের টাকা আত্মসাতের দুর্নীতি ছাড়া জনগণকে দেখানোর মতো আর কিছু নেই।’
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভালো আচরণ করে মানুষকে খুশি করতে হবে। তা না হলে শেখ হাসিনার এতো সাফল্য, অর্জন ও উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে।
‘চট্টগ্রামে দলের কোন্দল আর দেখতে চাই না। দ্রুত চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন করতে হবে। দল থেকে দূষিত রক্ত বের করে দিয়ে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।’
২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বন জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানম, উপ-প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির সমাধিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী চেতনার ধারক ও বাহক ছিলেন। তার গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
‘বাংলাদেশে আজও সাম্প্রদায়িকতার শাখা-প্রশাখা আছে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উৎপাটন করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন:বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-টরন্টো রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হচ্ছে ২৭ জুলাই। টরন্টো ফ্লাইটে ভ্রমণে ইচ্ছুকরা এখন থেকেই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশ-বিদেশে অবস্থিত বিমানের যে কোনো সেলস্ সেন্টার, বিমান অনুমোদিত যে কোনো ট্রাভেল এজেন্সি, বিমানের বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট www.biman-airlines.com ও কল সেন্টার ০১৯৯০৯৯৭৯৯৭ থেকে এ রুটের টিকিট কেনা এবং আনুষঙ্গিক সেবাগুলো গ্রহণ করা যাবে।
তবে কানাডা থেকে আপাতত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কেনা যাবে না। বিষয়টি এখনও অ্যাকটিভেশন পর্যায়ে রয়েছে।
বিমান বলছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা-টরন্টো রুটে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হবে। ঢাকা থেকে প্রতি বুধবার ও রোববার বিমানের ফ্লাইট টরন্টোর উদ্দেশে যাত্রা করবে। একই দিন টরন্টো থেকে ফিরতি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। রুটটিতে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বিমানের বহরে থাকা বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।
ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় ফ্লাইটটি তুরস্কের ইস্তানবুলে এক ঘণ্টার জন্য টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং করবে। তবে ফিরতি ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকায় অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে বিমান।
বাংলাদেশ থেকে ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী যাত্রার জন্য ভাড়া ঠিক করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার ৫১০ টাকা। আর রিটার্ন টিকিটের ভাড়া ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭০ টাকা।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ১ লাখ ২৭ হাজার ৩০০ টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৫ টাকা।
আর বিজনেস ক্লাসের ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী ভাড়া শুরু হবে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ টাকা এবং রিটার্ন টিকিটের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০২ টাকা।
টরন্টো থেকে যারা ঢাকায় আসবেন তাদের জন্য ইকোনমি ক্লাসে একমুখী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯০ কানাডিয়ান ডলার আর রিটার্ন টিকিটের দাম ১ হাজার ২৩৩ কানাডিয়ান ডলার।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ১ হাজার ২৩০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ কানাডিয়ান ডলার। আর বিজনেস ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৭৮ কানাডিয়ান ডলার।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের ওপরে ইস্পাতের পাতের সংযোগস্থলের নাট খোলা নিছক খেয়ালের ছলে হয়নি বলে মনে করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা সেই যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেছেন, সেই যুবকের এই কাজের পেছনে নাশকতার চেষ্টা থাকতে পারে।
পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর দিন রোববার রেলিংয়ের নাট খোলার ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে সন্ধ্যায় সেই যুবককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরে জানা যায়, তিনি বাইজীদ তালহা নামে পরিচিত। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম মো. বাইজীদ।
সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাইজীদ তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পদ্মা সেতুর নাট খুলেছিলেন সেতুর ক্ষতি করার উদ্দেশে। এমন অভিযোগে মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় এ মামলা প্রক্রিয়াধীন৷ থানা কর্তৃপক্ষই বাদী হবে।’
বাইজীদকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা তুলে ধরে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছি সে উদ্দেশ্যমূকলভাবে এই কাজ করেছে। আমরা বিস্তারিত আগামীকাল (সোমবার) সংবাদ সম্মেলনে জানাব।’
জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বাইজীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও পরীক্ষা করেছে সিআইডি। জানা গেছে, তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের সময়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি।
তার মোবাইল ফোন থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছে সিআইডি। সব কিছু যাচাই বাছাই করেই তারা সিদ্ধান্তে আসেন, নিছক হেয়ালি নয়, পরিকল্পিতভাবে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলেছেন এই যুবক।
পুলিশ জানায়, শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক মানুষ উঠে পড়েন মূল সেতুতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। এরই ফাঁকে আলোচিত ভিডিওটি করেন বাইজীদ।
৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।’
নাট হাতে নিয়ে জবাবে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের... পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
এ সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকার সম্প্রসারিত অংশ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ডিপ্লোমেটিক জোন গড়ে তোলা হবে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরে ডিপ্লোমেটিক জোন করার জন্য প্লট নির্ধারিত রয়েছে।
রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সরকারি দলের সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘অনেক দেশই অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিশন খোলার ব্যাপারে আগ্র্রহ দেখিয়েছে। তাছাড়া যেসব দেশ বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাদের অফিস পরিচালনা করছে তাদের পক্ষ থেকেও এক সময় অফিস ভবন নির্মাণের জন্য জমির দাবি উঠতে পারে।
‘বর্তমানে গুলশান ও বারিধারা এলাকায় কূটনৈতিক মিশনের জন্য বরাদ্দ দেয়ার মতো জায়গা খালি নেই। তাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) শহর সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পূর্বাচল ডিপ্লোমেটিক জোন তৈরির পরিকল্পনা করেছে। বিদেশি মিশনগুলো সম্মত হলে প্রক্রিয়াটি দ্রুতগতিতে শুরু করা যাবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে নতুন নতুন কূটনৈতিক মিশন খোলার বিষয়ে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বাংলাদেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এসব আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মিশনগুলোর নিজস্ব অফিস ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকারমূলক যৌক্তিক নির্দেশ রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বে জমির দাম ও ভাড়া করা অফিসের মূল্য উত্তরোত্তর বাড়ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রাষ্ট্রে তার মিশনগুলোর জন্য প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জমি কেনার সিদ্ধান্ত বিষয়ে কাজ করা যাচ্ছে।
‘দূতাবাস ভবনের জন্য ভূমি বিনিময় এখন একটি যৌক্তিক রাষ্ট্রাচারে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভূমি বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। এই মুহূর্তেও কিছু কার্যক্রম চলমান।
‘বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাসের ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যেসব দেশ জমি বরাদ্দ দিয়েছে অথবা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে সেগুলো হচ্ছে- ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, থাইল্যান্ড, ইরাক, মিসর, জাপান ইত্যাদি। তারই ধারাবাহিকতায় ভিয়েনা কনভেনশন-১৯৬১ অনুযায়ী বিদেশি মিশনগুলোকে তাদের নিজস্ব ভবন তৈরির ক্ষেত্রে নতুন করে জমি বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট বল্টু খুলে এক টিকটকারের আটক এবং তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার ঘোষণার মধ্যেই নাট খোলার আরও একটি ভিডিও ছড়িয়েছে।
দুটি ভিডিও পর্যালোচনা করলে দেখে মনে হয়, দুটো একই জায়গায় করা হয়েছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডি বলেছে, তারা বেশ কয়েকটি ঘটনা নিয়ে একস্ঙ্গে কাজ করছে। এসব বিষয়ে পরে জানানো হবে।
রোববার পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর দিন সেতুতে উঠতে বিশেষ করে বাইকারদের মরিয়া মনোভাবের মধ্যে সেতুর রেলিংয়ের ওপরে থাকা স্টিলের পাত সংযোগের নাট বল্টু খুলতে দেখা যায় একটি ভিডিওতে।
পরে জানা যায়, সেই যুবকের নাম বাইজীদ তালহা। তার বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলীখালী গ্রামে।
ভিডিওটি প্রথমে আপলোড করা হয়েছিল টিকটকে। সেটি ভাইরাল হলে তুমুল সমালোচনার মুখে তা সরিয়ে ফেলা হয়। এমনকি বাইজীদের ফেসবুক আইডিটিও ডিঅ্যাকটিভেট করে ফেলা হয়। বন্ধ হয়ে যায় ফোন নম্বর।
তবে সন্ধ্যার ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সেই যুবক হাত দিয়ে নাট বল্টু খোলার কথা জানানো হলেও গোয়েন্দারা জানান, বাইটের নাট খোলার যন্ত্র দিয়ে সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলা হয়েছে।
এর মধ্যে টিকটকেই আরও একটি ভিডিও প্রচার হয়।
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, নাট খুলে লম্বা গড়নের এক যুবক বলেন, ‘পদ্মা সেতুর নাট।’
অন্য একজন বলেন, নাট খুইল্যা গেছে?’
