দেশের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে শনিবার ভোর থেকে বয়ে গেছে কালবৈশাখী ঝড়। এতে পাঁচজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাড়ি-ঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অনেক এলাকায় গাছ উপড়ে রাস্তায় পড়ে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। কিছু কিছু এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বগুড়া
বগুড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে দেয়াল ও গাছ চাপায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
কাহালু উপজেলার মাছপাড়া ও শাজাহানপুরের বৃ-কুষ্টিয়ায় শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন মাছপাড়ার ৪৫ বছর বয়সী মো. শাহিন ও কুষ্টিয়ার ৫১ বছর বয়সী আব্দুল হালিম।
স্থানীয়দের বরাতে কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমবার হোসেন জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। সে সময় একটি গাছ উপড়ে শাহিনের বাড়ির ওপর পড়ে। গাছের ভারে মাটির দেয়াল ধসে শাহিনের মৃত্যু হয়।
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঝড়ে একটি গাছ ভেঙে হালিমের বাড়ির ওপর পড়ে। তিনি ছোট ডালগুলো কেটে সরাচ্ছিলেন। সে সময় গাছের মূল কাণ্ড তার ওপর পড়লে হালিম গুরুতর আহত হয়।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ভোরে বগুড়ায় এই মৌসুমের সর্বোচ্চ গতিবেগে ঝড় হয়েছে।
বগুড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান, ভোর ৪টা থেকে ৪টা ৪ মিনিট পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮৮ দশমিক ৬ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ। বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ মিলিমিটার।
ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিঘ্ন ঘটেছে বিদ্যুৎ সরবরাহে।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে শনিবার সকাল ৬টার দিকে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ১০ মিনিটের মতো ঝড়-বৃষ্টিতে তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সকালে শৈলকুপা উপজেলার কুলচারা গ্রামে বজ্রপাতসহ হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। সে সময় বাড়ির পাশের মাঠে বেগুন তুলতে যান গোলাম নবী ও রুপসী খাতুন দম্পতি। ঝড় শেষে স্থানীয়রা তাদের অচেতন অবস্থায় মাঠে পড়ে থাকতে দেখেন।
তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রুপসীকে মৃত ঘোষণা করেন। তার স্বামীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জোবাইদা ইসলাম বলেন, ‘বজ্রপাতের হিস্ট্রি নিয়ে দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।’
সদর উপজেলার ডেফলবাড়িয়া গ্রামে বজ্রপাতে আশরাফুল ইসলাম নামের এক কৃষকের দুটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়ে আম, লিচু, কলা, পানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। সহযোগিতার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুত গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ মিনিটের ঝড়ে আমাগের সব শ্যাষ করে দিয়ে গেছে। গাছপালা ভাঙ্গে গেছে। কারেন্টের পোল ভাঙ্গে গেছে। গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ ছিল। আমাগের ম্যালা ক্ষতি হয়েছে।’
একই উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘সকালে হঠাৎ করে খুব ঝড় শুরু হয়। আম্পানের সময় যে ঝড় হয়েছিল আজকে তেমন ঝড় হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভেঙে গেছে। আম, লিচু, কলার বাগানের খুব ক্ষতি হয়েছে।’
কালীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রথীন্দ্রনাথ বসাক জানান, ঝড়ে বিদ্যুতের ২২টি খুঁটি ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে ৩৩ কেভি লাইনের ওপর গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় মেরামতের কাজ চলছে। কতক্ষণ লাগবে বলতে পারছি না। তবে বিকেলের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।’
কক্সবাজার
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ঝড়ের সময় গাছচাপা পড়ে এক ইজিবাইক চালকের মৃত্যু হয়েছে।
৪০ বছর বয়সী মৃত আব্দুস শুক্কুরের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ২ নম্বর শান্তিনগর এলাকায়।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, শুক্কুর তার ইজিবাইকের ব্যাটারির কানেকশন ঠিক করছিলেন। সে সময় ঝড় শুরু হলে তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্য ইজিবাইক থেকে নামেন। সে সময় একটি গাছ তার ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
দিনাজপুর
