কুষ্টিয়ায় ২০ দিনে ৯ জন খুন হয়েছেন। একের পর এক হত্যাকাণ্ড উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বেশির ভাগ খুনের ঘটনা ঘটেছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতিতে আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে এ অঞ্চল। তবে পুলিশ বলছে, অপরাধ দমনে তারা তৎপর। কেউ যাতে আইন হাতে তুলে না নেয় সে জন্য প্রচারের পাশাপাশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
থানাসূত্রে জানা গেছে, ২ মে ঈদের আগের দিন বিকেলে কুষ্টিয়া সদরের ঝাউদিয়া-আস্তানগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কুপিয়ে খুন করা হয় চারজনকে। একপক্ষে তিনজন ও অপর পক্ষে একজন খুন হন।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলা করেছে। মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে ঝাউদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলীকে। দুটি মামলার ৯৮ আসামির মধ্যে এরই মধ্যে জামিন পেয়েছেন ৭১ জন।
৫ মে কুমারখালীতে গড়াই ব্রিজের নিচ থেকে মাসুদ খাঁ নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও পরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মেলে হত্যার আলামত। অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়।
১০ মে ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধে খুন হন আব্দুল কুদ্দুস মল্লিক।
আলোচিত খুনের ঘটনা ঘটে ১১ মে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। গভীর রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাসদ যুবজোট নেতা মাহবুব খান সালামকে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের আসামি করা হয়। বিচার দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করেছে যুবজোট।
১৮ মে সদর উপজেলার দহকুলায় খুন হয় এক স্কুলছাত্র। জীবন আহমেদ নামে ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী রাতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বের হয়। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে পুকুরপাড়ে তার বাইক আর পুকুরে মরদেহ পাওয়া যায়।
একই দিনে গভীর রাতে খোকসায় হেলথকেয়ার অ্যান্ড হাসপাতালের কর্মচারী মো. হিরনের মৃত্যু হয়। সে সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মনে হলেও পরে পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার দাবি করা হচ্ছে। তারা থানায় হত্যার অভিযোগও দিয়েছেন। বিচার দাবিতে ২২ মে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
২০ মে শহরের চরমিলপাড়ায় পারিবারিক কলহে খুন হয়েছেন বাবু শেখ নামে একজন। ছেলের কাছে খরচের টাকা চাওয়া ও বাড়িতে ঘর নির্মাণের জায়গা নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও মারামারির মধ্যে ইটের আঘাতে তার মৃত্যু হয়।
চার খুনের ১৮ দিন পর ২১ মে ওই এলাকার ঝাউদিয়া-কালিতলায় পারিবারিক বিরোধে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জসিম নামে একজনকে। ঝড়ে নুয়ে পড়া বাঁশ কাটতে গেলে নিজের দাবি করে জসিম বাধা দেন। এতে চাচাতো ভাই লালন ও তার ছেলেদের সঙ্গে মারামারি হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জসিমের মৃত্যু হয়।
এই হিসাবে ২-২১ মে ২০ দিনে কুষ্টিয়ায় খুন হয়েছেন ৯ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলাতেই ছয়জন। ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও কুমারখালীতে একজন করে। এ ছাড়া খোকসার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
একের পর এক খুনের ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম টুকু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় ইদানীং দু-এক দিন পর পরই মার্ডার হচ্ছে। এগুলো আমরা প্রত্যাশা করি না। একের পর এক খুনের কারণে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হচ্ছে। আমি মনে করি প্রশাসনকে তদারকি বাড়াতে হবে।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক কারশেদ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই এ জেলা চরমপন্থি-সন্ত্রাসীদের দাপট ছিল। বর্তমানে অপরাধ বাড়ার কারণে প্রশাসনের গাফিলতি আছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার যে দায়িত্ব, সেটি তারা যথাযতভাবে করছে না বলে আমি মনে করি।’
কারশেদ বলেন, ‘যদি প্রশাসনিক কাজে কোনো বাধা থাকে তা অতিক্রম করতে হবে। না হলে ধারাবাহিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব খুনের ঘটনা ঘটছে সামাজিক দ্বন্দ্বের কারণে। এটি নিরসন করতে প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক নেতাদের একসঙ্গে বসতে হবে। গ্রামে যারা দ্বন্দ্ব করে তাদের এই পথ থেকে সরাতে হবে।’
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ মো. আবু শামীম বলেন, ‘মানুষ মানুষকে সম্মান করছে না। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির কারণেও তারা টেনশনে থাকছে। ভালো থাকার জন্য যা খুশি করার চেষ্টা করছে। এগুলো অস্থিরতার কারণ। আর এই অস্থিরতা থেকে অপরাধ বাড়ছে।’
পুলিশ বলছে, মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে ওঠায় তুচ্ছ ঘটনাও খুনের পর্যায়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিট পুলিশের মাধ্যমে তৎপরতা বাড়ানোর কথা বলছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা তৎপরতা বাড়িয়েছি। আমাদের ৮৫টি বিট পুলিশ আছে। তাদের দিয়ে সবার কাছে খবর পৌঁছে দেব কেউ আইন হাতে তুলে না নেয়।’
