নাটোরের সিংড়ায় দ্রুতগামী ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক স্কুলশিক্ষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেক ভ্যানচালক।
নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩৩ বছরের আইয়ুব আলীর বাড়ি উপজেলার আয়েশ গ্রামে। তার বাবার নাম আকবর আলী। চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। আহত ভ্যানচালকের নাম নাইচ আলী।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার পরিদর্শক রেজওয়ানুল ইসলাম।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, আইয়ুব আলী সিংড়া থেকে স্কুলে যেতে মোটরসাইকেলে করে রওনা দেন। পথে চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে বালুবোঝাই একটি ট্রাক্টর পেছন থেকে তার মোটরসাইকেল ও একটি ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
এতে মোটরসাইকেল ও ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় ও শিক্ষক আইয়ুব আলী এবং ভ্যানচালক নাইচ আলী গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়রা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক আইয়ুব আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। নাইচ আলী সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ট্রাক্টরচালক সাকিল হোসেনকে আটক ও ট্রাক্টরটি জব্দ করা হয়েছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে হামলার শাহরিয়ার জনি নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। এ সময় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের শিলাসী এলাকায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন, পৌর শহরের শিলাসী রেলপাড় এলাকার রনি মিয়া ও উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের মো. সজিব। তারা দুজন বন্ধু।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘রনি ও সজিব দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি রনি মাদক মামলায় জেল খেটে বাড়িতে এসেছে। এরপরও ওই দুজনের নিয়মিত মাদক কেনাবেচা করার তথ্য আসে আমাদের কাছে।
‘অনুসন্ধানে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে রনি ও সজিব এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সমস এএসআই আবু তাহেরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রনির বাড়িতে অভিযান চালায়।’
ওসি জানান, দরজায় টোকা দিলে সজিব দরজা খুলার সঙ্গে সঙ্গে রনি রামদা দিয়ে কনস্টেবল শাহরিয়ার জনিকে কোপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কোপে জনির আঙুলের উপরে কেটে গেলেও দুজনকে আটক করা সম্ভব হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫ গ্রাম হেরোইন ও ১০৬ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।
ওসি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যের আঙুলে চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন:ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুরমার পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও পানির উচ্চতা মঙ্গলবারের চেয়ে আট সেন্টিমিটার বেড়েছে। ছাতক পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর।
নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলে বাড়তে শুরু করেছে পানি।
স্থানীয়রা জানান, নবীনগর, কাজির পয়েন্ট, ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তৃতীয় দফা বন্যার পানি এখনও নামেনি। এর মধ্যেই আবার পানি ঢুকছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।
নবীনগরের মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘পানি আবার বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতে এখানে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ঘরের পানি এখনও শুকায়নি। ভয়াবহ বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আবার যদি পানি আসে তাহলে কীভাবে থাকব?’
দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার গ্রামের খালেদ হাসানও বলেন, ‘এখান থেকে আগের পানিই যায়নি। তার মধ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বাড়ছে। আমরা যারা নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা তারা সবার আগে বিপদে পড়ছি।’
পাউবো জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদরে ১৯৬ মিলিমিটার, তাহিরপুরে ৩২ মিলিমিটার, দিরাইয়ে সাত মিলিমিটার ও ছাতকে ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
চেরাপুঞ্জিতে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে যা তার আগের ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ৫০ মিলিমিটার কম।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল হওয়ায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে এ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবারও সুনামগঞ্জে ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিতে হচ্ছে।
‘ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের নদীর পানি বাড়ছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে উজানে যদি তিন থেকে চার দিন টানা ভারি বৃষ্টি হয় তাহলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।’
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাপের কামড়ে প্রেস ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
৩০ বছর বয়সী শাহাদাত শেখ উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিংগলিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের জাফর শেখের ছেলে। তিনি কাশিয়ানী বাজারে আব্দুর রহিম অফসেট প্রেসের মালিক।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকন।
শাহাদতের চাচাতো ভাই শেখ তারিকুল ইসলাম সুমনের বরাতে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় শাহাদাতকে বিষধর সাপ কামড় দেয়। পরে রাতেই তাকে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে বিষমুক্তকরণের টিকা না থাকায় গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শাহাদাতের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রবাসীর বাড়ি থেকে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
কলারোয়া উপজেলার দিগাং গ্রাম থেকে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৬০ বছর বয়সী মৃত নিজাম উদ্দীনের বাড়ি উপজেলার গোয়ালপোতা এলাকায়। তিনি কাজিরহাট বাজারে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতেন।
তার ভাইয়ের দাবি, নিজামকে হত্যা করা হয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কম্বোডিয়া প্রবাসী আব্দুস সামাদের স্ত্রী তহমিনা বেগমের সঙ্গে নিজামের দীর্ঘদিন ধরে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার রাতে তিনি তহমিনার ঘরে গেলে তহমিনার ছেলে সুমন হোসেন চোর চোর বলে চিৎকার করে।
‘চিৎকার শুনে নিজাম ঘর থেকে বের হতে গেলে পড়ে যান। এরপর তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪০ বছর বয়সী তহমিনা বেগম, তার ২০ বছর বয়সী ছেলে সুমন হোসেন ও প্রতিবেশী আব্দুল মাজেদকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।’
এ ঘটনায় নিজামের ভাই মশিয়ার সরদার বলেন, ‘রাত ১টার দিকে দিগাং এলাকার মেম্বার আসাদ সরদার আমাকে ফোন দিয়ে ডাকে। গিয়ে দেখি আমার ভাই মারা গেছে। তার হাতে ও পায়ে ক্ষত আছে। আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আরও পড়ুন:আষাঢ়ের আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। রোদের উত্তাপে হাঁসফাঁস চারপাশ। এমন গরমেই দুষ্টু ছেলেমেয়ের দল হানা দেয় কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকার লালমাই পাহাড়ে। সেখানে গাছে গাছে ঝুলে আছে হলুদ চাপালিশ!