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বজ্রপাতে আলতাফ হোসেন নামের ৪৫ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।
চিরিরবন্দর উপজেলার ৭ নম্বর আউলিয়াপুর ইউনিয়নের আতারবাজার কাকপাড়ায় শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের বরাতে চিরিরবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেম উদ্দিন জানান, দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে আলতাফ বাড়ির পাশের মাঠে যান গরু আনতে। সে সময় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
নওগাঁ
নওগাঁয় কালবৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ আম এখনও অপরিপক্ক এবং মাটিতে পড়ে ফেটে গেছে। ছোট ও মাঝারি সাইজের এসব আম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বস্তা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ২৯ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৫ টন। শুক্রবার রাতের ঝড়ে প্রায় ৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমির কাঁচা আম ঝড়ে পড়েছে।
নওগাঁর ১১ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় পোরশা ও সাপাহারে।
সাপাহার উপজেলার মানিকুড়ি এলাকায় শনিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ে পড়া আম কুড়িয়ে এনে এক জায়গায় স্তূপ করে রাখছেন শ্রমিকরা।
উপজেলার কলমুডাঙ্গা গ্রামের আম চাষি মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ৮০ বিঘা জায়গার ওপর দুইটা আমের বাগান আছে। শুক্রবার রাতের ঝড়ে দুই বাগান মিলিয়ে প্রায় ১০০ মণ আম ঝরে পড়েছে। এটা মোট আমের চার ভাগের এক ভাগ।
‘ঝরে পড়া কাঁচা আম দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ পরিপক্ক অবস্থায় বাজারে তুললে কমপক্ষে ৫০ টাকা করে প্রতি কেজি বিক্রি হতো।’
পোরশা উপজেলার নিতপুর এলাকার আম চাষি তোজাম্মেল হোসেন জানান, তার ১২০ বিঘার বাগানে ৮০ শতাংশের বেশি আম্রপালি জাতের গাছ। গাছ ছোট হওয়ায় ঝড়ে এসব গাছের আম কম ঝরেছে। তবে আশ্বিনা, নাক ফজলি ও ল্যাংড়া জাতের বড় গাছের ২০ শতাংশ আম পড়ে নষ্ট হয়েছে।
বদলগাছী আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ মিলিমিটার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান, শুক্রবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর, মান্দা ও ধামইরহাট।
পত্নীতলায় ২ হাজার ২৫০ হেক্টর, সাপাহারে ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর, পোরশা ১ হাজার ৫০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৪৭৫ হেক্টর ও নিয়ামতপুরে ৪৮০ হেক্টর জমির কাঁচা আম ঝরে গেছে। বাকি ছয় উপজেলা মিলিয়ে ঝরেছে ১০০ হেক্টর জমির আম।
এ ছাড়া নওগাঁয় ৫০ হেক্টর জমির কলা ও ৫০ হেক্টর জমির বিভিন্ন শাকসবজিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উড়ে গেছে বেশ কিছু ঘরের চাল। গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক জায়গায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আলমডাঙ্গা-হালসা লাইনের ওপর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গাছ ভেঙে পড়ে খুলনার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে গাছ অপসারণের পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আলমডাঙ্গায় শনিবার ভোর ৫টার দিকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। আধ ঘণ্টার ঝড়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঝড় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, মেহেরপুরের গাংনী হয়ে কুষ্টিয়ার দিকে আঘাত হানে। তবে ওই সময় বাতাসের গতিবেগ মাপা হিসাব করা যায়নি। বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৭ মিলিমিটার।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কালিদাসপুর গ্রামের আলী হোসেন বলেন, ‘আমাদের গ্রামসহ আশপাশের অনেক গ্রামের আধা-পাকা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বাতাসে উড়ে গেছে ঘরের চাল। বড় বড় গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে রাস্তায় পড়েছে। এতে যান চলাচল হয়ে যায়।’
আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সাব অফিসার আক্কাস আলী জানান, শ্রীরামপুর ও জগন্নাথপুর এলাকায় চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ ভেঙে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) আলমডাঙ্গার আবাসিক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে, খুঁটি উপড়ে পড়েছে বা ভেঙে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও মহিলা কলেজপাড়া এলাকায় বেশি ক্ষতি হয়েছে।
‘ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড় থামার পর থেকে লাইন মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। মেইন লাইন চালু হয়ে গেছে। তিনটা ফিডারের মধ্যে এখন শুধু বাজারের ফিডার বন্ধ আছে। খুব শিগগিরই এটাও চালু হবে।’
