বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যাত্রী হয়রানি না করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে সোমবার দুপুরে বিমান প্রতিমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্টে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কাউকে সন্দেহ হলে শুধু তাকেই চেক করুন। আমাদের প্রতিদিন ২১ হাজারের মতো যাত্রীর আসা-যাওয়া। সবাইকে যদি চেকের সম্মুখীন হতে হয় তবে এটা যাত্রী সেবার অনুকূল হবে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি। প্রত্যেক যাত্রীকে যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা না হয়, হয়রানি না করা হয়। যাদের তারা প্রয়োজন মনে করবেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। প্রয়োজনে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসা করবেন। এই কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার জন্যই আজকে আসা।’
‘কাস্টমসের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, যাতে সব যাত্রীর ব্যাগ চেক করা না হয়। কেবল তথ্যের ভিত্তিতে যাকে সন্দেহ হবে তাকে চেক করা হবে। ১ থেকে ২ শতাংশ যাত্রীকে আলাদাভাবে নিয়ে চেক করতে হবে।’
চেক করতে গিয়ে যাত্রীদের আসা-যাওয়ায় যাতে কোনো হয়রানি না হয় সে বিষয়েও জোর দেন তিনি। বলেন, ‘এয়ারপোর্টে এসে সেবা নির্বিঘ্ন করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে। শিগগির যাতে ই-গেট চালু হয় সেটির ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
হজ ফ্লাইট প্রসঙ্গে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরু করার প্রস্তুতি আছে। কিন্তু হজে যারা যাবেন বাড়ি ভাড়া এবং মোয়াল্লেম নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো করতে পারেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়গুলো এখনও ক্লিয়ার হয়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস নির্দিষ্ট সময়ে কাজগুলো শেষ করবে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বিষয়গুলো দেখছে। আমাদের বিশ্বাস এই সময়ের মধ্যে সব হয়ে যাবে। আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ মে হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করা হবে।’
হজ ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে সিডিউল ফ্লাইট বিঘ্ন হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানের বহরে ২১টির মধ্যে চারটি বোয়িং-৭৭৭। ২০১৯ সালে এই চারটি দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছিল। এ বছরও সেটি করা হবে। এতে বিমানের অন্যান্য গন্তব্যের সিডিউল ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি আমরা কমিয়ে দেব। কম গুরুত্বপূর্ণ ও কম লাভজনক রুটের ফ্রিকোয়েন্সি কমানো হবে। এটা দুই মাসের বিষয়। সিডিউল ফ্লাইটে কোনো ব্যাঘাত হবে না।’
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সি কমানো হবে না বলে জানান তিনি।
মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্স দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটা দল করা হয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন মন্ত্রণালয়ের লোকজন বিমানবন্দরে থাকেন। কোনো অব্যবস্থাপনা হয় কি না তারা দেখেন। আমরা এখানে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সেবার মান ভালো। ইমিগ্রেশনে তাদের কোনো সমস্যা নেই।’
বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরে যার যারা ডিউটি করেন তাদের নির্দিষ্ট সময়ের আধা ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে ঢুকতে হবে। ডিউটি শেষে বের হতে হবে। যাতে আমরা যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পারি। বহির্বিশ্বে বিমানবন্দরগুলোতে যেমন সেবা দেয়া হয় সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট আছি।’
বিমানবন্দরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব ব্যবস্থাপনা যে সম্পূর্ণভাবে করতে পারছি তা বলি না, আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। বিভিন্ন অসুবিধার কারণে আমরা যথাযথ সেবা দিতে পারছি না। সেজন্য তৎপর আমরা। কিছু কিছু অব্যবস্থাপনা যাত্রীদের হচ্ছে না, এটা আমরা বলতে পারব না।’
বিমানবন্দরের ক্যানপিতে লোহার বাধার কারণে যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে বের হতে কষ্ট হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘এখানে ব্যারিকেড উঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। তবে যখন ট্রলির সংকট হলো তখন আবার ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। কারণ অনেক ট্রলি বিমানবন্দরের বাইরে চলে যেত। ট্রলি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এটা আমাদের করতে হয়েছে। হুইল চেয়ার যাতে বের হওয়ার ব্যবস্থা করা যায় সেটি দেখা হবে।’
মাঙ্কিপক্স বিষয়ে বিমানবন্দরে সতর্কতা ও যাত্রী স্ক্যানিংয়ের বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সতর্ক আছি। দেশে এলে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম অনলাইনে দিতে হয়। সেখানে এ পয়েন্টটি দেয়া হয়েছে। সেখানে যাত্রীদের উপসর্গ আছে কি না, যেসব দেশে মাঙ্কিপক্স বাড়ছে সেসব দেশ থেকে আসছে কি না সেসব তথ্য পাওয়া যাবে।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে স্কুলছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু হিরোইজম দেখাতে গিয়ে তার শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার ব্রিফিংয়ে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন।
উৎপল হত্যা মামলার প্রধান আসামি জিতুকে গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি বুধবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন র্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন।
জিতুকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পরের দিন ব্রিফিংয়ে মঈন সাংবাদিকদের জানান, দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাজীবনে বিরতি নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগ ছিল স্কুলের অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর।
র্যাবের কর্মকর্তা জানান, প্রায়ই ইউনিফর্ম ছাড়া স্কুলে আসতেন জিতু। স্কুল এলাকায় ধূমপান করতেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করতেন; বাইক চালাতেন বেপরোয়াভাবে।
ওই স্কুলছাত্র ‘জিতু দাদা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন জানিয়ে র্যাবের কর্মকর্তা বলেন, ‘জিতু দাদা’ নামে কিশোর গ্যাং তৈরি করেছিলেন জিতু। তিনি মানুষকে হেনস্তা করতেন। তার বিষয়ে নালিশ দেয়া হলে বিভিন্নজনকে ভয়-ভীতি দেখাতেন।
কেন উৎপলকে হত্যা
শিক্ষক উৎপলকে হত্যার কারণ নিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, কিছুদিন আগে জিতু কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে অযাচিতভাবে স্কুল ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সে সময় শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে উৎপল কুমার সরকার ওই ছাত্রী ও জিতুকে প্রেষণা (মোটিভেশন) দেন। এতে জিতু ক্ষুব্ধ হন। হিরোইজম প্রদর্শন করার জন্য তিনি স্টাম্প দিয়ে উৎপলকে আঘাত করেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ২৫ জুন পরিকল্পনা করে বাসা থেকে স্টাম্প নিয়ে আসেন জিতু । তিনি উৎপলকে আঘাত করার সময় খুঁজতে থাকেন। পরবর্তীকালে স্কুলে খেলার সময় উত্তমকে একা পেয়ে স্টাম্প দিয়ে পেছন থেকে আঘাত করেন জিতু।
তিনি আরও জানান, জিতু একের পর এক আঘাত করতে থাকেন উৎপলকে। মারধর শেষে তিনি স্কুল ছেড়ে এলাকায় অবস্থান নেন। সন্ধ্যার সময় পরিস্থিতি বুঝতে পেরে শুরুতে মানিকগঞ্জে যান। সেখান থেকে তিনি পাবনায় পরিচিত একজনের বাসায় চলে যান। বুধবার ভোরে পাবনা থেকে আরিচা হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বন্ধুর বাসায় আসেন প্রাপ্তবয়স্ক এ স্কুলছাত্র।
যা ঘটেছিল
সাভারে হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা ছেলেদের ফুটবল ও মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। শনিবার স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। এ সময় প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল ছেলে শিক্ষার্থীরা।
‘অভিযুক্ত ছাত্রও দ্বিতীয় তলায় ছিল। হঠাৎ সে নেমে মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় উৎপলকে উদ্ধার করে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকালে উৎপলের মৃত্যু হয়।’
অধ্যক্ষ জানান, উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তিনি আরও জানান, দায়িত্বের অংশ হিসেবেই উৎপল শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন এবং তাদের নানা অপরাধ বা নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের বিচার করতেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলিস্তানে একটি মার্কেটে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর এক যুবকের সাড়ে তিন লাখ টাকা খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তার এক সহকর্মী। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে কেউ অজ্ঞান করে টাকা নিয়ে গেছেন।
সেই যুবকের নাম কবির হোসেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কবির কুইক লিংক টেকনোলজি নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি।
প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং কর্মকর্তা আশরাফুল হায়দার জানান, তারা রাউটার এবং সিসি ক্যামেরা বিক্রি কনে। কবির বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করে টাকা সংগ্রহ করেন। পরে সেখানকার লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বিকালে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়।
আশরাফুল বলেন, নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে টাকা সংগ্রহ করে উৎসব পরিবহনে ফিরে আসেন। পরে কাপ্তান বাজার ইলেট্রিক মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন।
অজ্ঞান হওয়ার আগে কবিরের কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা ছিল জানিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘সেই টাকা আর পাওয়া যায়নি।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অচেতন অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিক্যালে আনা হয়। তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ওয়ারী থানাকে জানানো হয়েছে।’
খাল-নদী সংস্কারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের খনন। নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
নগরীর শহীদ নগর এলাকায় বুধবার বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পুনর্খনন কাজের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের খাল-নদীগুলো সংস্কার করতে হবে। সংস্কারে কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। তবে যারা খাল-নদী দখলের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন, আমাদের কাজে তারা মনঃক্ষুণ্ন হতেই পারেন।
‘দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরী ঢাকা। এর পরিবেশ ঠিক করতে হবে আমাদের। ঢাকার পরিবেশ সুন্দর করার মাধ্যমে আমাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। ঢাকাকে উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য খাল এবং নদীগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।’
মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সিএস ম্যাপ অনুযায়ী আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনর্খনন কাজ এগিয়ে নেয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশের খনন হবে। নদীর সীমানা নির্ধারণ করে বেষ্টনী দেব।
‘আদি বুড়িগঙ্গা, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, চকবাজার ও পুরান ঢাকা ঘিরে কীভাবে একটি নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে চেষ্টা চলছে। নদীর প্রবাহ ও নদী পুনরুদ্ধার করে একটি বাসযোগ্য নগরী উপহার দেয়া হবে।’
দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে বুড়িগঙ্গায় খননকাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘সাড়ে ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী অর্থবছরে আরও বেশি বরাদ্দ রাখা হবে। আনন্দের বিষয় যে আমরা কাজটি শুরু করতে পেরেছি।’
পরে নগরীর ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মেয়র। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।
আরও পড়ুন:অর্থপাচার মামলায় এসএম গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমসহ আট জনের বিরুদ্ধে আরও পাঁচ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে বুধবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এই পর্যন্ত ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে এই মামলায়। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ জুলাই দিন ঠিক করেছেন বিচারক।
আদালতে যে পাঁচ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন হোসাইনী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার কনস্টেবল মিনহাজুল আবেদীন, গুলশান থানার এএসআই বুলবুল হক আনাছ, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার এএসআই নুরে আলম ও বাগেরহাট সদর মডেল থানার এএসআই তারক চন্দ্র দাস।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
আলোচিত এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মোরাদ হোসেন, সামসাদ হোসেন, আনিছুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, কামাল হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। তারা জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত।
জি কে শামীমকে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আটক করে র্যাব। এ সময় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার হয়। এ ব্যাপারে র্যাব বাদী হয়ে মানি লন্ডারিং, মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করে।
আরও পড়ুন:আত্মসমর্পণের পর জামিন পাননি ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাজা পাওয়া চার কর্মকর্তা। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
গ্রাহকদের ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালত ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দেয়। তখন চার আসামি পলাতক থাকায় তাদের নামে পরোয়ানা জারি হয়।
বুধবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলমের উপস্থিতিতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- ডেসটিনি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর সাকিবুজ্জামান খান (অব.), সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেস্ট এভিয়েশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোল্লা আল আমিন, সুনীল বরণ কর্মকার ও হেড অব ফাইন্যান্স কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিম।
এ মামলায় গত ১২ মে রায় দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
রায়ে অন্য আসামিদের পাশাপাশি মেজর সাকিবুজ্জামান খানের (অব.) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানা হয়। মোল্লা আল আমিনের চার বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, সুনীল বরণ কর্মকারের ৮ বছর কারাদণ্ড ও ৫ কোটি টাকা জরিমানা এবং কাজী মোহাম্মদ ফজলুর করিমের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:রাজধানীর রায়ের বাজার পুলপার বটতলা এলাকায় এক যুবককে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের নাম মো. রবিন। তার বয়স ২৩ বছর।
রবিন রায়েরবাজার কাঁচাবাজারের পাশে একটি বাসায় থাকেন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক।
গুরুতর আহত অবস্থায় রবিনকে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিলশাদ নামে সিএনজি চালকের মাধ্যমে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবকের পেটে, পিঠে চার থেকে পাঁচটি ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তখনন হয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রবিনের বন্ধু বাবু জানান, রবিনসহ তারা তিনজন রায়েরবাজার বটতলা এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী মিঠুর ছেলেসহ ৫/৬ জন তাদের পথ রোধ করে। সেখান থেকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায় পাশের রাস্তায়। সেখানে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গতকাল ওই এলাকায় দুই গ্রুপের মারামারি হয়। এরই জেরে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে তার বন্ধুরা জানান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:শিশুদের সঙ্গে সময় কাটালেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সুপ্রিম কোর্টে নবনির্মিত ‘বিজয় ৭১ ভবনে’ বুধবার ডে কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি।
বিকেল ৪টায় তিনি ফিতা কেটে সেন্টারটি উদ্বোধন করেন।
ওই সময় তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান। পরে ছবি তোলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।
নতুন এই ডে কেয়ার সেন্টারে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সন্তানরা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য