পাকা এই চাপালিশ ভেঙে অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে কোষগুলো নিয়ে শুকনো মরিচ পোড়ায় কিশোর-কিশোরীর দল। হাল্কা মিষ্টি আর টক স্বাদের চাপালিশে ঝাল মিশিয়ে মুখে পুরে নেয় তারা। তারপর ওঠে তৃপ্তির ঠেকুর। দুপুরে উদরপূর্তির জন্য এর চেয়ে ভালো আয়োজন কি হতে পারে?
চাপালিশ দেখতে কাঁঠালের মতোই। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। আর পাকলে হলুদ হয়ে ওঠে। আকারে ছোট এই ফলটির ভেতরে কাঁঠালের মতোই ছোট ছোট কোষ থাকে। কোষের ভেতরে থাকা এর বীচিগুলোও অনেকে আগুনে পুড়িয়ে খায়। কিছুটা চিনা বাদামের স্বাদ পাওয়া যায় এতে।
টক মিষ্টি স্বাদের এই চাপালিশকে স্থানীয়রা চামল বা চাম্বল নামেই চেনে। লালমাই পাহাড়ে শত বছর আগে প্রাকৃতিকভাবেই গড়ে উঠেছিল চাপালিশের বন। ঘন সবুজ পাতার আড়াল থেকে উঁকি মারা পাকা চাপালিশ যে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আষাঢ় মাসেই চাপালিশ পাকতে শুরু করে। ৯০-এর দশকে লালমাই পাহাড়ে যে পরিমাণ চাপালিশ গাছ ছিল, এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই।
কোটবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, পুরো লালমাই পাহাড়ে বর্তমানে অর্ধশতাধিক চাপালিশ গাছ আছে। এক সময় এই সংখ্যাটি ছিল হাজারেরও বেশি। কাঠের জন্য কিংবা জমি প্রশস্থ করতে গত কয়েক বছরে স্থানীয়রা বহু চাপালিশ গাছ কেটে ফেলেছে।
ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘পাশের সেনানিবাসের ভেতর বর্তমানে বেশকিছু চাপালিশ গাছ রয়েছে।’
কোটবাড়ি এলাকার বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিম পার্শ্বে হাতিগড়া এলাকায় চাপালিশ বিক্রি করেন চা দোকানীরা। দোকানের সামনে ঝুড়িতে রাখা থাকে ফলটি। কেউ আবার ক্রেতা আকর্ষণের জন্য এটিকে দোকানের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।
চা দোকানী খায়ের মিয়া বলেন, ‘প্রতিটা ২০ টাকা করে বেচি। আষাঢ়-শাওন মাসে কাঁঠালের সাথে চামলও পাকে। শহর থেকে আসা মানুষেরাও শখ করে কিনে নিয়ে যায়। একটা গাছে ২ থেকে ৩ মন চাপালিশ ধরে।’
খায়ের জানান, লালমাই পাহাড়ে একসময় এত পরিমাণ চাপালিশ হতো যে, এগুলো খেতে শত শত বানর এসে ভিড় জমাতো। চাপালিশ কমার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকাটিতে এখন বানরের সংখ্যাও কমে গেছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘চাপালিশ একটি বিপন্ন উদ্ভিদ। আবাসস্থল ধ্বংস এবং মাত্রাতিরিক্ত আহরণের জন্য চাপালিশের বিস্তৃতি নাই বললেই চলে। সরকারের উচিত পরিকল্পিত বনায়নের অংশ হিসেবে চাপালিশ বৃক্ষের আবাদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা। এর কাঠ যেমন মূল্যবান, তেমনি এর ফল বন্যপ্রাণী ও মানুষের খাবার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।’
মেহেরুন্নেসা মনে করেন, জলবায়ু সংকটে থাকা এই পৃথিবীকে আবাসযোগ্য রাখতে বৃক্ষনিধন দমনের পাশাপাশি ব্যাপক বনায়ন কর্মসূচী হাতে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে চাপালিশের চাষ একটি চমকে দেয়ার মতো বিষয় হতে পারে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, সারাদেশে যেসব এলাকায় চাপালিশ গাছ জন্মে, তার মধ্যে কুমিল্লার লালমাই পাহাড় অন্যতম। বিলুপ্তপ্রায় এই গাছটির কাঠ ও ফল মূল্যবান। পাখি ও বনের পশুর জন্যও চাপালিশ উন্নত খাবার। এই গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি আসবাব বছরের পর বছর টিকে থাকে। এই গাছ রক্ষায় বন বিভাগের জরুরী উদ্যোগ নেয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা কোটবাড়িতে উদ্ভিদ উদ্যান করেছি। সেখানে চাপালিশের বীজ থেকে চারা করে গাছের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যে কেউ চাইলে আমরা বীজ কিংবা চারা দিয়ে সহযোগীতা করবো।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারই ছিলেন পরিবারের সবচেয়ে বড় ভরসা। বাড়ির ছোট ছেলে হলেও সবাই নির্ভর করত তারই ওপর। সেই উৎপলকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল পুরো পরিবার।
উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার এঙ্গেলদানি গ্রামে। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। ৩৫ বছর বয়সী উৎপল প্রায় ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করতেন আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
কলেজের মাঠে গত শনিবার দুপুরে মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুর বিরুদ্ধে। পরদিন সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আহত উৎপল মারা যান।
উৎপলকে হারিয়ে পরিবারের অবস্থা সম্পর্কে তার বড় ভাই অসীম কুমার পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়ির অবস্থা এখন কী বলব? আমাদের ফ্যামিলিটাই শেষ। আমার মাকে নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে। সে তো ছেলের জন্য পাগল। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। উৎপল ছিল সবার ছোট ও আদুরে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। গ্রামে আমরা এখনও যৌথ পরিবারে থাকি। ওই আমাদের পরিবারটাকে নিয়ন্ত্রণ করত। আর্থিকভাবেও ওই দেখত। আমরা অন্য ভাইরা ছোটখাটো কাজ করি।
‘আমি সাভারে একটা ছোট দোকান করি। আরেক ভাই দর্জি। আর বাকি দুজন টেক্সটাইলে ছোট পোস্টে চাকরি করে।’
দুই বছর আগে বিয়ে করেছিলেন উৎপল। স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর-১-এ আনছার ক্যাম্পে থাকতেন।
তার ভাই বলেন, ‘উৎপলের এখনও কোনো সন্তান হয়নি। সে আর তার স্ত্রী মিরপুর-১-এ আনছার ক্যাম্পে থাকত। সেখান থেকেই আশুলিয়ার চিত্রশাইল গিয়ে ক্লাস নিতো।’
উৎপলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় রোববার জিতু ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন অসীম।
জিতু দশম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স ১৯ বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, এই তরুণ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখান থেকে ঝরে পড়ার পর হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, উৎপলকে পেটাতে পরিকল্পনা করেই স্টাম্প নিয়ে এসেছিলেন জিতু। এটি নিছক ঝোঁকের বসে ঘটিয়ে ফেলা কোনো অপরাধ নয়।
যেখানে শিক্ষককে পেটানো হয়েছে, সেই জায়গাটি কলেজের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতাধীন বলে জিতু ঘটনার আগে আগে মেইন সুইচ বন্ধ করেছেন, যেন কোনো কিছু ক্যামেরায় রেকর্ড না হয়।
সেখানে মেয়েদের যে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল, সেখানে স্টাম্প ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের। আর সেই শিক্ষককে পেটানো হয়েছে কাঠের স্টাম্প দিয়ে।
কলেজের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘জিতু ছাত্র হিসেবে খুবই দুর্বল প্রকৃতির। উচ্ছৃঙ্খলও। তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়েরও অভিযোগ ছিল।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন:চালুর পর থেকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধের ঘোষণা এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার এ ঘোষণা আসার পর বুধবার সকাল থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে অনেকটাই কম দেখা গেছে। ছোট যানবাহন ও বাসের সংখ্যাও ছিল খুবই কম।
এর আগে চালুর দিন পদ্মা সেতুতে বাইক দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে টোল প্লাজা এলাকায় সেতুর ওপরে টহল আরও কঠোর এবং জোরদার করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যানবাহন টোল প্লাজায় কোনো রকম অপেক্ষা ছাড়াই টোল দিয়ে সেতু পার হচ্ছে।
অন্যদিকে কিছুসংখ্যক মোটরসাইকেল টোল প্লাজার অদূরে থাকলেও তারা সেতুতে উঠতে না পারায় পিকআপ ভ্যানে করে পাড়ি দিচ্ছে পদ্মা।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ‘সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় এগুলো পিকআপ বা ট্রাকে করে পার করা হচ্ছে। যানবাহন চলাচল কম করছে এমনটি বলা যাবে। সাধারণ পরিবহন বাস, দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ সবই ভালো পরিমাণে চলাচল করছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য