প্রত্যেকটি খুনের ঘটনার উপযুক্ত বিচার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, হতাশ না হয়ে পুলিশের প্রতি আস্থা রাখুন।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগের সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসাইন বুধবার বিকেলে আকবরশাহ থানায় মামলা করেন।
আসামিরা হলেন, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম, তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও ওই স্থাপনার তত্ত্ববধায়ক মো. হৃদয়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (চট্টগ্রাম মহানগর) হিল্লোল বিশ্বাস।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘নগরীর পাহাড়তলী মৌজার লেকসিটি এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের একটি অভিযোগ পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা। এ সময় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ ও গাছ কাটার প্রমাণ পাওয়া যায়।
‘স্থাপনা বলতে টিনশেড সেমিপাকা একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া অন্তত ৩ হাজার ঘণফুট পাহাড় ও তিনটি বড় গাছ কেটে নিয়েছে ওরা। বুধবার শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়। শুনানিতে ওই স্থাপনার তত্ত্বাবধায়ক হৃদয় এসে জমির প্রকৃত মালিক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলে জানান।’
আরও পড়ুন:রংপুর সিটি করপোরেশনের পানি শাখার এক নারী সহকর্মীকে মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপে ‘আপত্তিকর’ মেসেজ দেয়ায় নগর ভবনের যান্ত্রিক শাখার প্রধান সাজ্জাদুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
বুধবার বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যান্ত্রিক শাখার প্রধান সাজ্জাদুর রহমানের বিরুদ্ধে তার মোবাইল ফোন থেকে পানি শাখার কর্মকর্তা অঞ্জনা রানীকে ‘আপত্তিকর’ মেসেজ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে হইচই পড়ে যায়। বিষয়টি আমার কাছে আসলে আমি অভিযুক্ত সাজ্জাদ এবং ওই নারী কর্মকর্তার পক্ষের লোকজনকে নিয়ে বৈঠকে বসি। বৈঠকে সাজ্জাদ নিজের দায় স্বীকার করেছেন।’
মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘যেহেতু সাজ্জাদুর রহমান নিজের দায় স্বীকার করেছেন, তাই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাকে চিঠি দেয়া হবে।’
ঘটনার তদন্তে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মৃধাকে প্রধান করে, নির্বাহী প্রকৌশলী আজম আলী ও সাধারণ শাখার প্রধান নাঈম হোসেনকে সদস্য করে একটি কমিটি করা হয়েছে।
তারা আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিলে সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মেসেজ দিয়েছি ঠিক আছে, কিন্তু অতটা আপত্তিকর নয়। বহিষ্কারের চিঠি এখনো পাইনি।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে রুবেল হোসেন ও মুক্ত নামে দুইজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রুবেলের বয়স ২২ বছর এবং মুক্তের বয়স ২২ বছর। তারা দুজন চিকিৎসাধীন।
তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন সহকর্মী রাকিব হোসেন। নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, ‘রুবেল ও মুক্ত দক্ষিণ খান মোল্লারটেক (ইউ এল ফ্যাশন) পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সেখান থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে গার্মেন্টস এক্সোসরিজ কিনতে উত্তরা থেকে প্রজাপতি বাসে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
‘ঐ বাসেই তারা অজ্ঞান পার্টি খপ্পরে পড়েন। পরে মিরপুর ২ বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার পর অচেতন অবস্থায় বাসের ভিতরে পড়ে থাকতে দেখে বাসের কন্টাক্টর রুবেল কে সেখানে নামিয়ে দেন। মিরপুর ১০ নম্বর বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার পর মুক্ত কে সেখানে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়।’
পরে তাদের পকেটে থাকা ফোন দিয়ে খবর দিলে রাকিব তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথম কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে দুজনকে পাকস্থলী পরিস্কাষ্কার করে চিকিৎসক ভর্তি দেন বলে জানান রাকিব। তিনি ওই পোশাক কারখানার সুপারভাইজার।
তিনি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগী দুজনই (ইউ এল ফ্যাসন) পোশাক কারখানার পারচেজ ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা। তাদের সাথে এক লক্ষ টাকা ছিল। সেটি আমরা পাইনি। শুধু দুজনের পকেটে থেকে দুটি মোবাইল আর কিছু দরকারি কাগজপত্র পেয়েছি।’
ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মিরপুর থেকে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া দুইজন কে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাদেরকে স্টমাক ওয়াস দিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি দেন। তাদের অভিযোগ তাদের কাছ থেকে প্রতারক চক্র এক লক্ষ টাকা নিয়ে যায়।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর ধামইরহাটে অবৈধভাবে পটাশ সার মজুত ও বেশি দামে বিক্রির দায়ে এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
উপজেলার আমাইতারা মোড়ে বুধবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে মেসার্স বিতরণী ট্রেডার্সের মালিক ও সার ডিলার আবু হেনা নুর মোহাম্মদকে এই জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন।