সেই যুবক বলেন, ‘ঝাকায়া খুইল্যা ফালাইছি হাত দিয়া’।
এই সবগুলাই কি লুজ?-জিজ্ঞেস করেন ভিডিওতে চেহারা দেখা না যাওয়া দ্বিতীয় জন।
এর মধ্যে সেই নাটটি জায়গা মতো স্থাপন করেন সেই যুবক। বলেন, ‘এইগুলা লুজ। লাগায়া দিলাম। ক্যামেরা দেহাইয়া লাগাইয়া দিলাম।’
ভিডিওতে চেহারা দেখা যায় না, সেই যুবক বলেন, ‘এখন লাগায়া দিছেন, কিন্তু রাইতে আবার কী করবেন না করবেন…’
এরপর সেই যুবক পাশের আরেকটি জোড়ার কাছে যান, ‘এই যে দেখেন আরেকটা। এতে আমি কিন্তু কোনো রেঞ্জ ব্যবহার করি নাই।’
তবে তিনি সেই নাট খুলেছেন, কি না সেটা দেখা যায় না।
এর আগের যে ভিডিওটি ছড়িয়েছিল এবং দ্বিতীয় ভিডিওর স্থানটি একই বলেই প্রতীয়মান হয়, যদিও বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ বিস্তারিত জানাচ্ছে না। দ্বিতীয় যুবকের পরিচয়ও কেউ নিশ্চিত করেনি।
যোগাযোগ করা হলে সিআইডির সাইবার ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই ধরনের বেশ কয়েকজনের বিষয়ে খোঁজ করছি। তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সোমবার ভোর ৬টা থেকে মোটরসাইকেল চলাচলের এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় আজ ভোর ৬টা থেকে। তবে সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় গতকাল রাত থেকেই হাজার হাজার বাইক ও যানবাহন সেতুর মাওয়া প্রান্তে জড়ো হতে থাকে।
এতে সেতুর টোল প্লাজার আগেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও তাদের সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে যান।
বাইকাররা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন টোল প্লাজায়। নির্দিষ্ট লেন না মেনে প্রায় সব লেনেই ভিড় করেন। এতে অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশও করতে পারে না টোল প্লাজায়।
এরই মধ্যে পদ্মা সেতুতে বাইক নিয়ে গিয়ে সেতুর রেলিং থেকে নাট খোলার ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওর সূত্র ধরে নাট খোলার ওই ঘটনায় বাইজীদ নামের এক যুবককে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরেক ব্যক্তিকেও একটি ভিডিওতে রেলিং থেকে নাট খুলতে দেখা গেছে। দেখা গেছে সেতুতে উঠে প্রস্রাব করার একটি ছবিও। যা দিনভর ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এ ছাড়া সন্ধ্যার পর পদ্মা সেতুতে বাইক নিয়ে দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সেতু উদ্বোধনের আগেই সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে সেতুতে কোন কাজ করা যাবে বা যাবে না। সরকারের অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআই হিসেবে দেখানো হয় পদ্মা সেতুকে। ফলে সেতুতে যেকোনো ধরনের গাড়ি থামানো, গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাচলা করা কিংবা এ ধরনের যেকোনো কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়।
তবে উদ্বোধনের দিন শনিবার অসংখ্য মানুষ এসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেতুরে পাশের বেড়ার উপর ও নিচ দিয়ে সেতুতে উঠে পড়েন। যদিও একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত উদ্বোধনের দিন হিসেবে মানুষের চলাচল শিথিল করা হয়েছিল, যা রোববার থেকে আগের মতোই নিষিদ্ধ করা হয়।
এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার ঘোষণা এসেছে সরকারের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে পশুর হাট বসাতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে কোরবানির পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণে সব সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্টদেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে রোববার ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনলাইনে আয়োজিত পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি বাস্তবায়ন ও কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনায় এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক-মহাসড়কের পাশে যেখানে যান চলাচল বিঘ্ন হতে পারে। সেখানে কোনোক্রমেই পশুর হাট বসানো যাবে না। এ নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘জেলা প্রশাসকরা পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেবেন ও বাস্তবায়ন করবেন। সিটি করপোরেশনের মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা সবাই তাদের স্ব স্ব অবস্থানে থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘করোনার মহাসংকটেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ঈদে পশুর হাট বসানো হয়েছিল। এ বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণের হার কম থাকলেও বেশ কয়েক দিন ধরে সংক্রমণের হার বেড়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে এবারের পশুর হাট বসাতে হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোরবানির হাট বসানোর পাশাপাশি এ বছরও অনলাইনে পশু কেনাবেচার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পশুর হাট বাজার ব্যবস্থাপনা, দ্রুততম সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও জনসাধারণের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
গত বছরের মতো পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি ও দ্রুততম সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কাজ করার আহ্বান জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমশক্তি রপ্তানিতে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হলেও সিন্ডিকেটের কারণে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী।
রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রুস্তম ফরাজী বলেন, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্পষ্ট করেই আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীকে জানালেন যে তারা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবেন। আমাদের মন্ত্রী ওখানে গেলেন। আলোচনা হলো। তখন মালয়েশিয়া বলল, আপনারা সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের জানান। কিন্তু বারবার মালয়েশিয়া সফর করেও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সেটা শুধুই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের কারণে।
‘কয়েকটি বিশেষ গোষ্ঠীকে আমরা যদি সুযোগ দিই তাহলে ব্যয় বেড়ে যাবে। এখন মালয়েশিয়ায় যাওয়া যায় ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায়। তখন লাগবে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। দেশের নিম্নবিত্ত ও সাধারণ মানুষ কী করে এত টাকা সংগ্রহ করবে?’
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে রুস্তম ফরাজী বলেন, টালবাহানা না করে আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। সবাইকে ছেড়ে দিন, ওনাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। মানুষ যাতে কর্মসংস্থানের জন্য অল্প টাকায় মালয়েশিয়ায় যেতে পারে সে ব্যবস্থা করুন।
সমস্যা আশু সমাধানে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান রুস্তম ফরাজী। তিনি বলেন, ‘সাধারণ ঘরের সন্তানরা মালয়েশিয়ায় গেলে কর্মসংস্থান হবে, রেমিট্যান্স আসবে। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য