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি আলম নূর (ইউএনও) জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর, হারদি ও ডাউকি ইউনিয়নে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছের ডাল পড়ে প্রায় দেড়শ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালিদাসপুর ইউনিয়নে ৫ থেকে ৭ জন সামান্য আহত হয়েছেন। তারা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ইউএনও বলেন, ‘জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। এই তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের মাধ্যমেও ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।’
খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে ঝড়ো হাওয়ায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গাছ ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ ঘণ্টা পর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে গাছ উপড়ে পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ফলের বাগান ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বিদ্যুৎ বিভাগের খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার জানান, ঝড়ো হাওয়ায় ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইনে গাছ ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।
যশোর
যশোর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টা ৫ মিনিট থেকে প্রায় ১৫ মিনিট কালবৈশাখী ঝড় হয়। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৩২ নটিক্যাল মাইল। বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ১০ মিলিমিটার।
এই ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলা। অনেক বাড়ির চাল উড়ে গেছে, গাছ ভেঙে পড়েছে। ক্ষতগ্রস্ত হয়েছে মৌসুমি ফল ও ফসল।
সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের নাটুয়াপাড়া গ্রামের তানিয়া বেগম বলেন, ‘সকালে ঝড় শুরু হলে অনেক গাছ ভেঙে পড়ে। আমাদের বাড়ির বড় একটি শিশু গাছ ভেঙে আমার গরু মারা গেছে। টিনের বাড়িগুলোর চাল উড়ে গেছে।’
একই এলাকার হোসেন উদ্দিন জানান, তার বাড়িতে গাছ ভেঙে পড়ায় তিনি আহত হয়েছেন।
এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকী বলেন, ‘সদর উপজেলায় আমাদের ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৭টি গ্রামের মধ্যে ১২টি গ্রামের চিরচেনা পরিবেশ বদলে গেছে। কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ইউপি সদস্যরা কয়েকজন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।’
মেহেরপুর
মেহেরপুরে কাল বৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গাংনী উপজেলার বামন্দী, তেতুলবাড়িয়া, মঠমোড়া ও গাজীপুর ইউনিয়ন।
গাংনীতে শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হয় ঝড়। প্রায় ১০ মিনিটের ঝড়ের সঙ্গে কয়েক মিনিট শিলাবৃষ্টিও হয়। জায়গায় জায়গায় উপড়ে পড়ে গাছ, ছিঁড়ে যায় বৈদ্যুতিক তার।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হোগলবাড়িয়া, বাওট ও আকুবপুর গ্রাম। উড়ে গেছে কয়েকটি বাড়ির টিনের চাল। আমসহ বিভিন্ন ফল ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমচাষি মো. কুতুব বলেন, ‘ভোরে হঠাৎ ১০ মিনিটের ঝড়ে আমার বাগানের অনেক আম পড়ে গেছে। আর ১৫ থেকে ২০ দিন পরেই আম পাকা শুরু হতো। এই আমগুলো এখন নামমাত্র দামে বিক্রি করতে হবে।’
সড়কে গাছ পড়ে ভোর থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচলও বন্ধ ছিল।
বাসচালক মো. গোলাম বলেন, ‘আমি ভোরবেলা গাড়ি নিয়ে আকুবপুরে ঢুকতেই ঝড় শুরু হয়। রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে ছিলাম। এরপর গাছ সরানো হলে জেলা শহরে আসি।’
পল্লীবিদ্যুতের বামন্দী শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক হানিফ রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার অফিসের আওতাধীন প্রায় ১২টা পোল ভেঙে চার ইউনিয়ন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।’
ফসলের ক্ষতির বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক শামসুল হক জানান, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই জানা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন বগুড়ার আসাফ-উদ দৌলা নিয়ন, ঝিনাইদহের সোহাগ আলী, কক্সবাজারের মুহিববুল্লাহ মুহিব, দিনাজপুরের কুরবান আলী, নওগাঁর সবুজ হোসেন, চুয়াডাঙ্গার জহির রায়হান সোহাগ, খাগড়াছড়ির নুরুচ্ছাফা মানিক ও মেহেরপুরের সোহেল রানা।
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য