শামীম হোসেন বলেন, ‘এক ব্যক্তি ধামইরহাটে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি হচ্ছে, বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানালে আমরা ক্রেতা সেজে ওই দোকানে সার কিনতে গেলে সার নেই বলে জানানো হয়।
‘পরে গোডাউনে গিয়ে প্রায় ৩০ বস্তা পটাশ মজুত পাওয়া যায়। পটাশের দাম ৭৫০ টাকা বস্তা হলেও তের থেকে পনের শ টাকা করে বিক্রির সত্যতা পাওয়া যায়।’
তিনি জানান, এই বিএডিসি ডিলার গত ১৭ জুলাই স্টক রেজিস্ট্রারে পটাশ সারের মজুত দেখান ৪৬ বস্তা, কিন্তু ১৭ তারিখের পর থেকে আজকে পর্যন্ত বিক্রির ভাউচারে ৩১৮ বস্তা পটাশ সার বিক্রির তথ্য পাওয়া যায়। যা তার হিসাবের সঙ্গে অসঙ্গতি।
তাই ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া সেসব সার ৭৫০ টাকা দামে উপস্থিতি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।
অভিযানে ধামইরহাট উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আনিসুর রহমান ও থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির হোতা পি কে হালদারসহ ৬ জনকে ৪৩ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আদালত।
বুধবার পি কে হালদারসহ ৬ জনকে কলকাতার ব্যাংকশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হলে বিচারক জীবন কুমার সাধু এই নির্দেশ দেন। ২২ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-ইডির পক্ষে আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী পি কে হালদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সাড়ে ৪ হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৫ জুলাই যে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে তা নিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী তেমন উচ্চবাচ্য করেননি। দুপক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শুনে ১৫ মিনিটের মধ্যে রায় দেন বিচারপতি জীবন কুমার সাধু।’
পি কে হালদারের ৮৮টি ব্যাংক একাউন্ট ও ৪৪টি সম্পত্তির নথি আগেই আদালতে জমা দিয়েছিল ইডি।
বাংলাদেশের ব্যাংক জালিয়াতি মামলার মূল হোতা পি কে হালদারসহ ৬ জনকে বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে ১৪ মে গ্রেপ্তার করে। দুই দফায় ১৩ দিন ইডি হেফাজত শেষে প্রায় ৩ মাস সময় ধরে হেফাজতে রয়েছে পি কে হালদার জালিয়াত চক্র।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বুধবার বিকেলে বিচারক নওরিন করিম তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এই আসামিরা হলেন মো. সাগর ও মো. বাবু।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৯ জন। অন্য ৪ জন রিমান্ডে আছেন।
পুলিশের বর্ণনায় যা ঘটেছিল
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামের খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখানে ৩০ মিনিটের মতো বিরতি শেষে বাসটি ফের ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
পথে তিনটি স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজন করে মোট ১২ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন এবং পেছনের দিকে খালি সিটে বসেন।
যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) পার হওয়ার আধা ঘণ্টা পর (রাত দেড়টার দিকে) টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ছুরি, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের চালককে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে পেছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে।
টহল পুলিশের কাছে ধরা পড়া এড়াতে তারা বাসটিকে গোড়াই থেকে ইউটার্ন করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাত দল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিঁড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাতরা বাসের ২৪ যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাসের এক নারীকে পাঁচ-ছয়জন ধর্ষণ করে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে না এবং এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদেরকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. ইমরুল কায়েস খান, শোয়েব মাহমুদ এবং সামসুর রহমান বাদল।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায়।
আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব জানান, কমিটি গঠনের আদেশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসকে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম কেন সরবরাহ করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত।
এ ছাড়া কেমিক্যাল রক্ষণাবেক্ষণে জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধাণন করার নির্দেশনা ও কেমিক্যাল ডিপোতে সংরক্ষিত কেমিক্যালের পরিমাণ, কী ধরনের কেমিক্যাল রাখা হবে তা প্রদর্শনের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অর্ধশত মানুষ নিহত এবং আহত হয় শতাধিক।
ওই ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২৯ জুন হাইকোর্টে রিট করে দুটি মানবাধিকার সংস্থা ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ এবং সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে আইনজীবী পল্লব।
রিটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএম কন্টেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার এ আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য